নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দমালা

চারপাশের বাতিগুলো নিভে আসছে

শব্দঋষির বর্ণমালা

আমি নিসর্গ , মেডিকেল স্টুডেন্ট , সেই সাথে হাবিজাবি লেখি। নিজের সম্পর্কে বলার আসলে কিছু নাই, কোনকিছুই অসাধারণ না আমার। এই সাধারণত্বে আমি খুশী\n\nফেসবুকেআমার বন্ধুতালিকায় যুক্ত হলে ভাল লাগবে \nফেসবুক : NISORGO OMI

শব্দঋষির বর্ণমালা › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বপ্ন দেখে অন্ধ জোনাক...

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৪

১.

আনুশের কয়েকদিন ঘুম ভাল হচ্ছে না।
এর কারন লুকিয়ে আছে পাশের বাসায়।
নতুন ভাড়াটিয়া এসে উঠেছে সেখানে। সেই থেকে শুরু হয়েছে বিপত্তি।
খুব সম্ভবত তারা কানে শোনেন না কিংবা কম শোনেন। ঠিক যে ভলিউমে তারা গান বাজান, তাতে এই সন্দেহ হওয়াটাই স্বাভাবিক! সকাল থেকে সন্ধ্যা গান বাজতে থাকে, যার বেশীরভাগই হিন্দি কিংবা তামিল। আনুশ বুঝে পায় না, মানুষ হিন্দি গান শুনে কি মজা পায়। হেডফোন টা টেনে
নেয় আনুশ




দরোজায় কলিংবেল কয়েকবার বাজার পর ওপাশ থেকে দরোজা খুলে দিল একটা মেয়ে।
"কিছু বলবেন? "
কিছু একটা বলতে যেয়েও কিছু বলতে পারল না আনুশ। নাহ! মানুষের সুন্দর হওয়ার একটা মাত্রা থাকা উচিত, এর চেয়ে সুন্দর হওয়াটা অপরাধ। বাংলাদেশি মেয়ে কেন এত সুন্দর হবে? হয়ত খোজ নিয়ে দেখা যাবে মেয়েটার বাবা গ্রীক কিংবা মা ব্যবিলনিয়ান!
" কি হল ! কথা বলছেন না কেন? "
মেয়েটার শীতল কিন্তু বিরক্তিভরা কথায় আনুশের চিন্তায় ছেদ পড়ে। মাথা চুলকে উত্তর দেয়
"না, মানে, আমার পরীক্ষা তো ,ভলিউম টা যদি...
"পরীক্ষা তো সারাদিন গান বাজান কেন? "
আনুশের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে মেয়েটার পাল্টা প্রশ্ন!
আনুশ ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়! সেই গান বন্ধ করার রিকুয়েস্ট করতে এসে উল্টা নিজেই অভিযোগের শিকার!
"দাঁড়িয়ে আছেন কেন বোকার মত? কিছু বলবেন? আমার কাজ আছে, বের হতে হবে "
আনুশ এতক্ষনে খেয়াল করল মেয়েটার পরনে এপ্রোন।ও আচ্ছা, মেয়েটা মেডিকেলে পড়ে! ভাল তো। কোন মেডিকেলে পড়ে জেনে নেওয়া দরকার। কলিগ বলে কথা। ফার্স্ট ইয়ার -সেকেন্ড ইয়ার হবে, অন্তত দেখে তা মনে হল তার। ফার্স্ট ইয়ারের ছেলেমেয়েরাই একটু আকাশে ওড়ে বেশি।
কোন ইয়ার জিজ্ঞেস করার আগেই দেখল মেয়েটা দ্রুত সিড়ি ভেঙ্গে নেমে যাচ্ছে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে আনুশ কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে বিদায় নিল। তার কেন জানি অপমান বোধ হচ্ছে না কোন, সে জায়গা দখল করে নিয়েছে কৌতুহল আর কিছুটা ব্যথাজাতীয় অদ্ভুত অনুভুতি।
কথাগুলো অসমাপ্ত থেকে গেল।

৩।


আনুশ আজ থার্ড ইয়ারের প্রথম ওয়ার্ড করতে এসেছে। মেডিসিন দিয়ে শুরু হল। হঠাত করেই লক্ষ্য করল তাদের ওয়ার্ডে পাশের বাড়ির সেই মেয়েটি ঢুকছে।
ও! তাহলে এই মেয়েটাই ওর নতুন ব্যাচমেট!
"তুমি কি ডি ব্যাচে? আগে তো কখনো দেখিনি! "
"আমি তোমার ব্যাচমেট না, ইন্টার্ন ডক্টর। আজ আমার মেডিসিনে ইভিনিং। সিনিয়রকে আপনি করে বলাটা ভদ্রতা "
মেয়েটার শীতল উত্তর শুনে আনুশ বিস্ফারিত নয়নে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষন। এ কি শুনছে সে? মেয়েটা তাহলে সিনিয়র! বাঙালি মেয়েদের বয়স বোঝা যায় না, কিন্তু...
হতাশ মনে পেশেন্ট এর সাথে আলাপ জমাতে চাইল। মন পড়ে অন্যখানে। মেডিকেল রাজ্যে লাইফ আইটেমময়, ক্রাশ যেন সব শুভঙ্করের ফাঁকি! "

৪.


ধীরে ধীরে আনুশ আবিষ্কার করে, গান বাজছে নীচের চায়ের দোকানে। আপুটাকে খামোখাই সন্দেহ করেছে এতদিন।
নাহ, কাজটা ঠিক হয়নি। অপরাধবোধ হচ্ছে, হওয়াটা উচিত না হয়ত, তারপরেও। আনুশ কানে গুজে দেয় ইয়ারফোন, Poets of The Fall এর গানগুলো বাজছে, আর তার চোখের সামনে ভেসে উঠছে একটাই চেহারা।
শীতের ভেতরেও ঘামতে থাকে আনুশ।





৫.
" আনুশ, Right? "
" জি, আপু। ভাল আছেন? "
" তুমি জানালা দিয়ে আমার রুমের দিকে সারাদিন তাকিয়ে থাক কেন? "
"ইয়ে, কই নাতো...মানে... "
"থাইগ্লাস লাগানো আছে। ওয়ান সাইডেড ভিউ। জন্য তুমি কিছু দেখতে পাওনা, কিন্তু আমি তো দেখতে পাই। ব্যাপার কি? "
আনুশ লজ্জা পেয়ে যায়। ব্যাপারটা সে আসলেই ধারনা করেনি। তার মাথা এখন ঘুরছে আর ঘুরছে। হেলিকপ্টারের পাখার মত। এখন কি বলা উচিত, বুঝে আসছে না তার।



৬.

ঢাকা শহরে শীত নামে না। যদিওবা মাঝেমধ্যে চাদর গায়ে দিতে হয়। এই শহরে শীত আসে নামরক্ষার জন্য শুধুই। হঠাত করেই শীতেই নামল বৃষ্টি। আবহাওয়ার এই হঠাত পরিবর্তন নিয়ে আনুশ কিছু একটা ভাবছিল, এই সময় ছাদ থেকে কারো অস্ফুট চিৎকার, "আনুউউউউশ! Help!! "
হঠাত করেই জানটা উড়ে গেল আনুশের। লাফিয়ে সিড়ি ভেঙে ছাদে উঠে দেখে পাশের বাসার সেই আপুটা।
"কি হল? চিৎকার করলেন কেন? " আনুশের কণ্ঠে উদ্বেগ
হঠাত বৃষ্টি নামল, ভাবলাম ভিজি। একা একা ভিজতে ভাল লাগে না। তাই ভাবলাম তোকে ডাকি। এভাবে বাচাও বাচাও না করলে তুই কি ছুটে আসতি? "
আপু জানেন না, আপু চিৎকার না করলেও আনুশ ছাদে আসত। বৃষ্টিতে ভিজতে তারও ভীষন ভাল লাগে।
" কি হল? চুপ কেন? রাগ করলি নাকি ? "
আপু হাসছে। শিশুদের মত খিলখিল করে, দাত বের করে। খারাপ লাগছে না। আনুশ স্থান-কাল-পাত্র সবকিছু ভুলে হা করে তাকিয়ে আছে। বৃষ্টি কমে গেছে। তারপরেও মনে হল আনুশ বৃষ্টির ঝনঝন শুনতে পাচ্ছে। একটানা বেজে চলেছে সে সূর...

৭.

"পাত্র চাই "
"কার? "
"আমার! আবার কার! "
আনুশ অনেকক্ষন আপুটার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করল আপু কি বোঝাতে চাইছে।
শেষ তক হাল ছেড়ে দিল।
"আপনি কেমন ছেলে লাইক করেন? "
"তুই ছাড়া বাকি সব। "
'আমি কি করলাম' জিজ্ঞেস করতে যেয়েও করল না আনুশ। লজ্জা লাগছে,সেই সাথে পৃথিবী ভেঙে পড়ছে তার মাথায়।
" আরে গাধা। লাইক না করলে তোর মত গাধার সাথে ঘুরতে আসি? "
আনুশ শিশুর মত তাকিয়ে থাকে। ইশ! সময়টা যদি থামিয়ে দেওয়া যেত!
আপু শাড়ি পড়েছেন। আজ কেন জানি হালকা সেজেছেন উনি। তাকে ইন্দ্রাণীর মত লাগছে। গাড়ি থেকে শীতের হাওয়ায় ভেসে আসছে একটাই সুর
" Your lipstick strains,on the front lobe of my left side brain...
গাড়িতে গান বেজে চলেছে,ভেসে আসছে যার ক্ষয়ে যাওয়া আবছা সূর। আপুর ঠোঁটে মুচকি হাসি। আনুশ সে হাসির অর্থ ধরতে পারে না।


To be continued ...

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৫৩

প্রেতরাজ বলেছেন: খারাপ লাগে নি।

২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুখপাঠ্য

৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৫

শব্দঋষির বর্ণমালা বলেছেন: শন্যবাদ প্রেতরাজ এবং আরণ্যক ভাই

৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৯

এহসান সাবির বলেছেন: বেশ তো.......

৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৫

শব্দঋষির বর্ণমালা বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.