নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ইশপ নই

সাঈদ নওশাদ

কমিউনিস্ট সত্তা, ফাসিস্ত সত্তা, হিন্দু সত্তা, খ্রিস্টিয়ান সত্তা বলে কোনও সত্তার অস্তিত্ব আছে বলে আমি বিশ্বাস করি না। ধর্মীয় গোঁড়ামির কোনও একটা শাসনে সসাগরা পৃথিবী সর্বকালে শাসিত হবে, এ অবাস্তব কল্পনা। হিন্দু পারেনি, বৌদ্ধ পারেনি, খ্রিস্টিয়ান পারেনি, মুসলমান পারেনি, ফাসিস্ত পারেনি, নাৎসি পারেনি। কমিউনিস্টই বুঝি এর ব্যতিক্রম হবে?

সাঈদ নওশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বর্গ না পৃথিবী?

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৫০

চিন্তা করা যাক নরক, দোজখ, হেল কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই,
শুধু স্বর্গ আর পৃথিবী বর্তমান,
মৃত্যুর পর কি এই পৃথিবী অথবা স্বর্গ যেকোন এক জায়গায় যাওয়ার অনুমতি দিলে কোথায় যাবেন?
এইখানে বলে রাখি, স্বর্গ হলো স্বর্গ, প্রত্যেক ধর্মের কিতাবে বর্ণিত স্বর্গ, অপ্সরী কিংবা হুর সব থাকবে, আকাশের পাখি চিন্তা করা মাত্রই গ্রিল হয়ে সামনে আসবে, অগনিত দাস দাসী, কোন অভাব নাই, শরাবের সাগর, মধুর সাগর, চিরো যৌবন, সুন্দর বাগান, সবজায়গায় ফুলের ঘ্রান।
আর এইদিকে পৃথিবী হইলো পৃথিবী, এইখানে কোন কিছুই যেনো নাই, উলটো এডাম ইভ কিংবা আদম (আঃ) হাওয়া (আঃ) এর শাস্তিস্বরুপ যেখানে পাঠানো হয়েছিলো সেই স্থান! কাঁদা ধুলাবালি, গরম, জ্যাম, ক্ষুদার কষ্ট, পরিশ্রমের কষ্ট, টাকার কষ্ট, ডেন্টিস্টের কাছে যাইয়া দাঁত তোলার কষ্ট, হার্ড ডিস্ক ক্রাস করার কষ্ট, প্রেমিকা হারানোর কষ্ট, সকালে ভার্সিটি যাওয়ার কষ্ট, নীড ফর স্পীডে একটা ফেরারির কয়েনের কষ্ট আরো কতো অভাব আর কষ্ট এই পৃথিবীতে! এই কষ্ট গুলো থেকে না হলেও এমন কিছু নিয়ে আপনার অভাব আছেই যা পেলে আপনি একটু ভালো থাকতেন। চিন্তা করে দেখেন, অবশ্যই পাবেন!
তো, কোথায় যাবেন? হেভেন নাকি হেল (মানে পৃথিবী আরকি!)
আমি চোখ বন্ধ করে আবার পৃথিবীতেই আসতে চাইবো!
হ্যাঁ,এইটা কোন আবেগময় চিন্তাভাবনা থেকে আগত না, এইটা চিন্তা করেই নেয়া!
আমি জানি স্বর্গে সব আছে, আমি যা চাই তা আছে, যা চাইনা তাও আছে! পেট পুরে খাবার খাওয়া যাবে, কিন্তু এই পৃথিবীতে এই খাবারের জন্য কাউকে তার শরীরও বিক্রি করতে হয়!
তো কেন এই পৃথিবীতে আসবো আমি?
আচ্ছা, ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেলে গাড়ি বানানো দেখাতো এমন একটা প্রোগ্রাম ছিলো (নাম মনেনাই) প্রোগ্রাম এ দেখতাম একদিক দিয়ে টিনের পাত ঢুকতো আর অন্য দিক দিয়ে একদম ঝকঝকে লাল বিএমডাব্লিও! মাঝে একটু মানুষের হাত লাগতো, একটু কাজ করতো! বাকি কাজ রবোট করে দিতো! যার কোন বুদ্ধিমত্তা নেই, আবেগ অনুভূতি, রাগ, আনন্দ, ক্ষুদা কিছু নেই, শুধু প্রোগ্রাম করে দেয়া, সেই অনুযায়ী নড়াচড়া করে মাত্র!
হেভেন কেমন? যেখানে কোন ক্ষুদা নেই (আছে কিন্তু খাবারের অভাব নেই) কোন ভালোবাসা নেই, এইটা কেমন যেনো লাগলো? আচ্ছা ৭২ জন লোভনীয় যৌনদাসী থাকবে যার তার কি ভালোবাসার প্রয়োজন? ধরলাম প্রয়োজন, ছেলের পাশের ছাদের মেয়েটাকে বিকেলে শুকনো কাপড় নেয়ার সময়টায় এক পলক দেখার জন্য বিভিন্ন ছুতায় ছাদে যাওয়াকে যদি ভালোবাসা বলি, স্বর্গে তো সে চাইলেই তাকে পাবে, দিন রাত তার সাথেই থাকতে পারবে, ঈশ্বর তো তাকে স্বর্গে নিরাশ করবেনা! ধরলাম এইটা ভালোবাসা না, এই শহরে বৃষ্টিতে ভেজা জুটি দেখতে প্রান জুড়িয়ে যায়, ভাবি আমিও বৃষ্টিতে ভিজি, জুতো খুলে রাস্তায় হাটি, মাঝে মাঝে উপরে হা করে কয়েক ফোটা জল খাই! স্বর্গে আমি চাইলেই তা পাবো!
স্বর্গ তো এর চাইতেও বড়!
আচ্ছা, থার্মোমিটার এর কাজ কি? তাপমাত্রা মাপা! তাপ কি তা অনুভূত করতে পারে থার্মোমিটার?
আচ্ছা ৭ বছর প্রেমের পর প্রথম এক ছাদের নিচে থাকার অনুভূতি কেউ জানে? এই সাত বছরে কতো চিঠি, কতো ক্ষুদেবার্তা আদান প্রদান! প্রেমিকার বড় ভাইয়ের দৌড়ুনী খাওয়া, রাত ১টায় ফোনের ব্যালেন্স শেষ হয়ে যাওয়া, চুপিচুপি বাইরে গিয়ে আবার রিচার্জ করা, প্রথম হাত ধরা, পার্কে কেউ দেখে ফেললো কিনা এই নিয়ে বুকে ধুকধুক করা, বৃষ্টিতে ভেজা একসাথে কিন্তু একজন সামনে একজন পেছনে থাকা কেউ খারাপ বলবে বলে, প্রথম চুম্বন!
এইসব কি পাওয়া যাবে স্বর্গে? হয়তো এর থেকেও বেশি কিছু পাবেন, অনেক অনেক বেশি, কিন্তু যেই জিনিষ চাইলেই পাওয়া যায় তার দাম থাকে?
প্রথম মুঠোফোন এর কথা আমার এখনো মনে আছে, ওইটা আমার ভালোবাসার ফোন ছিলো, অনেক কষ্টে কেনা! বাবার কাছে প্রায় ২ মাস ঘ্যান ঘ্যান, অমরন অনশন করে কেনা। তাই হয়তো ভালোবাসা কাজ করতো! যদি আমি চাইলেই ফোন পেয়ে যেতাম? ফোনের অভাব বুঝতাম?
আচ্ছা ব্যাপারগুলো ঠিক বুঝানো যাচ্ছেনা, আসলে অভাব কি?
অভাব? অভাব....
উম্মম.... কোন কিছু পাওয়ার ইচ্ছা। ধরলাম তাই!
আমাদের সব কিছুতেই অভাব! আবার কিছুতেই অভাব না!

অভাব বুঝার জন্য সহজ চিন্তা করতে হবে, অনেক সহজ চিন্তা।
বাসায় পানি খাওয়ার গ্লাস আছে? পানি খান?
যদি গ্লাস, জগ, কিংবা বোতল না থাকতো? এই মুহুর্তে আপনার বাসার ফিল্টারে পানি আছে কিন্তু গ্লাস মগ কিংবা কোন পাত্র নাই!
অঞ্জলিতে পানি নিয়ে খাইতে খাইতে চিন্তা করবেন আমার একটা গ্লাসের অভাব!
হ্যাঁ পাওয়া গেলো!
আমাদের বাসায় পানি আছে, পানির খাবার পাত্রও আছে! তাই পানির পাত্র থাকার অভাবটা বুঝিনাই! যখন নাই হয়ে গেলো তখন বুঝলাম আমি অভাবে ছিলাম হোক সেইটা খুব সিলি!
এখন চিন্তা করেন আপনার সব আছে, সব, কোন কিছুর অভাব নাই, কিছুর ই না! খাবার চাইলেই বাবা খাবার কিনে দিচ্ছে, আইফোন সেভেন চাইলে সেভেন, যা চাচ্ছি তাই পাচ্ছি, যা করতে চাচ্ছি তাই করতে পারছি!
আপাতদৃষ্টিতে আমার অভাব না থাকলেও অভাব আমার আছেই! হোক মানোষিক কিংবা শারীরিক!
কিন্তু স্বর্গে? অভাব নেই! কি মজা! তাইনা? উপরে যেই পানি খাওয়ার পাত্রের কথা বললাম তা আবার চিন্তা করেন, পানি খাবেন কিন্তু পাত্র নাই! একটা অভাব, এই জন্য পাত্র খুঁজবেন! পানিও খাবেন! কিন্তু থাকলে তো আর খোজা লাগবেনা!
আসলে আমরা বাঁইচা আছি, শাহাবাগের জ্যাম এ ঘামি, সকালে ভার্সিটি চোখ কচলাতে কচলাতে স্কুলে যাই, ভার্সিটি যাই, পাপাই'স এর কোল্ড কফি খাই, নিউ মার্কেট যাই, যাই করিনা কেন একটা অভাবের তাড়নায় করি! সব! চিন্তা করেন আপনি এখন কি করছেন? কোন একটা অভাবেই করছেন! কিছুর একটার অভাব আছেই!
আমি অনেক চিন্তা করে ছোটকালে বের করছি ক্ষুদার কারনে মানুশ সব করে, পরে একটু বড় হয়ে বুঝছি ক্ষুদা আর কাম এই দুইটাই মনেহয় সব! এ্যাপল এর সি ই ও থেকে শুরু করে দৌলতদিয়া ব্রথেলের মেয়েটার দিন থেকে রাত পর্যন্ত সব কিছুই এই পেট এ কিছু যোগান দেবার জন্য! এই জায়গায়টা বড্ড বেয়াড়া, একদিনও যোগান ছাড়া চলতে চায়না, সবার বাসায় যে যাই চায় খাবার দিয়ে দেয়া হবে, তাহলে কি হতো?
বাস ড্রাইভার কি বাস চালাতো? আমার বাবা কাল সকালে অফিসে যেতো? আচ্ছা যেই মামার দোকানে চা খাইতাম সেও তো তাহলে চা বিক্রি করতোনা! সকালে যেই লোক পেপার দিয়ে যায় ওই লোকই বা কেনো কষ্ট করবে? বাজারের দোকানগুলোতে কি আগের মতো ভিড় থাকতো? কেউ কি বলতো, "না মামা, যামুনা, ওই রাস্তায় জাম"
রাস্তার ম্যানহোলের ঢাকনা চোর নিয়ে গেলে পৌরসভা থেকে লোক আসতো? আগুন লাগলে কি ফায়ার সার্ভিস থেকে লোক আসতো?
কারো কোন ভালোবাসা নেই, অভাব নেই, ক্ষুদা নেই!
এইবার ধরি যৌনতা, বিষয়টা ট্যাবুর পর্যায়ে আমাদের সমাজে! অন্তত আজকের দিনটায়!
ভালোবাসা আর যৌনতাকে অনেকে এক লাইনে ফেললেও সামান্য পার্থক্য আছে! সামান্য!
আমি নিজেও ভালোবাসা আর যৌনতাকে একই গাছে দুটি ডাল মনে করি! রুট একই কিন্তু আলাদা দুটি জিনিষ! যাইহোক, আমাদের সবার ড্রিম বয় কিংবা ড্রিম গার্ল থাকে, আমার মতো কতো কেট উইন্সলেট, এমা ওয়াটসন কিংবা ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ড এর সাথে এক রাত কাটানোর স্বপ্নে মন খারাপ করে কোলবালিশকে ধরেই ঘুমিয়ে পড়ে তার ইয়াত্তা নেই! গিয়ে আমার ঈশ্বরের কাছে আমি যদি চাই টেইলর সুইফট সৃষ্টিকর্তা কি আমাকে হতাশ করবেন?
আমি আগেই বলেছি এই বিষয়টা সোশাল সাইটে দিবোনা তাই এড়িয়ে চলে গেলাম!
যাইহোক, এইবার আবার সেই প্রথম বাক্যে আসা যাক,
চিন্তা করা যাক নরক, দোজখ, হেল কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই,
শুধু স্বর্গ আর পৃথিবী বর্তমান,
মৃত্যুর পর কি এই পৃথিবী অথবা স্বর্গ যেকোন এক জায়গায় যাওয়ার অনুমতি দিলে কোথায়...........

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:১৬

অয়ন নাজমুল বলেছেন: ভাই যা কইলেন সবই থিওরি। প্রাক্টিক্যাল জ্ঞানের বড়ই অভাব। পৃথিবীতে খুন, ধর্ষন, জোচ্চুরি, জংগী, আইএস কতকিছু আছে। কাইল যদি নিউজ পান যে আপনের ছোট বোনেরে একদল কুত্তা ধর্ষণ কইরা জংলার ভিতর মাইরা ফালাই থুই গেছে আপনের আর বাইচা থাকতে ইচ্ছা করবো?? আর স্বর্গে প্রেম নাই বলছে কে? স্বর্গেও প্রেম আছে। অবিবাহিত পুলা মাইয়া যারা মারা যাইব তারা স্বর্গে গিয়া প্রেম করলে দোষ কি? আর হুরের সাথে যৌনতা আর প্রেমিকা সাথে যৌনতা কখনো এক হইবো না। অইটা ফ্রি বা এক্সট্রা। :p

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৩৩

সাঈদ নওশাদ বলেছেন: সাচ্চা, কিন্তু আমি চাই যারে হেয় চায় অন্যরে! আবার সবার ইচ্চাই পুরন করা লাগবো! কি প্যাচ!

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৩৬

অয়ন নাজমুল বলেছেন: হে হে লাইনে আইছেন.... যে কোন একজন জিতবে। অন্যজনরে সম্পুরক নতুন কিছু দেওয়া হইবে :v :v :v

৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:৩৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



"হুর ও অপ্সরাদের কথা বলে, ধর্মগুলো এক বাক্যেই হাজার বছরের প্রসারকে ধ্বংস করেছে"

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৩

আনিকা সালসাবিল নীলাঞ্জনা বলেছেন: দিধান্বিত হয়ে গেলাম!! স্বর্গ না পৃথিবী!! গবেষণা করতে হবে !

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৫

সাঈদ নওশাদ বলেছেন: আমি কখনোই রোবোটিক জীবন চাইনা, আমার জীবনে অভাব, প্রেম, না পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকতে হবে!

৫| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪১

সায়েম জামান বলেছেন: ধর্ম নিয়ে এমনিতেই আমার কিছু ভেজাল আছে। তো হেল বা হেভেন আছে নাকি সেইটাই আমার কাছে প্রশ্ন মনে হয়। আমি পৃথিবীতেই আসবো ^_^

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.