নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে জানাটা আদো সম্ভব হয়ে উঠে নি। জানার ইচ্ছাও নেই। আমি যা সেটা নিজেরই। তবে অন্যকে জানায় মজা আছে।

নুর রাজু

আমি এই শহরের অন্ধকার বাড়ির জীবিত প্রানী।

নুর রাজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাঁটছে মেঘপিয়ন

০৪ ঠা মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫৬

সব চায়েরই কোনো না কোনো রঙ থাকে। কিন্তু এই ধরনের চা কেই কেনো রঙ চা বলা হয়। এই ধরনের একটা ভাবনা ভাবতে ভাবতে চায়ের কাপে চুমুক দেয় জামিল। রাস্তার পাশের এক চায়ের দোকানে তার বর্তমান অবস্থান। চা দোকানী কম বয়সী। কোনো কারন ছাড়াই কিছুক্ষন পরপর তার দিকে পিটপিট করে তাকাচ্ছে। শহর খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। একটা সময় ছিলো চায়ের দোকানে অনেক আড্ডা হতো। আওয়ামীলীগ-বিএনপি নিয়ে প্রচন্ড বাকযুদ্ধ হতো। এক
পর্যায়ে এই বাকযুদ্ধের মাত্রা চরম পর্যায়ে চলে যেতো একপক্ষ অর্ধকাপ চা বাকি রেখেই এই আড্ডা বয়কট করতো। এখন আর এমন হয়না একজন দুইজন এসে তড়িঘড়ি করে চা শেষ করে সিগারেট ফুকতে ফুকতে চলে যায়। জামিল আয়েশ করেই রঙ চা খাচ্ছে। আর শহরের যান্ত্রিক মানুষগুলোকে দেখছে। এত মানুষ এই শহরে তবু যেনো প্রত্যেকের শহর আলাদা।
ঝড়ঝর করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে একদল কলেজ ছাত্র ছুটে এসে চায়ের দোকানে ঢুকেছে। মিনিট খানেকের মধ্যে চায়ের দোকানে বিশ জন লোক এসে আশ্রয় নিলো। এরা কিছুতেই বৃষ্টিতে ভিজবে না।
জামিল সিগারেট ধরিয়ে বিল চুকিয়ে রাস্তায় নামলো। ভেতর থেকে বৃষ্টিকে যত প্রবল লাগছিলো বৃষ্টি অতটা প্রবল না। জামিলের ভালো লাগছে কারন সিগারেট টা বৃষ্টিতে নিভে যাচ্ছে না। অরুনীর বৃষ্টি খুব পছন্দের। জামিল বৃষ্টিতে না ভিজলেও অরুনী একাই ভিজতো। সেটা জামিল অরুনীর সাথে দেখা হওয়ার প্রথম দিনেই বুঝতে পেড়েছিলো। বছর পাঁচেক আগের কথা। হাটু পানি ভেঙে মগবাজার রাস্তায় এগুচ্ছিলো জামিল বৃষ্টি তখন শেষের দিকে। বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার বিরক্তি কাটানোর জন্য সিগারেট ঠোঁটে দিয়ে ম্যাচকাঠি জালানোর চেষ্টা করছিলো সে। ভেজা বারুদগুলো জ্বলছে না। এমন সময় একটা অপরিচিত নারী কন্ঠ শুনতে পেলো সে
বৃষ্টির সময় সাথে লাইটার রাখবেন। ম্যাচে কাজ হবেনা।
জামিল ডান দিকে তাকালো, উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের এক মেয়ে উৎসাহী চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
আমার কাছে লাইটার আছে ওয়াটারপ্রুফ। নিন
জামিল সিগারেট ধরালো। ধন্যবাদ সুলভ হাসি হেসে লাইটার ফেরত দিতে দিতে বললো,
ম্যাচ ব্যবহারের মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রত্যকবার নতুন আগুন তৈরি করা।
মেয়েটা রাস্তার পানিতে ভাসতে থাকা ম্যাচের দিকে মায়াচোখে তাকিয়ে রইলো।
জামিল বললো,
আপনি পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে নেমেছিলেন নাকি?
হ্যা, তবে প্রস্তুতি পুরোপুরি নিতে পারিনি। ভুলে টাকাপয়সা বাসায় রেখে এসেছি।
বৃষ্টিও কি আজকাল কেনা বেচা হচ্ছে নাকি? জামিল জিজ্ঞেস করলো
না, আসলে আমার খুব এক কাপ চা খেতে ইচ্ছে করছে, একটা সিগারেট ও।
নিন সিগারেট নিন। বলেই আধভেজা প্যাকেট এগিয়ে দিলো জামিল।
আমার ব্র‍্যান্ড বেনসন লাইট। আমি গোল্ডলিফ খাইনা। একবার এক বন্ধুর থেকে খেয়েছিলাম মাথা ঘুরে পড়ে গেছি। হাসতে লাগলো মেয়েটা। একদম টানা হাসি। জামিলের মনে হতে লাগলো মেয়েটার হাসি বৃষ্টির মত ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে। জামিলের মন ভালো হয়ে গেলো। বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার বিরক্তিভাব পুরোপুরি কেটে গেলো।
আমারো চা খেতে ইচ্ছা করছে চলুন চা খাই।
মেয়েটা হাসতে হাসতেই বললো চলুন, সামনেই একটা চা দোকান আছে ওরা ভালো বানায়।
শহরে তৈরি হওয়া ছোট নদীতে ঢেউ ফেলে সাবধানে হাটতে লাগলো তারা।
পরের আধ ঘন্টায় জামিল এই মেয়েটির সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে ফেললো।
যেমন: ওর নাম অরুনী। ওর এক বোন ওকে ডাকে চিরুনি বলে। সিগারেট নাকি সে কেবল বৃষ্টি হলেই খায়। বাসা মালিবাগে। একটা প্রাইভেট কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ছে। কলেজের এক প্রফেসর নাকি তাকে মন্দ দৃষ্টিতে দেখে। প্রফেসরের নাম আব্দুল রশিদ। ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে ডাকে মুরগী স্যার বলে। কারন রেগে গেলে উনি নাকি মুরগির মতো শব্দ করে। আরও জানা গেলো সে প্রত্যেক বৃষ্টি তে ঢাকার এক বিশেষ জায়গায় যায় যেখানে নাকি বৃষ্টি উৎসব হয়। চা সিগারেট এর বিল দিয়ে তারা আবারো রাস্তায় নামলো। শহরের মানুষেরা আবার ছুটতে শুরু করেছে। অরুনী রিক্সায় উঠলো। যাওয়ার আগে বললো- চা-সিগারেটের জন্য ধন্যবাদ। আপনি চাইলে আমি আপনাকে সেই বৃষ্টি উৎসবে নিয়ে যেতে পারি। পরের বৃষ্টিতে।
কিভাবে?
মেঘলা আকাশ দেখলেই আমার বাসার নিচে চলে আসবেন ৩৮/এ মালিবাগ। দাড়োয়ানকে বললেই আমাকে খবর দিবে আমি চলে আসবো।
বলেই সে হুড তুললো। এই মেঘলা দিনেও কেনো সে হুড তুললো কে জানে।
জামিল তাকিয়ে রইলো রিক্সার দিকে।
জামিল ভেবেই নিয়েছিলো তাদের আর দেখা হবে না। তবুও শহরের বৃষ্টি তাদের দেখা করানোর দায়িত্ব নিয়েছিল।
এক মেঘলা দিনে জামিল হাজির হলো মালিবাগ। সাদা ধবধবে একটা পাঁচতলা বাড়ি। বাড়ির সামনে একটা জবা গাছ বাইরে উঁকি মেরে আছে। বাড়ির নাম সিনথিয়া মহল। দাড়োয়ানকে অরুনীর নাম বলা মাত্র সে খবর পাঠালো।
পনেরো মিনিট অপেক্ষা করতে হলো জামিলকে। পনেরো মিনিট পর নেমে এলো অরুনী। সাদা ধবধবে একটা জামা পড়ায় তাকে এই দালানেরই অংশ মনে হতে লাগলো। জীবন্ত এক দালান যেনো এখনি বলে উঠবে হ্যালো জামিল।
বাহ! বৃষ্টির আগেই চলে এসেছেন।
বৃষ্টি তো ক্ষণস্থায়ী তাই ভেবেই আগে আগে চলে আসলাম।
হা হা হা। ভালো করেছেন। তবে আমার কেনো জেনো মনে হচ্ছে আজ বৃষ্টি হবেনা।
নিশ্চুপ হয়ে তাকিয়ে রয় জামিল।
মন খারাপ করছেন নাকি?
না তো।
সমস্যা নেই বৃষ্টি হোক আর না হোক বৃষ্টি উৎসব দেখতে যাবো আমরা।
জামিলের মনে শীতলতা অনূভুত হল। এত সুন্দর করেও কি কেউ কথা বলতে পাড়ে...
শহর কোনো কারন ছাড়াই নীরব হয়ে আছে। সেই নীরবতার আবহ ভঙ না করেই হেটে যেতে থাকলো জামিল আর অরুনী।
অরুনী জামিলকে যে জায়গায় নিয়ে গেছে সেটা জামিল আগে থেকেই চেনে। সোহরাউর্দ্দী উদ্যানে এর আগেও অনেকবার এসেছে জামিল। তবুও যেনো জায়গাটাকে অচেনা লাগছে তার। সোহরাউর্দী উদ্যানের একপাশে বস্তা টানিয়ে কিছু পরিবার বাস করে। এদের মধ্যে যেসব শিশু আছে তাদের কাজ হচ্ছে ফুলের মালা বানিয়ে উদ্যানে ঘুরতে আসা প্রেমিক যুগলদের হাতেপায়ে ধরে বিক্রি করা। এমনি একটা পরিবারের পলিথিন টানানো তাবুর তলে বসে আছে অরুনী আর জামিল। তাদের দেখে বিরাট ছুটোছুটি শুরু হয়েছে। ইট দিয়ে চুলো বানানো হয়েছে। উদ্যানে শুকনো ডালপালা কুড়িয়ে সেই চুলাও ধরানো হয়েছে। চুলায় খিচুরে নামক এক বস্তু রান্না হচ্ছে। অরুনীকে দেখে খুব স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। জেনো সে এই পরিবারের ই সদস্য। এই পরিবারের মহিলাদের সাথে পান খেয়ে সে হাসাহাসি করছে। তার ঠোঁট বেয়ে গড়িয়ে পরছে পানের রস।





সব চায়েরই কোনো না কোনো রঙ থাকে। কিন্তু এই ধরনের চা কেই কেনো রঙ চা বলা হয়। এই ধরনের একটা ভাবনা ভাবতে ভাবতে চায়ের কাপে চুমুক দেয় জামিল। রাস্তার পাশের এক চায়ের দোকানে তার বর্তমান অবস্থান। চা দোকানী কম বয়সী। কোনো কারন ছাড়াই কিছুক্ষন পরপর তার দিকে পিটপিট করে তাকাচ্ছে। শহর খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। একটা সময় ছিলো চায়ের দোকানে অনেক আড্ডা হতো। আওয়ামীলীগ-বিএনপি নিয়ে প্রচন্ড বাকযুদ্ধ হতো। এক
পর্যায়ে এই বাকযুদ্ধের মাত্রা চরম পর্যায়ে চলে যেতো একপক্ষ অর্ধকাপ চা বাকি রেখেই এই আড্ডা বয়কট করতো। এখন আর এমন হয়না একজন দুইজন এসে তড়িঘড়ি করে চা শেষ করে সিগারেট ফুকতে ফুকতে চলে যায়। জামিল আয়েশ করেই রঙ চা খাচ্ছে। আর শহরের যান্ত্রিক মানুষগুলোকে দেখছে। এত মানুষ এই শহরে তবু যেনো প্রত্যেকের শহর আলাদা।
ঝড়ঝর করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে একদল কলেজ ছাত্র ছুটে এসে চায়ের দোকানে ঢুকেছে। মিনিট খানেকের মধ্যে চায়ের দোকানে বিশ জন লোক এসে আশ্রয় নিলো। এরা কিছুতেই বৃষ্টিতে ভিজবে না।
জামিল সিগারেট ধরিয়ে বিল চুকিয়ে রাস্তায় নামলো। ভেতর থেকে বৃষ্টিকে যত প্রবল লাগছিলো বৃষ্টি অতটা প্রবল না। জামিলের ভালো লাগছে কারন সিগারেট টা বৃষ্টিতে নিভে যাচ্ছে না। অরুনীর বৃষ্টি খুব পছন্দের। জামিল বৃষ্টিতে না ভিজলেও অরুনী একাই ভিজতো। সেটা জামিল অরুনীর সাথে দেখা হওয়ার প্রথম দিনেই বুঝতে পেড়েছিলো। বছর পাঁচেক আগের কথা। হাটু পানি ভেঙে মগবাজার রাস্তায় এগুচ্ছিলো জামিল বৃষ্টি তখন শেষের দিকে। বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার বিরক্তি কাটানোর জন্য সিগারেট ঠোঁটে দিয়ে ম্যাচকাঠি জালানোর চেষ্টা করছিলো সে। ভেজা বারুদগুলো জ্বলছে না। এমন সময় একটা অপরিচিত নারী কন্ঠ শুনতে পেলো সে
বৃষ্টির সময় সাথে লাইটার রাখবেন। ম্যাচে কাজ হবেনা।
জামিল ডান দিকে তাকালো, উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের এক মেয়ে উৎসাহী চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
আমার কাছে লাইটার আছে ওয়াটারপ্রুফ। নিন
জামিল সিগারেট ধরালো। ধন্যবাদ সুলভ হাসি হেসে লাইটার ফেরত দিতে দিতে বললো,
ম্যাচ ব্যবহারের মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রত্যকবার নতুন আগুন তৈরি করা।
মেয়েটা রাস্তার পানিতে ভাসতে থাকা ম্যাচের দিকে মায়াচোখে তাকিয়ে রইলো।
জামিল বললো,
আপনি পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে নেমেছিলেন নাকি?
হ্যা, তবে প্রস্তুতি পুরোপুরি নিতে পারিনি। ভুলে টাকাপয়সা বাসায় রেখে এসেছি।
বৃষ্টিও কি আজকাল কেনা বেচা হচ্ছে নাকি? জামিল জিজ্ঞেস করলো
না, আসলে আমার খুব এক কাপ চা খেতে ইচ্ছে করছে, একটা সিগারেট ও।
নিন সিগারেট নিন। বলেই আধভেজা প্যাকেট এগিয়ে দিলো জামিল।
আমার ব্র‍্যান্ড বেনসন লাইট। আমি গোল্ডলিফ খাইনা। একবার এক বন্ধুর থেকে খেয়েছিলাম মাথা ঘুরে পড়ে গেছি। হাসতে লাগলো মেয়েটা। একদম টানা হাসি। জামিলের মনে হতে লাগলো মেয়েটার হাসি বৃষ্টির মত ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে। জামিলের মন ভালো হয়ে গেলো। বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার বিরক্তিভাব পুরোপুরি কেটে গেলো।
আমারো চা খেতে ইচ্ছা করছে চলুন চা খাই।
মেয়েটা হাসতে হাসতেই বললো চলুন, সামনেই একটা চা দোকান আছে ওরা ভালো বানায়।
শহরে তৈরি হওয়া ছোট নদীতে ঢেউ ফেলে সাবধানে হাটতে লাগলো তারা।
পরের আধ ঘন্টায় জামিল এই মেয়েটির সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে ফেললো।
যেমন: ওর নাম অরুনী। ওর এক বোন ওকে ডাকে চিরুনি বলে। সিগারেট নাকি সে কেবল বৃষ্টি হলেই খায়। বাসা মালিবাগে। একটা প্রাইভেট কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ছে। কলেজের এক প্রফেসর নাকি তাকে মন্দ দৃষ্টিতে দেখে। প্রফেসরের নাম আব্দুল রশিদ। ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে ডাকে মুরগী স্যার বলে। কারন রেগে গেলে উনি নাকি মুরগির মতো শব্দ করে। আরও জানা গেলো সে প্রত্যেক বৃষ্টি তে ঢাকার এক বিশেষ জায়গায় যায় যেখানে নাকি বৃষ্টি উৎসব হয়। চা সিগারেট এর বিল দিয়ে তারা আবারো রাস্তায় নামলো। শহরের মানুষেরা আবার ছুটতে শুরু করেছে। অরুনী রিক্সায় উঠলো। যাওয়ার আগে বললো- চা-সিগারেটের জন্য ধন্যবাদ। আপনি চাইলে আমি আপনাকে সেই বৃষ্টি উৎসবে নিয়ে যেতে পারি। পরের বৃষ্টিতে।
কিভাবে?
মেঘলা আকাশ দেখলেই আমার বাসার নিচে চলে আসবেন ৩৮/এ মালিবাগ। দাড়োয়ানকে বললেই আমাকে খবর দিবে আমি চলে আসবো।
বলেই সে হুড তুললো। এই মেঘলা দিনেও কেনো সে হুড তুললো কে জানে।
জামিল তাকিয়ে রইলো রিক্সার দিকে।
জামিল ভেবেই নিয়েছিলো তাদের আর দেখা হবে না। তবুও শহরের বৃষ্টি তাদের দেখা করানোর দায়িত্ব নিয়েছিল।
এক মেঘলা দিনে জামিল হাজির হলো মালিবাগ। সাদা ধবধবে একটা পাঁচতলা বাড়ি। বাড়ির সামনে একটা জবা গাছ বাইরে উঁকি মেরে আছে। বাড়ির নাম সিনথিয়া মহল। দাড়োয়ানকে অরুনীর নাম বলা মাত্র সে খবর পাঠালো।
পনেরো মিনিট অপেক্ষা করতে হলো জামিলকে। পনেরো মিনিট পর নেমে এলো অরুনী। সাদা ধবধবে একটা জামা পড়ায় তাকে এই দালানেরই অংশ মনে হতে লাগলো। জীবন্ত এক দালান যেনো এখনি বলে উঠবে হ্যালো জামিল।
বাহ! বৃষ্টির আগেই চলে এসেছেন।
বৃষ্টি তো ক্ষণস্থায়ী তাই ভেবেই আগে আগে চলে আসলাম।
হা হা হা। ভালো করেছেন। তবে আমার কেনো জেনো মনে হচ্ছে আজ বৃষ্টি হবেনা।
নিশ্চুপ হয়ে তাকিয়ে রয় জামিল।
মন খারাপ করছেন নাকি?
না তো।
সমস্যা নেই বৃষ্টি হোক আর না হোক বৃষ্টি উৎসব দেখতে যাবো আমরা।
জামিলের মনে শীতলতা অনূভুত হল। এত সুন্দর করেও কি কেউ কথা বলতে পাড়ে...
শহর কোনো কারন ছাড়াই নীরব হয়ে আছে। সেই নীরবতার আবহ ভঙ না করেই হেটে যেতে থাকলো জামিল আর অরুনী।
অরুনী জামিলকে যে জায়গায় নিয়ে গেছে সেটা জামিল আগে থেকেই চেনে। সোহরাউর্দ্দী উদ্যানে এর আগেও অনেকবার এসেছে জামিল। তবুও যেনো জায়গাটাকে অচেনা লাগছে তার। সোহরাউর্দী উদ্যানের একপাশে বস্তা টানিয়ে কিছু পরিবার বাস করে। এদের মধ্যে যেসব শিশু আছে তাদের কাজ হচ্ছে ফুলের মালা বানিয়ে উদ্যানে ঘুরতে আসা প্রেমিক যুগলদের হাতেপায়ে ধরে বিক্রি করা। এমনি একটা পরিবারের পলিথিন টানানো তাবুর তলে বসে আছে অরুনী আর জামিল। তাদের দেখে বিরাট ছুটোছুটি শুরু হয়েছে। ইট দিয়ে চুলো বানানো হয়েছে। উদ্যানে শুকনো ডালপালা কুড়িয়ে সেই চুলাও ধরানো হয়েছে। চুলায় খিচুরে নামক এক বস্তু রান্না হচ্ছে। অরুনীকে দেখে খুব স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। জেনো সে এই পরিবারের ই সদস্য। এই পরিবারের মহিলাদের সাথে পান খেয়ে সে হাসাহাসি করছে। তার ঠোঁট বেয়ে গড়িয়ে পরছে পানের রস।





মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫৮

নুর রাজু বলেছেন: চলবে....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.