নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়’। এই অমোঘ সত্যের কাছে হার মেনে গত বছর যারা হারিয়ে গেছেন কালের গর্ভে, আমরা তোমাদের ভুলবো না

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৬


‘যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়’। এই অমোঘ সত্যের কাছে হার মেনে গত বছর কালের গর্ভে হারিয়ে গেছেন আমাদের অনেক কীর্তিমান মানুষ যারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে রেখে গেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।২০১৭ সালে ২৯ সংসদ সদস্য চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৬ জন সাবেক। সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। দলটির সাবেক ও বর্তমান মিলে ১৩ সংসদ সদস্য মারা গেছেন। আর দেশের অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপির ১১ সাংসদ মারা গেছেন। তাদের মধ্যে একজন সাবেক রাষ্ট্রপতিও রয়েছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির চারজন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের একজন সাবেক সংসদ সদস্য মারা যান। যাদের স্থান কখনোই পূরণ হবার নয়। তবে কীর্তিমানের মৃত্যু হয় না। বর্ণাঢ্য কর্মজীবন তাদের শ্রদ্ধেয় করে রাখবে চিরদিন। চোখের দেখাতে না থেকেও তাঁরা থেকে যাবেন আমাদের অন্তরে অন্তরে, সব সাফল্যের অনুপ্রেরণায়। তাদের হারানোর শোক বুকে নিয়েই নতুন বছরের যাত্রা শুরু হবে আমাদের।

বিচারপতি বজলুর রহমানঃ ২০১৭ সালের শুরু। নতুন বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান । বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ ক্যানসারে ভুগছিলেন। ১৯৫৫ সালের ১২ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০১ সালের ০৩ জুলাই হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান মোহাম্মদ বজলুর রহমান। দুই বছর পর তাকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়নি। ২০০৯ সালের ১০ মে হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। এরপর গত বছরের ০৮ এপ্রিল আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।

সাবেক প্রধান বিচারপতি এম এম রুহুল আমিনঃ ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এম এম রুহুল আমিন । সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি এম এম রুহুল আমিনের ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল। দেশের ১৬ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০০৮ সালের ১ জুন দায়িত্ব নেন। ২০০৯ সালের ২২ ডিসেম্বর তিনিঅবসরে যান । রুহুল আমিনের জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩ ডিসেম্বর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে এমএ এবং ১৯৬৬ সালে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন রুহুল আমিন। তিনি ১৯৬৭ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৮৪ সালে জেলা ও দায়রা জজ হন। ১৯৯৪ সালের ১০ ফ্রেব্রুয়ারি তিনি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হন। পরে ২০০৩ সালের ১৩ জুলাই আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান । বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে রুহুল আমিন ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

আলী বেহরুজ ইস্পাহানিঃ ২৩ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারম্যান মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানি। ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে তিনি মারা যান। হোসেনি দালান কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। ১৯৫০ সালের ৩০ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানি। মির্জা আলী বেহরুজ ইস্পাহানি ছিলেন ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারম্যান। তিনি অর্থনীতিবিষয়ক ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর উদ্যোক্তা পরিচালক ছিলেন । ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের অন্যতম সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইনস্টিটিউট ও ইস্পাহানি পাবলিক স্কুলের কর্ণধার হিসেবে তিনি অনেক জনহিতকর কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০০৪ সাল থেকে ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারপারসনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

গীতিকার কুটি মনসুরঃ ২৪ জানুয়ারি জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন গায়ক, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক কুটি মনসুর। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান । লোকজ গানের জগতে অন্যতম পুরোধা ব্যক্তি কুটি মনসুর ১৯২৬ সালে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন থানার লোহারটেক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কুটি মনসুর দীর্ঘ ৬০ বছরের সংগীতজীবনে পল্লিগীতি, আধুনিক, জারি-সারি, পালাগান, পুঁথিপাঠ, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, মারফতি, আধ্যাত্মিক, দেহতত্ত্ব, হামদ-নাত, ইসলামি প্রভৃতি বিষয়ে প্রায় আট হাজার গান লিখেছেন। এর মধ্যে ‘আইলাম আর গেলাম’, ‘যৌবন জোয়ার একবার আসে রে’, ‘আমি কি তোর আপন ছিলাম না রে জরিনা’, ‘কে বলে মানুষ মরে’, ‘হিংসা আর নিন্দা ছাড়ো’, ‘সাদা কাপড় পরলে কিন্তু মনটা সাদা হয় না’সহ বেশ কিছু গান দারুণ জনপ্রিয় হয়।

আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তঃ ০৫ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি মারা যান। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ছিলেন। তিনি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিরও সভাপতি ছিলেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জন্ম হয়েছিল ১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জের আনোয়ারাপুরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করার পর সেন্ট্রাল ল' কলেজ থেকে এলএলবি করেন। এর পরে তিনি আইন পেশায় যুক্ত হন। আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সুপ্রিমকোর্ট বার কাউন্সিলেরও সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটিরও একজন কনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন তিনি। এ ছাড়া দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদসহ মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বেও ছিলেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর তিনি রেলমন্ত্রী হন।

চিত্রপরিচালক ইবনে মিজানঃ ২৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় নিজের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন মৃত্যুবরণ করেন চিত্রপরিচালক ইবনে মিজান। ১৯৯০ সালে চলচ্চিত্রাঙ্গন ছেড়ে সপরিবারে ক্যালিফোর্নিয়ায় পাড়ি জমান। ইবনে মিজান ১৯৩৭ সালে সিরাজগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৪ সালে আওর গাম নেহী নামে উর্দু চলচ্চিত্র নির্মাণ করে পা রাখেন চলচ্চিত্র অঙ্গনে। পরের বছর নির্মাণ করেন রূপবান। চলচ্চিত্রটির ব্যাপক সাফল্যের পর নির্মাণ করেন আবার বনবাসে রূপবান। তারপর একে একে নির্মাণ করেন একমুঠো ভাত, নিশান, রাখাল বন্ধু, লাইলি মজুন নামের চলচ্চিত্র। লোককাহিনি-নির্ভর ছবিতে ধীরে ধীরে নিজের আসন পোক্ত করেন তিনি। পরে সামাজিক ও অ্যাকশনধর্মী ছবি নির্মাণেও হাত দেন। তাঁর নির্মিত ছবিগুলোর তালিকায় আছে বাঁশের কেল্লা, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, পাতালপুরীর রাজকন্যা, আমির সওদাগর ও ভেলুয়া সুন্দরী, শহীদ তিতুমীর, নাগিনীর প্রেম, ডাকু মনসুর, জিঘাংসা, দুই রাজকুমার, বাহাদুর, তাজ ও তলোয়ার, নাগ নাগিনীর প্রেম, বাগদাদের চোর, রাজকুমারী, রাজ নর্তকী, বসন্তমালতি, বাহাদুর, নওজোয়ান প্রভৃতি।

অভিনেতা মিজু আহমেদঃ ২৭ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা মিজু আহমেদ । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৪ বছর। মিজু আহমেদ ১৯৫৩ সালের ১৭ নভেম্বর কুষ্টিয়ার জনগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে 'তৃষ্ণা' চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি অভিনেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। কয়েক বছর পরে তিনি ঢালিউড চলচ্চিত্র শিল্পে অন্যতম সেরা একজন খলনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি তার নিজের চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা ফ্রেন্ডস মুভিজের ব্যানারে বেশ কয়েককটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন। মিজু অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে তৃষ্ণা (১৯৭৮), মহানগর (১৯৮১), সারেন্ডার (১৯৮৭), চাকর (১৯৯২), সোলেমান ডাঙ্গা (১৯৯২), ত্যাগ (১৯৯৩), বশিরা (১৯৯৬), আজকের সন্ত্রাসী (১৯৯৬), হাঙ্গর নদী গ্রেনেড (১৯৯৭), কুলি (১৯৯৭), লাঠি (১৯৯৯), লাল বাদশা (১৯৯৯), গুন্ডা নাম্বার ওয়ান (২০০০), ঝড় (২০০০), কষ্ট (২০০০), ওদের ধর (২০০২), ইতিহাস (২০০২), ভাইয়া (২০০২), হিংসা প্রতিহিংসা (২০০৩), বিগ বস (২০০৩), আজকের সমাজ (২০০৪), মহিলা হোস্টেল (২০০৪), ভন্ড ওঁঝা (২০০৬) ইত্যাদি।

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) এ এ মারুফঃ ১৮ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন নীলফামারী- ৪ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) এ এ মারুফ সাকলান । ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। এ এ মারুফ সাকলানের জন্ম ১৯৪৪ সালের ৩ মে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাজে ডুমুরিয়া গ্রামে। কর্নেল (অব.) এ এ মারুফ সাকলান পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন অনুসারী। সামরিক বাহিনীর চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ১৯৮৯ সাল থেকে নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কর্নেল (অব.) এ এ মারুফ সাকলান নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। নবম সংসদে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।

সংগীতশিল্পী লাকী আখান্দঃ ২১ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লাকী আখান্দ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। তাঁর সংগীতায়োজনে করা বিখ্যাত গানের মধ্যে রয়েছে ‘এই নীল মনিহার’, ‘আবার এল যে সন্ধ্যা’ এবং ‘আমায় ডেকো না’। লাকী আখান্দের জন্ম ১৯৫৫ সালে, পুরান ঢাকায়। লাকী আখান্দ ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে শয্যাশায়ী ছিলেন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হলে ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে লাকী আখান্দের। এরপর ব্যাংককে ছয় মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। অবস্থার একটু উন্নতি হলে এ বছরের ফ্রেব্রæয়ারিতে দেশে এনে তাঁকে ভর্তি করানো হয় বিএসএমএমইউতে। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই এইচএমভি পাকিস্তানের সুরকার এবং ১৬ বছর বয়সে এইচএমভি ভারতের সংগীত পরিচালক হিসেবে নিজের নাম যুক্ত করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে যোগ দেন লাকী আখান্দ।

এনপিপি চেয়ারম্যান শওকত হোসেন নিলুঃ ০৬ মে মৃত্যুবরণ করেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান (এনপিপি) শেখ শওকত হোসেন নিলু । রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা ছিলেন নিলু। পরে প্রধানমন্ত্রীর ইফতার পার্টিতে যোগ দেয়ার জের ধরে একসময় জোট থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়।

কূটনীতিক ফারুক চৌধুরীঃ ১৭ মে মৃত্যুবরণ করেন বিশিষ্ট কূটনীতিক ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক আহমদ চৌধুরী। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন । ফারুক চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৪ সালের ১৪ জানুয়ারি সিলেট জেলার করিমগঞ্জে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৫ সালে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে তিনি ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন। ফারুক আহমদ চৌধুরী ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত লন্ডনে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার ছিলেন। ১৯৭৬ সালে আবুধাবিতে, ১৯৭৮ সালে বেলজিয়ামে, পরবর্তীতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওআইসির চতুর্দশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলন এবং ১৯৮৫ সালে প্রথম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের সমন্বয়ক ছাড়াও তিনি জাতিসংঘ এবং অন্যান্য অনেক গ্ররুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থায় দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ফারুক আহমদ চৌধুরী ১৯৮৪ সালে পররাষ্ট্র সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। সাহিত্যের প্রতি ছোটকাল থেকেই ঝোঁক ছিল ফারুক চৌধুরীর। তার প্রকাশিত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘জীবনের বালুকাবেলায়’ বইটি শুধু কূটনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ দলিল নয়, বাংলা গদ্যসাহিত্যেরও অনন্য সংযোজন। এই বইয়ের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, এছাড়া আইএফআইসি পুরস্কারও প্রাপ্ত হয়েছেন।

চিত্রশিল্পী সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদঃ ২০ মে মৃত্যুবরণ করেন অপরাজেয় বাংলা’র ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ। রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান । আব্দুল্লাহ খালিদ দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনের ‘অপরাজেয় বাংলা’ তার বিখ্যাত ভাস্কর্য। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনের সামনে রয়েছে তার তৈরি ম্যুরাল ‘আবহমান বাংলা’। বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের টেরাকোটার ভাস্কর্যটিও তার তৈরি। আব্দুল্লাহ খালিদ শিল্পকলা ও ভাস্কর্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদক এবং ২০১৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।

জাগপা সভাপতি শফিউল আলমঃ ২১ মে মৃত্যুবরণ করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান। রাজধানীর আসাদগেটে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন । বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৪ সালের এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে সাত ছাত্রকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়েন। সে সময় কারাগারে যেতে হলেও পরে জিয়াউর রহমানের সময়ে তিনি মুক্তি পান এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি গঠন করেন।

সাবেক প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমানঃ ৬ জুন মৃত্যুবরণ করেন তত্ত¡বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান । রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান । লতিফুর রহমানের জন্ম ১৯৩৬ সালে। ১৯৭৯ সালে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হন তিনি। ১৯৮১ সালে স্থায়ী বিচারপতি হন। ১৯৯০ সালে আপিল বিভাগের বিচারপতি হন তিনি। ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। ২০০১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ২০০১ সালের তত্ত¡বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।

সংগীতজ্ঞ সুধীন দাশঃ ২৭ জুন মৃত্যুবরণ করেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ ও সংগীত গবেষক সুধীন দাশ। রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। সুধীন দাশ তাঁর জীবনের পুরোটা সময় দিয়ে গেছেন গানের পেছনে। গান গাওয়ার পাশাপাশি সুর করেছেন, সংগীত পরিচালনা করেছেন সংগীত নিয়ে নিরলসভাবে গবেষণার কাজটিও করে গেছেন তিনি। সুধীন দাশ ১৯৮৮ সালে একুশে পদক পাওয়ার পাশাপাশি পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও সম্মাননা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা’ ও ‘সিটিসেল-চ্যানেল আই আজীবন সম্মাননা’। ১৯৩০ সালে কুমিল্লা শহরের তালপুকুরপাড়ের বাগিচাগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন সুধীন দাশগুপ্ত।

প্রবীণ অভিনেতা নাজমুল হুদা বাচ্চুঃ ২৮ জুন মৃত্যুবরণ করেন চলচ্চিত্র ও নাটকের প্রবীণ অভিনেতা নাজমুল হুদা বাচ্চু। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। নাজমুল হুদা বাচ্চু জীবদ্দশায় অনেক চলচ্চিত্র ও নাটকে অভিনয় করেছেন। জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র বিভিন্ন নাট্যাংশে নিয়মিত দেখা গেছে তাঁকে। প্রবীণ এ অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’, ‘অলংকার’, ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘রানওয়ে’, ‘চন্দ্রগ্রহণ’, ‘ডাক্তার বাড়ী’, ‘বিদ্রোহী পদ্মা’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দরিয়াপাড়ের দৌলতি’, ‘সারেং বৌ’ ও ‘বেহুলা-লখিন্দর’।

মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক মামাঃ ৩০ জুন মৃত্যুবরণ করেন মুক্তিযুদ্ধকালে মামা গেরিলা বাহিনীর প্রধান সুইডেন প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক মামা। মুক্তিযুদ্ধকালে ২ নম্বর সেক্টরের মেলাঘর ইউনিটের প্রধান শহীদুল হক। সে সময় বিহারিদের দখলে থাকা দুর্ভেদ্য ঘাঁটি মিরপুর মুক্ত করেন। একাত্তরের এই গেরিলা যোদ্ধা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে করা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের দ্বিতীয় সাক্ষী ছিলেন।

হরিধান খ্যাত হরিপদ কাপালীঃ ৫ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন হরি ধান খ্যাত হরিপদ কাপালী। ঝিনাইদহের সাধুহাটি ইউনিয়নের আসাননগরে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। বেশি ফলনের হরি ধানের জন্য তিনি একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন। হরিপদ কাপালী ১৯২২ সালে আসাননগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে কৃষি কাজ শুরু করেন হরিপদ। ২০০৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর হরিপদকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর সরকারিভাবে তাঁর ধানের স্বীকৃতি মেলে, নাম দেওয়া হয় হরি ধান। ২০০৬ সালে চ্যানেল আই তাঁকে চ্যানেল আই কৃষি পদক প্রদান করেন। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সংগঠন থেকে পুরস্কৃত হন।

অধ্যাপক ড. রাজীব হুমায়ুনঃ ০৫ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন বিশিষ্ট ভাষাবিদ, নজরুল গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. রাজীব হুমায়ুন। ১৯৫০ সালে সন্দ্বীপে জন্ম নেয়া হুমায়ুন ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে যোগ দেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে এবং ভাষাবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসনও ছিলেন তিনি। যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর হাতে নির্যাতনে নিহত কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমের বড় ভাই রাজীব হুমায়ুন। তিনি মীর কাসেমের মামলার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন। ১৯৭৮ সাল থেকে উদীচীর প্রেসিডেন্ট হন তিনি। ঢাবির সিনেট ও নীল দলেরও সদস্য ছিলেন।

বিচারপতি আনোয়ারুল হকঃ ১৩ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন । বিচারপতি আনোয়ারুল হক ১৯৫৬ সালের ১ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালের ১৫ নভেম্বর তিনি জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৮১ সালে ১ ডিসেম্বর তিনি মুনসেফ (সহকারী জজ) হিসেবে বিচার বিভাগে যোগ দেন। ১৯৯৭ সালের ১৩ জুলাই জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে তিনি পদোন্নতি পান। ২০১০ সালের ১২ ডিসেম্বর তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে তিনি আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের (চলতি দায়িত্ব) সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর আনোয়ারুল হক হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ওই বছরের ২৫ মার্চ তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সদস্য নিযুক্ত হন। পুনর্গঠনের পর ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।

বিচারপতি কাজী এটি মনোয়ার উদ্দিনঃ ১৫ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি কাজী এটি মনোয়ার উদ্দিন। তিনি রাজধানীর এ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। বাগেরহাটের নিজ বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।

খল অভিনেতা আবদুর রাতিনঃ ১৮ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন দেশের অন্যতম খল অভিনেতা আবদুর রাতিন। রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রের গুণী অভিনেতা আবদুর রাতিন ১৯৭০ সালে মেস্তফা মাহমুদ পরিচালিত ‘নতুন প্রভাত’ সিনেমার মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন। তিনি খল অভিনেতা হিসেবেই বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। রাতিন অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘দেবদাস’, ‘শুকতারা’, ‘জবাব চাই’, ‘স্নেহের প্রতিদান’, ‘চোরের বউ’, ‘মহান বন্ধু’, ‘লালু সর্দার’, ‘স্বার্থপর’, ‘হারানো সুর’ প্রভৃতি। তার অভিনীত মঞ্চ নাটকের সংখ্যাও শতাধিক। টিভি নাটকে তিনি ১৯৭২ সাল থেকে শুরু করে এখনো নিয়মিত অভিনয় করছিলেন। ২০০-এর বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘মহুয়ার মন’, ‘অভিনেতা’, ‘ ‘বোবাকাহিনী’, ‘গৃহবাসী’, ‘রত্নদ্বীপ’ প্রভৃতি। রাতিন অভিনীত প্রচার-চলতি ধারাবাহিক নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘রুপালি প্রান্তর’।

মুক্তিযুদ্ধের সাব-সেক্টর কমান্ডার জিয়াউদ্দিনঃ ২৮ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের নবম সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার ও আওয়ামী লীগ নেতা মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদ। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিন আহমেদ ১৯৫০ সালের ডিসেম্বরে পিরোজপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আফতাব উদ্দিন আহমেদ পিরোজপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। জিয়াউদ্দিন আহমেদ ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। ১৯৬৮ সালে তিনি পিরোজপুর মহকুমা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নবম সেক্টরের সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থায় কর্মরত ছিলেন জিয়াউদ্দিন। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর মেজর পদে থাকা অবস্থায় জিয়াউদ্দিন চাকরিচ্যুত হন। ১৯৮৯ সালে পিরোজপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জিয়াউদ্দিন। মুক্তিযুদ্ধের নবম সেক্টরের কমান্ডার মেজর (অব.) এম এ জলিলের ঘনিষ্ঠ জিয়াউদ্দিন ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।

সাবেক মন্ত্রী ও বিশিষ্ট শিল্পপতি হারুনার রশিদ খান মুন্নুঃ ০১ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ও বিশিষ্ট শিল্পপতি হারুনার রশিদ খান মুন্নু। মানিকগঞ্জের নিজ বাসভবন গিলন্ডে তিনি মারা যান । মুন্নু দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। মুন্নু ১৯৯১ সালে মানিকগঞ্জ-২ (শিবালয়-হরিরামপুর) আসনে বিএনপির হয়ে নির্বাচন করে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালেও তিনি ওই আসন থেকে অনায়াসে জয়লাভ করেন। ২০০১ সালে এই আসনের পাশাপাশি মানিকগঞ্জ-৩ (সদর- সাটুরিয়া) আসনেও জিতেন মুন্নু। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তাকে মন্ত্রী করা হলেও সে সময় তাকে কোন দপ্তর দেয়া হয়নি। মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ছিলেন মুন্নু।

নায়করাজ রাজ্জাকঃ ২১ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী নায়করাজ রাজ্জাক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী নায়করাজ পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন কিংবদন্তি নায়ক রাজ্জাক। সেখানেই ছোটবেলা কাটে। মঞ্চনাটকে অভিনয়ের হাতে খড়িও সেখানে। রাজ্জাক শুধু নায়ক হিসেবেই নয়, পরিচালক হিসেবেও বেশ সফল। ‘আয়না কাহিনী’সহ কয়েকটি ছবিটি নির্মাণ করেন তিনি। ১৯৬৬ সালে ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ঢাকাই ছবিতে দর্শকনন্দিত হন কিংবদন্তি এ অভিনেতা। নায়করাজের দুই ছেলে বাপ্পারাজ ও সম্রাটও চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী।

শিল্পী আবদুল জব্বারঃ ৩০ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন বিখ্যাত অনেক গানের শিল্পী আবদুল জব্বার। অনেক দিন ধরে বিএসএমএমইউয়ের আইসিইউতে অসুস্থ আবদুল জব্বারের চিকিৎসা চলছিল। আবদুল জব্বার ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে তাঁর গান গাওয়া শুরু। ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ ছবিতে সত্য সাহার সুরে তাঁর গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৬৮ সালে ‘পিচ ঢালা পথ’ ছবিতে রবীন ঘোষের সুরে ‘পিচ ঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি’ এবং ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’ ছবিতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেয়ো নাকো আর কিছুক্ষণ থাকো’ গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৭৮ সালে ‘সারেং বৌ’ চলচ্চিত্রে আলম খানের সুরে ‘ওরে নীল দরিয়া’ গানটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা জোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ অসংখ্য গানে কণ্ঠ দেন। তাঁর গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন।সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আবদুল জব্বার ১৯৮০ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।

সাংবাদিক কাজী সিরাজঃ ৩১ আগষ্ট মৃত্যুবরণ করেন সাংবাদিক, কলামিস্ট ও রাজনৈতিক সংবাদ বিশ্লেষক মুক্তিযোদ্ধা কাজী সিরাজ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। কাজী সিরাজ বিএনপির মুখপাত্র দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘদিন। তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে রাজনৈতিক নিবন্ধ লিখতেন। টেলিভিশন টকশোতেও নিয়মিত অংশ নিতেন। কাজী সিরাজ কর্মজীবনে চট্টগ্রামের দৈনিক কিষানের ঢাকার ব্যুরো প্রধান ছিলেন। তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে সাপ্তাহিক বিবর্তন।

সাবেক এমপি আলহাজ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকঃ ০৫ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন চুয়াডাঙ্গা-২ (দামুড়হুদা-জীবননগর) সংসদীয় আসনের সাবেক সদস্য ও রেডিও টুডের চেয়ারম্যান আলহাজ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। মোজাম্মেল হক চুয়াডাঙ্গা জেলা শিল্প ও বণিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি বঙ্গজ-তাল্লু গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে (দামুড়হুদা-জীবননগর) থেকে তিনি তিন তিনবারের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

দ্বিজেন শর্মাঃ ১৫ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন দ্বিজেন শর্মার। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর ৷ দ্বিজেন শর্মার জন্ম ১৯২৯ সালের ২৯ মে, তৎকালীন সিলেট বিভাগের বড়লেখা থানার শিমুলিয়া গ্রামে। কলকাতা সিটি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন দ্বিজেন শর্মা। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন। দ্বিজেন শর্মা ছিলেন প্রকৃতিপ্রেমিক। প্রকৃতিই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। প্রকৃতি নিয়ে প্রচুর লেখালেখি করেছেন তিনি। বিজ্ঞান, শিশুসাহিত্যসহ অন্য বিষয়েও সমানে লিখেছেন তিনি। লেখক ও নিসর্গবিদ দ্বিজেন শর্মা। বৃক্ষপ্রেমিক দ্বিজেন শর্মা অনেক গাছ লাগিয়েছেন। গাছের পরিচর্যা করেছেন। গাছ চিনিয়েছেন। সবুজ প্রকৃতির জন্য আজীবন লড়েছেন। প্রকৃতিবিদ, বিজ্ঞানলেখক, শিক্ষক দ্বিজেন শর্মা তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলা একাডেমি, একুশে পদকসহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন।

কমিউনিস্ট নেতা জসিম উদ্দিন মণ্ডলঃ ০২ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামন্তলীর সদস্য, প্রখ্যাত শ্রমিকনেতা জসিম মণ্ডল। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জসিম উদ্দিন মণ্ডল ১৯২৪ সালে বর্তমান কুষ্টিয়া জেলা ও তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের নদীয়া জেলার কালিদাসপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৯ সালে তিনি রেলইঞ্জিনে কয়লা ফেলার চাকরি পান।
কিশোর বয়স থেকে জসিম উদ্দিন মণ্ডল ভারতের মহাত্মা গান্ধী, বাঘাজতীন, প্রীতিলতা, জ্যোতি বসু, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য, বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলামসহ প্রখ্যাত মানুষের সান্নিধ্য পান। তিনি শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি মোট ১৯ বছর কারাভোগ করেন। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। আন্দোলন করতে গিয়ে একাধিকবার কারাবরণ ও ব্রিটিশ সরকারের নির্যাতনের শিকার হন।

শুটার হায়দার আলীঃ ২০ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন সোনাজয়ী শুটার হায়দার আলী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। রাজশাহীতে জন্ম নেওয়া হায়দার আলী আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন। ১৯৯১ সাফ গেমসে দলগত পিস্তল ইভেন্টে সোনা জয় করেছিলেন তিনি। পরের বছরই সাফ শুটিংয়ে ৫০ মিটার পিস্তলে দলগত সোনাজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। খেলা ছাড়ার পরও ছিলেন শুটিংয়ের সঙ্গে। দীর্ঘদিন জাতীয় শুটিং দলের পিস্তল কোচ হিসেবে কাজ করেছেন।

মুক্তিযোদ্ধা ফাদার ম্যারিনো রিগনঃ ২০ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন ইতালির বংশোদ্ভূত বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিক ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ফাদার ম্যারিনো রিগন। ৯২ বছর বয়সে ইতালিতে পরলোকগমন করেছেন। রিগন ১৯২৫ সালের ৫ জানুয়ারি ইতালির ভিলাভার্লায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৫৩ সালে বাংলাদেশে আসেন। তিনি দীর্ঘদিন মংলার হলদিবুনিয়া গ্রামে বসবাস করেন। ফাদার রিগন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় ও চিকিৎসা দেওয়ার মাধ্যমে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। সরকার ২০০৯ সালে রিগনকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদান করে।

সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ারঃ ২৪ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ার। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। এম কে আনোয়ার বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। ১৯৩৩ সালের ১ জানুয়ারি কুমিল্লার কুমিল্লার দেবীদ্বারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এমকে আনোয়ারের পুরো নাম মোহাম্মদ খোরশেদ আনোয়ার। সরকারের অর্থ সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্বও তিনি পালন করেন। ১৯৯০ সালে অবসরের পর এম কে আনোয়ার রাজনীতির মাঠে নামেন, যোগ দেন বিএনপিতে। কুমিল্লার হোমনা আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এম কে আনোয়ার খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকারে দুই দফা মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। ২০০১-২০০৬ মেয়াদে তিনি কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাসঃ ৩ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে ওই সংসদ আবদুর রহমান বিশ্বাসকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে। বরিশাল জেলার শায়েস্তাবাদে ১৯২৬ সালে ১ সেপ্টেম্বর আবদুর রহমান বিশ্বাসের জন্ম। বরিশাল শহরেই তিনি স্কুল ও কলেজজীবন শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ইতিহাসে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। সাবেক এই রাষ্ট্রপতি ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের সংসদীয় সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি স্বাধীনতার বিরোধী ছিলেন। ১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বরিশাল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯-৮০ সালে তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় পাটমন্ত্রী এবং ১৯৮১-৮২ সালে বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পূর্বে আবদুর রহমান বিশ্বাস ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তত্ত¡বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ৪ এপ্রিল ১৯৯১ তিনি জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন।

আ ফ ম মাহবুবুল হকঃ ০৯ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) আহ্বায়ক এবং মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মাহবুবুল হক । অটোয়া সিভিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। লাল সবুজ পতাকা জড়িয়ে দিয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সম্মান জানিয়ে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরবিদায় জানানো হয় তাঁকে। এরপর তাঁকে অটোয়া মুসলিম গোরস্থানে সমাহিত করা হয়। সাবেক ডেপুটি স্পিকার আখতার হামিদ সিদ্দিকী : ১৯ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও বিএনপি নেতা আখতার হামিদ সিদ্দিকী । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। তিনি নওগাঁ-৩ আসনে পরপর তিন বার বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপির এই নেতা ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের ১০ম ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্বও পালন করেন।

সংগীতশিল্পী বারী সিদ্দিকীঃ ২৪ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ও বংশীবাদক বারী সিদ্দিকী। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। বারী সিদ্দিকী বাংলাদেশ টেলিভিশনে সংগীত পরিচালক ও মুখ্য বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বারী সিদ্দিকীকে নেত্রকোনার কারলি গ্রামে ‘বাউল বাড়ি’তে দাফন করা হয়। ১৯৯৯ সালে হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবিতে তিনটি গান গেয়ে আলোচনায় আসেন বারী সিদ্দিকী। এরই মধ্যে তাঁর বেশ কিছু গান জনপ্রিয়তা লাভ করে। ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো, ‘পুবালি বাতাসে’ গানগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তাঁর জনপ্রিয় হওয়া গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘শুয়াচান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি’,‘ওলো ভাবিজান নাউ বাওয়া’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’। এরপর তিনি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন। তাঁর গাওয়া গান নিয়ে বেরিয়েছে অডিও অ্যালবাম।

ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হকঃ ৩০ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৫ বছর। এফবিসিসিআই ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি, ব্যবসায়ী ও একসময়ের টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব আনিসুল হক ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫২ সালে চট্টগ্রামের নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তাঁর শৈশবের একটি বড় সময় কাটে ফেনীর সোনাগাজীর নানার বাড়িতে। আশি ও নব্বইয়ের দশকে টিভি উপস্থাপক হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিলেন আনিসুল হক। তাঁর উপস্থাপনায় ‘আনন্দমেলা’ ও ‘অন্তরালে’ অনুষ্ঠান দুটি জনপ্রিয়তা পায়। তবে পরে টেলিভিশনের পর্দায় মানুষ তাঁকে বেশি দেখেছিল ব্যবসায়ী নেতা হিসেবেই। ২০০৫-০৬ সালে বিজিএমইএর সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি হন তিনি। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল মেয়াদে সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন আনিসুল হক।

বীরপ্রতীক আবদুল জলিলঃ ০৮ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বীরপ্রতীক আবদুল জলিল ওরফে রকেট জলিল। উপজেলার পাল্লা গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি ও হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। ১৯৪৩ সালে ঝিকরগাছা উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের পাল্লা গ্রামে বীরপ্রতীক আবদুল জলিল জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি মুজাহিদ কোম্পানিতে যোগ দেন। ১৯৬৮ সালে ইপিআরে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে ৮ নম্বর সেক্টরে মেজর আবু মঞ্জুরের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংগ্রহণ করেন। রণাঙ্গনে তিনি রকেট জলিল হিসেবে পরিচিতি পান। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৬ সালে আবদুল জলিলকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করা হয়।

সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীঃ ১৫ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। ১১ দিন চিকিৎসা শেষে ২৬ নভেম্বর তিনি ঢাকায় ফিরে কিডনি ডায়ালিসিসের জন্য স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। সিঙ্গাপুর ও ঢাকায় এক মাস চিকিৎসা শেষে ১২ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে আসেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর জন্ম ১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে। তাঁর বাবার নাম হোসেন আহমেদ চৌধুরী ও মা বেদুরা বেগম। ছাত্র জীবনেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মহিউদ্দিন চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের শীর্ষ পদে ছিলেন। তিনি ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালের মেয়র নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন মন্ত্রীকে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। ৭৪ বছরের জীবনে মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন ১৬ বছর। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি।

মন্ত্রী ছায়েদুল হকঃ ১৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছায়েদুল হক মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের এই সাংসদকে জেলার নাসিরনগর থানার পূর্বভাগ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় জানাজার আগে ছায়েদুল হককে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। ছায়েদুল হক ১৯৭৩, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪২ সালের ৪ মার্চ তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার পূর্বভাগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফাঃ ১৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা আহমেদ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। গোলাম মোস্তফা গত ১৮ নভেম্বর সংসদ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার জন্য সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিপুর গ্রামের বাড়ি থেকে মাইক্রোবাসে ঢাকা আসছিলেন। টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া নামক স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা রংপুরগামী যাত্রীবাহী একটি বাস তাকে বহনকারী মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি ও তার গাড়িচালকসহ চারজন গুরুতর আহত হন। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জের সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটন খুন হওয়ার পর ওই আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান গোলাম মোস্তফা। চলতি বছরের ২২ মার্চ ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে হারিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ।

সাবেক সংসদ সদস্য ড. মিয়া আব্বাস উদ্দিনঃ ২৮ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন সাবেক সংসদ সদস্য ড. মিয়া আব্বাস উদ্দিন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। কানাডার রাজধানী অটোয়ারের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান । মিয়া আব্বাস উদ্দিন ১৯৮৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন মোরেলগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন তিনি। ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন লাভের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি নাগরিকত্ব নিয়ে স্বপরিবারে কানাডায় চলে যান।

মৃত্যু এক অলঙ্ঘনীয় নিয়তির নাম। এই নিয়তির কাছে হার মেন সূর্যের মতো উদিত হওয়া উপরোক্ত মানুষগুলি চিরদিনের জন্য পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। যারা কোনদিন ফিরবেন না। তবে যাবার পূর্বে তাঁদের মেধা-মনন আর সৃষ্টির কল্যাণে জাতিকে আলোকিত করে গেছেন। দেশ-জাতি এসব গুণীজনদের কাছে ঋণী। ‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’।

সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫১

চাঁদগাজী বলেছেন:



পরলোকগত মুক্তিযোদ্ধা ও শিল্পিদের অবদানের জন্য তাঁদের প্রতি সন্মান রলো; বাকীরা কে এলো, কোথায় গেলো, ওদের হিসেব রাখার কোন দরকার আছে বলে মনে হয় না, উনারা নিজের জন্য বেঁচেছিলেন, নিজের পথে চলে গেছেন।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ চাঁদগাজী,
সবাই কিন্তু নিজের জন্য বাঁচেনা,
পরের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেন।
আলোকিত মানুষেরা সুন্দরের আহ্বান জানায়
আলোবর্তিকার সন্ধান দেয়।

২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৬

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ, এইসব গুনি মানুষের শুন্যতা পুরন হওয়ার নয়।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ তারেক মাহমুদ
কীর্তিমানের মৃত্যু হয় না। গুণীমানুষেরা আলোর পথ দেখায়।
তাদের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন তাদের শ্রদ্ধেয় করে রাখবে চিরদিন।
চোখের দেখাতে না থেকেও তাঁরা থেকে যাবেন আমাদের
অন্তরে অন্তরে, সব সাফল্যের অনুপ্রেরণায়

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: এইসব গুনী মানুষদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর কথা জানতাম না। বা জানলেও মনে ছিল না। আল্লাহ তাদের সবার গুনাহ মাফ করে দিন।

ধন্যবাদ নূর মোহাম্মদ ভাই।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আবুহেনা ভাই
আল্লাহ এই গুণী মানুষেদের গুনাহ মাফ করুন। আমিন

৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এ বছরের মতো এতো গুণীজন বোধহয় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আর পরলোকগত হন নি। এঁদের শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ সাধু ভাই
আমারও তাই ধারণা।
পরলোকে সবাই ভালো থাকুন
সেই প্রার্থনা করছি।

৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



"লেখক বলেছেন, ধন্যবাদ চাঁদগাজী,
সবাই কিন্তু নিজের জন্য বাঁচেনা,
পরের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেন।
আলোকিত মানুষেরা সুন্দরের আহ্বান জানায়
আলোবর্তিকার সন্ধান দেয়। "

আপনার প্রায় লেখা গড়ে হরিবোল, ফুলেল শুভেচ্ছা, আপনার মতে সবই আলোকিত মানুষ, দুষ্ট নষ্ট সবেই; মরে গেলে সবাই আলোকিত হয়ে যায় আপনার ফুলেল শুভেচ্ছায়

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গুণীজনদের শ্রদ্ধা করতে সবাই পারেনা,
অহংবোধ কিংবা দীনতা এর অন্যতম কারণ।
যা হোক যাদেরকে আমি গুণীজন বলি তাদেরকে
সবাই মোটামুটি শ্রদ্ধার সাথে দেখে। ব্যতিক্রম আপনি।
মনের কলুষতা দূরে ঠেলে মানবিক বোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করুন।

৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:২৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


মেয়র মহিউদ্দিন গুণীজন? সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস অখন্ড পাকিস্তানের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছিল ইয়াহিয়ার সময়ে; আপনার লেখার কোন মান নেই, দুনিয়ার হ য ব র ল!

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৩৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনি আজাইরা ক্যাচাল করেন,
মৃত্ ব্যক্তিরা সব সময় সব বিতর্কের উদ্ধে্
কায়েদ ই আজম আমাদের কাছে গুণীজন না হলেও
পাকিস্তানের জাতির পিতা! বুঝা গেল ব্যাপাটা ?

৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


পাকিস্তান যাচ্ছেন কেন, বাংলাদেশে গোলাম আজমকে গুণীজন ভাবে ৫০ লাখের বেশী মানুষ, আপনি তাকেও আলোকি্ত করে দেন ফুলেল শুভেচ্ছায়, উনি মৃতজন হিসেবে বিতর্কের উর্দ্ধে আপনার মতে।

আপনি শিষ্ট ও দুস্টের মাঝে পার্থক্য না বুঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন!

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ
ইতিহাস কাউকে তার বুকে স্থান দিতে কার্পণ্য করেনা
যেমন করেনা সাগর/সমুদ্র। সমুদ্রের বুকে স্থান পায়
হাজারো ভালো কিছুর সাথে পঁচা দূগন্ধযুক্ত ময়লা।
আমি ইতিহাস রচনা করেছি গতবছরের, যেখানে
ভালো-মন্দ সবাই স্থান পেয়েছে। যেমন আপনি

৮| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:০৭

বিজন রয় বলেছেন: বিদায়।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ বিজন'দা
স্বাগতম.............

৯| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:১৮

কুকরা বলেছেন:


মাটির তৈরী মানুষ, মাটি নিয়ে প্রতিযোগিতা করার পর মরে মাটির নীচে চলে গেছে।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কুকরা ধন্যবাদ আপনাকে
চমৎকার একটি গান শেয়ার করার জন্য।
নব বর্ষের শুভেচ্ছা জানবেন।

১০| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫২

কলাবাগান১ বলেছেন: বাংলাদেশে কোন গুনী মহিলা নাই মনে হচ্ছে....কেউ মারা যায় নাই??? সব পুরুষ??? আপনার এই মানসিকতা কে শত ধিক

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জন্ম-মৃত্যু একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটে,
আমি জোর করে কারো মৃত্যু ঘটাতে পারিনা।
কোনো গুণী মহিলা যদি মৃত্যুবরণ না করেন তা হলে
আমার কি করার আছে? আছে নাকি কোন মহিলা যিনি
গত বছর মারা গেছেন? আপনার জানা থাকলে বলবেন!

১১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৯

আমার আব্বা বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা তোমাদের ভুলবো না। শুভেচ্ছা ২০১৮

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নতুন বছরের শুভেচ্ছা আপনার জন্য।
ভালো থাকবেন বছর জুড়ে

১২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:০০

সোহানী বলেছেন: একটি চমৎকার পোষ্টকে অযথা তর্ক করে পোষ্টের মুডই নষ্ট হয়ে যায়।

যাদের একটু হলে ও অবদান আছে তাদের মৃত্যুতে স্মরণ কি অপরাধ? অবশ্যই নয়, যাদেরকে আপনি স্মরণ করেছেন তাঁরা কোন না কোন ভাবে অবদান রেখেছেন। আর কোন গুনী মহিলা মারা না গেলে কারো কি মেরে লিস্টে ঢুকাবে!!! হাস্যকর। আর কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধ না করে তাহলে তাঁর সকল অবদান পানিতে পড়ে গেল......... হাস্যকর।

ধন্যবাদ নুরু ভাই পোষ্টটিতে তাঁদের স্মরণ করার জন্য। আপনার প্রতিটি পোষ্টই অসাধারন। কখনই নিরাশ হবেন না কারো পাছে কথায়। ভালো থাকুন। হ্যাপি নিউ ইয়ার।

১৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৩৫

কলাবাগান১ বলেছেন: কারা আপনার পোস্টে এসে মায়া কান্না করছে...যারা মানুষ আগে না হিন্দু আগে সেটা নিনর্য়ে ব্যস্ত...বাংলাদেশে এখন হিন্দুরা চাকরী পাচ্ছে এতেই ঘুম হারাম...আর যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বছরে ১৩ টা ডিপার্টমেন্টে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়া হিন্দু ছাত্রদের একজন কেও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয় নাই জামাতি/বিনপি এর আমলে তখন উনারা মুখ বন্ধ করে বসেছিলেন....ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়া হিন্দু ছাত্র যখন আনবিক শক্তি কমিশনে চাকরীর ইন্টারভিউতে জামাতি কর্মকর্তা জিজ্ঞেস করে হিন্দি ছবির নায়কের নাম কি, তখন ও ইনারা কোন প্রতিবাদ করে না...ইনারা ই যখন মুক্তিযোদ্ধার পিঠে শিবির কর্মী ফ্লাইং কিক মারে...তখন মুখ টিপে হাসে..........।

বিটিভির আমল যদি মনে থাকে, সকাল সন্ধ্যা টিভি সিরিজ নিশ্চয়ই দেখেছেন...কে ছিলেন সেই কালজয়ী সিরিজের রচয়িতা....উনি মারা গেলেন এই ডিসেম্বর মাসেই...উনি একজন মহিলা নাট্যকার যার আরো অনেক নাটক দেখেই বাংলাদেশে অনেকেই বড় হয়েছে...।
১৫ বছর এর বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে দেশের জন্য গৌরব এনে দেওয়া কিশোরী ফুটবলার ও মারা গিয়েছেন...

এদের কে আমি কি জোর করে মেরে বলছি যে তালিকায় এদের নাম নেই কেন

মহিলারা ই চান না যে সম পর্যায়ে যেতে...কোন ধরনের মহিলা??? যারা চায় না তার বোন, মেয়ে, মেয়ে কাজিন এরা বিমানের পাইলট হোক, আইন জীবি হোক, ডাক্তার হোক, ইন্জিনিয়ার হোক, শিক্ষক হোক, বিজ্ঞানী হোক.... এরা চান বাল্য বিবাহ...গত সপ্তাহে দেখলাম এক জনপ্রিয় মহিলা ব্লগার সর্বশান্ত ভাবে ১০০% সাপোর্ট দিচ্ছেন বাল্য বিবাহ সাপোর্ট দিয়ে করা পোস্টকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.