নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ও চলচ্চিত্র প্রযোজক মান্নার ৯ম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮


এস এম আসলাম তালুকদার যিনি মান্না হয়ে বিরাজ করছেন লক্ষ কোটি সিনেমা দর্শকের হৃদয়ে। বিশ বছরের চলচ্চিত্র জীবনে তিনি একশর বেশী পরিচালক এবং ষাট এর বেশী নায়িকার সাথে এবং চারশ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ৮০র দশকে সুনেত্রা, নিপা মোনালিসা থেকে শুরু করে চম্পা, দিতি, রোজিনা, নতুন, অরুনা বিশ্বাস, কবিতা এর মতো সিনিয়র নায়িকাদের সঙ্গে অভিনয় করে যেমন সফল হয়েছিলেন তেমনি মৌসুমি, শাবনুর, পূর্ণিমা, মুনমুন, সাথী, স্বাগতা, শিল্পী, লিমা সহ এই দশকের নায়িকাদের সঙ্গে সফল হয়েছিলেন। ঢাকাই ছবির মহা নায়ক খ্যাত নায়ক মান্না নায়ক হয়েও সবচেয়ে বেশি গুন্ডার অভিনয় করেছেন। সবচেয়ে বেশি পুলিশের অভিনয়টাও তার ঝুলিতে। এছাড়া নায়ক মান্না গুন্ডামি এবং প্রেম সমানতালে চালিয়ে গেছেন। বিরল রেকর্ডের অধিকারী এই অভিনেতা মাত্র একচল্লিশ বছর বয়সে ২০০৮ সালের আজকের দিনে অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে চির বিদায় নেন। আজ তার ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুদিনে কিংবদন্তি এই নায়ককে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়।

মান্না, প্রকৃত নাম এস এম আসলাম তালুকদার ১৯৬৪ সালের ৬ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকে সিনেমার প্রতি তাঁর ছিল প্রচণ্ড ঝোঁক। কলেজে পড়ার সময় প্রচুর সিনেমা দেখতেন। স্বপ্ন দেখতেন তিনিও একদিন অভিনয় করবেন। মান্না বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান এফডিসি আয়োজিত নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমের মাধ্যমে। মান্না অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্রের নাম নাম তওবা, কিন্তু প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের নাম পাগলী। ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত কাশেম মালার প্রেম চলচ্চিত্রে মান্না প্রথম একক নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। এর আগে অভিনীত চলচ্চিত্রগুলোতে তিনি সহনায়ক হিসেবে অভিনয় করলেও চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসা সফল ছিল। কাশেম মালার প্রেম ব্যবসা সাফল্য অর্জন করায় তার পক্ষে নায়ক হিসেবে পরের ছবিগুলোতে কাজ করা সহজ হয়ে যায়। কাজী হায়াৎ পরিচালিত দাঙ্গা, ত্রাস প্রভৃতি চলচ্চিত্রে অভিনয় করার মাধ্যমে অ্যাকশন হিরো হিসেবে মান্নার গ্রহনযোগ্যতা তৈরী হয়। দুঃখী, দরিদ্র মানুষের বন্ধু-প্রতিবাদী চরিত্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন মান্না। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র-বিষয়ক নানা কর্মকাণ্ডেও মান্নার ছিল অগ্রণী ভূমিকা। নব্বই দশকে অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মাণের ধারা শুরু হলে যে কজন প্রথমেই এর প্রতিবাদ করেছিলেন,তাদের মধ্যে নায়ক মান্না ছিলেন অন্যতম। সে সময় একমাত্র নায়ক মান্নার ছবিগুলোই ছিল প্রযোজক ও পরিচালকদের আশার আলো, ব্যবসায় টিকে থাকার সাহস। তিনি রীতিমতো যুদ্ধ করেছেন অশ্লীল চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে। এসব চলচ্চিত্রের নির্মাতাদের সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রের অন্ধকার কাটতে থাকে তাঁর দৃঢ় ভূমিকার কারণে। মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং মান্না একাই লড়ে গেছেন অশ্লীলতার বিরুদ্ধে । মান্না দাঙ্গা, লুটতরাজ, তেজী, আম্মাজান, আব্বাজান প্রভৃতি চলচ্চিত্রে চমৎকার অভিনয় এর মাধ্যমে জনপ্রিয়তার চূড়া ছুঁয়েছিলেন মান্না। তাঁর অভিনীত আম্মাজান চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের সর্বাধিক ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০০৬ সালে "সেরা অভিনেতা" হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার লাভ করেন। মান্না শুধু চলচ্চিত্র অভিনেতাই ছিলেন না, তাঁর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে যতগুলো ছবি প্রযোজনা করেছেন, প্রতিটি ছবি ব্যবসাসফল হয়েছিল। ছবিগুলো হচ্ছে লুটতরাজ, লাল বাদশা, আব্বাজান, স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, দুই বধূ এক স্বামী, মনের সাথে যুদ্ধ, মান্না ভাই ও পিতা মাতার আমানত। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে তাঁর নাম স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অভিনয়, সংলাপ বলার ধরন দিয়ে নিজস্ব একটা স্টাইল দাঁড় করিয়েছিলেন তিনি। তাঁর অভিনীত এমন কিছু ছবি আছে যার জন্য তিনি চিরদিনের জন্য দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। একটা সময় ছিল, যখন ছবিতে শুধু মান্না আছেন‍- এ কারণেই দর্শক হলে ছুটে গেছেন, তাঁর কারণেই ছবি ব্যবসাসফল হয়েছে। এমনও বছর গিয়েছে যেখানে সেরা ১০ টি ব্যবসা সফল ছবির নাম খুঁজলে দেখা যেতো সবগুলোই মান্নার ছবি। মান্না যে ছবিতে দুর্দান্ত, সেই ছবির কাহিনি যত গতানুগতিকই হোক না কেন, সেই ছবি ব্যবসা করবেই তাতে কোনো সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটনির্ভর ছবিতেও মান্না ছিলেন অনবদ্য।

জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন মান্না। টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত তার নিজ গ্রাম এলেঙ্গায় তাঁকে সমাহিত করা হয়। চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে মৃত্যু হয়েছে, এমন অভিযোগে মান্নার স্ত্রী মামলা করেছিলেন, কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই মামলাও চাপা পড়ে গিয়েছে, কোন সুরাহা হয় নি। জগতে কিছু মানুষ থাকেন, মৃত্যুর পর তাঁরা যেন সবার হৃদয়ে আরও বেশি ভালোবাসায় জড়িয়ে থাকেন। তাঁদের কোনো মৃত্যু হয় না। মানুষের মনে চিরকাল অমর হয়েই থাকেন তাঁরা। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তেমনই একজন অভিনেতা মান্না। কিংবদন্তি এই অভিনেতার আজ তার ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুদিনে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়।

সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৪

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: নায়ক মান্নার জন্য ভালবাসা।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ তারেক ভাই
নায়ক মান্নার জন্য
ভালোবাসা প্রকাশের জন্য।

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:০২

আবু তালেব শেখ বলেছেন: মান্নার মৃত্যুর পরে বাংলা ছবি তেমন একটা দেখা হয়নি। এখনো মান্নার ছবি দেখি। আজীবন অমর থাকবে নায়ক মান্না

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ তালেব ভাই
মন্তব্যের জন্য।

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: মান্নার অভিনয় আহামরি কিছু নয়।
হুমায়ূন ফরীদির অভিনয়ের কাছে মান্না শিশু।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এক একজনের অভিনয় একএক রকম।
ব্যতিক্রমতা আছে বলেই হুমায়ূন ফরীদিকে
একুশে পদকে ভূষিত করা হয়েছে। তাই
বলে মান্নার অভিনয় প্রতিভাকে খাটো করে
দেখার সুযোগ নাই।

৪| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১৫

কুয়াশাচ্ছন্ন তুহিন বলেছেন: ১৯৯৯ সালের আম্মাজান ছবির জন্য মহানায়ক মান্না অমর হয়ে থাকবে বাংলার মানুষের মনে।

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার
মন্তব্য করার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.