নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক ডাক্তার নীহাররঞ্জন গুপ্তের ৩১তম মৃত্যুবার্ষির্কীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:২৬


উপমহাদেশের প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক ডাঃ নীহাররঞ্জন গুপ্ত। নীহাররঞ্জন গুপ্ত ছিলেন ভারতীয় বাঙালি লেখক। তবে তিনি জন্মগতভাবে একজন বাংলাদেশি। পেশাগত ভাবে তিনি ছিলেন জনপ্রিয় রহস্য কাহিনীকার এবং চিকিৎসক। তিনি বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র কিরীটি রায়ের স্রষ্টা হিসেবে উপমহাদেশে স্মরণীয় হয়ে আছেন। বড়দের ও ছোটদের উপযোগী - উভয় ধরনের গোয়েন্দা উপন্যাস রচনায় সবিশেষ পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেছেন নীহাররঞ্জন। জনপ্রিয় এই লেখকের ৩১তম মৃত্যুবার্ষীকি আজ। ১৯৮৬ সালের আজকের দিনে কলকাতায় পরলোক গমন ডাঃ নীহাররঞ্জন গুপ্ত । মৃত্যুদিনে বাঙালি লেখক ডাঃ নীহাররঞ্জন গুপ্ততে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়

ঔপন্যাসিক ডাক্তার নীহাররঞ্জন গুপ্ত ১৯১১ সালের ৬ই জুন তৎকালীন যশোহরের লোহাগড়া উপজেলার ইটনায় জন্মগ্রহণ করেন। ইটনার বর্তমান অবস্থানঃ নড়াইল>লোহাগড়া>ইতনা গ্রাম (মহাময়া মট)। দূরত্বঃ লোহাগড়া হতে আনুমানিক ১০ কি: মি: যাতায়াতের মাধ্যম: ইজিবাইক / ভ্যান। নীহাররঞ্জন গুপ্তের পরিবার ছিল বিখ্যাত কবিরাজ বংশীয়। তাঁর পিতা-সত্যরঞ্জন গুপ্ত এবং মাতা-লবঙ্গলতা দেবী। পিতার স্থানান্তরিত চাকুরীর কারণে তিনি অনেক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তন্মধ্যে - গাইবান্দা উচ্চ বিদ্যালয় অন্যতম। নিহার রঞ্জন গুপ্ত শৈশবকাল অতিবাহিত করেন কলকাতায়। ১৯৩০ সালে কোন্নগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন অর্জন করে কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে আই.এসসি ডিগ্রী অর্জনের পর কলকাতায় কারমাইকেল মেডিকেল কলেজ (বর্তমানে আর. জি. কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল) থেকে ডাক্তারি বিদ্যায় কৃতকার্য হন তিনি। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নিহার রঞ্জন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ও বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় স্থানান্তরিত হন। এরপর তিনি মেজর পদে উন্নীত হন। এই চাকুরীর সূত্রে তিনি চট্টগ্রাম, বার্মা (বর্তমানঃ মায়ানমার) থেকে মিশর পর্যন্ত বিভিন্ন রণাঙ্গনে ঘুরে বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন। এরপর তিনি লন্ডন থেকে ডাক্তারি শাস্ত্রের ডার্মেটোলোজি বা চর্মবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ছাত্রাবস্থায় তার বড় বোন পোকার কামড়ে মারা যায়। ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মহান পেশায় নিয়োজিত থেকে এই রোগ সাড়ানোর জন্য স্বপ্ন দেখেন ও পরবর্তী জীবনে বাস্তবায়িত হয়। যুক্তরাজ্য থেকে বিশেষ ডিগ্রী অর্জন শেষে তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে যোগ দেন। এরপর তিনি ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে কাজ করেছেন। ভারত বিভক্তির পর ১৯৪৭ সালে তিনি ও তার পরিবার স্থায়ীভাবে কলকাতায় অভিবাসিত হন।

(ডাঃ নিহাররঞ্জন গুপ্তের বসত বাড়ি, ইটনা, লোহাগড়া, নড়াইল, যশোহর)
শৈশবকাল থেকেই তিনি সর্বদাই স্বপ্ন দেখতেন লেখক হবার। আঠারো বছর বয়সে নীহাররঞ্জন তাঁর প্রথম উপন্যাস রাজকুমার রচনা করেন। ইংল্যান্ডে অবস্থানকালীন সময়ে তিনি গোয়েন্দা গল্প রচনায় আগ্রহান্বিত হয়ে স্বীয় লেখার উত্তোরন ঘটান এবং আগাথা ক্রিস্টির সাথে সাক্ষাৎ করেন। ভারতে ফিরে এসে তিনি তাঁর ১ম গোয়েন্দা উপন্যাস কালো ভ্রমর রচনা করেন। এতে তিনি গোয়েন্দা চরিত্র হিসেবে কিরীটি রায়কে সংযোজন করেন যা বাংলা কিশোর সাহিত্যে এক অনবদ্য সৃষ্টি। তিনি বাংলা সাহিত্যে রহস্য কাহিনী রচনার ক্ষেত্রে অপ্রতিদ্বন্দ্বী লেখক ছিলেন। উপমহাদেশীয় প্রেক্ষাপট ও উপযোগী করে রচিত হয়েছে তাঁর রহস্য উপন্যাসগুলো। বড়দের ও ছোটদের উপযোগী - উভয় ধরনের গোয়েন্দা উপন্যাস রচনায় সবিশেষ পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেছেন নীহাররঞ্জন। তিনি দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা করে গেছেন। এছাড়াও তিনি শিশুদের উপযোগী সাহিত্য পত্রিকা সবুজ সাহিত্যের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো হলোঃ ১। কালোভ্রমর, ২। মৃত্যুবাণ, ৩। কালনাগ, ৪। উল্কা, ৫। উত্তরফাল্গুনী, ৬। হাসপাতাল, ৭। কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী, ৮। লালুভুলু, ৯। রাতের রজনীগন্ধা. ১০। কিরীটি অমনিবাস ইত্যাদি। এ পর্যন্ত তাঁর পঁয়তাল্লিশটি উপন্যাসকে টালিউড ও বলিউডে বাংলা ও হিন্দি ভাষায় চলচ্চিত্রায়ণ করা হয়েছে।

১৯৮৬ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি কলকাতায় পরলোক গমন করেন জননন্দিত এই উপন্যাসিক। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রকর এস এম সুলতান ইটনায় অবস্থিত নীহাররঞ্জন গুপ্তের বাসভবনে শিশুস্বর্গ-২ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে এস এম সুলতানের মৃত্যুর পর শিশু সংগঠনের কর্মীরা তা দখল করে। ২০০৩ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ নীহাররঞ্জন গুপ্তের বাসভবন অধিগ্রহণ ও সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগী হয়। কিন্তু, অদ্যাবধি এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় এই লেখকের ৩১তম মৃত্যুবার্ষির্কী আজ। মৃত্যুবার্ষির্কীতে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।

সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৩৫

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: বাহ আজও আমার আর একজন প্রিয় মানুষ নড়াইল তথা বাংলাদেশের গর্ব নিহার রঞ্জন গুপ্তের প্রতি শ্রদ্ধা ভালবাসা।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জ্বি ভাই, নিহার রঞ্জন গুপ্ত আমাদের গর্ব

২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২১

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: বিজয় সরকার, নিহার রঞ্জন গুপ্ত দুইটি পোষ্টকে প্রিয়তে নিলাম।

৩| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।
যথা সময়ে বরনীয় ব্যাক্তিদের কথা কানতে পারছি।
গুড। গুড জব।

৪| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪২

উম্মু আবদুল্লাহ বলেছেন: নীহার রন্জ্ঞনের ডিটেকটিভ লেখা একসময় আমার খুব প্রিয় ছিল।

তবে তার লেখায় মুসলিম চরিত্র নেই বললেই চলে। তাকে আমি রেসিস্ট বলব না, তবে তার সমাজ সংসার নিয়ে নীহারের যে দৃষ্টিভংগি, তার চেয়ে শরদ্বিন্দুর কিংবা সমসাময়িক অন্যান্য লেখকের দৃষ্টিভংগির প্রসারতা অনেক বেশী।

৫| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৫৫

মাআইপা বলেছেন: ডাঃ নীহাররঞ্জন গুপ্তর ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে রইল গভীর শ্রদ্ধা।
আমার প্রিয় লেখকদের মধ্যে একজন। অনেকগুলো বই পড়েছি এবং সবগুলোই ছিল গোয়েন্দা শুধু হাসপাতালটা ছিল আলাদা।
ধন্যবাদ অন্তে প্রিয়’তে নিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.