নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর উর্ধ্বলোকে পরিভ্রমণের ঐতিহাসিক ও অলৌকিক ঘটনার মহামান্বিত রজনী পবিত্র শবে মিরাজ আজ

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:২০


আজ ২৬ রজব ১৪৩৯ হিজরি, ১ বৈশাখ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ, ১৪ এপ্রিল ২০১৮ খৃষ্টাব্দ শনিবার দিবাগত রাতে অর্থাৎ ২৭ রজব রাতে পবিত্র শবে মেরাজ। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর ঊর্ধ্বেলোকে পরিভ্রমণের ঐতিহাসিক ঘাটনার স্মারক দিবস। শবে মেরাজ বা মেরাজের রজনী ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে পালিত এমন একটি রাত, যে রাতে ইসলাম ধর্মের শেষ বাণী বাহক হযরত মুহাম্মদ (সঃ) ৬২০ খ্রিস্টাব্দের রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত ২৭ তারিখ রাতে বিশেষ ব্যবস্থায় উর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেন এবং মহান আল্লাহ'র সাথে সাক্ষাৎ করেন। রাসূল (সাঃ) পথহারা মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে একটানা ১২ বছর দাওয়াত দেন মক্কায়। কিন্তু তাঁর দাওয়াতে কিছু সংখ্যক মানুষ ইসলাম কবুল করলেও অধিকাংশ লেগে যায় বিরোধিতায়। ধীরে ধীরে বিরোধিতা তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করে। নানা রকম অমানবিক নির্যাতন শুরু হয় রাসূলের (সঃ) উপরে। আল্লাহ রাববুল আলামীন সান্ত্বনা দেয়ার জন্য এ সময়ই রাসূল (সাঃ)-কে তাঁর সান্নিধ্যে নিয়ে যান। নিজের প্রিয় হাবিবকে তাঁর সান্নিধ্যে নিয়ে যেতে আল্লাহ নিজ কুদরতে মিরাজের আঞ্জাম দেন। বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে তারই প্রমাণ ঘটে। এক মুহূর্তে ঘটে যায় মিরাজের ঘটনা। তাফসীরকারকগণ বলেন, এতে চোখের এক পলক সময় ব্যয়িত হয়। বর্ণিত আছে, মিরাজ থেকে ফেরার পর দরজার কড়া নড়তে এবং অযুর পানি গড়াতে দেখেছেন রাসূল (সাঃ)। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, মহানবীর (স.) মেরাজ দৈহিক নয়, বরং ছিল আত্মিক আরোহণ। পবিত্র কুরআনের সূরা বনী ইসরাইলের প্রথম আয়াতে রাসূল (সাঃ)-এর মিরাজ গমনের বর্ণনা এসেছে এভাবেঃ তিনি সেই পরম পবিত্র মহিমাময় সত্তা যিনি তাঁর স্বীয় বান্দাহকে এক রাতে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশকে করেছেন তিনি বরকতময়। যাতে তাঁকে নিজের কিছু কুদরত দেখান। নিশ্চয়ই তিনি সর্ব শ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। (সুরা বনী ইসরাইলঃ আয়াত-০১)

২৬ রজব রাসূল (সাঃ) উম্মে হানী বিনতে আবু তালিবের ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। হঠাৎ জিব্রাইল (আঃ) এসে রাসূল (সাঃ)-কে মসজিদুল হারামে নিয়ে যান। যেখানে তাঁর বুক বিদীর্ণ করে জমজম কূপের পানি দিয়ে সীনা মোবারক ধৌত করে শক্তিশালী করেন। তারপর সেখান থেকে তিনি বোরাক নামক এক ঐশী বাহনে চড়ে বায়তুল মোকাদ্দাসে এসে সকল নবীর ইমাম হয়ে দুই রাকাত নামায আদায় করেন। তারপর তিনি বোরাকে চড়ে ঊর্ধ্বে গমন করতে থাকেন। মহানবী (সঃ) এ রাতে প্রথমে কাবা শরিফ থেকে বোরাক নামের বাহনে যাত্রা করে ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদে যান। সেখানে অন্যান্য নবী-রাসুলের সঙ্গে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন। এরপর ঊর্ধ্বলোকে সফর শুরু করেন। এ সময় তিনি নভোমণ্ডল, বেহেশত-দোজখ ও সৃষ্টির বিভিন্ন রহস্য প্রত্যক্ষ করেন এবং পূর্ববর্তী নবীদের সাক্ষাৎ লাভ করেন। সপ্ত আসমান পেরিয়ে তিনি আরশে আজিমে ধনুক পরিমাণ দূরত্বে থেকে মহান আল্লাহ পাকের দিদার লাভ করেন। সরাসরি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন হয়। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, এটা ছিল দৈহিক ও আত্মিক আরোহণ। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সঃ) এর উর্ধ্বলোকে পরিভ্রমণের ঐতিহাসিক ও অলৌকিক ঘটনার মহামান্বিত রজনী পবিত্র শবে মিরাজে উপলক্ষে সকল ব্লগারবৃন্দ ও মুসলিম ভাই ও বোনদের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা।

মিরাজ শব্দ এসেছে আরবী ‘উরুযুন' শব্দ থেকে। উরুযুন অর্থ সিঁড়ি আর মিরাজ অর্থ ঊর্ধ্বগমন। যেহেতু সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠা হয় সেজন্য রাসূলের ঊর্ধ্বগমনকে মিরাজ বলা হয়। শরীয়তের পরিভাষায় আল্লাহ পাক তাঁহার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে আল্লাহ পাক যে সাক্ষাৎ বা দীদার হয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে সেটাই মি’রাজ শরীফ। মেরাজ ঘটেছিল মুহাম্মদ (সঃ) এর নবুয়্যত বা ঐশ্বিক বাণী প্রাপ্তির পঞ্চম বছরে। তবে এব্যাপারে সাহাবাদের মধ্যেই মতভেদ ছিল। কারো কারো মতে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর নবুয়্যতের দশম থেকে ত্রয়োদশ বছরের মধ্যে কোনো এক রাতে ঘটেছে মেরাজের ঘটনা। মেরাজের ঘটনায় দুটো অংশ ছিলঃ ১) আল-ইসরা বা জেরুজালেমে রাত্রভ্রমণ, এবং ২) মেরাজ বা উর্ধ্বারোহণ বা স্বর্গারোহণ। আরবি মেরাজ শব্দটি আরাজা থেকে গৃহীত, যার অর্থ সে আরোহণ করেছিল। এপ্রসঙ্গে পবিত্র ক্বোরআনের বলা হয়েছে, “এমন একদিন ফেরেশতা এবং রুহ আল্লাহর দিকে উর্ধ্বগামী হয় যা পার্থিব পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান।” তাই ক্বোরআন কর্তৃক হজরত মুহাম্মদের "আত্মিক আরোহণ" প্রমাণিত। সুতরাং মিরাজ শরীফ সত্য এবং তা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর অসংখ্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত। মিরাজ শরীফ কখন হয়েছিল এ নিয়ে কিছু মতপার্থক্য থাকলেও মশহুর বা প্রসিদ্ধ মতে মিরাজ শরীফ সংঘটিত হয়েছিলো রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে সোমাবার শরীফ-এ অর্থাৎ ২৬শে রজব দিবাগত রাতে। যেমন, এ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বিশ্ববিখ্যাত সর্বজনমান্য মুহাদ্দিছ আরিফ বিল্লাহ আল্লামা হযরত শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিজ হাতে লিখা ‘মা ছাবাতা বিস সুন্নাহ কিতাবের ৭৩ পৃষ্ঠায় বলেনঃ জেনে রাখুন! নিশ্চয়ই আরব জাহানের দেশগুলোর লোকদের মধ্যে মাশহূর বা প্রসিদ্ধ ছিলো যে, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মিরাজ শরীফ সংঘটিত হয়েছিলো রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতেই। একটি বর্ণনায় পাওয়া যায়: নবুয়্যতের দশম বছর, সাত মাস; ২৭ রজব তারিখে মুহাম্মদ, আবু তালিবের মেয়ে হিন্দার বাড়িতে ছিলেন। আবার অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ঐ রাতে মুহাম্মদ কাবাতে ঘুমান, এবং তিনি কাবা'র ঐ অংশে ঘুমান, যেখানে কোনো ছাদ ছিল না (হাতিম)।

হিন্দার বিবরণ থেকে জানা যায়, ঐ রাতে, মুহাম্মদ, রাতের প্রার্থণা সেরে ঘুমাতে যান। খুব ভোরে মুহাম্মদ উঠে সবাইকে জাগালেন এবং প্রার্থণা সারলেন। হিন্দাও তাঁর সাথে প্রার্থণা সারলেন। প্রার্থণা শেষে মুহাম্মদ (সঃ) জানালেন, “ও উম্মুহানি (হিন্দার ডাক নাম), এই ঘরে আমি তোমাদের সাথে প্রার্থণা করেছি। যেমন তোমরা দেখেছ। তারপর আমি পবিত্র স্থানে গিয়েছি এবং সেখানে প্রার্থণা সেরেছি। এবং তারপর তোমাদের সাথে ভোরের প্রার্থণা সারলাম, যেমন তোমরা দেখছো।” সুবহানাল্লাহ! আনাছ (রাঃ) মালেক ইবনে সা’সাআ’হ (রাঃ) হতে বর্ণনা করিয়াছেনঃ নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামকে যেই রাত্রে আল্লাহ তাআলা পরিভ্রমণে নিয়া গিয়াছিলেন সেই রাত্রের ঘটনা বর্ণনায় ছাহাবীগণের সম্মুখে তিনি বলেছেনঃ যখন আমি কা’বা গৃহে উন্মুক্ত অংশ হাতীমে (উপণীত হইলাম এবং তখনও আমি ভাঙ্গা ঘুমে ভারাক্রান্ত) ঊর্ধ্বমুখী শায়িত ছিলাম, হঠাৎ এক আগন্তক (জিব্রাঈল ফেরেশতা) আমার নিকট আসিলেন (এবং আমাকে নিকটবতী/ জমজম কূপের সন্নিকটে নিয়া আসিলেন)। অত:পর আমার বক্ষে ঊধর্ব র্সীমা হইতে পেটের নিম্ন সীমা পর্যন্ত চিরিয়া ফেলিলেন এবং আমার হদয় বা কল্বটাকে বাহির করিলেন। অত:পর একটি স্বর্ণপাত্র উপস্থিত করা হইল, যাহা ঈমান (পরিপক্ব সত্যিকার জ্ঞান বর্ধক) বস্তুতে পরিপূর্ণ ছিল । আমার কল্বটাকে (জমজমের পানিতে) ধৌত করিয়া তাহার ভিতরে ঐ বস্তু ভরিয়া দেওয়া হইল এবং কল্বটাকে নির্ধারিত স্থানে রাখিয়া আমার বক্ষকে ঠিকঠাক করিয়া দেওয়া হইল। অতপর আমার জন্য খচ্চর হইতে একটু ছোট, গাধা হইতে একটু বড় শ্বেত বর্ণের একটি বাহন উপস্থিত করা হইল তাহার নাম “বোরাক”, যাহার প্রতি পদক্ষেপ দৃষ্টির শেষ সীমায়। সেই বাহনের উপর আমাকে সওয়ার করা হল। ঘটনা প্রবাহের ভিতর দিয়া জিব্রাঈল (আঃ) আমাকে লইয়া নিকটবর্তী তথা প্রথম আসমানের দ্বারে পৌছিলেন এবং দরজা খুলিতে বলিলেন। ভিতর হইতে পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হইল, জিব্রাঈল স্বীয় পরিচয় প্রদান করিলেন। অতপর জিজ্ঞাসা করা হইল, আপনার সঙ্গে কে আছেন? জিব্রাঈল বলিলেন, মুহাম্মদ (সঃ) আছেন। বলা হইল, (তাঁহাকে নিয়া আসিবার জন্যই ত আপনাকে) তাঁহার নিকট পাঠান হইয়াছিল? জিব্রাঈল বলিলেন হাঁ। তারপর আমাদের প্রতি মোবারকবাদ জানাইয়া দরজা খোলা হইল। গেটের ভিতরে প্রবেশ করিয়া তথায় আদম (আঃ)-কে দেখিতে পাইলাম । জিব্রাঈল আমাকে তাঁহার পরিচয় করাইয়া বলিলেন,তিনি আপনার আদি পিতা আদম (আঃ), তাঁহাকে সালাম করুন। আমি তাঁহাকে সালাম করিলাম। আমার সলামের উত্তরদানে আমাকে “সুযোগ্য পুত্র ও সুযোগ্য নবী” আখ্যায়িত করিলেন এবং খোশ আমদেদ জানাইলেন ।

অতঃপর জিব্রাঈল আমাকে লইয়া দ্বিতীয় আসমানের দ্বারে পৌছিলেন এবং দরজা খুলিতে বলিলেন। এখানেও পূর্বের ন্যায় কথোপকথন হইল এবং শুভেচ্ছ মোবারকবাদ জনাইয়া দরজা খোলা হইল। ভিতরে প্রবেশ করিয়া তথায় ইয়াহইয়া (আঃ) ও ঈসা (আঃ)-এর সাক্ষাত পাইলাম; তাঁহাদের উভয়ের নানী পরস্পর ভগ্নী ছিলেন। জিব্রাঈল আমাকে তাঁহাদের পরিচয় দানে সালাম করিতে বলিলেন, আমি তাঁহাদিগকে সালাম করিলাম। তাঁহারা আমার সালামের উত্তর প্রদান করত: “সুযোগ্য ভ্রাতা সুযোগ্য নবী” বলিয়া আমাকে খোশ আমদেদ জানাইলেন। অতপর জিব্রাঈল (আঃ) আমাকে লইয়া তৃতীয় আসমানের দ্বারে পৌছিলেন এবং দরজা খুলিতে বলিলেন। তথায়ও পূর্বের ন্যায় কথোপকথনের পর শুভেচ্ছা স্বাগত জানাইয়া দরজা খোলা হইল। ভিতরে প্রবেশ করিয়া ইউসুফ (আঃ)-এর সাক্ষাত পাইলাম । জিব্রাঈল (আঃ) আমাকে তাঁহার সহিত পরিচয় করাইয়া সালাম করিতে বলিলেন; আমি তাঁহাকে সালাম করিলামা তিনি সালামের উত্তর দান করতঃ আমাকে “সুযোগ্য ভ্রাতা ও সুযোগ্য নবী” বলিয়া মোবারকবাদ জানাইলেন । অত:পর আমাকে লইয়া জিব্রাঈল চতূর্থ আসমানের নিকটে পৌছিলেন এবং দরজা খুলিতে বলিলেন। সেখানেও পূর্বের ন্যায় প্রশ্নোত্তরের পর শুভেচ্ছা স্বাগত জানাইয়া দরজা খোলা হইল । ভিতরে প্রবেশ করিয়া আমরা তথায় ইদ্রীস (আঃ)-এর সাক্ষাত পাইলাম । জিব্রাঈল আমাকে তাঁহার পরিচয় করাইয়া সালাম করিতে বলিলেন। আমি তাঁহাকে সালাম করিলাম। তিনি সালামের উত্তর দিলেন এবং “সুযোগ্য ভ্রাতা ও সুযোগ্য নবী” বলিয়া আমাকে মারহাবা জানাইলেন। অত:পর জিব্রাঈল আমাকে লইয়া পঞ্চম আসমানে পৌছিলেন এবং দরজা খুলিতে বলিলেন। এই স্থানেও পূর্বের ন্যায় প্রশ্নোত্তর চলার পর শুভেচ্ছ ও মোবারকবাদ দানের সহিত দরজা খোলা হইল। আমি ভিতরে পৌছিয়া হারুন (আঃ)-এর সাক্ষাত পাইলাম জিব্রাঈল আমাকে তাঁহার পরিচয় দানে সালাম করিতে বলিলেন। আমি সালাম করিলাম। তিনি আমার সালামের উত্তর দিলেন এবং “সুযোগ্য ভ্রাতা ও সুযোগ্য নবী” বলিয়া আমাকে খোশ আমদেদ জানাইলেন। তারপর জিব্রাঈল আমাকে লইয়া ষষ্ঠ আসমানের দরজায় পৌছিলেন এবং দরজা খূলিতে বলিলেন । এস্থানেও পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হইলে জিব্রাঈল স্বীয় পরিচয় দান করিলেন, অত:পর সঙ্গে কে আছে জিজ্ঞাস করা হইল। তিনি বলিলেন, মূহাম্মদ (সঃ); বলা হইল, তাঁহাকে ত নিয়া আসিবার জন্য অপনাকে পাঠান হইয়াছিল? জিব্রাঈল বলিলেন, হাঁ। তৎক্ষণাত শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাইয়া দরজা খোলা হইল। তথায় প্রবেশ করিয়া মূসা (আঃ)-এর সাক্ষাত পাইলাম । জিব্রাঈল আমাকে তাঁহার পরিচয় জ্ঞাত করিয়া সালাম করিতে বলিলেন। আমি তাঁহাকে সালাম করিলাম। তিনি সালামের উত্তর প্রদান করিলেন এবং “সুযোগ্য ভ্রাতা ও সুযোগ্য নবী” বলিয়া আমাকে মোবারকবাদ জানাইলেন। যখন আমি এই এলাকা ত্যাগ করিয়া যাইতে লাগিলাম তখন মূসা (আঃ) কাঁদিতেছিলেন । তাঁহাকে কাঁদিবার কারণ জিজ্ঞাসা করা হইলে তিনি বলিলেন, আমি কাঁদিতেছি এই কারণে যে, আমার উম্মতে বেহেশত লাভকারীর সংখ্যা এই নবীর উম্মতের বেহেশত লাভকারীর সংখ্যা অপেক্ষা কম হইবে অথচ তিনি বয়সের দিক দিয়া যুবক এবং দুনিয়াতে প্রেরিত হইয়াছেন আমার পরে। তারপর জিব্রাঈল আমাকে লইয়া সপ্তম আসমানের প্রতি আরোহণ করিলেন এবং তাহার দ্বারে পৌছিয়া দরজা খুলিতে বলিলেন । এস্থনেও পূর্বের ন্যায় সকল প্রশ্নোত্তরই হইল এবং দরজা খুলিয়া শুভেচ্ছা ও স্বাগত জনান হইল। আমি ভিতরে প্রবেশ করিলাম। তথায় ইব্রাহীম (আঃ)-এর সাক্ষাত লাভ হইল। জিব্রাঈল আমাকে বলিলেন, তিনি আপনার (বংশের আদি) পিতা, তাঁহাকে সালাম করুন। আমি তাঁহাকে সালাম করিলাম। তিনি আমার সালামের উত্তর দিলেন এবং “সুযোগ্য পূত্র, সুযোগ্য নবী” বলিয়া মারহাবা ও মোবারকবাদ জানাইলেন।
অতঃপর আমি সিদরাতূল মোনতাহার নিকট উপনীত হইলাম। ওই পর্যন্ত তার সফরসঙ্গী ছিলেন আল্লাহর ফেরেশতা হজরত জিবরাইল (আ.)। জিব্রাঈল আমাকে বলিলেন, এই বৃক্ষটির নাম “সিদরাতূল মোনতাহা”। সিদরাতূল মোনতাহার উর্ধ্বালোকের শেষ সীমার বরইগাছ, (সিদরাতূল মোনতাহা এক বড় প্রকাণ্ড কূল বৃক্ষবিশেষ, যাহার এক একটা কুল হজর অঞ্চলে তৈয়ারী বড় বড় মটকার ন্যায় এবং তাহার পাতা হাতীর কানের মতো। ফেরেশতারা এরপর আর যেতে পারেন না। তথায় চারটি প্রবাহমান নদী দেখিতে পাইলাম- দুইটি ভিতরের দিকে প্রবাহিত এবং দুইটি বাইরের দিকে। নদীগুলির নাম সম্পর্কে আমি জিব্রাঈলকে জিজ্ঞাসা করিলাম। তিনি বলিলেন, ভিতরের দুইটি বেহেশতে প্রবাহমান (সালসাবিল ও কাওসার নামক) দুইটি নদী। আর বাহিরের দিকে প্রবাহমান দুইটি হইল (ভূ-পৃষ্ঠের মিসরে প্রবাহিত) নীল ও (ইরাকে প্রবাহিত) ফোরাত (নদী বা তাহাদের নামের মূল উৎস)। তারপর আমাকে “বায়তুল মা’মুর” পরিদর্শন করান হইল। তথায় প্রতিদিন (এবাদতের জন্য) সত্তর হাজার ফেরেশতা উপস্থিত হইয়া থাকেন (যে দল একদিন সুযোগ পায় সেই দল চিরকালের জন্য দ্বিতীয় দিন সুযোগ গ্রাপ্ত হয় না)। অতঃপর (আমার সৃষ্টিগত স্বভাবের স্বচ্ছতা ও নির্মলতা প্রকাশ করিয়া দেখাইবার উদ্দেশে পরীক্ষার জন্য) আমার সম্মুখে তিনটি পাত্র উপস্থিত করা হইল। একটিতে ছিল সুরা বা মদ,অপরটিতে ছিল দুগ্ধ, আরেকটিতে মধু আমি দূগ্ধের পাত্রটি গ্রহণ করিলামা। জিব্রাঈল বলিলেন,দুগ্ধ সত্য ও খাঁটি স্বভাগত ধর্ম ইসলামের স্বরুপ; (সুতরাং, আপনি দূগ্ধের পাত্র গ্রহন করিয়া ইহাই প্রমাণ করিয়াছেন যে,) আপনি সত্যও স্বভাবগত ধর্ম ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত আছেন এবং আপনার উসিলায় আপনার উম্মতও তাহার উপর থাকিবে।
তারপর আমার শরীয়তে প্রত্যেক দিন পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরয হওয়ার বিধান করা হইল। আমি ফিরিবার পথে মূসা (আঃ) এর নিকটবতী পথ অতিক্রম করা কালে তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, বিশেষ আদেশ কি লাভ করিয়াছেন? আমি বলিলাম, পঞ্চাম ওয়াক্ত নামায। মুসা (আঃ) বলিলেন, আপনার উম্মত প্রতিদ্ন পঞ্চাশ ওয়াক্ত নমায আদায় করিয়া যাইতে সক্ষম হইবেনা। আমি,সাধারণ মানুষের স্বভাব সম্পর্কে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করিয়াছি এবং বণী ইস্রাঈল গণকে বিশেষভাবে পরীক্ষা করিয়েছি; সুতরাং আপনি পরওয়ারদেগারের দরবারে আপনার উম্মতের জন্য এই আদেশ আরও সহজ করার আবেদন করুন। হযরত (সঃ) বলেন, আমি পরওয়ারদেগারের খাস দরবারে ফিরিয়া গেলাম। পরওয়ারদেগার (দুইবারে পাঁচ পাঁচ করিয়া)দশ ওয়াক্ত কম করিয়া দিলেন। অত:পর আমি আবার মূসার নিকট পৌছালাম,তিনি পূর্বের ন্যায় পরামর্শই আমাকে দিলেন। আমি,পরওয়ারদেগারের দরবারে ফিরিয়া গেলাম এইবারও (ঐরূপ)দশ ওয়াক্ত কম করিয়া দিলেন। পুনরায় মূসার নিকট পৌছিলে তিনি আমাকে এইবারও সেই পরামর্শই দিলেন। আমি পরওয়ারদেগারের দরবারে ফিরিয়া গেলাম এবং (পূর্বের ন্যায়) দশ ওয়াক্ত কম করিয়া দিলেন । এইবারও মূসা (আঃ)-র নিকট পৌছিলে পর তিনি আমাকে পূর্বের ন্যায় পরামর্শ দিলেন। আমি পরওয়ারদেগারের দরবারে ফিরিয়া গেলাম, এইবার আমার জন্য প্রতি দিন পাঁচ ওয়াক্ত নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া হইল । এইবারও মূসার নিকট পৌছিলে পর আমাকে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, কি আদেশ লাভ করিয়াছেন? আমি বলিলাম, প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের আদেশ প্রদান করা হইয়াছে। মূসা (আঃ) বলিলেন, আপনার উম্মত প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযেরও পাবন্দী করিতে পারিবে না। আমি আপনার পুর্বেই সাধারণ মানুষের স্বাভাব সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছি এবং বনী ইস্রাঈলগণকে অনেক পরীক্ষা করিয়াছি। আপনি আবার পরওয়ারদেগারের দরবারে ফিরিয়া আরও কম করার আবেদন জানান। হযরত (সঃ) বলেন, আমি মুসাকে বলিলাম, পরওয়ারদেগারের দরবারে অনেক বার আসা-যাওয়া করিয়াছি; এখন আবার যাইতে লজ্জা বোধ হয়, আর যাইব না বরং পাঁচ ওয়াক্তের উপরই সন্তুষ্ট রহিলাম এবং তাহা বরণ করিয়া নিলাম। হযরত (সঃ) বলেন, অতপর যখন আমি ফিরিবার পথে অগ্রসর হইলাম তখন আল্লাহ তাআলার তরফ হইতে একটি ঘোষণা জারি করা হইল-(বান্দাদের প্রাপ্য সওয়াবের দিক দিয়া) “আমার নির্ধারিত সংখ্যা (পঞ্চাশ) বাকী রাখিলাম, (আমার পক্ষে আমার বাক্য অপরিবর্তিতই থাকিবে) অবশ্য কর্মক্ষেত্রে বান্দাদের পক্ষে সহজ ও কম করিয়া দিলাম । (অর্থাৎ কর্মক্ষেত্রে পাঁচ ওয়াক্ত রহিল, কিন্তু সওয়াবের দিক দিয়া পাঁচই পঞ্চাশ পরিগণিত হইবে।) প্রতিটি নেক আমলে দশ ণ্ডণ সওয়াব দান করিব )।”

বিভিন্ন কারণে মুসলিমদের জীবনে শবে মেরাজ-এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম, কারণঃ
১। মানবতার মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর অলৌকিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা এ হলো মিরাজ। মদিনায় আসার আগে মক্কায় অবস্থানের সময় ২৬ রজব দিবাগত রাতে তিনি বুরাক নামক বাহনে চড়ে প্রথমে বায়তুল মুক্কাদ্দাস যান । তারপর পৃথিবীর হতে মহাবিশ্বের সব স্তর ভেদ করে সিদরাতুল মুনতাহায় যান । অতপর রফরফ নামক বাহনে ৭০ হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে আল্লাহর দরবারে যান এবং আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করেন। মেরাজের মাধ্যমেই ইসলাম ধর্মের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয় স্তম্ভ অর্থাৎ নামায, মুসলমানদের জন্য অত্যাবশ্যক (ফরজ) হয়, এবং এই রাতেই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায মুসলমানদের জন্য নিয়ে আসেন হজরত মুহাম্মদ (সঃ)। এজন্য তিনি বলেছেনঃ " নামাজ হলো বিশ্বাসীদের জন্য মিরাজ"।
২। মিরাজ গমন করার মাধ্যমে মুহাম্মদ (সাঃ) অশুভ শক্তিকে দমন করার জন্য ও বিশ্বব্যাপী ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য দিক নির্দেশনা লাভ করেন । মিরাজ গমন করার মাধ্যমে মুহাম্মদ (সাঃ) ইসলামী সমাজ পরিচালনার বিধি বিধানও নিয়ে আসেন যা কুরআনের বনী ইসরাইল সুরায় আলোচিত হয়েছে। মেরাজকালে মহানবী (সাঃ) সৃষ্টিজগতের সবকিছুর রহস্য স্বচক্ষে দেখেন

বিশ্ব মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ ও সার্বজনীন জীবন ব্যবস্থা হিসেবে রূপ দেয়ার জন্য তিনি বিশ্বের পালনকর্তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা পেয়েছিলেন পবিত্র মিরাজ রজনীতে। এ জন্য এ রাতটি প্রত্যেক মুসলমানের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল (সাঃ)-এর সকল মুযিযার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুযিযা হলো পবিত্র মিরাজ। এ রাতে তিনি বায়তুল মোকাদ্দাসে নামাজে সকল নবীর ইমাম হয়ে সাইয়িদুল মুরসালিনের আসনে স্থায়ীভাবে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। ফলে এ রাতটি নিঃসন্দেহে তার শ্রেষ্ঠত্বের গৌরবোজ্জ্বল নিদর্শন বহন করে। ইসলামের ইতিহাসে পবিত্র শবে মিরাজের এ রাতটি বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালিত হবে। সকল ব্লগার ও মুসলমান ভাইবোনদের প্রতি আহ্বান আসুন আমরা সবাই এ মহিমান্বিত রাতে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ, জিকির-আসকার, দোয়া-দরুদ, মিলাদ মাহফিলসহ ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার রহমত ও মেহেরবানি কামনা করি।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৪১

হাফিজ রাহমান বলেছেন:
শবে মি’রাজ উদযাপন :
১৭ মে (০৩ জ্যৈষ্ঠ), ২৭ রজব ‘শব-ই-মিরাজ’ উপলক্ষে সরকারী ঐচ্ছিক ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারী ছুটিই প্রমাণ করে এ দিবসটির গুরুত্ব কত বেশি ! মিরাজের ব্যাপারটি একটি তাৎপর্যমণ্ডিত ঘটনা। এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে নতুন কিছু আবিষ্কার করে ধর্মাচারের রূপ দান করার কোনো সুযোগ ইসলামে আছে কি না তা খুঁজে দেখা প্রয়োজন। মিরাজের রাত্রিকে কেন্দ্র করে কোনো আচার আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন ইসলাম-অনুমোদিত নয়। উপরন্তু বিদগ্ধ উলামায়ে কেরামের মতে ‘মি’রাজের ঘটনাটি রজব মাসে হয়েছে’ এটা লোকমুখে প্রসিদ্ধ হলেও ঐতিহাসিকভাবে সুনিশ্চিত স্বীকৃত নয়। সীরাত-ইতিহাসের গ্রন্থগুলোতে মিরাজের তারিখ নিয়ে বহু উক্তি রয়েছে। এ কারণে সুনির্দিষ্ট করে মিরাজের রজনী ঘোষণা করার অবকাশ নেই। আর ২৭ রজবের ব্যাপারে ইমাম ইবরাহীম হারবী, ইবনে রজব হাম্বলীসহ অনেকে স্পষ্ট করেই বলেছেন, এ রাতে মিরাজ সংঘটিত হয় নি। নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে মিরাজের ঘটনা হিজরতের এক বা দেড় বছর আগে সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু মাস, দিন তারিখের ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেই। এছাড়াও এ মাসের আমল হিসেবে অন্নদান করা, বস্ত্রদান করা, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা, রোগীর সেবা-শুশ্রূষা করা, জানাযা পড়া, পানীয় পান করানো, ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়া, কুরআন খতম করা ইত্যাদির বিনিময়ে অফুরন্ত ফযীলত লাভসহ দু‘আ কবুল হওয়া এবং বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া সংক্রান্ত যেসব হাদীস সমাজে প্রচলিত আছে তার সবই ভিত্তিহীন, জাল ও বানোয়াট। (তাবয়ীনুল আজাব বিমা ওয়ারাদা ফী শাহরি রাজাব ১/২০-২৫, লাতায়িফুল মা‘আরিফ ১/১২৬)
সারকথা, ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন, ‘স্বতন্ত্রভাবে রজব মাসের মাহাত্ম্য, এ মাসের বিশেষ দিনের রোযা এবং বিশেষ নিয়মের নামায সম্বন্ধে প্রমাণযোগ্য কোনো নির্ভরযোগ্য হাদীস বর্ণিত হয় নি। (তাবয়ীনুল আজাব বিমা ওয়ারাদা ফী শাহরি রাজাব ২)

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ রহমান ভাই,
মহিমান্বিত এ রাতে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ,
জিকির-আসকার, দোয়া-দরুদ, মিলাদ মাহফিলসহ ইবাদত-বন্দেগির
মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার রহমত ও মেহেরবানি কামনা করা ছাড়া
কোনো আচার আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন ইসলাম-অনুমোদিত নয়।
এ রাতে মিরাজ সংঘটিত হয় নি এমন অকট্য প্রমান্য দলিল জানা নেই আমার,
তবে যাদের পিছনে নামাজ পড়ি তাদের বর্ণনায় ২৬ রজব দিবাগত রাতে
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর ঊর্ধ্বেলোকে পরিভ্রমণে যান।

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আপনার বর্ণনা কোথা থেকে জানতে পারলে ভালো হতো। আমি এখান থেকে নিয়েছি- মে'রাজ: এক বিস্ময়কর যাত্রা, পর্ব ১

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ শাইয়্যান
আমার প্রবন্ধে অনেক
তথ্য বিভিন্ন বিজ্ঞ আলেমের
সুলিখিত পুস্তক, পত্র-পত্রিকা
ও ম্যাগাজিন এর সাহায্য নিয়েছি,
কোন একক লেখা থেকে নয়।

৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: শবই মেরাজের রহমগত বরকত আমাদের উপর নাজিল হোক!

আমাদের জ্ঞা এবং প্রজ্ঞা দিয়ে মেরাজের রহস্য সাধনা করে বুৎপত্তি লাভ করি।
আত্মদর্শনে সত্যদর্শনের হাকীকি মেরাজ আমাদের সত্য জ্ঞানালোকে উদ্ভাসীত করুক।

ধন্যবাদ পোষ্টের জণ্য

+++++++

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মহামান্বিত এই রাতে আপনার আমার, সকলেল নেক
মনোবাসনা পূর্ণ হোক। আমিন

৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:১৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
Narrated By Abu Huraira : On the night Allah’s Apostle was taken on a night journey (Miraj) two cups, one containing wine and the other milk, were presented to him at Jerusalem. He looked at it and took the cup of milk. Gabriel said, “Praise be to Allah Who guided you to Al-Fitra (the right path); if you had taken (the cup of) wine, your nation would have gone astray.

[Sahih Bukhari Volume 007, Book 069, Hadith Number 482]

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
Thank you very much for
quote from the Holy Sahih Bukhari

৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫

দয়িতা সরকার বলেছেন: ভাইয়া, শুভ নববর্ষ । এই পোস্ট প্রিয়তে নিলাম।

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৫০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা।
লেখাটি প্রিয়তে রাখার জন্য আবারো ধন্যবাদ।

৬| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১১

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: নূরু ভাই??

"ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে,মহানবীর (স.) মেরাজ দৈহিক নয়, বরং ছিল আত্মিক আরোহণ।" --- এটা কি ধরনের কথা??



""খচ্চর হইতে একটু ছোট, গাধা হইতে একটু বড়""???
ঠিক করেন।(খচ্চর হইতে একটু বড়, গাধা হইতে একটু ছোট)

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মন্ডল ভাই,
ইসলামী চিন্তাবিদরা আমাদের থেকে
অনেক পড়াশুনা/গবেষণা করেছেন
তাই তাদের কথা প্রানিধানযোগ্য।
গাধা খচ্চরের সাথে তুলনা করাটা
বোধ হয় যথার্থ হলো না।

৭| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৫৫

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: পুণ্য ছড়িয়ে পড়ুক। পাপচার বিদায় হউক।

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ শাহাদাৎ ভাই
আপনার প্রার্থনা আল্লাহর
দরবারে পৌছে যাক। আমিন।

৮| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: আজকের রাতটি মুসলমানদের জন্য বিশেষ এক রাত।

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অবশ্যই একটি তাৎপর্যপূর্ণ রাত
যদি তা অনুধাবন করতে পারা যায়।

৯| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:২৮

নাঈমুর রহমান আকাশ বলেছেন: অনেকে বলেন ঈসা (আঃ) নাকি রসূল করীমে (সাঃ) এর উম্মত হওয়ার জন্য আকাঙ্খা করেছিলেন তাই আল্লাহ্ পাক তাঁকে জীবিত অবস্থা সশরীরে চতুর্থ আকাশে হাজার হাজার বৎসর যাবৎ রেখে দিয়েছেন যাতে শেষ যুগে আখেরী নবীর উম্মত করে দুনিয়ায় পাঠাতে পারেন। এই বিশ্বাস সম্পূর্ণ ভুল। কুরআন হাদীসে এর কোন সমর্থন খুঁজে পাওয়া যায় না। বরং রসূল করীম (সাঃ) এর মিরাজ দ্বারা এই বিশ্বাস ভ্রান্ত প্রমাণিত হয় কেননা, রসূল করীম (সাঃ) মিরাজে ঈসা (আঃ)-কে মৃতদের মধ্যে দ্বিতীয় আকাশে দেখেছিলেন। তাছাড়া হযরত আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত অপর একটি হাদীস দ্বারাও এই বিশ্বাস বাতিল হয়ে যায়। হাদীসটি এই, বর্ণিত আছে যে, ‘একদা আল্লাহ্ তাআলা মূসা (আঃ)-কে বললেন যে, তুমি বনী ইস্রাঈলকে বলে দাও, যে ব্যক্তি আহমদ (সাঃ)-কে অস্বীকার করে আমার নিকট হাজির হবে সে যেই হোউক না কেন আমি তাকে দোযখে নিক্ষেপ করব। মূসা (আঃ) বললেন, এই আহমদ কে? ইরশাদ হল, হে মূসা! কসম আমার সম্মান ও প্রতাপের, আমি এমন কোন কিছু সৃষ্টি করিনি যা তার চেয়ে আমার কাছে অধিক মর্যাদা সম্পন্ন, আমি তার নাম আমার নামের সঙ্গে আকাশ পৃথিবী, চন্দ্র ও সূর্য সৃষ্টির বিশ লক্ষ বৎসর পূর্বে আরশে লিখে রেখেছিলাম। আমার ইজ্জত ও প্রতাপের শপথ, জান্নাত আমার সমস্ত সৃষ্টির জন্য হারাম যতক্ষণ না মোহাম্মদ এবং তার উম্মত তাতে প্রবেশ করে, (এর পর উম্মতে মোহাম্মদীয়ার ফযিলত বর্ণনা করলেন) অতপর মূসা (আঃ) আরজ করলেন, হে প্রভু! আমাকে এই উম্মতের নবী করে দিন। এরশাদ হল, এই উম্মতের নবী ঐ উম্মত হতেই হবে। মূসা (আঃ) আরজ করলেন, তাহলে আমাকে ঐ উম্মতে মোহাম্মদীয়ার মধ্যেই দাখিল করে দিন। ইরশাদ হল, তুমি প্রথমে হয়ে গিয়েছ কিন্তু ওরা পরবর্তী কালে হবে।” মৌলানা আশরাফ আলী থানবীও তাঁর ‘নসরুত্তিব’, নামক পুস্তকের ১৯৩ পৃষ্ঠায় (দেওবন্দ থেকে প্রকাশিত) এই হাদীসটি উল্ল্যেখ করেছেন। এই হাদীস দ্বারা দেখা যায় যে, মহানবী (সাঃ)-এর উম্মত হওয়ার জন্য মূসা (আঃ)-এর প্রার্থনা আল্লাহ্ তাআলা এই বলে নামঞ্জুর করলেন যে, ‘তুমি প্রথমে হয়ে গিয়েছ কিন্তু ওরা পরবর্তী কালে হবে। অতএব ঈসা (আঃ) পূর্বের হয়ে পরে কি করে উম্মতে মোহাম্মদীয়অতে আবির্ভুত হবেন? এটা কি আল্লাহর এই স্পষ্ট ফরমানের বিরুদ্ধে যায় না? তাছাড়া উপরে বর্ণিত হাদীস দ্বারা এও প্রমাণ হল যে, এই উম্মতের নবী এই উম্মত (অর্থাৎ উম্মতে মোহাম্মদীয়া) হতেই হবে। উম্মতি নবী সম্বন্ধে যথাস্থানে আলোচনা করা হবে। অতএব প্রতিশ্রুত মসীহ যে এই উম্মত হতেই হবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। রসূল করীম (সাঃ) বলেছেন, “আলা আন্নাহু খালিফাতি ফি উম্মতি আলা আন্নাহু লাইসা বাইনি ওয়া বাইনাহু নাবীউন” (তিবরানী) অর্থাৎঃ তিনি (প্রতিশ্রুত মসীহ্) আমার উম্মত হতে আমার খলীফা হবেন এবং তাঁর ও আমার মধ্যখানে কোন নবী নেই।
প্রাপ্ত সূত্রঃ ওফাতে ঈসা ও মসীলে ঈসা - আলহাজ্জ আহমদ তৌফিক চৌধুরী

১০| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:৪৮

আমার কণ্ঠ বলেছেন: প্রাপ্ত সূত্রঃ ওফাতে ঈসা ও মসীলে ঈসা - আলহাজ্জ আহমদ তৌফিক চৌধুরী
wrong interpretation

১১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:০০

তারেক ফাহিম বলেছেন: লাইক ও প্রিয়তে নিলাম।

১২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: নাঈমুর রহমান আকাশ একজন কাদিয়ানী সুতরাং এনার সংগে কথা বলতে সতর্কতা প্রয়োজন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.