নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপমহাদেশের প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক আয়েত আলী খাঁ এর ৫১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৫


প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ। উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের ঐতিহ্যবাহী ধারাকে সচল রাখা, নতুনদের এর প্রতি আকৃষ্ট করা এবং বিশেষভাবে যন্ত্রবাদনের ক্ষেত্রে আয়েত আলীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মাইহার ও রামপুর রাজ্যের রাজসঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। যন্ত্র ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকারের 'তমঘা-ই-ইমতিয়াজ' খেতাব, ১৯৭৬ সালে মরণোত্তর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার এবং ১৯৮৪ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন। আজ এই গুণীজনের ৫১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৬৭ সালের আজকের দিনে তিনি মৃ্ত্যুবরণ করেন। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী, সেতার ও সুরবাহার বাদক আয়েত আলী খাঁ এর ৫১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ ১৮৮৪ সালের ২৬ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার শিবপুর গ্রামে এক বিখ্যাত সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সবদর হোসেন খাঁও (সদু খাঁ) একজন সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন। দশ বছর বয়সে আয়েত আলী অগ্রজ ফকির আফতাবউদ্দিন খাঁর নিকট সঙ্গীতশিক্ষা শুরু করেন। দীর্ঘ সাত বছর সরগম সাধনা আর রাগ-রাগিণী রেওয়াজ করার পর তিনি ভারতের মাইহারে গিয়ে অপর অগ্রজ আলাউদ্দিন খাঁর নিকট সঙ্গীতে তালিম নেন। প্রথম পর্বে তিনি সেতার এবং দ্বিতীয় পর্বে সুরবাহার শেখেন। আলাউদ্দিন খাঁ কনিষ্ঠ ভ্রাতার মধ্যে রাগ-আলাপে আকর্ষণ ও নিষ্ঠা দেখে যত্নের সঙ্গে তাঁকে সুরবাহার শেখান। আয়েত আলীও অগ্রজের নির্দেশ অনুযায়ী এর বাদনকৌশল ও রাগ রূপায়ণের সূক্ষ্ম বিষয়গুলি নিষ্ঠার সঙ্গে আয়ত্ত করেন। পরে আলাউদ্দিন খাঁ তাঁকে নিজগুরু ওস্তাদ ওয়াজির খাঁর নিকট রামপুরে পাঠিয়ে দেন। ঐকান্তিক নিষ্ঠা ও একাগ্রতার ফলে আয়েত আলী ওস্তাদের মন জয় করতে সক্ষম হন এবং তাঁর নিকট দীর্ঘ তেরো বছর শিক্ষাগ্রহণ করেন। সঙ্গীতে শিক্ষাগ্রহণ শেষে তিনি মাইহার রাজ্যের সভাবাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তার স্থান হয় তার ভাই আলাউদ্দিন খাঁর পাশেই। তারা দুজনে মিলে সেখানে ঐকতান-বাদকদল গঠন করেন। পরে তিনি রামপুরের রাজদরবারেও সভাবাদক হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৩৫ সালের মে মাসে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আহ্বানে তিনি শান্তিনিকেতনে যান। সেখানে তিনি বিশ্বভারতীর যন্ত্রসঙ্গীত বিভাগের প্রধানের পদে যোগ দেন। কিন্তু কয়েক মাস অধ্যাপনা করার পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে চাকরি ছেড়ে তিনি স্বগ্রামে চলে আসেন। এরপর থেকে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি এখানেই সঙ্গীতের সাধনা ও প্রসারে অতিবাহিত করেন। ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ ১৯৪৮ সালে কুমিল্লা শহরের নজরুল এভিনিউ এলাকায় বসতি স্থাপন করে বসবাস শুরু করেন। বড়িটি তাঁর স্ত্রীর নামে ‘ওমর কুটির’ নামে নামকরণ করেন।

এসময় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘আলম ব্রাদার্স’ নামে একটি বাদ্যযন্ত্র তৈরির কারখানা খুলে গবেষণার মাধ্যমে কয়েকটি নতুন বাদ্যযন্ত্রও উদ্ভাবন করেন। মনোহরা ও মন্দ্রনাদ বাদ্যযন্ত্রদুটি তাঁর সৃষ্টি। তিনি সুরবাহার ও সরোদ যন্ত্রেরও নতুন রূপ দেন। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর পরামর্শে তিনি চন্দ্রসারং যন্ত্রটিও তৈরি করেন। তিনি বারিষ, হেমন্তিকা, আওল-বসন্ত, ওমর-সোহাগ, শিব-বেহাগ, বসন্ত-ভৈরোঁ, মিশ্র সারং প্রভৃতি রাগেরও স্রষ্টা। বিশুদ্ধ রাগসঙ্গীতের চর্চা, সংরক্ষণ ও প্রসারের জন্য আয়েত আলী খাঁ ১৯৪৮ সালে কুমিল্লায় এবং ১৯৫৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলাউদ্দিন মিউজিক কলেজ নামে দুটি সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। ১৯৫১ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান রেডিওতে নিয়মিত সুরবাহার পরিবেশন করেন। সঙ্গীতে অসাধারণ কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি গভর্নর পদক (১৯৬০), পাকিস্তান সরকারের তমঘা-ই-ইমতিয়াজ খেতাব (১৯৬১), রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাইড অব পারফরম্যান্স (১৯৬৬), বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী (মরণোত্তর, ১৯৭৬) এবং স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (মরণোত্তর, ১৯৮৪) লাভ করেন। ১৯৬৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন ওস্তাদ আয়াত আলী খাঁ। তাঁকে দাফন করা হয় কুমিল্লা শহরের টমসন ব্রিজস্থ কবরস্থানে। আজ এই গুণীজনের ৫১তম মৃত্যুবার্ষিকী। রাগ সঙ্গীতের প্রাণপূরুষ সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ এর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: বড় বড় সঙ্গীত শিল্পিগণ ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁয়ের নাম নিতে কানে হাত ছোয়ে থাকেন - এটা উল্যেখ করতে পারতেন বস্ ।। আজকে একজন ইতিহাসের সঙ্গীত সম্রাটকে নিয়ে পোষ্ট দিয়েছেন - সাবাস । ধন্যবাদ নিবেন ।।

২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩১

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: এই পোষ্টে লাইক না দিলে ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁয়ের পোষ্টের প্রতি অসম্মান করা হয় ।


আবারো ধন্যবাদ নুর মোহাম্মদ নুরু ভাই ।

৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: শ্রদ্ধা জানাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.