নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাহিত্যরত্ন মুনশী আশরাফ হোসেনের ৫৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৪১


সিলেট বিভাগের লোক সাহিত্যের পথিকৃত বাঙালি পুরাতত্ত্ববিদ,সাহিত্যরত্ন মুনশী আশরাফ হোসেন। একাধারে তিনি কবি, পুথি ও লোকসাহিত্য সংগ্রাহক ও গবেষক। ১৯১৮ সাল থেকে আশরাফ হোসেনের সাহিত্যিক জীবন শুরু হয়। প্রথম দিকে তিনি বিভিন্ন সাময়িকী ও পত্রপত্রিকায় স্থানীয় সমস্যা নিয়ে লেখালেখি করেন। এ সময় তিনি লোকসাহিত্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তাঁর সংগৃহীত ‘মণিপুরের লড়াই’ দীনেশচন্দ্র সেন Eastern Bengal Ballads গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত করেন। মুনশী আশরাফ হোসেন ১২টি মৌলিক গ্রন্থ প্রণয়ন করেছেন। মাসিক আল ইসলাহ পত্রিকায় তার রচিত সিলহটের ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ আশরাফ হোসেন ১৯৬৫ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ‘তমঘা-ই-কায়েদে আযম’ উপাধি লাভ করেন। মুনশী আশরাফ হোসেন সাহিত্যরত্ন বাংলা লোকসাহিত্যের ইতিহাসকে অনেকদূর নিয়ে গেছেন। সত্যিই তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক রত্ন। লোক সাহিত্যের গবেষণায় তাঁর অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আজ এই পুরাতত্ত্ববিদের ৫৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৬৫ আজকের দিনে তিনি সিলেট জেলার নিজ গ্রাম রহিমপুরে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুবার্ষিকীতে সাহিত্যরত্ন মুনশি আশরাফের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

কবি, পুথি ও লোকসাহিত্য সংগ্রাহক, গবেষক মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন ১৮৯২ সালে সিলেটের কমলগঞ্জ থানার রহিমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অনুসন্ধানে তাঁর জন্ম তারিখটি খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে সঠিক জন্মতারিখ উল্লেখ করা গেলনা। তার পিতার নাম মোহাম্মদ জওয়াদ এবং মাতা সৈয়দা সাকেরা ভানু। মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন স্থানীয় মক্তবে শিক্ষা শুরু করেন। কওমি মাদ্রাসায় পাঁচ বছর শিক্ষার্জনের পর তিনি মুনশি উপাধি লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯১৫ সাল পর্যন্ত তিনি কালিপ্রসাদ মধ্য ইংরেজি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। এর তিন বছর পরে ১৯১৮ সালে তার নিজ গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯২২ সালে তিনি এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হন। একই বছর শিলচর নর্মাল স্কুল থেকে গুরু ট্রেনিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২৫ সালে তিনি নিখিল ভারত সাহিত্য সংঘ কতৃক প্রদত্ত সাহিত্যরত্ন ও কাব্যবিনোদ উপাধি ও সার্টিফিকেট লাভ করেন। মুনশী আশরাফ হোসেন অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতেন না। নিজের এলাকার মানুষকে শিক্ষার আলোকে গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্যকে সুন্দর রাখার জন্য পরামর্শ এবং উপযুক্ত নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর সার্বিক কর্মকান্ড ছিল অত্যন্ত গোছানো, তাই তিনি নিজেকে সাহিত্য ক্ষেত্রে রত্ন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।

মুনশী আশরাফ হোসেন ১২টি মৌলিক গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে আশরাফ দেওয়ানা, ভূমিকম্পের কবিতা, আদম খাঁ দেওয়ানের গীত ইত্যাদি। লোকসাহিত্য বিষয়ে তার সম্পাদিত ৩০টি গ্রন্থ রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে দিলকুশ কন্যার বারমাসী, শান্তিকন্যার বারমাসী, লিলাইর বারমাসী, মধুমালার গীত প্রভৃতি। এছাড়াও তিনি ১৭টি পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করেছেন। যেমন মক্তবি বাল্যশিক্ষা, সাহিত্য সুধা, নববিধান ধারাপাত ইত্যাদি। সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মুর্শিদাবাদ বঙ্গ সাহিত্য মন্ডল ১৯৩৫ সালে তাকে পুরাতত্ত্ববিদ উপাধি দেয়। ১৯৪৩ সালে আসাম সরকার তাকে সাহিত্য বৃত্তি প্রদান করে। ১৯৫২ সালে নিখিল বঙ্গ সাহিত্য সংঘ তাকে সাহিত্যরত্ন ও কাব্যবিনোদ উপাধি দেয়। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকার তাকে তমগা-ই-কায়েদে আজম উপাধি প্রদান করে। বাংলা একাডেমি থেকেও তাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়োছিলো। বাংলাদেশের লোকসাহিত্যের ইতিহাসে মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন সাহিত্যরত্ন এক উজ্জ্বল নাম। যিনি শত প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও লোকসাহিত্যের গবেষণা, সংরক্ষণ এবং প্রসারে উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন। সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি সমাজের উন্নয়নে তার বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। বিশেষ করে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে মানুষের মধ্যে আলোকবর্তিকা হয়ে আছেন। এক কালের কোলকাতা বেতারের গীতিকার ও লোকগীতি সংগ্রহক লোকসাহিত্যপ্রাণ মুনশী আশরাফ হোসেন ১৯৬৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সিলেটের নিজ গ্রাম কমল গঞ্জের রহিমপুরে ইন্তেকাল করেন। আজ বাঙালি পুরাতত্ত্ববিদ,সাহিত্যরত্ন মুনশী আশরাফ হোসেনের ৫৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। সাহিত্যরত্ন, কাব্যবিনোদ, পুরাতত্ত্ববিদ, লোকসাহিত্য গবেষক মুনশী আশরাফ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:১৫

স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: মুনশী আশরাফ হোসেনের ৫৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে
..................................................................
থাকল আমার গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ স্বপ্নের শঙ্খচিল
মুনশী আশরাফ হোসেনের
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২২

রাজীব নুর বলেছেন: শ্রদ্ধা জানাই।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৩৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সাহিত্যরত্ন মুনশী আশরাফ হোসেনের
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য
আপসনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খান ভাই।

৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ আলি ভাই।
সাথে থাকার জন্য শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.