নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্রিটিশ রাজসভার রোমান্টিক কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের ২৫০তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪


ইংরেজ সাহিত্যের অন্যতাম ব্রিটিশ রাজসভার রোমান্টিক কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ। কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থ এবং স্যামুয়েল টেলর কলরিজ উভয়ে মিলে ইংরেজি সাহিত্যে একটি রোমান্টিক ধারার সূত্রপাত করেন। কোলরিজের আন্তরিক সহযোগিতায় ১৭৯৮ সালে প্রকাশিত হয় দুজনের যৌথ কাব্য ‘লিরিক্যাল বালাডস’ যা সমগ্র বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং কবিতার জগতে এক নতুন দ্বার উন্মোচন করে। অতীতের সব ধারা ছাপিয়ে সূচনা ঘটে রোমান্টিক যুগের। মূলত ইংরেজি সাহিত্যে রোমান্টিক ধারার প্রবর্তক হলেও উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ প্রকৃতির কবি হিসেবেই সর্বাধিক পরিচিত। প্রকৃতির তুচ্ছ ও সাদামাটা বিষয়-আশয়কে অসাধরণ মহিমায় সাজিয়ে তোলার ক্ষেত্রে ইংরেজ সাহিত্যে যার অবদান অনস্বীকার্য তিনি কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ। ১৭৮৭ সালে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ওয়ার্ডসওয়ার্থ। ‘দি ইউরোপিয়ান’ ম্যাগাজিনে তার প্রথম সনেট প্রকাশিত হয়। এ সময় তিনি ক্যামব্রিজের সেন্ট জনস কলেজে পড়ালেখা করতেন। তার বেশিরভাগ কবিতার মধ্যে পাওয়া যায় সৃষ্টিজগতের সূক্ষ্ম জীবনবোধ, মানবতার জয়গান এবং প্রেম ও প্রকৃতি নিঃসর্গের নিগূঢ়তম রহস্যময় উপাদান। একজন দক্ষ সমালোচক হিসেবেও ইংরেজি সাহিত্যে তার অবস্থান ছিল বেশ শক্ত। পরিণত বয়সে এসে কাব্য সাধনায় মত্ত হন বলেই হয়তো লেখালেখির সূচনালগ্ন থেকে সাফল্যের সুঘ্রাণ পেতে শুরু করেন ইংরেজি কবিতার বাঁক বদলের এই শক্তিমান পুরুষ। পাহাড়ে ঘেরা ওয়াই নদীর সবুজ উপত্যকা। বলা হতো ‘গেট অফ ওয়েলস’। প্রকৃতির হাতে গড়া এই জলছবির টানে বারবারই সেখানে ছুটে যেতেন উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ থেকে স্যামুয়েল টেলর কোলরিজের মতো কবিরা। আর জন্ম নিত একের পর এক ‘মাস্টারপিস’! আজ রোমান্টিক কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের ২৫০তম জন্মবার্ষিকী। ১৭৭০ সালের আজকের দিনে তিনি যুক্তরাজ্যের কাম্বারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। ব্রিটিশ রাজসভার রোমান্টিক কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ ১৭৭০ সালের ৭ এপ্রিল ইংল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় নিচু হ্রদ এলাকার শহর ককারমাউথে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জন ওয়ার্ডসওয়ার্থ ও মাতা অ্যান ক্রুকসান। এই দম্পতির পাঁচটি সন্তানের মধ্যে উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ ছিলেন দ্বিতীয়। ওয়ার্ডসওয়ার্থ বাবার কাছে মিলটন, শেক্সপিয়র ও স্পেনসারের কবিতা শিখতেন। ককারমাউথে পড়ালেখা করলেও নানাবাড়ি কাম্বারল্যান্ডের পেনরিলেও তিনি মাঝে-মধ্যে থাকতেন। ১৭৭৮ সালে মায়ের মৃত্যুর পর ওয়ার্ডসওয়ার্থকে হকসহেড গ্রামার স্কুলে পাঠিয়ে দেন তার বাবা। ১৭৯১ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৭৯১ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর ফরাসি বিপ্লবের প্রতি প্রবলভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন ওয়ার্ডসওয়ার্থ। মূলত ফরাসি বিপ্লবের ‘সাম্য ও মৈত্রী’ আদর্শের বাক্য শুনে এবং তারুণ্যের প্রবাহে বিপ্লবের প্রতি উৎসাহী হয়ে পড়েন তিনি। ছুটে যান ফ্রান্সে। তবে সে ঘোর বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। বয়স আটাশের কোটায় পা দেয়ার আগেই বিপ্লবের নীতি ও আদর্শের বিপথগামী অবস্থা দেখে দারুণভাবে মর্মাহত হন তিনি। বিশেষত ১৭৯২ সালের ‘সেপ্টেম্বর ম্যাসাকার’ ঘটনায় পিচাশপ্রতীম উল্লাসে মানুষ হত্যা এবং অমানবিক ধ্বংসলীলার প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে তার চিন্তা-চেতনায় ব্যাপক পরিবতর্ন আসে। তিনি ফিরে আসেন ইংল্যান্ডে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে। এখানে এসে দারুণ আর্থিক সংকটে পড়েন তিনি। এ সময়ে রাইজল কার্লভার্ট নামে তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু অর্থের জোগান দিতে শুরু করেন এবং কাব্যসাধনায় মগ্ন হওয়ার জোর পরামর্শ দেন। পাশে দাঁড়ান বোন ডোরেথি। বোনের অনুপ্রেরণা ও সেবাযত্নের পাশাপাশি বন্ধু রাইজলের আর্থিক সহযোগিতায় ওয়ার্ডসওয়ার্থের কাব্যতরী ধীরালয়ে ভাসতে ভাসতে একদিন তা প্রবলভাবে ছুটতে শুরু করে। অল্পদিনের মধ্যেই পরিচয় হয়ে যায় ইংরেজি সাহিত্যের আরেক দিকপাল, তারুণ্যের কবি স্যামুয়েল ট্রেইলর কোলরিজের সঙ্গে। গবেষকদের মতে, ওয়ার্ডসওয়ার্থ টিনটার্ন অ্যাবে এবং স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ দ্য অ্যানসিয়েন্ট ম্যারিনার কবিতা লেখার পর যদি চিরতরে দুজন কবিতার পথ থেকে সরেও দাঁড়াতেন, তারপরও বিশ্বসাহিত্যে তারা অমর ও অক্ষয় আসনটিতেই অধিষ্ঠিত থাকতেন। কাকতালীয়ভাবে হলেও এটাই ধ্রুবসত্য, টিনটার্ন অ্যাবে এবং দ্য অ্যানসিয়েন্ট ম্যারিনার শিরোনামের বিশ্বকাঁপানো এই দুটি কবিতাই ঠাঁই পেয়েছিল লিরিক্যাল বালাডস গ্রন্থে। তারপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছেঃ ‘অ্যান ইভিনিং ওয়াক’, ‘ডেসক্রিপটিভ্ স্কেচেজ’, ‘দ্য বর্ডারার্স’, ‘দ্য হোয়াইট ডু অব রাইলস্টোন’, ‘পয়েমস’, ‘দি এক্সকারশন’, ‘এক্লেজিয়াসটিক্যাল সনেটস’ ও ‘ইয়ারো রিভিজিটেড’। ১৮৩৮ সালে কবি ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল আইনে ডক্টরেট করেন। পরের বছর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডিগ্রি দেয়।

(স্ত্রী মেরি হাচিসটন ও কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থ)
ব্যক্তিগত জীবনে ১৭৯১ সালে নভেম্বরে ফ্রান্সে ভ্রমণের সময় তিনি অ্যানেট ভেলন নামে এক ফরাসি নারীর প্রেমে পড়েন উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ। ১৭৯২ সালে ভেলন একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন যদিও ওয়ার্ডসওয়ার্থ ও ভেলন কোনো প্রকার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি। আর্থিক সংকট ও ব্রিটেনের সঙ্গে ফ্রান্সের বিরূপ সর্ম্পকের কারণে ওয়ার্ডসওয়ার্থ পরবর্তী বছরে ভেলনকে ছাড়াই ইংল্যান্ডে ফিরে আসতে বাধ্য হন। ওয়ার্ডসওয়ার্থ তার জীবনে ভেলন ও তার কন্যা সন্তান ফেরলিনকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করে গেছেন। ১৮০২ সালে ওয়ার্ডসওয়ার্থ তার বাল্যকালের বান্ধবী মেরি হাচিসটনকে বিয়ে করেন। তার পরের বছর মেরি প্রথম সন্তানের জন্ম দেন। ১৮৪৭ সালে মাত্র ৪২ বছর বয়সে তার কন্যা ডোরার অকাল মৃত্যুর পর, ওয়ার্ডসওয়ার্থ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েন। তারপর তিনি আর কখনও হাতে কলম নেননি। ১৮৫০ সালে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর কয়েক মাস পর স্ত্রী মেরি তার দীর্ঘ আত্মজীবনীমূলক কবিতা দ্য প্রিলিউড প্রকাশ করেন। যদিও তার সাহিত্যজীবনের এই মাস্টারপিসটি মানুষকে অত বেশি আকর্ষণ করেনি।১৮৪৭ সালে মাত্র ৪২ বছর বয়সে তার কন্যা ডোরার অকাল মৃত্যুর পর, ওয়ার্ডসওয়ার্থ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েন। তারপর তিনি আর কখনও হাতে কলম নেননি। ১৮৫০ সালের ২৩ এপ্রিল তিনি যুক্তরাজ্যের কম্বারল্যান্ডে মৃত্যিুবণ করেন। তার মৃত্যুর কয়েক মাস পর স্ত্রী মেরি তার দীর্ঘ আত্মজীবনীমূলক কবিতা দ্য প্রিলিউড প্রকাশ করেন। যদিও তার সাহিত্যজীবনের এই মাস্টারপিসটি মানুষকে অত বেশি আকর্ষণ করেনি। আজ রোমান্টিক কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের ২৫০তম জন্মবার্ষিকী। ব্রিটিশ রাজসভার রোমান্টিক কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:



দেশের কারণে, রাজ কবিকে নিজের ভালোবাসার মানুষকে ছাড়তে হলো? কিসের আবার রাজ কবি?

০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বাস্তবতা বড়ই নির্মম!!
আবেগ আর ভালোবাসা দিয়ে
বাস্তবতাকে মোকাবেলা করা যায়না।
হতে পারে রাজ কবির আসন পোক্ত
করতেই ভালোবাসার মানুষকে
ছেড়ে ছিলেন, কে জানে !!

২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: একজন প্রুকিতির কবি ।
তার কবিতায় মানূষের কথার চেয়ে বেশি থাকে গাছ পালা, নদী পাহাড় আর সমুদ্রের কথা।

০৭ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:২০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ওয়ার্ডসওয়ার্থ সম্পর্কে ভালো
ধারণা আছে মনে হয়!!

তবে তার বেশিরভাগ কবিতার মধ্যে পাওয়া যায়
সৃষ্টিজগতের সূক্ষ্ম জীবনবোধ, মানবতার জয়গান
এবং প্রেম ও প্রকৃতি নিঃসর্গের নিগূঢ়তম
রহস্যময় উপাদান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.