নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রখ্যাত সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক আনোয়ার পারভেজের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৭ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৫৯


আনোয়ার পারভেজ হচ্ছেন বাংলা সঙ্গীতের অন্যতম সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক,ক সঙ্গীতজ্ঞ ও শব্দসৈনিক। বিবিসির জরিপে যে ২০টি বাংলা গান সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে, তার মধ্যে আনোয়ার পারভেজেরই সুরারোপিত গান তিনটি। এগুলো হচ্ছে- ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একবার যেতে দে না আমায় ছোট্ট সোনার গাঁয়’ এবং ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’।আনোয়ার পারভেজের পেশাদার সঙ্গীত জীবনের শুরু হয় ষাটের দশকের গোড়ায়, চট্টগ্রাম বেতারে সুরকার পদে যোগ দেয়ার মাধ্যমে৷ পরবর্তীতে ঢাকায বিভিন্ন মাধ্যমে সংগীত পরিচালনা শুরু করেন। অতুলনীয় ও উত্তেজনাপূর্ণ সুরে সাজানো, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে বহুল প্রচারিত জনপ্রিয় গান ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ অসংখ্য দেশপ্রেমিক তরুণকে যুদ্ধে যোগদানে উদ্বুদ্ধ করেছে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েছে আত্মবিশ্বাস। খ্যাতিমান এই সুরকারের ভাই ও বোন নিজ নিজ নামে তিনজনই পরিচিত এবং দেশের স্বনামধন্য নায়াক, গায়ক ও খ্যাতিমান গায়িকা। আনোয়ার পারভেজ, শাহনাজ রহমতুল্লাহ ও জাফর ইকবাল; তারা তিনজনই একই পরিবারের সন্তান। তার মধ্যে আনোয়ার পারভেজ সবার বড়, জাফর ইকবাল মেজ এবং শাহনাজ রহমতুল্লাহ সবার ছোট। নিজস্ব গুণে সমৃদ্ধ করেছেন লাল সবুজের এই দেশের সংস্কৃতি। আনোয়ার পারভেজ সুর ও সঙ্গীতায়োজন দিয়ে, শাহনাজ রহমতুল্লাহ গান গেয়ে এবং জাফর ইকবাল সিনেমায় অভিনয় ও গান গেয়ে জয় করেছেন বাংলার প্রতিটি মানুষের মন। হয়েছেন কিংবদন্তি। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের অন্যতম ব্যবসাসফল ছবি ‘রংবাজ’র সুরকারও ছিলেন আনোয়ার পারভেজ। সে সময় ‘সে যে কেন এলো না কিছু ভালো লাগে না’ বা ‘এই পথে পথে আমি একা চলি’ গানগুলো মানুষের মুখে মুখে শোনা যেত৷ এছাড়া ‘দি রেইন’ চলচ্চিত্রে সঙ্গীতায়োজন করেও তিনি সমালোচকদের দৃষ্টি কেড়েছিলেন৷ চার দশকের সঙ্গীত জীবনে তিনি সহস্রাধিক গানে সুরারোপ করেছেন। মৃত্যুর আগে গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন অন্তরের অন্ত:স্থলের আক্ষেপ অনেক ভালো গানের সুর করেও তিনি কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাওয়া হয়নি তার। পরে সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০৭ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করে। কালোত্তীর্ণ গানের সুরকার আনোয়ার পারভেজের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৬ সালের ১৭ জুন এই খ্যাতিমান ও প্রতিভাধর সুরকার ধরণীর মায়া ত্যাগ করে চিরবিদায় নেন। প্রখ্যাত সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও সঙ্গীতজ্ঞ আনোয়ার পারভেজের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

(আনোয়ার পারভেজ, শাহনাজ রহমতুল্লাহ ও জাফর ইকবাল)
আনোয়ার পারভেজ আনুমানিক ১৯৪৪ সালে (জন্মতারিখ অজ্ঞাত) ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার পৈত্রিক নিবাস সিরাজগঞ্জে। তার পিতা এম ফজলুল হক ও মাতা আসিয়া হক। ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি তাঁর প্রবল ঝোঁক ছিল। এক সময় প্রখ্যাত মিউজিশিয়ান করিম শাহাবুদ্দিনের সংস্পর্শে আসেন তিনি। ‘চাঁদ আওর চাঁদনী’ ও ‘বাবলু’ ছবিতে করিম শাহাবুদ্দিনের সহযোগী সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন তিনি। আনোয়ার পারভেজ ষাটের দশকে পেশাদার সঙ্গীত জীবন শুরু করেন, চট্টগ্রাম বেতারে সুরকার হিসেবে যোগ দেন৷ পরে ঢাকায় এসে বিভিন্ন মাধ্যমে সঙ্গীত পরিচালনা করেন। তাঁর সুরারোপিত প্রথম ছবি ‘বিন্দু থেকে বৃত্ত’ মুক্তিপায় ১৯৭০ খৃষ্টাব্দে।ষাটের দশকের গোড়ায় তিনি পেশাদার সঙ্গীত জীবন শুরু করেন চট্টগ্রাম বেতারে সুরকার পদে যোগ দিয়ে৷ পরে ঢাকায় এসে বিভিন্ন মাধ্যমে সঙ্গীত পরিচালনা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে "জয় বাংলা বাংলার জয়" গানের সুর করেন। এছাড়া তার সুরকৃত শাহনাজ রহমতুল্লাহর কণ্ঠে "একতারা তুই দেশের কথা" ও "একবার যেতে দে না আমার" গান দুটি জনপ্রিয়তা লাভ করে। স্বাধীনতার পরই বাংলাদেশের একটি অন্যতম ব্যবসাসফল ছবি রংবাজ-এর সুরকারও ছিলেন তিনি৷ সে সময় "সে যে কেন এলো না কিছু ভালো লাগে না" বা "এই পথে পথে, আমি একা চলি"- এ গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে৷ এছাড়া দি রেইন (১৯৭৬) চলচ্চিত্রে সুর করেও তিনি সমালোচকদের দৃষ্টি কেড়েছিলেন৷ সঙ্গীত জীবনের ৪০ বছরে দুই হাজারেরও বেশি গানে সুর দিয়েছেন৷আনোয়ার পারভেজ যেসব চলচ্চিত্রে সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য- জয় বাংলা, কত যে মিনতি, ছন্দ হারিয়ে গেল, রংবাজ, বন্দিনী, শনিবারের চিঠি, দি রেইন, মাটির মায়া, কার পাপে, রূপের রাণী চোরের রাজা, জোকার, বেদ্বীন, লুটেরা, মোকাবেলা, ওমর শরীফ, সোহাগ মিলন, ডার্লিং, মধু মালতী, মানসী, বদনাম, ঘরের বউ, স্বামীর ঘর, সোনার হরিণ, তালাক, সকাল সন্ধ্যা, অভিযান, রাজিয়া সুলতানা, ঘরে বাইরে, সুখ-দুঃখের সাথী, মা-বাবা, মাটির কোলে, হিমালয়ের বুকে, ঢাকা-৮৬, জবরদস্ত, জীনের বাদশা, ছুটির ফাঁদে, মৌমাছি, সাবাশ বাঙ্গালী, বউ শাশুড়ীর যুদ্ধ, ইত্যাদি।

ব্যক্তিগত জীবনে আনোয়ার পারভেজ জেসমিন পারভেজের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জেসমিন পারভেজ ছিলেন অভিনেত্রী। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি প্রস্টেট ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ২০০৫ সালে তা তার হার্ট অবধি ছড়িয়ে পড়েছিল৷২০০৬ সালের ১৭জুন মরণব্যাধি আক্রান্ত করে সঙ্গীতজ্ঞের হৃদপিন্ড। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর সাথে সাথে তিনি কোমায় চলে যান এবং ১৭জুন মধ্যরাতে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।আজিমপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়৷জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা একজন সুরকার আনোয়ার পারভেজ। প্রতিভাবান এই সঙ্গীতজ্ঞ আমাদের দিয়ে গেছেন অসংখ্য ভালো গান, শ্রুতিমধুর সুরে। অথচ আমরা তাঁর জীবদ্দশায় তাকে যথাযথ সম্মান- স্বীকৃতি কিছুই দিতে পারিনি। একজন দেশপ্রেমিক সুরকার, তাঁর কাজের যথাযথ স্বীকৃতি না পেয়ে, পুঞ্জিভূত পাহাড়সম অভিমান বুকে নিয়ে নিরবে-নিভৃতে চলে গেলেন জীবনের সীমানা ছাড়িয়ে। বাংলাদেশের সঙ্গীতাকাশে আনোয়ার পারভেজ ধ্রুবতারা হয়ে থাকবেন চিরদিন–অমলিন।কালোত্তীর্ণ গানের সুরকার আনোয়ার পারভেজের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। প্রখ্যাত সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক ও সঙ্গীতজ্ঞ আনোয়ার পারভেজের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৪১

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি কি উনার সুর দেয়া গান শোনেন?

১৭ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ভজকট শব্দের মানে জানেন?

২| ১৭ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আনোয়ার পারভেজ ছিলেন একজন সত্যিকারের সঙ্গীতজ্ঞ। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।


ধন্যবাদ নূর মোহাম্মদ ভাই।

১৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আবুহেনা ভাই
আনোয়ার পারভেজের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা
জানানোর জন্য।

৩| ১৭ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: তার গান গুলো শুনেছি। খুব সুন্দর। শ্রুতিমধুর।

১৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ রাজীব নূর
সু্ন্দর মন্তব্য প্রদানের জন্য।

৪| ১৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:০০

জগতারন বলেছেন:
প্রিয় সুরকার আনোয়ার পারভেজ-এর জীবনী এইখানে তুলে দেয়ার জন্য নূর মুহাম্মদ নুরু ভাইয়ের প্রতি অভিন্দন।

১৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ জাগতরন দাদা
সুরকার আনোয়ার পারভেজের মৃত্যুবার্ষিকীতে
সুন্দর মন্তব্য প্রদানের জন্য।

৫| ১৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:১১

বিজন রয় বলেছেন: প্রখ্যাত সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক আনোয়ার পারভেজের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

+++++

১৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৫৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ বিজন'দা
সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক আনোয়ার পারভেজের
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য।

৬| ১৭ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন, "ভজকট শব্দের মানে জানেন? "

-না

১৭ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ভজকট - শব্দের বাংলা অর্থ হলোঃ
ঝঞ্ঝাট, ঝামেলা, বিঘ্ন, ব্যাঘাত; ফেসাদ।,
আপনি সবময় ঝামেলা করেন!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.