নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার গল্পটা হোক পৃথিবীর সেরা গল্প ।কারন আমি হতে চাই একজন সত্যিকারের জীবন শিল্পী ।

নুরুন নাহার লিলিয়ান

নুরুন নাহার লিলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

রহস্য গল্প:" রেস্টুরেন্ট "

২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:২৯



জাপান আসার দুই মাস পরের কথা।সারাদিন বাসায় একা একা সিলভিয়ার কিছুই ভাল লাগছিল না। সিলভিয়ার বর পেশায় শিক্ষক এবং গবেষক। একটি গবেষনার প্রজেক্টের কারনে জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপে অনেক দিন থাকতে হবে।তাই সিলভিয়াকে সংসারের সুখের জন্য বাংলাদেশের ব্যাংকের চাকরিটা ছেড়ে দিতে হল। অনেক বছর ছুটি প্রাইভেট জবে নেই। কিন্তু যে মানুষটা ব্যাংকের কাজের চাপে নি:শ্বাস নিতে পারতো না। ঠিক সে মানুষটাই এই নি:সঙগ দ্বীপে একা একা কেমন করে থাকে। গভীর নি:সঙগতায় যেন ক্লান্ত হয়ে উঠলো।

একটা চাকরী জোগাড় করতেই হবে। জাপানি ভাষা না পারলে কেউ তাকে চাকরি দিবে না।তাই ভাষার প্রয়োজন কম এমন চাকরি গুলোর শারিরীক পরিশ্রম অনেক। জব এজেন্সির মাধ্যমে জানা গেল মারুয়ামা পাহাড়ে অনেক ছোট ছোট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল আছে যেখানে ইংরেজী শিক্ষক এর প্রয়োজন হয়। সেদিন সাইকেল চালাতে চালাতে পাহাড়ে গেল। কোন ভাবেই ঠিকানা অনুযায়ী স্কুল খুঁজে পাচিছলো না।
কিন্তু জব এজেন্সি ভুল ঠিকানা দেওয়ার কথা নয়। সারাদিন ঠিকানা খোঁজাখুঁজির পরও পেল না। মনে হল কোথাও কোন ভুল হচেছ। এদিকে সিলভিয়ার ক্ষুধা পেয়ে গেল। তবে ভেন্ডার মেশিনের ভিতর যে খাবার আছে তাতে তার ভর দুপুরের খাবারের ক্ষুধা মিটবে না।জাপানের সব জায়গায় ভেন্ডার মেশিন, টয়লেট অথবা ছোট একটা ক্যাফে থাকবেই। নাগরিক সুবিধার জন্য জাপান সরকার খুব সুন্দর ভাবে সব জায়গায় সমান ব্যবস্থাপনা রেখেছে।
মনে মনে ভাবলো অবশ্যই কোথাও না কোথাও একটা ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট পাবেই। সে খুঁজতে লাগলো। হঠাৎ দেখলো পাহাড়ের পাশ দিয়ে ছোট একটি নদী বয়ে গেছে। তার পাশেই সবুজ ঘন বন। সেখান থেকে জাপানি গানের সুর ভেসে আসছে। সিলভিয়া এগিয়ে গেল। রেস্টুরেন্ট টার সামনে ইংরেজী নাম লেখা” হোয়াইট পাওয়ার “।অনেক গুলো খাবারের মধ্যে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আর চিকেন প্যাকেজটা ভাল লাগলো।
ভিতরে ঢুকতেই কেউ নেই। গা ছম ছম করা নিরবতা। সুর বেজেই যাচেছ। কিছু ক্ষন পর একজন সুন্দরি তরুণী এসে খাবারের অর্ডার নিতে এলো । সিলভিয়ার খুব ভাল লাগছিল ইংলিশ ডিস পেয়ে। কিছুক্ষণ পর এক প্লেট ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আর চিকেন এল। প্লেট এ খাবারের পরিবেশনা সত্যি মুগ্ধকর। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই গুলো খুব সুন্দর করে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে একটু কেমন যেন মনে হল।অদ্ভুত রকমের। লাল টমেটো সসের মতো আঠলো কি যেন। ক্ষুধার পেটে এতো কথা চিন্তা করে লাভ কি! হয়তো শয়া সস হতে পারে। জাপানিরা খাবারে নানা রকমের সস খুব ব্যবহার করে।

তারপর একটা কামড় দিতেই বুঝলো ভয়ংকর কিছু একটা। খুব ভালো করে নেড়ে চেড়ে দেখলো মানুষের চিকন আঙুল ভেজে দেওয়া হয়েছে। সিলভিয়ার ভয় আর ঘৃনায় বমি ভাব হলো।বুকের ভিতরটা কেমন মোচড় দিয়ে উঠলো। শিরা উপশিরা ভয় আর আতংকে সংকুচিত হয়ে গেল। কিছুতেই যা কিছু ঘটছে বিশ্বাস হচেছ না। তবে বিষয়টা তো বুঝতে হবে।এরপর ধীর পায়ে রেস্টুরেন্ট এর ভিতরে তাকাতেই বুঝলো সেটা কোন তরুনী নয় সবুজ অরণ্যে সাদা ডাইনী বুড়ি। রেস্টুরেন্টের কিচেনে অনেক মানুষের হাত খুব সুন্দর করে ঝুলানো। সাদা বুড়ি কোন একটা মানুষের মগজ খাচেছ। সিলভিয়ার সারা শরীরের রক্ত হীম হয়ে এল। জীবন বাচাতেঁ সিলভিয়া সাইকেল নিয়ে খুব দ্রুত চলে এল। এরপর অনেকদিন সিলভিয়ার ঘটনাটা মনে পড়লেও কোন বাস্তব হিসাব মিলাতো পারতো না। যা কিছুই ঘটেছে তা অস্বীকার করার ও উপায় নেই।শুধু অনাগত ভবিষ্যতের গায়ে শুভ্র স্পর্শ রেখে মানুষের সব মনের একান্ত বিভ্রান্তি গুলো ভুলে যেতে হয়।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৪৬

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: শেষ হইয়াও হইল না শেষ!! রয়েই গেল ধূসর আবেশ।

২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৫৪

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: হা হা হা। সুন্দর মন্তব্য। আপনাকে ধন্যবাদ। ছোট গল্প যে এমনই হয়, এ যে গল্পের নিয়মেরই আদেশ!!!!

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:২৮

মাহিরাহি বলেছেন: জাপানে থাকেন নাকি!

২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: এই প্রশ্ন কেনো ভাই?

৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৫

মাহিরাহি বলেছেন: জাপান আসার দুই মাস পরের কথা.....

বহু বছর আগে আমিও জাপানে ছিলাম তাই।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৪

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: গল্পটি অনেক আগে লেখা। জমানো লেখা গুলোই পোষ্ট দিচিছ। হুম আমিও জাপানে ছিলাম। এক সময়ে।।।।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.