নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার গল্পটা হোক পৃথিবীর সেরা গল্প ।কারন আমি হতে চাই একজন সত্যিকারের জীবন শিল্পী ।

নুরুন নাহার লিলিয়ান

নুরুন নাহার লিলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বর্তমান প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:২৬






বাংলাদেশে বর্তমান প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধ এখনও অনেক রহস্যময়। আমাদের ইতিহাস এবং দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এক অদ্ভুত কারনে মানুষের মধ্যে ভালোবাসা তৈরি করছে না। আমাদের অনেকের মধ্যেই এই স্পর্শকাতর বিষয়গুলো সঠিক ভাবে পরিচর্চা নেই। আমার চারপাশে অনেক শিক্ষিত মানুষের মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধকে আর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মানের অভাব দেখি। যদিও একটা বড় দীর্ঘশ্বাস দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। পুঁজিবাদের ভয়াবহ প্রভাব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে ইতিহাস থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।

যা হোক, জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিদিন আমাদের অনেক রকমের মানুষের সাথেই পরিচয় হয় ।এর মধ্যে সবার চিন্তা চেতনা এক হওয়ার কথা নয়। কিন্তু একই দেশের নাগরিক হলে নিজ দেশের সংস্কৃতি সবার সমানভাবে জানার কথা। কোন একদিন দুটো নতুন পরিচিত পরিবারের সাথে বাংলাদেশের একটা বিখ্যাত সিনেমা দেখতে গেলাম। এর মধ্যে তাদের সাথে নানা বিষয় নিয়ে কথা হল । জানা গেল তারা বেশ উচ্চ পদস্থ চাকরি করছেন। তাদের বাবারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বেশ গর্ব আর বড়াই নিয়েই জানালেন যে তারা খুব গর্বিত যে তাদের বাবারা বৃদ্ধ বয়সে খুব ভাল ভাবে মুক্তিযুদ্ধের ভাতা উপভোগ করছেন। তাদের উপর অনেকটা চাপ কম। আমি খুব মনোযোগ দিয়ে তাদের চিন্তা ভাবনা আর দৃষ্টিভঙ্গি বুঝার চেষ্টা করছিলাম। এর মধ্যে সিনেমা শুরু হল। বাংলাদেশি যে কোন সিনেমা শুরু হওয়ার আগে জাতীয় সঙ্গীত হয়। আর তখন সকল দর্শক দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত তথা দেশের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। কিন্তু তারা কেউই দাঁড়ালো না। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। একবার বললাম, দাঁড়াবেন না? কোন সমস্যা কী? তারা জানাল দাঁড়ানোর নাকি প্রয়োজন নেই। এটা নাকি শুধু শুধু। শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া আর জাতীয় সঙ্গীত বাজানো এগুলো নাকি ঠিক নয়। মুসলিম ধর্মীয় অনুসারে গোনাহ। আমি আরও অবাক হলাম। হয়তো আমার অনেক জ্ঞানের অভাব আছে। আমিই হয়তো অনেক কিছুই জানি না। হয়তো আমার অনেক কিছু বলার ছিল। কিন্তু কিছুই বললাম না। কিন্তু জন্মের পর থেকে যে সংস্কৃতি দেখে বড় হয়েছি তাকে অস্বীকার করি কেমনে।

যে মানুষের ভিতর নিজ থেকে সম্মানবোধ আর দেশের প্রতি সম্মানবোধ নেই তাদের বলে কয়ে আমি একা বাঙালি বানাতে পারবো না। তবে অবাক করার বিষয় যখন তাদের মতো মানুষগুলো নিজেদের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে দাবি করে কিংবা গর্ব প্রকাশ করে। বর্তমান বাংলাদেশে অনেকেই সঠিক ভাবে স্বাধীনতা দিবস আর বিজয় দিবসের কথাও বলতে পারে না । আমরা যখন প্রবাসী হই ক্ষনিকের জন্য, পরিচিত আশেপাশের অনেকেই দেশে ফিরতে না করে। কিংবা কেউ কেউ প্রবাসী হওয়াকে গর্বের মনে করে। নিজ দেশের শিল্প সাহিত্য কিংবা সিনেমা নয়। বরং ভিন দেশি যে কোন কিছুর জানার মধ্যেই গর্ব বোধ করে। এতোকাল নতুন পরিচিত কাউকে সালাম বা নমস্কার দিয়ে মানুষ সম্বোধন করে এসেছি। এখন দেখি কেউ সালাম দেয় না । হাই বা হ্যালো বলে। জীবনযাপনে আর চিন্তায় চেতনায় অনেক বেশি পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে।

কিছুদিন আগে একজন অভিনেত্রী শহীদ মিনারে স্যান্ডেল পড়ে হাঁটা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক সমালোচনা হয়ে ছিল। আবার তাঁর নিজেরও স্ববিরোধী কথা তাকে কোথায় নিয়ে গেছে সে নিজেও জানে না। দুঃখজনক এদের দিয়ে দেশের জন্য তৈরি করা হয় নাটক, বিজ্ঞাপন কিংবা সিনেমা। সেই অভিনেত্রীর এহেন আচরনে এতো সমালোচনার পরও কোথাও তাকে দুঃখিত হতে দেখলাম না। আহা! মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম বড় অসহায় জিনিস।
প্রকৃত দেশ প্রেমিক বা দেশের প্রতি ভালবাসার চেয়ে সবাই এখন মুক্তিযোদ্ধা হতে চায়। কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক ধরনের সুবিধা দেওয়া হয় । মাস গেলে কিছু টাকা তাঁরা পায় । মাঝে মাঝে অবাক হই কেউ কেউ এই স্বীকৃতি লাভে কতো রকমের বিকৃত যুদ্ধে বা কৌশলে থাকে। কারও কারও হাস্যকর আক্ষেপ। মুক্তিযোদ্ধা হলে বেকার থাকতে হতো না। একটা মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট হলে মাস শেষে এমনি টাকা আর সুযোগ সুবিধা পেয়ে যেতো। মানুষের ভিতর বিবেক আর মনুষ্যত্ব বোধের অভাব একটা বড় সমস্যা। চারপাশে অজস্র মিথ্যাবাদী প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী আছে কিন্তু প্রকৃত দেশপ্রেমিকের ভীষণ অভাব। প্রকৃত দেশপ্রেমিকরা দেশের আলো, মানুষ, সার্বভৌমত্বকে সঠিক ভাবে ভালোবাসে। নিজের অন্তরে লালন করে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম নিজের শেকড়কে আগলে রাখে। বর্তমান প্রজন্ম কিংবা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সঠিক ভাবে দেশের ইতিহাস এবং দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা অত্যন্ত জরুরি। ব্যাপক ভাবে আমাদের চেতনা বোধের জায়গাগুলোকে আরও শানিত করা প্রয়োজন । তা না হলে একদিন আমরাই আমাদের ইতিহাস ভুলে যাবো ।



মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৩৫

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আমার জন্ম ৭১ এর। সত্যাসত্য এখনও জানি না।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১:১৮

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৪৪

ধ্রুবক আলো বলেছেন: আপনার কথার যুক্তি আছে, এবং সুন্দর টপিকস নিয়ে আলোচনা করেছেন, ধন্যবাদ।

শহীদ মিনারে ফুল দেয়াটা আমিও সমর্থন করি না কারণ এটা লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই না, তবে দেশের জাতীয় সংগীত শুনে সম্মান দেখিয়ে দাঁড়ানো উচিত।
বেশ কিছুদিন আগে মানব পতাকা তৈরি করলো মনে আছে নিশ্চয়ই, পরবর্তী তে কি হলো, দেখা গেলো যে যে মানুষেরা উপস্থিত ছিলো তার বেশির মানুষই তাদের হাতে ছোট পতাকা ছিল তা মাটিতে পরে রইলো এবং তা পদপৃষ্ঠ হলো। এই পদপৃষ্ঠের ঘটনা আরও অনেক বার ঘটেছে। কিন্তু দেশের মানুষ কি সচেতন হয়েছে, হয় নি কারণ মূল্যবোধ বাড়ে নি, এ নিয়ে আমার একটা লেখা আসে পড়ে দেখতে পারেন।
আমাদের দেশে এসব শিক্ষা দেয়া হয় না, দেয়া হয় ভুল শিক্ষা।
সম্মান মনের ভেতর থেকে আসে আর সেটাই অনুধাবন করাতে হবে। মূল্যবোধ বাড়াতে হবে।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১:১৮

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: সম্মান মনের ভেতর থেকে আসে আর সেটাই অনুধাবন করাতে হবে। মূল্যবোধ বাড়াতে হবে।

কথা ঠিক ।
ধন্যবাদ ।

৩| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৪৯

ধ্রুবক আলো বলেছেন: পড়ে দেখবেন,আশা করি উপকারে আসবে আপনার

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১:১৯

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আপনার লেখাটা পড়েছি ভাল লেগেছে । ধন্যবাদ ।

৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:৫৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ , মুল্যবান বিষয়ে লিখেছেন । সকলের অনুভুতিতে এ বিষয়গুলি আসা দরকার ।
শুভেচ্ছা রইল ।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:১০

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

৫| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৭:১৫

কলাবাগান১ বলেছেন: "সত্যাসত্য জানি না"

রাজাকারের উত্তরশুরীরা ই এখন ও ১৯৭১ নিয়ে সত্য-মিথ্যা খুজে.....এরা ১৯৭১ বেছে থাকলে বড় ধরনের রাজাকার হত

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:১৩

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আপনার দ্বিতীয় লাইন টার সাথে একদম সহমত । আর এই কারনেই বাংলাদেশে এতো ঝামেলা ।


আর প্রথম লাইনের কথাটা যিনি কমেন্টে বলেছেন তিনি কোন দৃষ্টিভঙ্গি বা চিন্তা থেকে বলেছে সেটা ও হয়তো বিবেচনা দরকার ।

আপনাকে ধন্যবাদ।

৬| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:২০

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার আলোচনা। ভালো উদ্যোগ। নতুন প্রজন্মের কাছে মহান স্বাধীনতা সম্পর্কে জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে, যা এদেশে বন্ধ বা আগ্রহের অভাব ছিল অনেক বছর। আমরা অনেক কিছুই জানিনা।

সম্মান শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা রইল মহান মুক্তিযুদ্ধ আর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি।
আপনার জন্যও অনেক শ্রদ্ধা, শুভকামনা সবসময়।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:১৪

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আপনার সুন্দর এবং সাবলীল মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।

৭| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯

রিফাত হোসেন বলেছেন: মুল্যবান বিষয়ে লিখেছেন+

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:০৮

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ ।

৮| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৭

কাছের-মানুষ বলেছেন: ভাল লেগেছে লেখা ।

সেই অভিনেত্রীর এহেন আচরনে এতো সমালোচনার পরও কোথাও তাকে দুঃখিত হতে দেখলাম না।
আমারও একই অনুভুতি কোথাও দুঃখিত হতে দেখলাম না ভদ্র মহিলাকে। এটা শুধু একটা উদাহারন মাত্র সব ক্ষেত্রে দেশের এরকম দুমোখি মানুষ ঘাপটি মেরে বসে আছে !

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:২৬

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: একদম ঠিক। তিনি হয়তো ভেবেছে চেপে গেলে সবাই ভুলে যাবে। আসলে কি তাই। আমার মতো সবারই মনে আছে। তার ক্ষমা বা দু:খ প্রকাশ করা উচিত ছিল।
ধন্যবাদ।

৯| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:০১

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: প্রকৃত দেশ প্রেমিক বা দেশের প্রতি ভালবাসার চেয়ে সবাই এখন মুক্তিযোদ্ধা হতে চায়। দারুন সত্য বলেছেন।

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৩৮

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।

১০| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৪৩

দি রিফর্মার বলেছেন: বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বাবা মারা গেছেন ৩২ বছর আগে। আজ বেঁচে থাকলে তাকে জিজ্ঞেস করতাম যে , আপনারা যে দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, সেই দেশ কি আমরা নির্মাণ করতে পেরেছি। আজও কেন শুনতে হয় আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির সম্মুখীন। আজও কেন আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামের সঠিক ইতিহাস রচনা করতে পারিনি, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সম্পূর্ণ হয়নি। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কেন চিহ্নিত করা হয়নি। বর্তমানে জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা কি সেই চেতনাকে বুকে ধারণ করে দেশের জন্য ত্যাগ করতে প্রস্তুত? নাকি কেবল ভাতা আর চাকরি কোটা ভোগ করার জন্য মুক্তি যোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার তাদেরও দেশমাতৃকার প্রতি অনেক দায়িত্ব আছে। দেশের কল্যাণে সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। দুর্নীতি ও শোষণ মুক্ত সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে। তবেই এই স্বাধীনতা সার্থক হবে

সুন্দর এই লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনি যেন আমার মনের কথা গুলো তুলে ধরেছেন। তাই আবারো ধন্যবাদ। অনেক শুভ কামনা রইল।

২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৪০

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.