নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার গল্পটা হোক পৃথিবীর সেরা গল্প ।কারন আমি হতে চাই একজন সত্যিকারের জীবন শিল্পী ।

নুরুন নাহার লিলিয়ান

নুরুন নাহার লিলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপন্যাস" গোপনে সে আমায় ভালোবাসে- র্পব -১ -নুরুন নাহার লিলিয়ান

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫১




হঠাৎ করেই আমার বিয়েটা হয়ে গেলো। প্রথমে আমি এই বিয়েতে রাজি ছিলাম না৷ কিন্তু পরে রাজি না থাকা বিয়েটাই আমার সম্মতিতে হয়ে গেল। প্রথমত যে কারনে রাজি হয়নি তা হল পাত্র দেখতে আমার স্বপ্ন দেখা রাজপুত্রের মতো না।দ্বিতীয়ত আমি অভিনন্দনকে ভালোবাসতাম৷
অথচ দ্বিতীয় কারণটার জন্যই পরবর্তীতে আসাদকে বিয়ে করে ফেলি। আসাদ আহমেদ আমার স্বামীর নাম৷ তিনি পেশায় একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। আর অভিনন্দন মাহমুদ আমার প্রথম প্রেম। আমার স্বপ্নে দেখা রাজপুত্র। এই দু'জন পুরুষের মাঝেই আমার দেহমন দৃশ্যত কিংবা অদৃশ্যত বিরাজমান।
আমার নাম কুন্তল আহসান। আহসান চৌধুরী আমার বাবার নাম৷ বাবার নামের অর্ধেকটা আমার নামের সাথে আজও কেমন ছায়া হয়ে লেগে আছে। চিন্তা করা যায় বিয়ের এতো বছর পরও আমার স্বামীর নামের কোন অংশ আমার নামের ধারে কাছেও আসতে পারেনি। কিংবা আমি কখনও চাইনি।
অনেক মেয়েকে দেখি আজকে বিয়ে হলে কালকেই স্বামীর নামের অর্ধেকটা নিয়ে ফেসবুক আইডি খুলে ফেলে। তাঁরা হয়তো অনেকে জানেইনা তাঁদের সম্পর্কটা টিকবে কিনা। মানুষ বোধহয় এমনই যখন প্রেম আসে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস ও বুকে বহন করে চলতে পারে হাসি মুখে। অপ্রতিরোধ্য উন্মাদনায় নিজেদের বোধও হারিয়ে ফেলে। আমার অবশ্য তাঁদের দেখতে ভালই লাগে। কিছু পুরুষ আছে গৃহে সারাদিন ভালবাসি বলতে সময় পায়না অথচ অফিস সময়ে ফেসবুকে স্ত্রীকে ভালবাসি বলতে বলতে দিশেহারা।আবার কিছু নারী আছে স্বামীর কাছে সব আবদার যেন ফেসবুকের টাইম লাইনেই চাইতে হবে। কখনও ডান গালে নাকি বাম গালে চুমু দিবে সেটাও ফেসবুকের হোমে বসে বসে আবদার করতে থাকে।
আমার অবশ্য এসবে বেশ মজা লাগে। মানুষের কতো রকমের বিচিত্র আবেগ অনুভূতি। আমার কিন্তু এই ধরনের আনন্দ নেওয়ার সুযোগ হয়নি কখনও। আসাদ সাহেব মানে আমার স্বামীর তো ফেসবুক আইডিই নেই।আমারও ফেসবুক আইডি ছিল না। আমার ক্লাস নাইনে পড়া মেয়েটা একদিন এই জিনিস আবিষ্কার করে। আমার কাছে অনুমতি চায়। ওর বান্ধবি মেলিসার ফেসবুক, ইন্সট্রাগ্রাম, টুইটার, ইমো, মেসেঞ্জার আছে। মেয়েটা আমার এতোটা দরিদ্রের মতো আবদার করল। আমি অনুমতি দিয়ে দিলাম। আমি স্বাধীনতা নামক যে জিনিসটি অনুভব করতে পারিনি আমার মেয়েটা সেটা পাক।


ওহ। যা বলছিলাম নাম হচ্ছে মানুষের আইডেন্টিটি। একটা মানুষের নিজস্ব পরিচয় হওয়া উচিত। আর নারীদের ক্ষেত্রে আরও বেশি।
বাবা কিংবা স্বামী কারও নামেই নয়৷ নিজ নামেই পরিচিত হওয়া উচিত।
আমি বাংলাদেশের আট দশটা ঘর সংসারী নারীর মতো একজন সকাল সন্ধ্যা সংসার কাঁধে বহন করা নারী। আমার দুটো সন্তান আছে।
আমার বড় মেয়েটা ক্লাস নাইনে পড়ে৷ ছোট ছেলেটা ক্লাস সিক্সে।
আজ হতে বিশ বছর আগের কথা ।আমরা তখন একটা মফস্বল শহরে থাকি। বাবা তখন সরকারি চাকুরীজীবী। মফস্বল শহরের একটি সরকারি এরিয়ায় তিন মেয়ে নিয়ে আমার বাবা আহসান চৌধুরীর বসবাস। আমি ছিলাম ঘরের বড় সন্তান। মা বাবার প্রথম সন্তান। ছোটবেলায় মা বাবা আমাকে খুব ভালোবাসতো। কোন সময়ে কোন বায়না অপূর্ণ রাখেনি। তাই আমিও আমার সন্তাদের কোন আবদার অপূর্ণ রাখিনা।
আমার যখন দশ বছর বয়স তখন আমার দ্বিতীয় বোন জন্ম নেয়। তারপর আরও পাঁচ বছর পর আমার ছোট বোন। কি অদ্ভুত বয়সের দূরত্ব । আমার দাদা দাদীর অনেক শখ ছিল আমাদের একটা ভাই আসুক। কিন্তু ততোদিনে আমার মা বাবার দাম্পত্যের জগতটা বেশ পুরনো হয়ে গেছে। বলা যায় মরচে ধরা মুড়িন টিন। কেউ একটু চাপ দিলেই ভেঙে যাবে। তাঁদের দাম্পত্যের দেয়ালটা ফেটে গেছে অনেকটা।

হারিয়ে গেছে জীবনের গতানুগতিকতা। ভীষণ আটপৌরে একটা সংসার।মা তখন বেশ মুটিয়ে যাচ্ছিল নানা রকম রোগে।এখনকার সময়ের মতো সেই সময়ে এতো অনলাইন লাইফস্টাইল আর্টিকেল, বিউটি টিপস, ফেসবুকে দাম্পত্য জীবনের কলহ নামক গ্রুপ, নারীদের গোপন জীবন এই ধরনের কিছু ছিলনা। নারীরা সে সময়ে এতো সহজে নিজেদেরও আবিষ্কার করতে পারতো না । কখন তাঁর মনে আর দেহে কি ঘটে যাচ্ছে।সে খবর নিজেই রাখতোনা।
আজকাল চারপাশে দেহ ও মন নিয়ে কতো কি জানা যায়। ডায়বেটিস, থাইরয়েড, হরমোন, সহ কতো ধরনের রোগ।
হরমোনের এতো খুটিনাটি বিষয় গুলো জানা ছিলনা।
মা একটা সময়ে ছিপছিপে গড়নের, ফর্সা ত্বকে বেশ আকর্ষনীয় ছিল। আমার ছোট দুটো বোন জন্ম নেওয়ার পর থেকেই কেমন যেন ধীরে ধীরে অন্য একটা মানুষে পরিনত হতে লাগল।

আমার দাদী দিন রাত মাকে গালমন্দ করতো আর বলতো পুরুষ বাঁচে রোজগারে আর নারী বাঁচে সংসারে।
মায়ের নাকি সংসারে মন ছিলনা। তাই বাবার ও আয় রোজগার হারাচ্ছে ।
দাদী আমার মাকে কেনো এতো কথা শোনাত তেমন একটা মনে নেই। তবে কিছু কিছু ঘটনা মনে আছে। আমাদের সংসার থেকে কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা এসে পরম সুখ গুলো কেড়ে নিতে থাকে।

আমি মাত্র কলেজে প্রবেশ করেছি। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী হিসেবে মফস্বলে আমার অনেক ভাল রেজাল্ট ছিল।গান, নাচ,অভিনয় সবকিছুতে আমার পদচারণা ছিল। হঠাৎ আমার বাবার যেন কি হল। আমাকে ধীরে ধীরে ঘরে রাখতেই পছন্দ করল। বাইরে বের হওয়াটা পছন্দ করতো না।
আমি একটু বড় হয়ে উঠছি। কলেজে যাই। মফস্বলে লোকজনের চোখে পড়ে যাই। কলেজ আর বাসা ছাড়া আমার কোথাও যাওয়ার যায়গা ছিল না৷একদিন কলেজেই অভিনন্দনের সাথে পরিচয় হয়৷

আমার বাবা তখন সরকারী চাকুরিজীবী। কয়েক বছর আছে অবসরে যাবেন। বলতে দ্বিধা নেই আমার বাবার বয়সটা মায়ের থেকে অনেক বেশি ছিল। যেমন আমার স্বামী আসাদ আর আমার মধ্যে পার্থক্য। আসাদ যদিও ভালোবাসে আমাকে। হয়তো ভালোবাসে ভাল থাকার জন্য। গত বিশ বছরেও আমার প্রতি আসাদের অনুভূতির সততা আবিষ্কার করতে পারিনি..... চলবে

#গোপনে সে আমায় ভালোবাসে পর্ব -১
#নুরুন নাহার লিলিয়ান

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লিলিয়ান আপু বেশ বিরতি নিয়ে লিখলেন এবারের
গোপনে সে আমারে ভালোবাসে এর ১ম পর্ব।
দারুন এক রোমান্টিক পটভূমিতে লেখা আপনার গল্প নাকি
উপন্যাস তা বুঝতে পারছিনা। তবে বড় গল্প হোক বা উপন্যাস
ক্ষতি নাই। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০৭

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: সালাম নিবেন শ্রদ্ধেয় নুরু ভাই । জি উপন্যাস। আশাকরি আপনি ভাল আছেন ।

২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: ভালোবাসা গোপন থাকাই ভালো।
এটা কি নতুন ধারাবাহিক? ২০২১ এ বের হবে?

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:২০

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: জি নতুন উপন্যাস। কবে প্রকাশ হবে বলতে পারছিনা । ধন্যবাদ।

৩| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৩৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আসাধারণ প্রকাশ I

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২৬

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ।

৪| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ভালো ই তো । গোপনে ভালোবাসা হলেও ভালোবাসার মানুষটির কাছে অদৃশ্য থাকে না। একেবারে লেখার শেষে ও নায়িকা চরিত্রের ভালোবাসার অস্তিত্ব না খুঁজে পাওয়া হয় তো গল্পের শেষে বদলে যাবে। আমার তাই মনে হচ্ছে।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৫

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আনোয়ার ভাই সালাম নিবেন । আমার মস্তিষ্ক নিজেই জানে না কি ঘটতে যাচ্ছে । মাত্র শুরু করলাম । ভাবনার কাজটা চলছে । দেখা যাক শেষ অব্ধি কি হয় । অনেক ধন্যবাদ।

৫| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২০

তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায় :)

২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৬

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: শেয়ার করব ।বইমেলা স্ক্রিপ্ট নিয়া ব্যস্ত । অনেক ধন্যবাদ।

৬| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:০০

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
অনেকদিন পর লিলিয়ান আপু ! কেমন আছেন ? প্রথম পর্ব পড়লাম। চলতে থাকুন , অপেক্ষায় থাকব।
ভালো থাকবেন। শুভ কামনা।

২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৭

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: এই তো ভাইয়া বইমেলা নিয়ে একটু ব্যস্ত । ভাল আছি । আপনি কেমন আছেন ? অনেক ধন্যবাদ।

৭| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১১

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
লেখক বলেছেন: এই তো ভাইয়া বইমেলা নিয়ে একটু ব্যস্ত । ভাল আছি । আপনি কেমন আছেন ? অনেক ধন্যবাদ।

আছি ভালোই আছি। বইমেলাতে বই কিনতে যাবো , দেখা হবে হয়তো। :)
শুভকামনা।

২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:০৮

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: শিখা প্রকাশনী ও কারুবাক প্রকাশনীতে নিয়মিত থাকব । দেখা হবে ইনশাল্লাহ ।

৮| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এক জীবনের গল্প
সুন্দর হয়েছে আপি

২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:১৩

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: নিয়মিত চলবে এই উপন্যাস । এপ্রিল বা মে মাসের দিকে শিখা প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হবে । অনেক ধন্যবাদ।

৯| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৪১

ফয়সাল রকি বলেছেন: শুরুটা ভালো লাগলো। পরের পর্বে যা্‌ই।

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৯

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.