নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খোন্দকার মেহেদী আকরাম এর ব্লগ

নাটশেল

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি। যতদিন ভালো লাগে ততদিন লিখে যাবো।

নাটশেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেডিকেল মুরগি সমাচার: হোস্টেল জীবনের এক অনাকাংখিত অভিজ্ঞতার ইতিবৃত্ত।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:১৪



১৯৯৫ তে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়ে 'এইম ইন লাইফ' বাস্তবায়নে ব্যস্ত হয়ে পরলাম। শুধু আমি না, আমার মত সদ্য এইচ.এস.সি. পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করা সবাই একই কাজে ব্যস্ত হয়ে পরে এ সময়টাতে। ইস্কুলে পড়ার সময় আমার 'এইম ইন লাইফ' ছিল বাস অথবা ট্রাক ড্রাইভার হওয়া! সে সময় আমার কাছে মনে হত গাড়ি চালানোর মত আনন্দ আর কিছুতে নেই! সে যাই হোক, এস.এস.সি. পরীক্ষায় পাস করার পর আমার এইম ইন লাইফ পরিবর্তিত হয়। এস.এস.সি.'র পর আমার এইম ইন লাইফ যেটা দাড়াল তা হলো একজন সফল জিডি পাইলট হওয়া! কিন্তু আম্মা বলল 'না বাবা তোমার জিডি পাইলট হওয়ার দরকার নাই, তুমি ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হোও'! মায়ের কথা বলে কথা, বাদ দিলাম জিডি পাইলট হওয়ার খায়েশ। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়ে নতুন এইম ইন লাইফ স্থির করলাম আমি বুয়েট এ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ব!

যেই কথা সেই কাজ। ব্যাগ ভর্তি পদার্থবিদ্যা, রসায়ন আর গণিতের বই নিয়ে যাত্রা করলাম ঢাকায়; সেখানে গিয়ে উঠলাম ছোটো খালার বাসায়, আর ভর্তি হলাম সানরাইজ কোচিং সেন্টারে! তখনকার সময় সানরাইজই বুয়েট এর জন্য সবচেয়ে ভালো কোচিং সেন্টার। ততদিনে ইন্টারমিডিয়েট এর রেজাল্ট হয়ে গেছে। আমি পদার্থবিদ্যা এবং গণিতে লেটার সহ ষ্টার মার্ক নিয়ে পাস করলাম। কিন্তু সমস্যা হচ্ছিল কোচিংএ। কোনো ভাবেই আমি গণিত মক টেস্ট এ ভালো করছিলাম না। ২০০ মার্কস এর ভেতরে স্কোর করছিলাম ৯০, ১০০ অথবা বড় জোর ১১০! দের মাস কোচিং করার পর কনফিডেন্স হারিয়ে ফেললাম, বুঝতে পারলাম আমার দ্বারা ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংএ পড়া হবে না। বাসায় ফিরে এলাম!

নতুন এইম ইন লাইফ ঠিক করলাম 'ডাক্তার হব'! মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার আর দুই মাস বাকি। একটা রেটিনা গাইড কিনলাম। বই খাতা নিয়ে বসে পরলাম টেবিলে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করলাম। প্রসঙ্গত বলে রাখি, আমি শুধু মেডিকেলেই ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করি নাই কারণ ওই একই, এইম ইন লাইফ এ সে সময় ডাক্তার হওয়া ছাড়া অন্য কিছু ছিল না! এক সকালে ছোটো মামা পেপার হাতে করে বাসায় এলো। বলল তোর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার রোল নাম্বার কত? আমি বললাম কেন! মামা বলল মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে আজ! বিংগো! খুঁজে পেলাম আমার নাম্বারটি হাজার নামের ভিতরে! চান্স পেয়েছি ৭৫০ বেডের একটা নামকরা পুরাতন সরকারী মেডিকেল কলেজে। মা তো মহা খুশি। বাবার খুশি বোঝা গেল মিষ্টি কেনার হিরিক দেখে!

অপেক্ষা করছি কবে মেডিকেলে ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরু করব। মনে আশা নিয়ে বসে আছি কবে বড় ডাক্তার হব। তখনও জানিনা কি অপেক্ষা করছে আমার জন্য। তখনও জানিনা যে মেডিকেল হোস্টেলে আমি ঢুকব একটি (একজন?) মুরগি হয়ে! হঠাত এক সকালে একজন যুবক বাসায় এসে হাজির। সম্পূর্ণ অপরিচিত একজন মানুষ। যুবকটি দেখতে শুনতে বেশ ভদ্র এবং ব্যবহারও অমায়িক। আমাকে খুজছে, কথা বলতে চায়। জীবনে এই প্রথম কোনো অপরিচিত লোক আমাকে খুঁজছে কথা বলার জন্য। কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম। আম্মাও ভয় পেয়ে গেল। যুবকটি তার পরিচয় দিল। সে আমি যেই মেডিকেলে চান্স পেয়েছি সেই মেডিকেলের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। এবং তার বাসা আমাদের শহরেই, অর্থাত সে ফরিদপুরের ছেলে। নাম 'জামরুল'।

জামরুল ভাই মূলত এসেছে আমাকে কনগ্রেচুলেট করতে- সে অন্তত তাই বলল। জামরুল ভাই আম্মাকে বলল "আপনার ছেলে তো ফরিদপুরের রত্ন! এ বছর মাত্র দু’জন ছেলে ফরিদপুর থেকে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। একজন আপনার ছেলে আর আরেকজন পেয়েছে রাজশাহী মেডিকেলে।"- এ কথা শুনে আম্মা তো মহা খুশি। আম্মা তাকে বেশ স্নেহ করতে শুরু করলো। জামরুল ভাই সারাদিন আমাদের বাসায় কাটাল। অনেক ধরনের গল্প করলো। আমার কাছেও জামরুল ভাইকে বেশ ‘উপকারী বন্ধু’ বলে মনে হলো! জামরুল ভাই আম্মাকে 'খালম্মা' বলে ডাকছে। বলছে খালাম্মা আপনি একদম চিন্তা করবেন না। জামরুল ভাই বলল নতুন ভর্তি হওয়া ছাত্রদের বেশ কিছু সমস্যা হয় মেডিকেলে। প্রধান একটি সমস্যা হচ্ছে মেডিকেলের হোস্টেলে সিট না পওয়া। তবে জামরুল ভাই আমাকে এবং আম্মাকে আসস্ত করে বলল আমাকে হোস্টেল এর সিট নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না। আমি যাতে ভর্তি হয়েই হোস্টেলে থাকার জন্য একটা সিট পাই তার ব্যবস্থা জামরুল ভাই করবে। যদি কোনো সিট নাও থাকে আমি জামরুল ভাই এর রুমে সাময়িক সময়ের জন্য থাকতে পারব! জামরুল ভাই আরও বলল যে পড়ালেখার ব্যাপারেও সে আমাকে যথাসাধ্য সাহায্য করবে। নিজ হাতে সে আমাকে একটি বইয়ের লিস্ট করে দিল কিনে ফেলার জন্য। জামরুল ভাই কে মনে হলো সে পড়াশোনায় খুবই সিরিয়াস। আম্মা তাকে আরো পছন্দ করলো!

জামরুল ভাই আম্মা এবং আমাকে সতর্ক করলো এই বলে যে আমি যেই মেডিকেলে পড়তে যাচ্ছি সেখানে ছাত্র রাজনীতি খুবই খারাপ। আমি যেন ভুলেও ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত না হই! এ কথা শুনে আমিও কিছুটা খুশি হলাম। ছাত্র রাজনীতি আমিও পছন্দ করি না। ইন্টারমিডিয়েটএ পড়ার সময় কলেজের রাজনীতি থেকে ১০০ হাত দূরে ছিলাম। জামরুল ভাইয়ের মধ্যে 'অরাজনৈতিক' মনোভাব দেখে আমি তার উপর আরো বেশি ভরসা করতে শুরু করলাম। তাকে একরকম কথাও দিয়ে দিলাম যে মেডিকেলে ভর্তির দিন আমি সবার আগে তার কাছে যাব যাতে করে সে আমাকে নিরাপদে ভর্তির ব্যবস্থা করে দিতে পারে। খুশী মনে জামরুল ভাই বিদায় নিল বিকেলের দিকে। যাওয়ার আগে আমাকে তার হোস্টেলের ঠিকানা দিয়ে গেল।

ভর্তির তারিখ জানিয়ে মেডিকেল কলেজ থেকে চিঠি এলো বাসায়। আমি, আমার বাবা-মাকে সাথে নিয়ে ভর্তি হতে গেলাম। একটা নির্দিষ্ট দিনে চান্স পাওয়া ১৫০ জন নতুন ছাত্র এম.বি.বি.এস. প্রথম বর্ষে ভর্তি হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি যে আম্মার এক কলিগের ছেলে ওই মেডিকেলে ৫ম বর্ষে পড়ে। নাম তার 'দলিল'। ভর্তি হতে আসার আগে আম্মার কলিগ বার বার করে বলে দিয়েছে আমি যেন দলিলের সাথে দেখা করি। আমরা মেডিকেল কলেজে পৌছালাম সকাল ১০ টায়। মেডিকেল কলেজের প্রসাশনিক ভবনের সামনে গিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। এ কি! ব্যনার হাতে নিয়ে বড় ভায়েরা আমাদের সবাইকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন। বড় ভায়েরা সবাই এগিয়ে আসছে আমাদের ভর্তি করার জন্য। সবার হাতে বিভিন্ন কাগজ, ফর্ম ইত্যাদি। আর সবাই 'আম্মাদেরকে' খালাম্মা বলে ডাকছে! আমরা এক বড় ভাইকে বললাম আমরা 'দলিল ভাইয়ের' সাথে দেখা করতে চাই। বড় ভাইটি এক সেকেন্ডের ভিতর কোথা থেকে কালো মত একটা ভাইকে ধরে নিয়ে আসল, বলল ইনিই দলিল ভাই!

পরিচয় দেয়াতে দলিল ভাই আমাদের ভালো মতোই চিনতে পারল। দলিল ভাই বলল তার আম্মা তাকে আমাদের কথা বলেছেন। দলিল ভাই বলল খালাম্মা আপনি ঠিক মানুষের কাছেই এসেছেন। আমার কাছে অবশ্য দলিল ভাইকে ঠিক মানুষ মনে হলো না। ওনার চোখ দুটো কেমন লাল টকটকে হয়ে আছে, মনে হচ্ছে রাতে ঘুমায়নি। কথা বলার সময় ওনার সামনের পাটির দাঁত গুলো কেমন নড়ছে! আমি দলিল ভাই কে বললাম "দলিল ভাই, আপনি জামরুল ভাইকে চিনেন? আমি জামরুল ভাইয়ের সাথে দেখা করতে চাই।" আমার কথা শুনে দলিল ভাই যেন আকাশ থেকে পড়ল! "তুমি জামরুল কে চিন কিভাবে"- অবাক দৃষ্টিতে দলিল ভাই জানতে চাইল। আমি সব ঘটনা বললাম। দলিল ভাই বলল খবরদার ভুলেও জামরুলের কাছে যেওনা। ওরা সব জামাত-শিবিরের লোক। তোমাকে ওরা জামাত-শিবিরের কর্মী বানাতে চায়। দলিল ভাই আরো বলল, "ভুলেও মেডিকেলে রাজনীতির সাথে নিজেকে জড়িও না"। আম্মাকেও সে এ ব্যাপারে সতর্ক করলো। আমার মনে পড়ল, জামরুল ভাইও আমাকে সতর্ক করেছিল যাতে আমি রাজনীতিতে না জড়াই! গ্রিলের ফাঁক দিয়ে বাইরে চোখ পরতেই দেখি জামরুল ভাই বিমর্ষ মুখে গোল চত্তরের গ্রিলে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে। বাইরে দাঁড়িয়ে সে তার হাত থেকে একটি 'মুরগির' ফসকে যাওয়ার করুন দৃশ্যটি দেখছে। ওই সময়টায় বিএনপি ক্ষমতায়, আর তাই মেডিকেলের হোস্টেল গুলো সব ছাত্রদলের দখলে। ছাত্রলীগের কোনো নাম নিশানা নেই ক্যাম্পাসে। জামাত শিবিরের ছেলেরা ক্যাম্পাসে থাকলেও ক্যাম্পাসে ‘মুরগি’ ধরা তাদের জন্য অলিখিত নিষেধ। আমি জামরুল ভাই থেকে মুখ ফিরিয়ে নেই। আমি জামাত-শিবিরের মুরগি হতে চাই না!

দলিল ভাই আমাকে নির্ঝঞ্জাটএ মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে দিল। বাইরে 'বাংলাদেশ জিন্দাবাদ' স্লোগান এর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। আমার শুনতে ভালই লাগছে! আজ থেকে অফিসিয়ালি আমি ছাত্রদলের একজন মুরগি হিসেবে তালিকা ভুক্ত হলাম! আজ থেকে আমি অফিসিয়ালি একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট, একজন ভবিষ্যত ডাক্তার -অসুস্থ মানুষের সেবক। দলিল ভাই, জামরুল ভাই ওরাও অসুস্থ মানুষের সেবক! দলিল ভাই আমাদেরকে নিয়ে শহরের একটি খ্যাতনামা রেস্টুরেন্টে খেতে গেল। তার আতিথিয়তায় যার পর নাই আমরা অবিভূত হলাম।

বিকেলে আমরা ফরিদপুর ফিরে এলাম। মাস খানেকের ভেতরেই ক্লাস শুরু হবে। আমাদেরকে চিঠি দিয়ে জানানো হবে। অপেক্ষা করছি। এর মধ্যে যা ঘটার ঘটে গেল। জাতীয় পর্যায় রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলো। নিয়ম অনুযাই ছাত্র লীগের 'লিগ্যাল' ভায়েরা ঝাপিয়ে পড়ল ‘দলিল’ আর ‘জামরুল’ ভাইদের উপর। দখল করে নিল ছাত্রাবাস। আজ থেকে ছাত্রাবাস গুলো সব লীগের মুরগিদের বাসস্থান। মুরগিদের রক্ষনাবেক্ষনের দায় ভার আজ থেকে শুধুই ‘লিগ্যাল’ ভাইদের!

বাসায় চিঠি এলো। ক্লাস শুরু হচ্ছে আগামী মাস থেকে। আমি বই খাতা বিছানা পত্র নিয়ে যাত্রা করলাম মেডিকেল কলেজের উদ্দেশে। কাম্পাসে গিয়ে দেখি জামরুল ভাই, দলিল ভাই সব নিশ্চিন্হ হয়ে গেছে। সেখানে সব 'লিগ্যাল' ভায়েরা অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। চারদিকে স্লোগানের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে "জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু'- আমার শুনতে মধুর লাগছে। এক লিগ্যাল ভাই আমাকে নিয়ে গেল ১ নম্বর হোস্টেলের তৃতীয় তলার একটি সুন্দর রুমে। এটাই আমার জীবনের প্রথম হোস্টেল রুম। এক রুমে ৪ জন করে থাকার ব্যবস্থা। লিগ্যাল ভাই আমাদের রুম মেইট সবার জন্য একটি করে নতুন খাট, টেবিল, লকার এবং আলনার ব্যবস্থা করেছে। আমি তো অবাক। লিগ্যাল ভাইয়ের ব্যবহারও অমায়িক। আমাকে রুমে উঠিয়ে দিয়ে গার্জিয়েন সুলভ কন্ঠে বলল "এখানে এসেছ ডাক্তার হতে। শুধু পড়ায় মন দিবে, অন্য কিছুতে না। রাজনীতি ফাজনীতির ধারের কাছেও যাবে না!" বাইরে তখন 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু' স্লোগানের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। আমার শুনতে ভালই লাগছে!

শুরু হলো আমার এবং আমাদের হোস্টেল লাইফ। মুরগি হয়ে বসবাস করতে লাগলাম হোস্টেলে আর নিজেকে একজন চিকিত্সক হিসেবে গড়ে তুলতে লাগলাম। জামরুল ভাই, দলিল ভাই এবং লিগ্যাল ভায়েরা যে আমাদের সত্যি সত্যি 'মুরগি' বলত তা জানতে পারলাম আমরা যখন ২য় বর্ষে উত্তীর্ণ হলাম এবং নতুন ছাত্ররা ১ম বর্ষে ভর্তি হলো। প্রথম বর্ষে আমরা যারা মুরগি ছিলাম ২য় বর্ষে উঠে আমরা নতুন মুরগি ধরার কাজে ব্যবহৃত হলাম! লিগ্যাল ভায়েরা আমাদের ট্রেনিং দিল কিভাবে নতুন ভর্তি হওয়া প্রথম বর্ষের ছাত্র গুলোকে মুরগি বানাতে হবে এবং হোস্টেলের বিভিন্ন রুমে তাদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে! হোস্টেলে প্রভোস্ট বলে কেউ নেই! লিগ্যাল ভায়েরাই সব। সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী! একসময় লিগ্যাল ভায়েরাও মুরগি ছিল। আমাদের ভেতর থেকেও কিছু চতুর মুরগি একদিন লিগ্যাল ভাই হবে। তারা হবে হোস্টেলের এবং কাম্পাস এর হর্তাকর্তা। আমি যে সময়টাতে মেডিকেলে পড়েছি অর্থাত ১৯৯৬ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত- এই মুরগি কালচারের কোনো ব্যতিক্রম ঘটেনি। আমি জানিনা বর্তমান সময়ে মেডিকেল হোস্টেল গুলোতে এই মুরগি কালচার এখনও বলবত আছে কি না! এই মুরগি কালচার যতদিন মেডিকেল হোস্টেল গুলোতে বলবত থাকবে ততদিন পর্যন্ত একজন মেডিকেল ছাত্রের কোনো ব্যক্তি স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা থাকবে না এবং থাকতে পারে না। যত দ্রুত এই 'মুরগি কালচার' মেডিকেল কলেজ গুলো থেকে বিলুপ্ত হবে তত দ্রুতই তা উদীয়মান মেধাবী তরুণ চিকিত্সক সমাজের জন্য শুভো।

[উপরোল্লিখিত নাম গুলো কাল্পনিক। তবে যে ঘটনার বর্ণনা দেয়া হয়েছে তা একটি বাস্তব ঘটনা]

খোন্দকার মেহেদী আকরাম,
(চিকিত্সক এবং গবেষক)
শেফিল্ড
৪ নভেম্বর ২০১৪

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৭

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: অসাধারণ লেখেন ভ্রাতা আপনি ++++++++

সামুতে এখন পাঠক সংকট আছে । কিন্তু লেখা বন্ধ করে দিবেন না । আপনাদের মতো ভালো লেখক এখন বেশী দরকার ।

ভালো থাকবেন সবসময় :)

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৮

নাটশেল বলেছেন: ধন্যবাদ অপূর্ণ রায়হান আপনাকে। মনে যখন যা আসে তাই লিখি আর আমার ফেইস বুকে, সামুতে এবং প্রিয় তে পোস্ট করি। লেখাটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম!

২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১২

এম আর ইকবাল বলেছেন: বছর দু আগে পাশ করা এক ড়াক্তারের কাছে একই ধরণের কথা শুনেছি । সে নাকি অতিষ্ট হয়ে ডাক্তারি পড়া ছেড়ে দিতে চেয়েছিল এক সময় । ভাল থাকবেন ।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৯

নাটশেল বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনিও ভালো থাকবেন।

৩| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৭

আদম_ বলেছেন: সুন্দর। লেখার হাত আছে আপনার। এরকম আরো জীবনধর্মী লেখা চাই।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৫

নাটশেল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য!

৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৩

বোকামানুষ বলেছেন: জানতাম না এসব

আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম ধন্যবাদ

৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মুরগী! মুরগী!!

:P =p~ =p~

কি অবস্থা দেশের শিক্ষাঙ্গনের.....

ভবিষ্যত নেতার, সেবকের যাত্রাই যদি শুরু হয় মুরগী হয়ে.. ভালত্বটা আসবে কি আকাশ ফুড়ে!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

এইসব যতদিন বন্ধ না হবে.. ভাল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাও বোধহয় অন্যায়!!!!

৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৪

ভাইটামিন বদি বলেছেন: জীবনের বাস্তব অভীজ্ঞতা খুব সুন্দর করে লিখেছেন......বেশ ভাল লাগল। আপনি কি এখনো ইউকে'তেই আছেন?

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪২

নাটশেল বলেছেন: জেনে খুশি হলাম যে লেখাটি আপনার ভালো লেগেছে। জি আমি এখনো ইউকে'তেই আছি। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.