নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বাঙ্গালী। বাংলা আমার অহংকার।

অচেনা হিমালয়

কোনটা বাস্তব, কোনটা কল্পনা, কোনটা আলো, কোনটা হতাশা, কোনটা ছায়া, কোনটা মরিচিকা......। অচেনা হিমালয়ের জগতে সব মিলে-মিশে একাকার......!!

অচেনা হিমালয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিদায় বারাক ওবামা!

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:০১



কেবল ২০১৬ সালেই ওবামা ২৬,১৭১ টি বোমা ফেলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে । আগের বছরগুলোর ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রেখে। :P
গত ৮ বছরে লাখ খানেক বোমা, হাজার দশেক ড্রোন হামলা চালিয়েছেন। তবে ফলাফল আপাতদৃষ্টিতে শূন্য।
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ওবামা বিশ্বকে শান্তিতো দিতে পারেনই নি, উল্টো নানান জায়গায় আরো প্যাচ বাধিয়ে দিয়ে গেলেন। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করার ঠিকাদারি ওবামাকে আমি আপনি দেই নাই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তারাই এটাকে তাদের "মোরাল অবলিগেশন" মনে করে, এজন্য বললাম। .
২০০৯ সালে সারাবিশ্বে রীতিমত আলোড়ন তুলে ওবামা এসেছিলেন। "পজেটিভ আলোড়ন"
ওবামার বাক্যবানে মুগ্ধ মার্কিনীরা ভেবেছিলো, আসলেই পরিবর্তন আসবে। ইরাক থেকে সেনারা ফিরে আসবে, যুদ্ধ হানাহানির অবসান হবে, ব্লাহ ব্লাহ ব্লাহ। বাকি বিশ্ব তেমনই ভেবেছিলো। আমেরিকার বোমাবাজি, যুদ্ধবাজির অবসান চেয়েছিলো। ওবামার চাপাবাজি সবাইকে আশাবাদী করেছিলো।
কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন হয়েছে খুব কমই।
ক্ষমতায় এসেই ওবামা মিশরে গিয়ে কায়রো স্পিস দিয়েছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ভেবেছিলো, এই বুঝি পরিবর্তন এলো। হা এসেছে অবশ্য। ওবামা তাদের আরব বসন্ত উপহার দিয়েছিলেন। সেই বসন্তের শেষে গ্রীষ্ম এসেছে। তার আগুনে এখন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো দিশেহারা।
প্রেসিডেন্ট বুশের জুজু আল কায়দা ছিল, আর এখন নতুন 'জুজু' আইসিস।
পেলেপুষে সিস্টেমে বড় করে তোলা কালসাপ। ধরি মাছ, না ছুই পানি, বা কাটা দিয়ে কাটা তোলার ধান্দা, যেটাই করে থাকুক না কেনো,
ঊঠোনে সাপ ছেড়ে যারা আশা করেছিলো সাপ কেবল প্রতিবেশিদেরই কামড়াবে, তারা মস্তবড় ভুল করেছিলো।
২০০৯ সালে যে মার্কিন জনতা "ওবামা"র মত মিষ্টিভাষী, লিবারেল, "মিক্সড রেসের (সাদা+কালো) ভদ্রলোককে ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট বানালো,
আট বছর পর সেই মার্কিনীরাই কেনো ট্রাম্পের মত একেবারে অপজিট স্পেক্ট্রামের একজন ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট বানালো, আশা করি সেই বিশ্লেষন ওবামা অবসরে বসে বসে করবেন।
গত আটবছর তিনিই প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সুতরাং ভালো কিছুর ক্রেডিট যেমন তিনি দাবি করেন, মন্দ যা যা পরিবর্তন এসেছে, সেগুলো তিনি উপেক্ষা করতে পারেন না।
আমেরিকাতে ন্যাশন্যালিজমের উত্থানের পেছনে ন্যাশন্যালিস্ট ভাবধারার দলগুলোকে ক্রেডিট দিতে পারলাম না। তারা আহামরি কিছুই করেনি। বরং ওবামা প্রশাসনের খামখেয়ালি কিছু ভুল স্টেপ তাদের জন্য ক্ষেত্র তৈরি করে দিচ্ছে সুযোগ ক্যাশ করার।
ওবামা এসেই নোবেল পেয়েছিলেন শান্তিতে।
কিন্তু কেনো পেয়েছিলেন, মনে আছে?
মিষ্টি মিষ্টি বক্তিতা দেবার জন্য না। বরং রাশিয়ার সাথে পারমানবিক অস্ত্র হ্রাস করার চুক্তি সাইন করে। তখনকার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ডিমিত্রি মেদভেদে বা রাশিয়ার তখনকার প্রধানমন্ত্রী পুতিন কিন্তু যৌথভাবে পুরস্কার দাবি করতে পারতেন। যদিও তারা সেটা পাননি, কারণ তারা রাশিয়ান।
চুক্তি কিন্তু একহাতে হয় না। দুই হাত লাগে।
আইজ্যাক রবিন আর ইয়াসির আরাফাত যেমন দুইজনই নোবেল পেয়েছিলেন।
কিন্তু ওবামা একাই পেলেন।
তখন যদিও দিমিত্রি মেদভেদ প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তারপরও সবাই বুঝতো, সবকিছু পুতিনই চালাচ্ছে।
কিন্তু এরপর ওবামা রাশিয়ার অস্ত্রব্যবসায়ী ভিক্টর বুথকে জেলে ভরলেন।
ব্যস। আমার মেমরি যদি বিট্রে না করে, ওবামার সাথে পুতিনের ব্যক্তি পর্যায়ের রেসারেসি শুরু তখন থেকেই।
এরপরের ইতিহাস সবার জানা।
এতোকিছু বলার একটাই কারণ, আজ রাশিয়ার সাথে আমেরিকার সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ। এবং যে "পারমানবিক অস্ত্র" হ্রাসকরণ চুক্তি ওবামা করেছিলেন, সেই চুক্তিতো বাস্তবায়ন হয়ই নি, উল্টো নতুন করে পারমানবিক অস্ত্র বৃদ্ধি শুরু করেছে দুইদেশ।
ওবামা এসে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, এশিয়া, এবং ইউরোপ, সবজায়গাতেই অস্থিতিশীলতা তৈরি করেছেন। কখনো মুখ্যভাবে, আবার কখনো না চাইতেই। সিচ্যুয়েশন এরাইজ করলে তিনি সঠিক সময়ে সঠিক স্টেপ নিতে পারেননি অথবা ভুল স্টেপ নিয়েছেন। হয়ত এই কারণেই।
ওবামার লেগ্যাসি তাহলে কি হবে?
হেলথ কেয়ার? যার জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি কষ্ট করেছিলেন।
সমস্যা হল, রিপাবলিকানরা এই একই হেলথ কেয়ারকে অক্ষুন্য রেখে সামান্য একটু এদিকওদিকে পরিবর্তন এনে নিজেদের নামে চালিয়ে দেবে। হয়ে যাবে নতুন কোনো হেলথ কেয়ার এক্ট।
কিংবা ইরাক থেকে সেনা ফিরিয়ে আনা?
এনেছিলেন তো তিনি। কিন্তু আবার মার্কিন সেনারা ইরাকে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
তবে এখানে একটা টুইস্ট আছে। ২০০৮ সালে নির্বাচনী প্রচারনার সময় ওবামা বলতেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি ইরাক থেকে সেনা ফিরিয়ে আনবেন। অথচ এখন, ইরাক থেকে সেনা ফিরিয়ে নেয়াটাকে একটা ভুল পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। একারণে দেখবেন এখন লিবারেলরা বলে, ইরাক থেকে সেনা ফিরিয়ে আনার চুক্তি বুশই করে গিয়েছিলেন :P তারা কেবল তা বাস্তবায়ন করেছিলেন।
অর্থাৎ সফল হলে ক্রেডিট আমার। ব্যর্থ হলে সব দোষ আগের জনার।
গোয়ানতানামো কারাগার বন্ধ করে দেয়া?
তিনি গত আট বছরেও পারেননি। এতোগুলো এক্সিকিউটিভ অর্ডার সাইন করলেন, অথচ ওই একটা অর্ডার সাইন করা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। হয়ত সময় পাননি গত আটবছরেও।
ম্যারেজ ইকুয়ালিটি?
হা। এটা একটা হতে পারে।
অর্থনৈতিক মেল্টডাউনকে সামলে নেয়া। মার্কিন অটো ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে দেয়া। এটা আরো একটা হতে পারে।
তবে এসব মানুষ মনে রাখবে কিনা সন্দেহ।
ওবামার লেগ্যাসি যেটাই হোক, ওবামা আটবছর শেষে গোটা বিশ্বের জন্য চরম এক সারপ্রাইজ রেখে গেলেন। সেটা হল ট্রাম্প। :P
এতো সমালোচনা করার পরও একটা কথা না বললেই না।
ওবামা অসাধারণ বক্তা।
সুন্দর সুন্দর গালগপ্প বলা, আর সুন্দর সুন্দর বাণী দেয়ার ব্যাপারে তার ক্ষমতা অসাধারণ।
তার ভাষণ দুনিয়ার অগণিত মানুষকে মুগ্ধ করেছিলো।
মিশরে গিয়ে তিনি শান্তির বাণী শুনিয়ে এসেছিলেন আট বছর আগে। মিশরকে তিনি উপহার দিয়েছিলেন আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি।
লিবিয়াকে উপহার দিয়েছিন গনতন্ত্র। ফলাফল, আজ লিবিয়ার একএক শহরে একএক গনতন্ত্র বাসা বেধেছে :P
আর ইরাক, সিরিয়ার কথা বাদই দিলাম।
ইউরোপে আশ্রয় নেয়া লাখ খানেক রিফিউজি নিশ্চয় ওবামার ভাষণ শুনেছে। মুগ্ধও হয়েছে।
আট বছর আগে ওবামাকে বুশের চেয়ে অনেক অনেক বেটার মনে হত। আর এখন? বুশ আর ওবামার ভেতর পার্থক্য কেবল একটাই। ওবামা বুশের চেয়ে অনেক ভালো বক্তা। এই যা।
ব্যাপার না। মুগ্ধতার হ্যাংওভার কাটানোর জন্য আগামীকাল থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প এসে যাবেন।
ফিঙ্গার ক্রসড।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংলাদেশ বা নেপালে বোমা ফেলতে হয়নি কি কারণে; সিরিয়ায় কেন আমােরিকা বোমা ফেলতে গেলো, আপনার জানা আছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.