নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দিকভ্রান্ত পথিক

দিকভ্রান্ত*পথিক

আমি নিরপেক্ষ নই, আমি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, বাংলাদেশের পক্ষে!

দিকভ্রান্ত*পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বড়মানুষের পায়ের তলে চাপা পড়ে ২০০... ২৫০ তেলাপোকা মরেই চলেছে। ওদের পায়ের তলে পড়েই মরার ছিল।

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:১৯

মন প্রচন্ড খারাপ হয় যখন, খুব বেশী অসহায়ত্বের অনুভূতি তখন পেয়ে বসে কেন জানি। সাভার যেন এসেছেই সেই অনুভূতিটা ফিরিয়ে দিতে। দেশে না থাকার কষ্টটা পেয়ে বসছে। কিন্তু থাকলেই বা কি করতাম, জানিনা। স্বজন হারানোর অনুভূতি কেমন হয় জানেন? আমি জানি, সেই শুন্যতা আর স্তব্ধতা কাল থেকে পেয়ে বসেছে। কতো সামান্য, কতো অসমর্থ তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে ওই “আমার কেউ না” রা কি চলে গেলেন?



তাদের কথা আমি বলতেই পারছি না, ভাবতে গেলেও গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। যাদের আগামীকাল এর কোন আড়ম্বর স্বপ্ন নেই, শুধু আজকের অন্নের দুশ্চিন্তা নিয়েই যাদের ঘর থেকে সেই সকালে বেরিয়ে পড়েন। কখনও সেভাবে ভেবে দেখা হয়নি। ওই “সামান্য” ঘর্মাক্ত আপাত দেখতে সুশ্রী কিছু নয় “মানুষটার” ঘর থেকে বেরনোও হয়ত একটা প্রিয় মানুষের সামান্য হাঁসি-কান্না দেখে। হাঁসি হয়ত কদাচিৎ আসে, সারা মাসের ক্রীতদাসত্ব শেষে মাসের একটা সময় সামান্য কিছু টাকা মুখে ছুঁড়ে দেওয়া হয় যখন, তখন হয়ত একটু হাঁসে ওরা। ভেবে দেখা হয় নি, হয়ত ওই মেয়েটার সন্তানটাও আধো আধো বায়না ধরে সস্তা কোন খেলনার। মনেমনে ওই মা-টিও হয়ত ভাবেন, এই মাসে বেতনটা পেলেই কিনে দেওয়ার চেষ্টা করবো।



পরিবার অভুক্ত থাক, চোখে পানি থাক, নিয়মিত হাঁসিয়ে চলেছেন সমাজের সব রাঘববোয়াল ব্যাবসায়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক আশিষপুষ্ট দৈত্যদের। ওদের ঘামে ভেজা পোশাকগুলো গায়ে লাগিয়ে নিজেকে বিশাল কিছু ভেবে দম্ভে হাঁটা “মানুষগুলো” কি তখনও কাপড়গুলো পড়তে ততটাই ভালবাসবেন যখন জানবেন ওতে লেগে আছে কতোজন এর টাটকা রক্ত?



আগুনে পুড়ে যখন শত মানুষের(!) প্রান(!) হারালো, তাজরীনে যখন পুড়ে কয়লা হল ওরা, অনেক খারাপ লেগেছিল, বিচার চেয়েছিলাম তখনও, আজ আর চাইবোনা। এই “অমানুষগুলোর” জন্যে কিছু করা বৃথা, সময়ের অপচয়।



ওদের জন্যে কিছুই করার নেই, দুইটা টাকার জন্যে গনমৃত্যু ওদের নিয়তি, জন্মটাই ওদের আজন্ম পাপ।



দুইশ...আড়াইশ... এতো মানুষের(!) লাশের মাঝেও আমি দিব্যি আছি, খুব কমফোর্টেবল কোথাও, একটা ডিভাইস থেকে আরাম করে বসে ইন্টারনেট ব্রাউজ করছি। আমার ভাল লাগার কথা, কিন্তু কেন লাগছে না? কেন বারবার কান্না পাচ্ছে? কারন আমি জানি, এই পৃথিবীতে আমার থেকেও নিকৃষ্ট’র বীরদর্প বসবাস।

কারা এই মহান মানুষ যাদের কারনে আমি বেঁচে থাকতে ঘৃণাবোধ করছি না?



- হরতালকারিরা ভবনের পিলার ধরে নাড়ানোতে ধস হয়েছে - স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

- আল্লামা শফির সাথে বেয়াদবি করায় এই গজব - হেফাজতে ইসলাম

- সরকার তত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থা বাতিল করায় এই দূর্যোগ - বদরুদ্দুজা চৌধুরী



তেলাপোকারা, তোরা এইভাবেই মরবি... তোদের এভাবেই মৃত্যু হবার ছিল। আমরা তো মানুষ! এক একজন মহামানব, আমরা শোকদেখাবো, মেকী, এক সপ্তাহ যাক? তারপরে তোদেরকে আর মনে রাখবো না। তোরা ঘামে ভেজা নোংরা তেলাপোকা। দুঃখ করিস না রে, তোরা মানুষ না, দুঃখ তোদের থাকতে নেই।



অফটপিকঃ সাভার, যেখানে অনেক তেলাপোকা বড় বড় মানুষের লালসার পায়ের তলে পড়ে থেঁতলে শেষ হয়ে গেছে তাদের ভুলে গেছেন নিশ্চয়ই এতক্ষণে? কিছু তেলাপোকার নাকি এখনও অক্সিজেন দরকার, বিস্কুট দরকার, শুকনো খাবার ও টরচলাইট দরকার... চেষ্টা করে দেখবেন নাকি সাহায্য করা যায় কি না... তেলাপোকারা না বাঁচলে মানুষ দাবী করবো কি করে নিজেকে??

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৪৪

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: :( আমরা তো মানুষই না!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.