নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাকে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে এই ৩ শব্দ। ‘মা’ ও ‘বাবা’ থেকেও এই শব্দগুলো আমার কাছে প্রিয় বেশী। সীমাবদ্ধতা ও সাপেক্ষে’র সাথে পরিচয় ২৬ বছর বয়সে, তার একবছর পর পরিচয় ন্যায্যতার সাথে। সে হিসেবে আমি আমার বয়স ৩/৪ বছর মনে করি। বয়সের হিসেব যদিও আমার অপচন্দ, এগুলা এক প্রকার ধোকা ও শান্তনা
- তুমি কি ঘুমিয়ে পড়ছো?
- না।
সীমাবদ্ধতাঃ মানুষের জীবনের প্রাথমিক সময়গুলো এমনভাবে কাটায় যাতে কোন কিছুই তার মনে থাকে না। যখন সে এটা বুঝতে শিখে তখন তার কিছুই করার থাকে না। সে এটা স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়। অবশ্য না নিয়েও উপায় নাই। এভাবে প্রতি বছর পরপরই সে নিজেকে নতুন নতুন স্টেজে দেখে। যেগুলো চাইলেও আগে করা সম্ভব নয়। কুত্তার ঘ্রাণশক্তি আমাদের থেকে বেশী শক্তিশালী। বিড়ালের চোখ আমাদের থেকে বেশী এক্টিভ। কচ্ছপ ৫০০ বছর বাচেঁ, আমরা মাত্র ৭০ বছর। আমরা সীমাবদ্ধ। আমরা অক্সিজেন ছাড়া বাচঁতে পারি না, অথচ মহাকাশে টার্ডিগ্রেড অক্সিজেন ছাড়া দিব্বি ঘুরাঘুরি করছে। ২০ বছর অবধি যা বুঝলাম ৩০ এসে দেখি তা আসল বুঝ নয়। যা ইচ্ছা তা আমি মোটেও করতে পারি না। আমরা একটা নিদিষ্ট সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই সীমাবদ্ধতা আমাকে এক সময় লজ্জায় ফেলে দিতো, খুব শরম পাইতাম। এখন চুপ করে থাকি, একা একা হাটি, আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি। সীমার এই বদ্ধতা কেন?
সাপেক্ষেঃ যদি বলি, ‘আলমা ফিজিক্স অনেক ভালো বুঝে’ এর অর্থ হলো আমি আলমার থেকে ফিজিক্স কম বুঝি। আমার সাপেক্ষে আলমা ফিজিক্স বেশী বুঝে। আমার ফিজিক্সের স্যার কিন্তু আলমাকে ফিজিক্সে অনেক ভালো কখনো বলে না। বলেন, ও ফিজিক্স মোটামুটি বুঝে। স্যারের জ্ঞানের সাপেক্ষে এই কথাও ঠিক। ড. মাসের বলে, “শুন আলমা, পদার্থ আর শক্তি এক বিষয় নয়। আলো হলো শক্তি, পদার্থ নয়…….। পড়, আরো পড়তে হবে।” ড. মাসের এর জ্ঞানের সাপেক্ষে আলমা ফিজিক্সের অ, আ, ক, খ পড়ছে কেবল। সুতরাং আমাদের রায়গুলো আমাদের জ্ঞানের/জানাশুনার সাপেক্ষে। জ্ঞান যত বাড়বে পূর্বের দেওয়া রায় পরিবর্তন হওয়ার সম্ভবনা তত নিশ্চয়তার দিকে যাবে। আমরা, কখনোই এবসিলিউট কোন রায় দিতে পারবো না, যতক্ষন না পর্যন্ত জ্ঞানের শেষ কাতরা আমরা গিলে নিবো। ৭০ বছরের মধ্যে ৩০ বছর ঘুমাই কাটাই, আমরা গিলবো জ্ঞানের শেষ কাতরা? শরমের মাথা খেয়ে আমরা বড়জোর স্মরণ করিয়ে দিতে পারি যে, উমুক এটা বলেছেন, তমুক এটা লিখেছেন। আপনারা কি বুঝতে পারছেন?
ন্যায্যতাঃ নিজের বোনকে বিবাহ করা মোটেও অন্যায় নয়, বরং অধিক যোক্তিক। ১০জন মানুষকে হত্যা করা ব্যক্তিকে ফাঁসি দিয়ে কেবল হত্যার সংখ্যা ১ বাড়ানো হবে। এটা বিচার হলেও ন্যায় অন্যায়ের বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে। এক মহিলাকে কষ্ট দিয়ে আসা আমি কেবল ‘মা’ বলেই নৈতিক হতে পারি না। ওরা বলে, ন্যায় অন্যায় এগুলো আপেক্ষিক। সময়ের ঠেলায় আমাদের ন্যায় লিঙ্গ পরিবর্তন করে অন্যায় হয়ে যায়। বাস্তুসংস্থান নামে একে ও, ওকে এ খাওয়ার একটা সার্কেল আমরা গ্রহণ করে নিয়েছি। গ্রেট সার্কেল অব লাইফ! যেখানে ন্যায্যতার কিছুই নাই। খালি খাওয়া আর খাওয়া। আবার খাইতে গেলেই চুরি হয়ে যায়। সেটা আবার অন্যায়। সংবিধান ১৭ বার ডিবাগ করতে হইছে, হতেই থাকবে। ব্যক্তি হিসেবে কেউ ন্যায় হলে প্রতিদিনই তার ন্যায্যতা সংশোধন হচ্ছে। সবদিক থেকে ন্যায় এমন বিচারের আশায় হিমেল আর রাফি হাটছে। বিচার হতেই হবে। কেউ আছে?
সীমাবদ্ধার সাপেক্ষে ন্যায্যতা ঠিক করার যোগ্যতা কারো নাই। এই তিন দেয়ালে আবদ্ধ হওয়া থেকে মুক্ত হওয়ার একটা উপায় অবশ্য আছে। ৩৬ মিনিট অপেক্ষা করা যাক।
©somewhere in net ltd.