নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতীয়মান হাজার কোটি মানুষের ভীরে আমি একজন অপ্রতীয়মান। সেই হাজার কোটি মানুষের কোন একটাই আমার চেহারা, আমার পরিচয়......
সুরের মাঝে কি জাদু আছে কে জানে? কেউ সুরের এই যাদুর মোহে পড়ে হারিয়ে যায় আজানায়। আবার কেউ কেউ কেউ নিজেকে খুঁজে পায় এই সুরের মাঝেই। সেই অনাদিকালের শুরু থেকে মানুষ সুরের মুর্ছনায় হারাতে শিখেছিল। লক্ষ কোটি বছর পরেও সেই হারিয়ে যাবার আগ্রহে মানুষ সুরের পেছনে অন্ধের মত ছুটে বেড়ায়।
কি অসম্ভব ক্ষমতা এই সুরের! হ্যামিলনের ইঁদুর থেকে শুরু করে বাচ্চারাও দল বেঁধে হারিয়ে গেছে এই সুরের মোহনীয় লাইন ধরে। আজ অব্দি কেউ আর তাদের খুঁজে পায়নি। না কোন নগরে, না কোন বন্দরে। তারা যেন সুরের মতই সুরের মাঝে হারিয়ে গেছে, মিশে গেছে বাতাসে।
ক্ষমতা, লোভ, লালসা -এই সবই হার মেনেছে এই সুরের সামনে। আহংকার, আত্মগরিমা, দাম্ভিকতা - সবই ধুলিসাৎ হয়েছে এই সুরের কারণে। যে মন কোন বাঁধনে জড়ায় না, সেই মনও কোন না কোন এক গলিতে অখ্যাত কোন রেস্তোরায় বেঁজে যাওয়া কোন এক নাম না জানা বাদ্যযন্ত্রের টুং টাং শব্দতে নিজের পাথরসম হৃদয়টাকে বেঁধেছে। হয়তো স্বীকার করেনি কোন কালে, তবুও সেই সুর কখনো কানে ভেসে আসলে তাতে নিজের তৃষ্ণা মিটিয়েছে খুব সর্ন্তপণে।
উল্লাস, আনন্দ, বিজয় - এই সবই প্রকাশ পেয়েছে সুরে। কৃতজ্ঞতা, মহানুভবতা, দয়া - এরাও নিজেদের প্রকাশ আর প্রচার ঘটিয়েছে এই সুরের পথে হেটে। প্রতিটা শোক কিংবা প্রতিটা আনন্দের উল্লাস সুরের এই অলিগলির পথ ধরে অন্ধকার পথের কোণ থেকে উঠে গেছে রাজপ্রাসাদে। কখনো শোকের অশ্রু ঝড়িয়ে আবার কখনো আনন্দ অশ্রু বিসর্জনের মাধ্যমে মনের গহীন থেকে ভাব গুলিকে প্রকাশ করিয়েছে জনসমুদ্রে।
সুরের এই মাদকতা কাউকেই ছেড়ে কথা বলেনি। মোয়াজ্জিনের আজান থেকে শুরু করে কোরআনের তেলাওয়ালে রয়েছে তার উপস্থিতি। মন্দিরের ঘন্টা থেকে পুজার মন্ত্র পাঠের পড়তে পড়তে রয়েছে তার অবস্থান। গির্জার ঘন্টা থেকে শুরু করে সান্তাক্লোজের স্লেজ গাড়িতে রয়েছে তার বিস্তৃতি।
কেউ তার কন্ঠে ধারণ করেছে সুর আর কেউ তা নিয়ে এসেছে তাদের হাতের আঙ্গুলে। কেউ কথার পর কথাকে সাজিয়ে গেছে সুরে, আর কেউ কেউ সেতারার তার ধরে গুঞ্জন তুলতে তুলতে সৃষ্টি করেছে ঝড়। আর তাদের সেই ঝড়ে, সৃষ্টির গহীন তলে মানুষ বিভোর হয়ে হারিয়েছিল, হারাচ্ছে আর হারাতেই থাকবে নিজেকে।
এই সুরের ভেলায় চড়ে কত ভালোবাসার গল্প পার করেছে কত শত নীল নদ। শত শত বেহালার তারে প্রকাশ ঘটেছে ছড়িয়েছে বেদনার গল্প। একতারার কম্পনে সৃষ্ট সুরে প্রকাশ পেয়েছে হাজারো মূল্যবোধ। দোতারার সুর ছড়িয়েছে কত কাব্যকথা। পিয়ানো গুলো শব্দের কম্পনে শত শত মানুষের অস্তিত্বকে নাড়িয়ে গেছে। আর গিটারের তার গুলো আপন উন্মাদনার সুর ছড়িয়ে ছিটিয়ে উন্মত্ততায় আগুন জ্বালিয়েছে যুব হৃদয় গুলিতে। শত অবজ্ঞাতেও কেউ মুক্তি পায়নি এই সুরের কবল থেকে।
কত হঠকারী সুরের এই চিৎকারে নিজের কুৎসিত কর্মমকে সংবরণ করেছে। কত যালিমের মনে এই সুর সৃষ্টি করেছে ভয়। কত মুক্তিকামী মানুষের মনে সাহস যুগিয়েছে এই সুর। কত ভীত সম্প্রদায়কে আগ্রগামী করে দিয়েছে সে সময়-অসময়ে। কত রাজত্বের সৃষ্টি হয়েছে এই সুরের সিড়ি বেঁয়ে, আবার কত রাজত্ব ধ্বংস হয়ে বালিতে মিশে গেছে এই সুরের তেজস্বীয়তার সামনে। কত পরিচয় লুটেছে এই সুরে আর কত পরিচয় গড়েছে এই সুরের শেষে। সুরের এই অবদানের হিসেব কখনো বলে কয়ে শেষ করার নয়।
এইসব সুর ভেসে চলুক মানুষের মনে, ভাসিয়ে নিয়ে যাক মানুষকে তেপান্তরে। যুগ যুগান্তরের সুর এগিয়ে চলুক তার আপন গতিতে। ধ্বংসে, সৃষ্টে আর ভালোবাসায় জড়িয়ে রাখুক সবাইকে....
পরিশেষে সুরের যাদুতে ঘেরা একটি পরিবেশনা...
০৯ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:১৫
অপ্রতীয়মান বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:১৫
নয়া পাঠক বলেছেন: সুর বা ধ্বনি এমন একটি বিষয় যার ভালো এবং খারাপ দুটো দিকই রয়েছে, মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটানোর যেমন সুর রয়েছে তেমনি রয়েছে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণের জন্যও আবার রয়েছে ধ্বংসের সুরও। যেমন সুরের (সিঙ্গায় ফুৎকার) মাধ্যমেই মহাবিশ্বে মহাপ্রলয় ঘটানো হবে ।
০৯ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:১৭
অপ্রতীয়মান বলেছেন: ভালো আর মন্দ - যে কোন ব্যাপারেই এরা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। সুরের বেলাতেও তাদের ব্যতিক্রম নেই।
'সুরের (সিঙ্গায় ফুৎকার) মাধ্যমেই মহাবিশ্বে মহাপ্রলয় ঘটানো হবে' - ভালো উদাহরণ ছিল এটি।
মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ
৩| ০৫ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:২৭
আহসানের ব্লগ বলেছেন: সুরের তুলনা সুর নিজেই। তানসেনের ঝংকারে নাকি আগ্নি বৃষ্টি ঝড়তো। আপনাকে অনেক দিন পরে দেখে ভালো লাগলো৷
০৯ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:১৮
অপ্রতীয়মান বলেছেন: ধন্যবাদ @আহসান ভাই
হ্যা, আগের মত ব্লগে সময় দেয়া হয় না। কিছুটা ব্যস্ততা বেড়েছে।
শুভ কামনা জানবেন
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: সংগীত হলো সাধানা। সুরের মধ্যেই সব কিছুর সৃষ্টি।