নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে জানতে চাই,ছুটে চলেছি অজানার পথে,এ চলার শেষ নেই ।এক দিন ইকারাসের মত সূর্যের দিকে এগিয়ে যাব,ঝরা পাতার দিন শেষ হবে ,আর আমি নিঃশেষ হয়ে যাব ।

অপু দ্যা গ্রেট

গাহি সাম্যের গান- মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান, নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি, সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।

অপু দ্যা গ্রেট › বিস্তারিত পোস্টঃ

গাভী বিত্তান্ত ও এক বিশ্ববিদ্যালয় (বুক রিভিউ)

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:০৩



প্রথমে বলে নিতে হয় এই বইটি আমার কাছে দারুন লেগেছে। আহমদ ছফার অনেক গুলো বই সংগ্রহে রেখেছি কিন্তু পড়িনি । কেন সেটা জানি না । তবে নিজেকে সময় দিয়ে পড়তে ভালো লাগে । সে যাইহোক, আম এমন একটা সময় তার লেখা পড়েছি যখন আমার নিজের জীবনের প্রতি কিছুটা হলেও হতাশা ও বিরক্তিকর মুহূর্তে মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। তবে “ গাভী বিত্তান্ত ” যেন আমার সব কিছু নতুন ভাবে শুরু করার এক মুহূর্ত নিয়ে এল । অনেক দিন বই পড়তে পারছিলাম না । এমন কিছু যেন দরকার ছিল আর সেটাই হলো ।

“গাভী বিত্তান্ত” বইটি যদি কিছুটা স্যাটায়ার ও সারকাজম এ লেখা । কিন্তু সেটা প্রঙ্গগত ভাবে একদম ঠিক। কারণ বইটি যে বিষয়টির উপর ভিত্তি করে লেখা তা থেকেই বোঝা যায় যে কতটা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর ভিতর থাকা মানুষ গুলো নিজেদের মধ্যেই প্রতিহিংসা ও দলাদলিতে লিপ্ত থাকেন । কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে না । তার কাজ ঠিক সময়ের উপর দিয়ে চলে যায় । যেন সব আগে থেকেই ঠিক করা ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কিছু ঘটনা, কিছু মানুষের দ্বি-মুখী আচরণের মাধ্যমে পুরো সমাজকে ব্যাঙ্গ করেছেন ছফা এই উপন্যাসে। সাধারণ কিছু স্যাটায়ার আছে। তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, তার রাজনীতি আর মানুষগুলোর দ্বিচারিতা যেন সামনে চলে আসলো। আমরা ছাত্রদেরগুলো দেখতে পাই, প্রশাসনিক বা শিক্ষকদের গুলো হঠাৎ দৃষ্টিগোচর হয় না, এখানে সেগুলো সামনে আনা হলো।দুর্দান্ত স্যাটেয়ার! ছফা এদেশের পাবলিক বিশববিদযালয়ের অনদরমহলের খবর তুলে ধরেছেন কোনরকম রাখঢাক ছাড়াই। উনার সেন্স অব হিউমার অতুলনীয়! ১৯৯৫ সালে লেখা হলেও দুঃখজনকভাবে এখনো সমান প্রাসঙ্গিক।

যেমন ধরুন " সংখ্যাতত্ত্ব বিভাগের ছেলে মেয়েরা সদল বলে মিছিল করে এসে উপাচার্যের দপ্তরের দরজা জানালা ভাঙাচুর করেছে । তাদের দাবি ছিল একটাই, কেন তাদের পরীক্ষা বারবার পিছানো হচ্ছে । ভাঙা দরজা জানালা নতুন করে মেরামত করার পর সমাজতত্ত্ব বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে মেরামত করা দরজা জানালা আবার নতুন করে ভেঙে দিয়ে গেছে । "

আবার অন্যদিকে " তিরিশ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে এক হাজার কবি, সংখ্যাটা কিছুতেই অধিক বলা যাবে না । বাঙালি মাত্রই কবি । "

দেশের সেরা ও প্রাচীণতম বিশ্ববিদ্যালয়টির জ্ঞানতাপস শিক্ষকদের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব, রাজনীতি, স্বার্থপরতার নোংরা বলয়ের বাইরে স্রেফ নিস্ক্রিয় জীবনযাপনকারী একজন শিক্ষক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ আবু জুনায়েদ। খুবই সাধারণ তার জীবনযাত্রা, তার চিন্তা বা স্বপ্ন। কিন্তু পরিবেশ-পরিস্থিতি আর অতিরাজনীতির ঘেরাটোপে একপ্রকার হঠাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন তিনি; এই উপাচার্যের পদে আসীন হওয়াটাই তার নিজস্ব জীবন যাপন এবং দৃষ্টি ভঙ্গীতে নিয়ে আসে এক আমূল পরিবর্তন।

পারিবারিক, সামাজিক বা পেশাগত বিভিন্ন সমস্যা নিরসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মিটিং মিছিল দুর্ঘটনা, নিজ দলীয় সহকর্মীদের অসন্তুষ্টি সামলে উঠতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন, ক্ষমতা লাভের চেয়ে বরং তার সদ্ব্যবহার করা সত্যিই কঠিন। কখনো কখনো তিনি বেশ হাপিয়ে ওঠেন।

তার চারপাশে গজিয়ে উঠতে থাকে সুবিধা শুষে নেবার মত ধুরন্ধর লোকেরা; পারিবারিক জীবনে চরমভবে অসুখী হয়ে উঠতে থাকেন তিনি, এক পর্যায়ে ভিসির বাংলোতে একটা দুর্দান্ত গোয়ালঘর বানিয়ে একটা দুর্লভ জাতের গাভী কিনে পুষতে শুরু করেন। অবলা প্রানীটাই বরং ভালো, কোন দাবী দাওয়া নেই, ষড়যন্ত্র নেই বা মাথা ধরানো হই চই নেই। এক পর্যায়ে শান্ত সমাহিত এই প্রাকৃতিক পরিবেশটিই হয়ে দাঁড়ায় তার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ কিংবা শিক্ষক-ছাত্র রাজনীতির কাজও পরিচালিত হতে থাকে সেই গোয়ালঘর থেকে। এর শেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় ?

বিশ্ববিদ্যালয় কে তিনি তুলনা করেছেন আত্মার সঙ্গে । শতাব্দীর প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কিছুই আছে । ইট-পাথর আর কারুকার্যের কাজ ও ঐতিহ্য গুলো কে বহন করে চলেছে । যেন কোন এক ইতিহাসের সাক্ষীরা আজ ও বলে চলেছে কি হবে আমাদের? আদৌ কি আমরা পেরেছি?

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:১২

মিষ্টি স্বপ্ন আরিফ বলেছেন: অসাধারণ লিখনী। কথাগুলো সত্যও। ধন্যবাদ।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:১৫

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:১৭

আটলান্টিক বলেছেন: রিভিউ পড়ে বইটা পড়তে মন চায়ছে :)

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: বইটি আসলেই পড়তে অনেক মজার

৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সত্য।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: সহজ এবং অপ্রিয় দুটোই

৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৫

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: আমার তো মনে হয় ছফার রচনার সফল দিকটাই পড়ে ফেলেছেন। আর এভাবে এতটা রসিয়ে রসিয়ে মোটা চামড়ার ওই পণ্ডিতগুলোকে কেউ সাইজ করতে পারেন নাই বা করতে সাহস পান নাই। আর সে দুঃখেই হয়তো বড় পণ্ডিতগুলার কাছে আহমদ ছফা এক রকম বার-বাড়ির মানুষ হয়েই রয়ে গেলেন। তাঁকে নিয়ে আলাপ-আলোচনাও যেন অনেকের গায়ে বিছুটিপাতার গুঁড়ার কাজটা করে দিয়ে যায়।

ছফা পাঠের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫২

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য

আর এই বইটি নিয়ে আমাকে অনেক কিছু বুঝিয়ে দিয়েছে। শিক্ষা রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় সব কিছু । সফল দিক কিনা জানি না । তবে তার লেখা গুলো যে অনেকের কাছে বিষের মত ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:১২

জাহিদ অনিক বলেছেন:

বেশ। ভাল বই, ভাল রিভিউ।
অনেক কথা শুনেছি। পড়ব পড়ব করেও হয়ে উঠেনি।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৭

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: ধন্যবাদ।

আশা করি পড়ে ফেলবেন।

৬| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৩

কালীদাস বলেছেন: রিভিউটা ভালই হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচার এই বইটাতে এত সুক্ষ্ণ স্যাটায়ার দিয়ে দেখান হয়েছে বইটাতে যে এটার রিভিউ করা মুটামুটি চ্যালেন্জিংই ছিল হয়ত আপনার জন্য। আপনি কিয়দংশেই সফল :)
চালিয়ে যান :)

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৮

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: ধন্যবাদ। ওনার লেখা পড়ার জন্য আমি নিজেকে কিছুটা সময় দিয়েছি।

কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।

৭| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৪

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: চমৎকার একটা বই.... পড়া শেষ B-))

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:



ওনার ওঙ্কার পড়া শুরু করে শেষ করতে পারনি ।

এখনো সেখানেই আছি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.