নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে জানতে চাই,ছুটে চলেছি অজানার পথে,এ চলার শেষ নেই ।এক দিন ইকারাসের মত সূর্যের দিকে এগিয়ে যাব,ঝরা পাতার দিন শেষ হবে ,আর আমি নিঃশেষ হয়ে যাব ।

অপু দ্যা গ্রেট

গাহি সাম্যের গান- মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান, নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি, সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।

অপু দ্যা গ্রেট › বিস্তারিত পোস্টঃ

তেতাল্লিশের মন্বন্তর ও অশনি সংকতে ( বুক রিভিউ )

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৬



বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই নাম যখন ই সামনে আসে তখন আমার মনে মাঝে দুর্গা আর অপুর ছবি ভেসে আসে । পথের পাচালী ও অপরাজিত বই দুটির কথা মনে পরে । এত সুন্দর ভাবে কেউ বর্ননা করতে পারবে বলে মনে হয় না । সে যাই হোক শেষ করলাম তার অসাধারণ উপন্যাস " অশনি সংকেত "। অশনি সংকেত বইটির পটভূমি ১৯৪৩- ৪৪ সালের দুর্ভিক্ষপীড়িত বৃহত্তর বাংলা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সরকার সেনাবাহিনীর জন্য অতিরিক্ত খাদ্য সংগ্রহ করলে বাংলার গ্রামীণ অঞ্চলে তীব্র খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ফলে ৫০ লাখ মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হন। এই দুর্ভিক্ষ কিভাবে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করেছিল তা-ই এই বইয়ে মূল বিষয় ।

গঙ্গাচরণ নামে এক শিক্ষিত ব্রাহ্মণ সস্ত্রীক নতুন গাঁয়ে এসে বসতি স্থাপন করে। নতুন গাঁ ব্রাহ্মণবিহীন, সেই সুযোগে ধূর্ত গঙ্গাচরণ সেখানকার প্রধান পুরোহিত হয়ে টোল খোলার পরিকল্পনা করতে থাকেন। সরল গ্রামবাসীরাও নিজেদের মধ্যে একজন ব্রাহ্মণকে পেয়ে খুশি হয়ে ওঠে। তাঁর স্ত্রী অনঙ্গ নিজের মধুর ও স্নেহশীলা স্বভাবের জন্য অচিরেই গ্রাম্যবধূদের ভালবাসা অর্জন করে।

এই সময় দুর্ভিক্ষ লাগলে গ্রামে খাদ্যের আকাল দেখা যায়। চতুর গঙ্গাচরণ নিজের জন্য কিছু চাল সংগ্রহ করে নেয়। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয় না। অনঙ্গ যখন কায়িক শ্রমের মাধ্যমে কিছু উপার্জনের কথা চিন্তা করতে শুরু করে, তখন অনিচ্ছা সত্ত্বেও গঙ্গাচরণকে সম্মতি দিতে হয়। অনঙ্গ অন্যান্য গ্রাম্যবধূদের সঙ্গে কাজ করতে যায়।

এই সময় যদু নামে এক পোড়ামুখ গ্রাম্যযুবক গ্রামের বউ ছুটকিকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে ছুটকি তাকে প্রত্যাখ্যান করে। অনঙ্গ তার সোনার বালার বদলে গঙ্গাচরণকে কিছু চাল নিয়ে আসতে বলে। গঙ্গাচরণ চলে গেলে, ছুটকি ও অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে অনঙ্গ আলু তুলতে যায় ঝোপে। কিন্তু কায়িক শ্রম অনঙ্গের ধাতে নেই। সে একটি ফুল দেখে আলু ফেলে সেই দিকে ছুটে যায়। এই সময় একটি লোক ছুটকিতে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে, আলু তোলার হাতা দিয়ে আঘাত করে ছুটকি তাকে খুন করে।


তার মধ্যে আর দুর্গা পন্ডিত নামের এক লোক তার পুরো পরিবার সহ এসে গঙ্গাচরনের বাড়িতে উঠে । তার মেয়ে আর তার নাতনী ময়না । ময়নার সুশ্রী মুখখানা দেখে গঙ্গাচরন না করতে পারেনা । তাদের সবার জায়গা হয় বাড়িতে । ওই দিকে অনঙ্গের একটি সন্তান হয় । অনঙ্গ দূর্বল হয়ে পরলেও কাউকে বাড়ি থেকে চলে যেতে দেয় না । কোন না কোন ভাবে সবার দিন চলতে থাকে ।

তবে শেষ রক্ষা হয় না । অনঙ্গ বউ যেই মতিকে এত ভালবাসত সেই মতি তার বাড়ির আমতলাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে । গঙ্গাচরন ও দুর্গা পন্ডিত দুজনে মিলে তার সৎকার করে । অপর দিকে ছুটকি সেই পোড়ামুখ লোকটির সাথে পালিয়ে যায় ক্ষুধা সহ্য করতে না পেরে ।

এমন এক পরিস্থিতি যেখানে টাকা হলেও মিলছে না চাল । সেই পরিস্থিতিতে মানুষের দিন যাপনের পুরো ছবিটাই তুলে এনেছেন বিভূতি বাবু । তিনি একদম সেই সময়ের গ্রামের পরিস্থিতির সুনিপুণ বর্ননা দিয়েছেন ।

বইটি পড়ার সময় আপনিও চলে যাবেন সেই মুহূর্ত গুলোতে । তখনকার সব ঘটনা গুলো মনে হবে আপনার সামনেই ঘটছে । আপনি চাচ্ছেন কিন্তু সাহায্য করতে পারছেন না । তবে না খেয়ে মরতে পারে তখন ই মানুষ বুঝেছিল ।

এই উপন্যাসটি নিয়ে একটি সিনেমা হয়েছে । যার পরিচালক হচ্ছে বিখ্যাত সত্যজিৎ রায় । এই সিনেমাতে আমাদের বাংলাদেশের ববিতা অভিনয় করেছেন । সিনেমাটি আন্তর্জাতিক ভাবে পুরস্কৃত হয়েছে ।

শেষ কথা, এই বইটি পড়তে বেশি হলে আপনার এক ঘন্টা লাগতে পারে কিন্তু এর গভীরতা বুঝতে একটু সময় নিয়ে বইটি পড়ুন ।

বইঃ অশনি সংকেত
লেখকঃ বিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংলার সমস্ত কষ্ট ও দু:খকে ধারণ করেছে বইটি; সামান্য খাবারের অভাবে বাংগালীদের প্রাণ দিতে হয়েছে লাখে লাখে, খুবই কম বুদ্ধিমান জাতি

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪১

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: এই বইটি পড়ার আগে শুধু জানতাম । উপলব্ধিটা কম ছিল । কিন্তু এই বই পড়ে উপলব্ধি বেড়ে গেল।

২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫২

জনৈক অচম ভুত বলেছেন: বইটি পড়ার ইচ্ছা পোষণ করছি।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৮

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: অসাধারন একটা বই । পড়তে পারেন ।

৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১০

করুণাধারা বলেছেন: রিভিউ ভাল লাগল। বইটা পড়িনি; কিন্তু সিনেমাটা অনেকবার দেখেছি। সত্যজিতের সিনেমা দেখার পর আর মূল বই পড়ার ইচ্ছে হয়নি।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৯

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: আমি সিনেমা দেখি বইও পড়ি । তবে সিনেমা দেখার আগে বই পড়াটাকে প্রাধান্য দেই।

৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:২১

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: আপনার প্রচুর পড়াশোনা আছে বলতে হয়।
ভাল লাগল লেখাটি।
আমার শুভেচ্ছা রেখে গেলাম।

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫০

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: প্রথমত ধন্যবাদ।

আর সাথে বলতে চাই পড়াশুনা একটু আধটু করি । শুভেচ্ছার জন্য আবারো ধন্যবাদ।

আশা করি বই মেলাতে দেখা হচ্ছে

৫| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৪

পার্থ তালুকদার বলেছেন: রিভিউ ভাল লাগলো । বইটি পড়া হ্য়নি :(

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫১

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: সংগ্রহ করে পড়ে ফেলুন

৬| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫২

প্রামানিক বলেছেন: সিনেমাটি দখার কারণে বই পড়া হয়নি। আজকেই পড়বো। ধন্যবাদ রিভিউ করার জন্য।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:০৭

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ ।

৭| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৭

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: খুব সুন্দর রিভিউ লিখেছেন । আসল গল্পটি পড়া হয়নি ঠিকই কিন্তু সিনেমাটি দেখে কেঁদে ফেলেছিলাম। যদিও পরে আর অনেক বার দেখা হয়েছে কিন্তু প্রথমবারের মতো সেই অনুভূতি আর আসেনি । আমার দেখা অসাধারণ একটি সিনেমা ' অশনি সংকেত' ।

শুভকামনা রইল প্রিয় অপু ভাইকে।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৪

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: আমি এখনো সিনেমাটি দেখিনি । তবে খুজছি আশা রাখি পেয়ে যাবো ।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.