নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে জানতে চাই,ছুটে চলেছি অজানার পথে,এ চলার শেষ নেই ।এক দিন ইকারাসের মত সূর্যের দিকে এগিয়ে যাব,ঝরা পাতার দিন শেষ হবে ,আর আমি নিঃশেষ হয়ে যাব ।

অপু দ্যা গ্রেট

গাহি সাম্যের গান- মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান, নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি, সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।

অপু দ্যা গ্রেট › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক ক্র্যাক হেড ছেলের জীবনঃ পপ গুরু আজম খান

০৫ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:১১



এক

একাত্তরের এপ্রিলের কোন এক দুপুরে এক ২১ বছরের তরুণ ভয়ে ভয়ে বাবার সামনে যেয়ে তুলল কথাটা
- যুদ্ধে যাচ্ছি
রাশভারী সরকারি অফিসার বাবার ততোধিক রাশভারী উত্তর
- যাবি যা, তবে দেশ স্বাধীন না করে ফিরবি না!

বাবাকে সালাম করে ২১ বছরের তারছিরা তরুণ পায়ে হেটে রওনা হল আগরতলা। এবার দেশ কে স্বাধীন করতে হবে। এযে বাবার আদেশ। তার আদেশ অমান্য করা যাবে না। সত্যি সত্যি লোকটি দেশ স্বাধানী হবার পরই বাড়ি ফিরেছিলেন।

দুই

১৯৭২ সাল। তখন লাকী আখন্দ ও হ্যাপী আখন্দ দুজনেই দেশব্যাপী সঙ্গীত জগতে অনেক আলোড়ন সৃষ্টি করেন। তাদের গান মানুষের মুখে মুখে। যেন তাদের হাত ধরেই নতুন বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতের বিস্তার ঘটছে।
তখন ই লোকটা আবার এল। বন্ধু নিলু আর মনসুরকে গিটার, সাদেক কে ড্রাম এবং নিজে প্রধান ভোকাল হিসেবে রইল। বিটিভির এক অনুষ্ঠানে গাইলেন দুটি গান
“ হে আল্লাহ, হে আল্লাহ রে
এতো সুন্দর দুনিয়ায়
কিছুই রবে না গো
হে আল্লাহ, হে আল্লাহ রে।”



“ চার কালেমা সাক্ষী দেবে”

এই গান দুটি এনে দিল তুমুল জনপ্রিয়তা। তবে তার যে গানটি তাকে জনপ্রিতার শীর্ষে এনে দিয়েছে সেটি হলো,

“ রেললাইনের ঐ বস্তিতে
জন্মেছিল একটি ছেলে
মা তার কাঁদে
ছেলেটি মরে গেছে।
হায়রে হায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ ”
এরপর থেকেই শুরু হলো এক নব জাগরন। ধীরে ধীরে পপ গানের শুরু হয়। বাংলাদেশের সঙ্গীতে যেন এক নতুন ধারা যুক্ত হয়ে যায়।

তিন

জন্ম ১৯৫০ সালে । বাবা সরকারী চাকরীজিবী হওয়াতে থাকতেন সরকারী কোয়ার্টারে। প্রথমে ঢাকেশ্বরী এবং পরে সিদ্ধেশ্বরী হাইস্কুলে লেখা পড়া করেন। ১৯৬৮ সালে এসএসসি পাস করেন। এর পরের বছর মানে ১৯৬৯ সালে গনঅভ্যুত্থানের সময় শাসক গোষ্ঠির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

তিনি তখন ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠির সক্রিয় সদস্য। তাদের হয় শাসকদের শোষনের বিরুদ্ধে গনসঙ্গীত প্রচার করেন। এরপর ১৯৭১ এ বাবার কাছে গিয়ে বলেন যুদ্ধে যাবে। বাবা তাকে দেশ স্বাধীন না করে যেন বাড়ি ফিরে আসেন সেটা বলে দেন। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর সত্যি দেশ স্বাধীন করে ফিরে আসেন। এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে।

চার

যে মানুষটির কথা বলিছি তিনি আর কেউ নন পপ গুরু আজম খান। তার পুরো নাম হচ্ছে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান। তবে তাকে সবাই পপ গুরু নামেই বেশি চেনে। তার গান গেয়ে অনেক ছোট বেলা কেটেছে। “ওরে সালেকা ওরে মালেকা’’ এই গান গেয়ে আমি অনেক লাফাতাম। এছাড়া “আলাল ও দুলাল” এটাও ছিল। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গীতে এক নতুন ধারা নিয়ে আসেন।

পাচ

আজম খানের ক্যান্সার ধরা পরে। তিনি হোটেল পূর্বানীতে যেই ব্যান্ড সঙ্গীত শুরু করেছিলেন। যা আজ আমাদের গর্ব। কিন্তু আমরা মানুষটাকে কতটুকু দিয়েছি। কতটা সম্মান দিয়েছি। ক্যান্সারের পর যখন টাকার অভাবে চিকিতসা অসম্পূর্ন রেখেই যিনি সিংগাপুর থেকে চলে এসেছেন।

যিনি কারো কাছে হাত পাতেননি। অভিমান করে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়টাও দেননি। তার মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে কত কিছুই হয়েছে। অথচ সে অসুস্থ থাকা অবস্থা তার খোজ কতজনই বা রেখেছে।

হ্যা, সেই মানুষটার আজ ২০১১ সালের ৫ জুন মানে আজকের এই দিনে পৃথিবী ছেড়ে আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন।

সেই চির তরুন ক্র্যাক হেডেড এক ছেলে যে গিটার হাতে বাংলাদেশ কে এক নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছিল।

সালাম তোমায় গুরু।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:১৬

বিজন রয় বলেছেন: অনেক দিন পর পোস্ট দিলেন।

পপগুরুকে মনে পড়ে।

০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০২

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: জ্বী দাদা

আসলে অফিসের ব্যস্ততা কমছে না। নিয়মিত হতে পারছি না । বাসা চেঞ্জ এরপর নেটের লাইন ও দিয়ে যায়নি ।

২| ০৫ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:২০

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: বেঁচে থাকতে এদেশে একজন সফল মানুষ তার যথার্থ মূল্যায়ন পান না।

০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০৩

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: এর কিছুটা দায় ভার আমাদের উপর ও আসে। আমরাই পারিনি ।

৩| ০৫ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১১:২৫

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন:
ওরে সালেকা ওরে মালেকা।
ও রে ফুলবানু পারলি না বাঁচাতে।;)


ভালো থেকো গুরু....

০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: এই গানে কত লাফিয়েছি তার হিসেব নেই ।

৪| ০৫ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:১৬

মোগল সম্রাট বলেছেন: চুপ চুপ চুপ অনামিনা চুপ, কথা বলোনা-
তুমি আমি এখানে কেউ জানেনা……………….আজম খান

০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০৫

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: এক বান্ধবী ছিল তাকে খেপাতাম ।

৫| ০৫ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৫

প্রামানিক বলেছেন: আগে মাঝে মাঝে পপ সম্রাট আজম খানের সাথে কমলাপুরে দেখা হতো। ছালাম দিলে হাসিমুখে জবাব দিত। সেই সব স্মৃতি মাঝেমাঝেই মনে পড়ে।

০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০৬

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: আপনি তাও সামনে থেকে তাকে দেখেছেন । আমার সৌভাগ্য হয়নি ।

৬| ০৫ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: পপ সম্রাট। আমা‌দের সঙ্গী‌তের অগ্রপ‌থিক।

০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০৮

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: তা তো বলাই যায় । যিনি যুদ্ধের ময়দানে গামলা দিয়ে সঙ্গীত এর চর্চা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃখ ভুলিয়েছেন। ৭১ যেমন সামনে ছিলেন তারপরেও তিনি এগিয়ে নিয়েছেন ।

৭| ০৫ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৪৯

নিয়াজ সুমন বলেছেন: ভাবতে অবাক লাগে আমরা এমন দেশে বসবাস করি যেখানে বেচেঁ থাকতে গুনিদের সম্মান দেওয়া হয়না, মারা যাওয়ার পর দরদী ব্যক্তিদের বাড়ে আনাগোনা।

০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১০

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: আসলে বেচে থাকতে আমরা কেউ তাদের খুজি না। কেন খুজি না সেটাই জানি না ।

৮| ০৫ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৫৬

হাসান রাজু বলেছেন: কখোনো কোথাও পাওয়া গেলে (ভিডিও) তার সাক্ষাতকার দেখবেন । একেবারে মাসুম সাক্ষাতকার। মনে হবে খোশ গল্প করছেন । তার স্মৃতিচারণ শুনলে মনে হবে এই চোখের সামনে সব দৃশ্যমান । আজো মনেপরে টিভিতে সাক্ষাতকার দেখেছিলাম আজিমপুরে তার প্রথম স্কুলে যাওয়ার ঘটনা স্কুলে যেতে যেতে ৩/৪ বার রাস্তায় আছাড় খেয়েছেন । নিজেই হাসছেন নিজেই বলে যাচ্ছেন । যতক্ষণ দেখেছিলাম ততক্ষণ হাসছিলাম । মনে হচ্ছিল আমি/আমরা/আমাদের গল্পই বলছেন ।

০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:১২

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: একদম সরল মনের মানুষ ছিলেন । তার সাক্ষাতকার দেখেছি । মনেই হয়নি তিনি পপ গানের গুরু । একদম সহজ সুন্দর আর নির্মল ।

৯| ০৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।

০৬ ই জুন, ২০১৮ সকাল ১০:১৩

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.