নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে জানতে চাই,ছুটে চলেছি অজানার পথে,এ চলার শেষ নেই ।এক দিন ইকারাসের মত সূর্যের দিকে এগিয়ে যাব,ঝরা পাতার দিন শেষ হবে ,আর আমি নিঃশেষ হয়ে যাব ।

অপু দ্যা গ্রেট

গাহি সাম্যের গান- মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান, নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি, সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।

অপু দ্যা গ্রেট › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয়তম দুঃখের সাথে যার সম্পর্ক গভীর তিনি গালিব - জান-এ-গালিব (বুক রিভিউ)

০৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩২



“করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে তুলে দিও
আঙুলের মিহিন সেলাই
ভুল বানানের লিখ প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তাও,
এটুকু সামান্য দাবি চিঠি দিও, তোমার শাড়ির মতো
অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি”
- মহাদেব সাহা


কবিতা ও মানুষের মাঝে মেল বন্ধন তৈরি করেন কবি। কবির লেখার প্রতিটি পংক্তি মানুষের মনের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেন। কবিতা, কবি ও কাব্যের এক অপূর্ব মেল বন্ধন রয়েছে। যেখানে একজন কে ছাড়া অপরজন অপূর্ন থেকে যান। কবিতার শক্তি সম্পর্কে বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে তার চেয়েও শক্তিশালী হচ্ছে কবি। তিনি তার ছন্দের ও লেখার মুর্ছনায় মানুষকে জাগিয়ে তোলেন, ভালবাসতে শেখান, প্রতিবাদী ও বিপ্লবী হতে বলেন আবার ঠিক হারিয়ে যেতে বলেন প্রকৃতির মাঝে।

কবির লেখা প্রতি শব্দ, ছন্দ ও কবিতা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী বাক্য হিসেবে বিবেচনা করা যায়। কবিতার শক্তি থাকলে ও মাঝে মাঝে কবি হারিয়ে যান। হারিয়ে যান অসীমের মাঝে। যেখানে শুধু শুন্যতা বিরাজ করে। তবুও কবির কলম থেমে থাকে না। তিনি লিখে যান, বলে যান জীবনের কথা, শেখান ভালবাসার বানী, বলেন মানুষের কথা। মানুষ কবিকে মনে না রাখলেও কবিতা চির সবুজ হয়ে থাকে, কবিতার মাঝেই কবি বেচে থাকেন।

শত বছর, যুগে যুগে কত কবি এসেছেন আরও হয়ত আসবেন, তবে একজন থেকে যাবেন সবার মাঝে অতুলনীয় ও অবস্মরনীয়। তিনি আর কেউ নন, মির্জা আসাদ্দুল্লাহ খা গালিব, যাকে আমরা মির্জা গালিব নামেই বেশি চিনে থাকি। বলা হয়ে থাকে তিনি ভারতবর্ষের মানুষের মাঝে প্রথম আধুনিক কবি।

"হেসে খেলে আমি প্রলয় ঢেউয়ের মাঝে চলি
জীবন সহজ, মসৃণ হবে কেন? সে তো কঠিনই ভালো.!"


আজকে যারা শের শায়েরি করে থাকেন অথবা গজল লিখেন তাদের মাঝে গালিবের অস্থিত্ব খুজে পাওয়া যায়। কারণ গালিব তার উক্তি, পংক্তি ও লেখা মাধ্যমে শত শত বছর বেচে রয়েছেন। তিনি যখন তার রচনা গুলো লিখেছেন সেই সময় তিনি অনেক দুঃখ কষ্টে জর্ড়িত ছিলেন। তবুও তার কলম থেমে থাকেনি। তিনি যেন সময়ের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন সব সময়।

তিনি যেন এসেছিলেন দেখেছিলেন এবং জয় করেছিলেন। গালিবের লেখায় যেমন ভালবাসা ছিল, তেমনি তিনি আবার প্রিয়ার বেদনার আর্তনাদ বর্ণনা করে গিয়েছেন, ঠিক মানুষের চোখে আঙুল দিয়ে সমাজের পরিস্থিতি বর্ণনা করে গিয়েছেন। মির্জা গালিব যেন এসেছিলেন উর্দু আর ফারসি কবিদের কবিতার পথ দেখাতে। তিনি উর্দু কবিতা নিয়ে গিয়েছেন এক অন্য উচ্চতায়।

মির্জা গালিব যেন নিজের সাথে নিজেই কথা বলতেন। তিনি নিজের সাথে নিজের প্রতিযোগীতা চালিয়েছেন। তিনি সৃষ্টি করেছেন অসাধারণ সব সৃষ্টি। তার সূত্র ধরে, ইনামউল্লা খা নাসির যিনি উর্দু ভাষার অন্যতম একজন সাহিত্যিক। তিনি লিখেছেন “জান-এ-গালিব”।

ইনামউল্লাহ খা নাসির গালিবের লেখা কবিতা পংক্তিকে ভেঙে দেখিয়েছেন গালিব কতটা গভীর ভাবে ভাবতে পারতেন। তিনি নিজের সাথেই নিজেকে যুদ্ধে অবতীর্ন করেছেন। ভেঙ্গেছেন গড়েছেন। মুলত এই বইটি গালিবের কবিতার ব্যাখ্যা করেছেন ইনামউল্লা খা নাসির, তিনি গালিব হয়ে এই ব্যাখ্যা ও চিঠি লিখেছন। যেন তিনি নিজেই সেখানে স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন।

"তার দেয়া দুঃখ দেখেছি বহুবার
কিন্তু এবারের এই যাতনা যেন অন্য রকম.!"


মির্জা গালিব দুঃখের মাঝে সুখ খুজে পেতেন। তিনি নিঃস্ব হয়েও যেন কোন রাজ্যের রাজা ছিলেন। যেখানে তার হুকুম ই সব কিছু। তিনি চাইলেই পারেন সব তবুও তিনি মনের যন্ত্রণাকে উপেক্ষা করতে পারেন না। ইনামউল্লা খা নাসির তার মধ্য দিয়ে এই কথা গুলোই বলে গিয়েছেন। তিনি গালিবের হয়ে শুধু মাত্র দেখিয়েছেন যে গালিব কতটা আবেগ নিয়ে লিখতেন। কতটা গভীর ভাবে তার উপলব্ধি ছিল। যেন তিনি ঠিক সময় কলম ধরেছেন।

আজ মির্জা গালিব নেই। তবে তার অমর সৃষ্টি গুলো রয়েছে। তিনি যুগে যুগে কবি, কবিতা ও মানুষের মাঝে বেচে থাকবেন। তার লেখা ও কবিতা কবিদের মাঝে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে সব সময়।

এই যে তার বিরহের কালে দেয়ালের দরজার দিকে তাকিয়ে থাকি
কখনো ভোরের হাওয়া কখনো যেন পত্রবাহককে দেখতে পাই.!


বইঃ জান-এ-গালিব
মুলঃ ইনামউল্লা খা নাসির
অনুবাদঃ জাভেদ হুসেন (Javed Hussen)
প্রকাশনীঃ ঐতিহ্য

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

শায়মা বলেছেন: মির্জা গালিবের লেখা যেন দুঃখবিলাসের মাঝে বসবাস। তবুও শিক্ষনীয় ও জীবনবোধের সুক্ষ বিশ্লেষন রয়েছে তাতে।

০৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১২:৪৬

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:


গালিব আসলে অন্যরকম একটা ব্যাপার। গালিব কে সহজে বোঝা যায় না।

২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০৩

দুচোখ জুড়ে ব্যাথ্যার শ্রাবণ বলেছেন: সমালোচনা করা যাবে লিখার? এডি কুনু রিভিউই হয়নি।

০৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১২:৪৬

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:


ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.