নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এক ভবঘুড়ে ঝড়ের কবলে সমুদ্র ছাড়িয়ে মহাপ্লাবনের অনিদ্রসীমায় সেদিন পৌঁছে গিয়েছিলাম সৃষ্টির বহু কাছে।

অভিশপ্ত জাহাজী

সুনামিতে ভারাক্রান্ত হৃদয়ের ঠাঁই মহাকলের সুইসাইড পিলেও খুঁজে পাইনি।

অভিশপ্ত জাহাজী › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন প্র্যাকটিসিং মুসলিম হিসেবে নপংসুক নিয়ে ভাবনা

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৩৫

ঢাকার প্রতিবেশি জেলাতে আমার বসবাস। আমি মোডারেট কিংবা ট্রাডিশনাল মুসলিম না। আবার অধার্মিকও না। শিরোনাম দেখে হয়ত বুঝে গেছেন কি নিয়ে আজ লিখব। শুরুতেই আমার প্রতিদিনকার জীবনের অভিজ্ঞতা আর ভাবনা শেয়ার করব তার পর কিছু ইসলামিক রেফারেন্স দিব নপংসুকদের নিয়ে।


হিজড়া কথন -১
প্রত্যেকদিন 'ক' জায়গার সামনে দিয়ে সন্ধ্যার পর বাড়ি ফেরা হয় আমার। সেখানেই প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকা মধ্যলিঙ্গের(জি ঠিক ধরেছেন,হিজরা) এক দেহবিক্রেতা কে চিনি আমি। দেখতে দেখতে চেনা আরকি। আমার পাশের এলাকাতেই থাকে। এই রকম অনেকেরই জীবন যাপন আমি ফলোও করার চেষ্টা করি।

এদেরকে কখনই সাধারন মানুষ মনে হয়নি আমার। কারন আমি নিযেই সাধারন মানুষ হওয়ার যোগ্যতাটুকু অর্জন করতে পারিনি। আমি অধম কারন আমি ধর্মের দোহাই দেই। ধর্মে সমলিঙ্গের কারো সাথে যৌনাচারে লিপ্ত হওয়াকে অত্যন্ত খারাপ কাজ হিসেবে সাবধান করা হয়েছে। আর আমি এক বেক্কেল মানুষ ভাবি যে, নপুংসক (হিজরা) কে বোধহয় আমার ধর্ম কোনো মানুষ হিসেবেই স্বীকৃতি দেয়না। আমি মূর্খ ভাবি যে, তাদের সাথে উঠা বসা চলাফেরা খাওয়া দাওয়া নিতান্তই খোদাকে রাগানোর কাজ। কি মূর্খই না আমি!!

একই ব্যাপারটা ঘটে কুকুরদের সাথে। কুকুর মারাত্মক সব রোগবালাই বহন করে বলেই আমার ধর্মে কুকুরের সংস্পর্শ থেকে সাবধান হয়ে থাকতে বলছে। আর আমি নির্বোধ ভাবি যে কুকুর দেখলেই যেন পেটানো হয়। কুকুর যেখানেই থাকুক তাকে যেন নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করা হৌক। এই রকম আরো বহু কিছুই নির্বোধ এই আমি ভাবি। একটু সেই নপুংসক এর কথায় আসি আবার। কিছু দিন যাবৎ তাকে আর দেখা যায়না সেইখানে। হয়তো স্পট বদল করেছে না হয় কোনো কালভার্ট এর নিচে খুন হয়ে হাটু গেড়ে শুয়ে আছে, অথবা নিষ্ঠুর পৃথিবীর মানুষদের জুলুমের স্বীকার হয়েছে। কার কি আসা যায় ভাই তাতে। আমি সাধারন মানুষ হওয়ার যোগ্যতা রাখিনা তাই তার কি হলো না হলো আমার *** ছেড়া যায় ভাই। এই "আমি" হচ্ছি নির্বোধ টাইপের মানুষ। এই ধরণের বহু বিশেষণে বিশেষিত করা যায় এই "আমি" দের।


হিজরা কথন -২

আমি খোদা ভিরুদের শ্রদ্ধা করি। গোড়ামী নিয়ে বসে আছে তাদের নিশ্চয় নয়। আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকে সামাজিক কীটের মত বন্দি করে রাখতে পারেন না। ছোট বেলা থেকে যা শুনে আসছেন, দেখে আসছেন, বুঝে আসছেন তার মাঝেও বিস্তর ভুল বসে আছে।





১। ইসলাম কি বলছে হিজরাদের নিয়ে?

উঃ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ হিজড়ারা জীনদের সন্তান। কোন এক বাক্তি আব্বাস (রাঃ) কে প্রশ্ন করেছিলেন এটা কেমন করে হতে পারে। জবাবে তিনি বলেছিলেন “আল্লাহ্ ও রাসুল (সাঃ) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর মাসিক স্রাব চলাকালে যৌন সংগম না করে”, সুতরাং কোন মহিলার সঙ্গে তার ঋতুস্রাব হলে শয়তান তার আগে থাকে এবং সেই শয়তান দারা ঐ মহিলা গর্ববতী হয় ও হিজড়া সন্তান প্রসব করে। (মানুষ ও জীন এর যৌথ মিলনজাত সন্তানকে ইসলাম এ বলা হয় “খুন্নাস”)।
প্রমানসুত্রঃ সূরা বানী ইস্রাইল- আর রাহমান -৫৪, ইবনে আবি হাতিম, হাকিম তিরমিজি।

২। বিজ্ঞান কি বলে হিজরাদের নিয়ে?

উঃ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায়ঃ
দেখা যায় XX প্যাটার্ন ডিম্বানুর সমন্বয়ে কন্যা শিশু আর XY প্যাটার্ন থেকে সৃষ্ট হয় ছেলে শিশু। ভ্রুনের পূর্ণতার স্তরগুলোতে ক্রোমোজোম প্যাটার্নের প্রভাবে ছেলে শিশুর মধ্যে অন্ডকোষ আর কন্যা শিশুর মধ্য ডিম্ব কোষ জন্ম নেয়। অন্ডকোষ থেকে নিসৃত হয় পুরুষ হরমোন এন্ড্রোজেন এবং ডিম্ব কোষ থেকে নিসৃত হয় এস্ট্রোজেন। এক্ষেত্রে ভ্রুনের বিকাশকালে নিষিক্তকরণ ও বিভাজনের ফলে বেশকিছু অস্বাভাবিক প্যাটার্নের সৃষ্টি হয় যেমন XXY অথবা XYY। এর ফলে বিভিন্ন গঠনের হিজড়া শিশুর জন্ম হয়।

একটা ব্যাপার হল, একটি হিজড়া শিশুকে পরিণত বয়সে যাওয়ার আগে যদি যথযথ মেডিকেল ট্রিটমেন্ট করা হয় তাহলে বেশীভাগ ক্ষেত্রেই তাকে সুস্থ করা সম্ভব। কিন্তু যখন বোঝা যায় সে সাধারণ আর দশজনের থেকে আলাদা তখন আসলে অনেক দেরী হয়ে যায়। একইভাবে কোন পুরুষ বা নারীও হিজড়া হতে পারেন।

৩। কেনো হিজরাদের চাঁদাবাজি, মারামারি কে আমি সমর্থন করবো অথবা সমর্থন করবো না ?

উঃ তাদের মত নিগৃহীত মানুষদের দুটা ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য আপনার দোকান, বাসা বাড়িতে চাঁদা বাজি করতেই হবে। কারন আপনি আমি তাদের কাজ দিচ্ছি না, বাসা ভাড়া দিচ্ছি না। নিযের পরিবার থেকে নিগৃহীত হতে হয় তাদের এই রকম শাররিক অক্ষমতার কারনে। এরা ভিক্ষা চাইলেও কেও দিবে না ভিক্ষা, বলবে "কাজ কর গিয়ে মা** ঝি।" আবার কাজ চাইতে গেলেও বলবে "হিঝারাগো আমি কাম দেই না।"

৪। তাদেরও কি সামাজিক অধিকার প্রাপ্য নয়?

উঃ আমাদের দেশে তারা কখনোই একজন মানুষের মর্যাদাতো দূরে থাক কুকুর বিড়ালের অধিকার পায় না। কিন্তু হিজড়াদের সামাজিক অধিকার প্রাপ্য কিনা সেটা সবার উপর ছেড়ে দিলাম। তবে একটা কথা বলি আমাদের দেশে হিজড়াদের ভোটার হওয়ার নিয়ম না থাকলেও ভারতে কিন্তু লোকসভার সদস্য হয়েছিলেন হিজড়া শবনম মৌসি।

৫। কি হতে পারে এর সমাধান?

উঃ
ক। সরকারি, আধা সরকারি এবং বেসরকারি সব ব্যাক্তিগত আর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে তাদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।
‎খ। তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
‎গ। ধর্মীয়ভাবে যত গোঁড়ামি আছে তাদের ব্যাপারে, সব কিছু খোলাসা করতে হবে আলেম সমাজ কে।
‎ঘ। তাদের শারীরিক অক্ষমতার কারনে সামাজিক এবং ব্যক্তিগত ভাবে কোনো হেনস্তা অথবা অপমানিত যাতে না হতে হয় তার আইন প্রনয়ন করতে হবে।

কিছু তথ্য অনলাইন থেকে সংগৃহীত। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আর তাদের জন্য সামাজিক মূল্যবোধ গড়ে তোলাই আমার উদ্দেশ্য ছিল।
আরো কিছু জানতে চাইলেঃ Click This Link


মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:২০

খায়রুল আহসান বলেছেন: সমাজের একটি উপেক্ষিত জনগোষ্ঠীকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন, এজন্য ধন্যবাদ।
আমাদের ছোটবেলায়ও ঢাকার কোন কোন এলাকায় হিজড়াদের দেখেছি। কিন্তু তখন তাদের আনুপাতিক সংখ্যাটা অনেক কম ছিল। এখন মনে হয়, অনেক বেড়ে গেছে। আর ওরা তখন অনেক নিরীহ ছিল, এখন অনেক জায়গায় সংঘবদ্ধ হয়ে যৌথ আক্রমণ চালায়, তাই কোথাও কোথাও জনরোষের শিকার হয়। আমাদের দেশে ওরা ইতোমধ্যে "তৃতীয় লিঙ্গ" হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৬

অভিশপ্ত জাহাজী বলেছেন:
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ খায়রুল আহসান ভাই।
এই সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীকে প্রথমদিকে কিছু সুবাধাবাদী মানুষ ব্যবহার করা শুরু করে। তাদের দিয়ে চাঁদা তুলে সেখানে ভাগ বসাতো। এখনতো অবস্থা ভিন্ন। একেবারে রাজনৈতিক ভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এখন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এরা নিজেদের চাঁদাবাজি, ঝগড়া-বিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। মূল কথা এদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে আমরা দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে পারছি না। সাধারণ মানুষ এদেরকে মানুষের কাতারেই ফেলে না। ছোট বেলা থেকেই আমাদের পরিচয় করানো হয় যে এরা খুব খারাপ একটা জাতি।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৯

নতুন বলেছেন: হিজড়া জন্মের সাথে পিরিওডের সময় সঙ্গমের কোন সম্পক` নাই।

এই সময়ে সঙ্গমের ফলে সন্তান জন্মের সম্ভবনা খুবই কম।

আর যদিও হয় তবে সেটা আর দশটা সন্তানের মতনই হবে।

আর XXY XXX YYX যাই হোক না কেন এই কারনে কেউ হিজড়া হয় না।

৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১৪

নতুন বলেছেন: Extra or Missing Chromosomes

https://genetics.thetech.org/ask-a-geneticist/transgender-intersex-sex-chromosomes

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৩৩

অভিশপ্ত জাহাজী বলেছেন: নতুন দা, আমার আসলে লিখার উদ্দেশ্য ছিল তাদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে অংশগ্রহন করা। তাদের ব্যাপারে বিজ্ঞান কি বলে সে কথা আমি নিজে লিখিনি। অনলাইনে অনেক জায়গায় পেয়েছি তার পর লিখেছি। তবে ব্যাপক পড়াশোনা নেই আমার ব্যাপারে। তাই আপনার মন্তব্যে দেওয়া লিংকের পক্ষে বা বিপক্ষে আপাতত কিছুই বলতে পারছি না।
যদি কখনো ব্যাপক পড়াশোনা করার সুযোগ হয় এই ব্যাপারে তাহলে লিখার চেষ্টা করব। আপনি সম্ভব হলে আরো গভীর ভাবে ব্যাখ্যা করে লিখতে পারেন।
তথ্য শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দাদা। ভালো থাকবেন।

৪| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:২৭

সোনালী ঈগল২৭৪ বলেছেন: তথ্যবহুল লিখা , বৈজ্ঞানিক ভাবে বিশ্লেষণ করলে হিজড়া একটি জেনেটিক ডিজঅর্ডার , এটি ক্লিনফেল্টার সিনড্রোম নাম পরিচিত

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫৯

অভিশপ্ত জাহাজী বলেছেন: এটাত তাদের জন্মের সময়ের কথা বললেন। তারপর আজকের এই হিজড়ারা চাঁদাবাজ,সন্ত্রাসী,যৌনকর্মী হয়ে উঠার পিছনে দায়ী কে ? আমরাই। আমাদের ঘৃণা ,অবহেলা , অনাদর ওদেরকে আজকের হিজড়া বানিয়ে তুলেছে।

৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫২

সোনালী ঈগল২৭৪ বলেছেন: সেটা ঠিক , আসলে হিজড়াদের অবহেলার শুরুটা প্রথম তাদের পরিবার থেকেই হয়

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:১৭

অভিশপ্ত জাহাজী বলেছেন: হ্যা দাদা ,প্রথমে পরিবার , তারপর সমাজ ,বন্ধুবান্ধব ,এমনকি গোটা দেশ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.