নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন দেশ প্রেমিক, এই দেশ এবং সাধারণ মানুষের কথা সবসময় ভাবিয়ে তুলছে আমাকে.. নিজের সম্পর্ক বলার মত আর কিছু নেই.।

কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ

আমি একজন দেশ প্রেমিক,

কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাকরি\'টা পাওয়ার পর অর্পা সাথে দূরত্ব যেন বেড়ে যাচ্ছে ....গল্প লিখক (তাইমুর মাহমুদ শমীক)

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৫

অর্পা চাকরিটা নেবার পর তার সাথে আমার মানসিক দুরত্বটা বেড়ে যাচ্ছে। ভালো একটা এনজিওতে কাজ পেয়েছে সে। বেতন যা পায় তা দিয়ে মাসে একবার মালয়েশিয়া ট্যুর দেয়া যাবে। আগে সিগারেট খেতে ইচ্ছা করলে আমার প্যাকেট থেকে দুটো চারটে নিয়ে নিজের কাছে রেখে দিতো। এখন একবারে এক প্যাকেট বেনসন কিনে ফেলে। প্রতিদিন দশটা করে দুদিনে প্যাকেট নামিয়ে দেয়।

অফিশিয়াল পারপাসে আজকাল তার প্রায়ই রাতে বাসায় ফিরতে দেরি হয়। ডিনারটা একা একা সারি। তখন আমার বিয়ের প্রথম দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। আমাকে মুখে তুলে খাইয়ে দিতো সে। তরকারিতে ঝাল বেশি হলে ঘন ঘন চুমু খেতো। কিসব যে তার পাগলামি! শারীরিক আদরের চেয়ে মানসিক আদরটা আমাদের মাঝে বেশি ছিলো।

পুরনো দিনের প্রায় সবকটা বাংলা সিনেমা ও আমার বুকে মাথা রেখে দেখে ফেলেছে।
ওর অফিসের বস সাবের সাহেবের প্রশংসা লোকজনের মুখে অনেক শুনেছি। ভদ্রলোক সুন্দরী মেয়ে পেলে ছাড়েনা। তার এই প্রতিভার সাথে ইংরেজ কবি বায়রনের তুলনা চলে। বায়রন নারীকে কনভিন্স করে আশ্চর্য দক্ষতায় বিছানায় নিতে পারতেন। আজ উনি বেঁচে থাকলে সাবের সাহেবের সাথে ভালো বন্ধুত্ব হতো।

দুজনে মিলে কবিতা বাদে অন্য অনেক রসালো বিষয়ে মেতে উঠতে পারতেন। অর্পাদের অফিসের পার্টিগুলোতে সামাজিকতা রক্ষার জন্য মদ খেতে হয়। অপ্রকৃ্তস্থ অবস্থায় সে যখন মাঝে মাঝে আমাকে ঠোঁট গোল করে হানি ডাকে, তখন মনে মনে একটা কথা বিড়বিড়িয়ে বলতে থাকি। আধুনিক জীবনে এটাই বোধহয় প্রগতিশীলতার নিয়ম।

অর্পা সন্তান ভালোবাসে। তবে মাতৃত্বের কষ্ট সে সহ্য করতে রাজি নয়। এতে তার শরীর নষ্ট হয়ে যাবে। পেটে ভাঁজ পড়বে। নতুন মায়েদের আবার শাড়ি পড়লে বিশ্রী দেখা যায়। ভ্রুণকে তিলে তিলে বড় করবার জন্য নিকোটিনের মিষ্টি নেশা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করতে তার বয়েই গেছে। তাছাড়া সাবের সাহেব অর্পাসহ আরো দুইজনকে নিয়ে অফিসের জরুরি কাজে সামনের মাসে জার্মানি যাবেন। প্রায়ই যান। এই একটা অফিসকে আমি জানি। যাদের অফিসে কোন সাধারণ কাজ হয়না, সবই জরুরি কাজ।

আমি অফিস থেকে ফিরে ধোয়া লুঙ্গি পড়ে বুদ্ধদেব বসুর রচনা নিয়ে বসি। মিউজিক প্লেয়ারে মৃদু শব্দে বাজতে থাকে ভুপেন হাজারিকার গান। ঠিক করেছি রাস্তাঘাট থেকে গরীব দশটা বাচ্চা ধরে এনে তাদের শিক্ষিত করে তুলবো। আব্বা গ্রামে বেশ কিছু জমিজমা রেখে গিয়েছিলেন। ওগুলো বেচে দিয়ে ব্যাংকে ক্যাশ টাকা রেখে দেবো ফিক্সড ডিপোজিট করে। নিজের বেতনের একটা অংশ আর ফিক্সড ডিপোজিট দিয়ে আমার দশটা সন্তান শিক্ষিত হবার চেয়ে মানুষ বেশি হয়ে উঠবে। তারা জানবে, প্রগতিশীলতার সবচেয়ে অর্থবোধক প্রতিশব্দ মানবতা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তারা জানবে, প্রগতিশীলতার সবচেয়ে অর্থবোধক প্রতিশব্দ মানবতা।

দারুন বলেছেন। ++++++++++++

২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: গল্পটা যেন পুরোপুরি শেষ হলো না। আরো কিছু কথা হয়তো কথকের বলার কথা ছিল।
শুভকামনা রইলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.