নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন দেশ প্রেমিক, এই দেশ এবং সাধারণ মানুষের কথা সবসময় ভাবিয়ে তুলছে আমাকে.. নিজের সম্পর্ক বলার মত আর কিছু নেই.।

কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ

আমি একজন দেশ প্রেমিক,

কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার নাম জামিল... লিখক :তাইমুর মাহমুদ শমীক

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৩৯

বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। ভালো ক্রিকেট খেলি। আড্ডা জমাতে পারি। বন্ধুদের নিয়ে মাঝে মাঝে গাঁজা খাই। গানের আসরে হেড়ে গলায় গান গেয়ে সবার মাথা ধরিয়ে দিতে ওস্তাদ। প্রচুর মিথ্যা বলি। আর একটা মেয়েকে ভালোবাসি।
মেয়েটার নাম তখনো জানিনা। প্রথম যেদিন তাকে দেখি, আমার মন খারাপ হয়ে যায়। একটা মেয়ে এতো সুন্দর হবে কেন! এতো সুন্দর হবার তো কোন দরকার নাই। সে চলনসই সুন্দর হয়ে বাকি দশটা মেয়ের মাঝে তার উপচে পড়া রূপ বিলিয়ে দিতে পারতো। আমি দুষ্টু হলেও নারী বিষয়ে বেশ ভীরু। অপরিচিত হুরপরীর সাথে আগ বাড়িয়ে কথা বলতে লজ্জা লাগছিলো। তবু কি মনে করে সামনে আগিয়ে যাই।
এই যে, আপনি ভালো আছেন?
-কে আপনি? কি সমস্যা? চেনেন আমাকে?
আমি গতরাতে আপনাকে স্বপ্নে দেখেছি। সেই অর্থে চিনি। সামাজিক অর্থে আমি অনাহুত আগন্তুক।
-গাঁজা খেয়ে এসছেন? আমার ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে আমাকে বিরক্ত করার সাহস আপনার হলো কি করে!
চা খান। চা খাওয়াচ্ছি আপনাকে। চা খেয়ে মাথা ঠান্ডা করুন। আমি তো রাস্তার কুকুর নই। আমি মানুষ। প্রতিটা মানুষের অন্য একটা মানুষের সাথে কথা বলবার অধিকার আছে।

-তোর অধিকার ছোটাচ্ছি আমি। শাল বদ। এই সিদ্দিক, সালেক এদিকে আয় তো!
আমি তার চাঁদমুখো বন্ধুদের সাথে হোক কলরব ভেজালে যেতে চাচ্ছিলাম না। সরল হাসিতে তার কাছ থেকে প্রহসনের বিদায় নিয়ে ব্যস্ত রাস্তায় পা রাখি। বাসায় আম্মা খুব অসুস্থ। আমি একমাত্র ছেলে। আব্বা গত হয়েছেন বছর তিনেক হলো। মায়ার টানে ঘরের দিকে পা বাড়াই। টিউশনির টাকায় কিনি আঙ্গুর নামের পঞ্চাশ গ্রাম বিলাসিতা। আম্মার খাটের পাশে বসে ঘন্টাখানেক গুটুরমুটুর গল্প করি। তিনি কি মনে করে আমার কপালে চুমুর আশীর্বাদ রাখে। মন ভালো হয়ে যায়।

গবেষণায় বের হয়েছে মেয়ের নাম আশা। এদিকে আমার জীবন হয়েছে আশাময়। যেদিকে তাকাই কেবল আঙ্গুরলতাকে দেখি। এই বয়সে এসে দুম করে অমন টিনএজ ভালোবাসার মায়াজালে জড়াবো কে জানতো! পল্লব নামের এক বন্ধু বুদ্ধি দিলো, তুই তো ভালো গল্প লিখিস। এক কাজ কর, ভাবিকে মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখে একটা চিঠি দে। সে বুঝবে। মার খেলে খাবি। ভালোবেসে জীবন দেয়া যায়!

আমি বাসায় ফেরার সময় একটা সুদর্শন লাল রঙের ম্যাটাডর কলম আর এ ফোর সাইজের কাগজ কিনে নিয়ে যাই। সে রাতে ঘুমাইনি। আম্মা মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে দেখে ছেলে তার গভীর মনযোগে বিদ্যাসাগর হবার পথে। আমি লজ্জা পেয়ে আরো বেশি প্রেমপত্রে মনোনিবেশ করি। সকালবেলা স্নানবিহীন অবস্থায় শাহবাগ থেকে কাঁটাছাড়া গোলাপ কিনি। চিঠিটা তখন নীলখামের ভেতরে স্মিতহাসি ঠোঁটে ধরে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে আমার শার্টের পকেটে।

আশার সাথে তার বন্ধু বান্ধবীরা ছিলো। তারা এমনভাবে আমার দিকে তাকায় যেন অন্য পাড়ার বেওয়ারিশ কুকুর এ পাড়ায় চা দিয়ে বনরুটি খেতে এসেছে। আমি আমার বন্ধুদের মাঝে নেতাগোছের প্রিয়মানুষ। আশার কিছু বন্ধুর অযাচিত অমানবিক আচরণ বেশিক্ষণ সহ্য করতে পারিনি। ছয় সাতজনের সাথে একটা সময় আর সুবিধা করতে না পেরে একতরফা মার খাই। আশার জন্য কেনা গোলাপফুলগুলো তখন তাদের কয়েকজনের পায়ের নিচে।

আসলে আমার মতো কাকমুখো একটা ছেলে আশার মতো একজন এশিয়ান গডেসের হাতে কাগজের ভালোবাসা ধরিয়ে দেবার সময় বিপত্তিটা বাঁধে। মার খাবার সময় মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থায় আড়চোখে দেখি আশা মিষ্টি হাসিতে আমার চিঠিটা তখনো হাতে ধরে রেখেছে। ছেঁড়া শার্টে প্রতিবাদ, ভালোবাসা, বিশুদ্ধতা লেপ্টে ছিলো। আমি ধুলা ঝেড়ে উঠে দাঁড়াই।

সেদিন বিকেলে আমার বন্ধুরা ক্রিকেট খেলার দুই সেট স্ট্যাম্প নিয়ে রেডি। এতোদিন তারা এই নিয়ে খেলাধুলা করেছে। আজ তারা সেগুলো বেরসিক উগ্রবাদীদের মাথায় ভাঙবে। আমি তাদের বোঝাই, গুন্ডামি করে না; ভালোবেসে আশার মন জয় করবো। তারা আমাকে হিজড়া বলে। আমি বলি, আপত্তি নেই। আমি এক সমাজে মিলেমিশে তাদের সাথে বাস করতে পারবো। বন্ধুরা আমাকে শালা সাইকো, আঁতেল বলে বিদায় নেয়।

রাতে আম্মা জিজ্ঞেস করলো, বৌমার নাম কি? আমি বিস্ময়ে, লজ্জায় হাত থেকে পানি খাবার গ্লাস ফেলে দিই। পরে বুঝি, মায়ের মন তো। তার চেয়ে বেশি ছেলের ভেতরের খবর আর কে রাখে। নীল পাঞ্জাবী আমার ভীষণ প্রিয়। আম্মাকে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে সেটা ইস্ত্রি করতে বসি। পরদিন সকালে মারধোর খেতে যাই আশার কাছে। আশা একটা ছেলের হাত ধরে অন্যরকমভাবে বসে আছে। মুক্ত পৃথিবীর মুক্ত ভালোবাসার থিওরিতে আশা ছেলেটার গালে চুমু খেয়ে সযত্নে আমার কলিজাটা আগাগোড়া ধারালু চাকু দিয়ে কেটে নেয়।
মানুষ বড় অমানবিক। ভেতরের সবটুকু ভালোবাসা নিয়ে লেখা সেই চিঠিটার করুণ পরিণতি দেখি। রাস্তার ধারে আমার বউকাগজের প্রেমকে ফেলে দিয়ে হালকা হলদেটে জল প্যান্টের চেইন খুলে বিসর্জন করে ছেলেটা। আমি চেয়ে চেয়ে দেখতে থাকি। জীবনের অর্থ বোঝার চেষ্টা করি। আশা তখনো আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি মিষ্টি করে হাসছে। আম্মা তার বৌমার নাম জিজ্ঞেস করেছিলো। মনে পড়তেই আমি অন্যদিকে তাকিয়ে চোখের অনিয়ন্ত্রিত আবেগ নিয়ন্ত্রণ করি। কাগজের ওপর জমে থ

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৫৭

বিজন রয় বলেছেন: বাহ!
++

২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪০

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সুন্দর লেখনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.