নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনেক হয়েছে, আর না

পাকাচুল

অনেক হয়েছে, আর না

পাকাচুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাকুরীর ইন্টারভিউ- আমার অভিজ্ঞতা

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৫




প্রায় বছর দশেক আগেকার কথা। দুইবছর সেশন জ্যাম ঠেলে কোন রকম বিশ্ববিদ্যালয় লাইফ শেষ করেছি, উদ্দেশ্য একটা চাকুরী। এদিক ওদিক শুধু চাকুরীর জন্য সিভি দিয়ে গেলাম। তৎকালীন বিডিজবস, পত্রিকার পাতা কাটাকুটি চলছে। গণহারে সব চাকুরীতে এপ্লাই করা শুরু করলাম।

প্রথম ইন্টারভিউ ডাক পেলাম গুলশানের একটা মার্কেটিং কোম্পানী থেকে যতটুকু মনে পড়ে "মার্কেট এক্সেস"।যদিও এটা আমার সাবজেক্ট রিলেটেড না, কিন্তু আমি চেয়েছিলাম চাকুরীর ইন্টারভিউর অভিজ্ঞতা নিতে। অভিজ্ঞতাটাও খারাপ হল না। সকালে গেলাম, দেখি প্রায় ৩০-৪০ জন হাজির, তারা সবাই ইন্টারভিউ দিতে এসেছে।একে একে ৫-১০ মিনিট করে ইন্টারভিউ দিচ্ছে। তারপর কেউ চলে যাচ্ছে না। পরে বুঝলাম, সবাইকে থাকতে বলা হয়েছে। তারা দুপুরে অফিসের ক্যান্টিনে খাওয়ার ব্যবস্থা করল। কিন্তু প্রথম দিনে সবার ইন্টারভিউ শেষ করতে পারলো না, তাই ২য় দিন আবার সবাইকে যেতে বলল। এরপর বলা হলো, দুপুরে ২ ঘন্টার ট্রেনিং, লাঞ্চ। তারপর বিকালের দিকে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হলো। আমাকে একটা পোস্টে সিলেক্ট করা হলো, কিন্তু সেটা আমার পছন্দ হলো না। আসলে ট্র‌াক ভিন্ন ছিল, তাই চাকুরীতে জয়েন করা হয় নাই।

আরেকটা চাকুরীর ইন্টারভিউর কথা মনে পড়ছে, এটা একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানী যাদের পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবসা আছে, যারা ৩-৫ বছরের অভিজ্ঞতা চেয়েছিল। তারপরও আমাকে ডেকেছিল। সকাল ১০টার সময় সবাইকে ডেকেছে। যাওয়ার পর এক কাপ চা দিয়েছিল। ১২টা বাজে ইন্টারভিউতে লাঞ্চ ব্রেক। অফিসের সবাই লাঞ্চ করবে। পরের সেশন শুরু হবে দুপুর আড়াইটা বাজে। এইবার বাইরে হাটাহাটি, বনানীর মত এলাকাতে একজন বেকারের পক্ষে দুপুরে লাঞ্চ করারটা কষ্টকর। দুইঘন্টা রোদে বাইরে হাটাহাটি করে আবার হাজির ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য। আমাকে ডাকা হলো বিকাল চারটার দিকে। তাদের সময়জ্ঞান নিয়ে আমার সন্দেহ হচ্ছিলো। সবাইকে একই টাইমে ডাকার কোন মানে ছিল না। গেলাম ইন্টারভিউ রুমে, তারপর নানা প্রশ্ন। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ছিলো, আপনাকে আমরা কেন রিক্রুট করবো, সেটা জানান।ঐ বয়সে এইসব প্রশ্নের উত্তর জানানো কঠিন ছিল। আমরা ও এক্সপেরিয়েন্স কাউকে চেয়েছিলাম, আপনার তো কোন অভিজ্ঞতা নাই। পরে দেখলাম, আমাদের পরিচিত এক বন্ধু (সে নিজেও ফ্রেশ) ঐ চাকুরীতে জয়েন করেছে।

এরপর একটা চাকুরীর রিটেন টেস্ট দিলাম রূপচাঁদা সয়াবিন তেল এ। এটা একটা সিঙ্গাপুরী কোম্পানী। তারা ডেকেছিল মাত্র ১৫-২০ জনকে। সবার আগে রিটেন টেস্ট নিলো, আইকিউ, জেনারেল নলেজ, এনালাইটিক্যাল সলভিং এই টাইপের প্রশ্ন। ২ দিন পর আবার ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকলো। মাত্র ৫ জন এইবার। আমাকে নিয়ে বসলো ২ বিদেশী, নানা প্রশ্ন, ফ্যাক্টরীতে গোলমাল হলে কিভাবে সামলাবো? লেবারদের হ্যান্ডেল করবো কিভাবে? ব্ল্যা ব্ল্যা ব্ল্যা। প্রায় ২০ -২৫ মিনিট পর তারা বললো, রিটেন টেস্টে এ আমার স্কোর ৫০ এ ৪৮, কিন্তু আমার লেবার হ্যান্ডেলিং এর কোন অভিজ্ঞতা নাই। তারা এক্সপেরিয়েন্স কাউকে চাচ্ছে। তারা তেমন কাউকে না পেলে তবেই আমাকে ডাকবে। পরে আর ডাক পাই নাই।

এরমাঝে একবার চট্টগ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলাম, কাকতালীয়ভাবে তার একদিন পর চট্টগ্রামের এক কোম্পানী থেকে ইন্টারভিউ এর জন্য ফোন দিল। তাড়াহুড়ো করে গেলাম ইন্টারভিউ দিতে। আমাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, আপনি কোন পোস্টে এপ্লাই করেছিলাম।আমি কিছুই বলতে পারলাম না। পুরোই বেইজ্জতি। কোন পোস্টে এপ্লাই করেছিলাম, সেটাও মনে নাই।

এরপর গেলাম একটা শিপইয়ার্ডের ইন্টারভিউ দিতে। তারা তেমন কিছু জিজ্ঞাসা করলো না, শুধু বললো, জাহাজের খোলের ভিতর কাজ করতে পারবে? আমি বললাম, বুঝতে পারছি না। পরে তারা শিপইয়ার্ডের ঠিকানা দিলো, নারায়ণগঞ্জে। বললো, আগে নিজে গিয়ে দেখে আসো, যদি পছন্দ হয়, তবে পরের দিন থেকে জয়েন করতে পারো। কিন্তু সেখানে কাজের পরিবেশ পছন্দ হয় নাই। (যদিও আমি তেমন নাক উঁচা না।)

বায়োম্যাডিকেল ইকুইপমেন্ট এর বিজনেস করে এমন একটা অফিসে গেলাম ইন্টারভিউ দিতে। ইন্টারভিউ শুরু করার আগেই রিসিপসনে বসে একজন জিজ্ঞাসা করলো, ৫ বছরের বন্ড দিতে রাজী আছি কিনা। জানতে চাইলাম, কোন ধরণের বন্ড? বললো, সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। যদি রাজী না থাকেন, তবে ইন্টারভিউ হবে না। ইন্টারভিউ না দিয়ে চলে আসলাম।

আরো কয়েকটা চাকুরীর ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম, বেশিরভাগই ফ্যাক্টরী বেজড, ময়মনসিংহ কিংবা গাজীপুর এলাকাতে।সপ্তাহে সাতদিনই ফ্যাক্টরীতে থাকা লাগবে, তাই আর জয়েন করা হয় নাই। কেন জানি বন্দি মনে হত।

তারপর ইন্টারভিউ দিলাম একটা জেনারেটর কোম্পনাীতে, ধানমন্ডীতে। তারা তেমন কিছু জানতে চাইলো না, স্যালারী খুবই কম। আমি তখন ২ টিউশনী করে যত পেতাম, তার থেকে ১ হাজার টাকা বেশি মাত্র। তারপরও এটাতে জয়েন করলাম, জাস্ট একটা স্ট্যাটাস দরকার ছিল। পাস করে ৩ মাস বেকার, এটা ভালো লাগছিল না।

প্রথম চাকুরীতে ঢুকার পর ইপিজেড এর একটা বিদেশী কোম্পানীতে ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। স্যালারী প্রথম চাকুরীর ৩ গুণ। কিন্তু চাকুরীটা করা হলো না। সপ্তাহে ৬ দিন। সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অফিস। প্রথম তিনমাস কোন ট্রান্সপোর্ট দিবে না। তখন আমি এক আত্মীয়ের বাসায় ছিলাম, গোড়ান এলাকাতে। এত দূর থেকে কোনভাবেই এই অফিস মেইনটেইন করা সম্ভব ছিল না।

এর পর গুলশানের এক অফিসে গেলাম, বিকালের ইন্টারভিউ ছিল। আমি প্রায় ৩০ মিনিট লেট। কিন্তু পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পেরেছিলাম, ইন্টারভিউ শেষ হয় নাই। একেকজনকে প্রায় ৩০ মিনিট করে প্রশ্ন করছে। আমি ছিলাম শেষ জন। সন্ধ্যা প্রায়, তাই আমার ইন্টারভিউ হলো ৪-৫ মিনিট। বোর্ডের ৩ জনের একজন প্রশ্ন করলো, ৩ বছরের বন্ড দিতে পারবে? আমি বললাম, পারবো। আরেক জন জানতে চাইলো, অনেস্টলি বলো, বিদেশের কোন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির জন্য এপ্লাই করেছো? বললাম, না। ব্যাস, ইন্টারভিউ শেষ।

অতঃপর ঐ অফিস থেকে চাকুরীর লেটার পেলাম সপ্তাহ খানেক পর। চাকুরীতে ঢুকার ৩ মাস পর একটা বিদেশ ট্যুরের বিনিময়ে ১ লাখ টাকার বন্ড দিতে হয়েছিল কিংবা ৩ বছর চাকুরীর নিশ্চয়তা, যার কোনটাই দেড়বছর পর আর করা হয় নাই।

তারমাঝে কয়েকটা সরকারী চাকুরীর জন্য দরখাস্ত দিয়েছিলাম। তেজগাঁও তে তাদের বিশাল বড় অফিস, যারা টেস্টিং এর কাজ করে (অফিসের নাম বললাম না)। পোস্ট ছিল ইনেসপেক্টর/ পরিদর্শক। রিটেন টেস্ট হলো, রিটেন এ টিকলাম। এর পর ভাইভা। ভাইভাতে গেলাম। সর্বমোট ৫ জনকে ডাকা হলো ভাইভাতে। সবার ভাইভা শেষে তারা ৫জনকে আবার একসাথে ডাকলো। সরাসরি ফল ঘোষণা করবে। তারপর সবার সামনে ১-২-৩ পজিশন ঘোষণা করলো। ততদিনে আমি প্রাইভেট চাকুরী করি। স্যালারীও মন্দ ছিল না। ইন্টারভিউ বোর্ডের মেম্বাররা তাই হয়ত বলছিলো, যে প্রথম হয়েছে, সে হয়ত নাও জয়েন করতে পারে, কারণ সে এখন ভালো একটা চাকুরী করছে। তাই ২য় পজিশনের ক্যান্ডিডেটকে মানসিক প্রস্তুতি নিতে বললো। সরকারী অফিসের চাকুরীর অফার লেটার হাতে পেয়ে দেখি ওটা ২য় শ্রেণীর একটা চাকুরী।

তখন (২০০৭) প্রাইভেট চাকুরীতে প্রায় ৩০,০০০ এর কাছাকাছি পেতাম। অনেক চিন্তাভাবনা করেও সাকুল্যে ১০,০০০ টাকা বেতনের চাকুরীটাতে জয়েন করি নাই। হঠাৎ এই স্যালারী পরিবর্তন হয়ত মানিয়ে নিতে পারবো না, সামনে বিয়ের চিন্তাও ছিল। যদিও নানা জন আমাকে নানা ভাবে প্ররোচিত করছিল। ঐ চাকুরীতে ঢুকলে মাসে নিদেন পক্ষে ১ লাখ ইনকাম করা যাবে। আমি আসলে কোন উপরি আয়ের পক্ষপাতি ছিলাম না।

* প্রথম জীবনে একটা স্টেবল চাকুরী জোগাড় করতে আমাকে প্রায় ১০০+ সিভি দিতে হয়েছিলো। ইন্টারভিউ দিয়ছিলাম প্রায় ২১টা। সবগুলোর সব ঘটনা মনে নাই। কিছু কিছু অফিসের নাম হয়ত মনে আছে, নাভানা, রহিম আফরোজ, বিওসি, ওয়ার্টসিলা,সিমেক্স ......

** আমার কোন মামা, চাচা, খালু ছিলো না রেফারেন্স দেওয়ার জন্য।

*** সরকারী চাকুরীটা হয়েছিল ফখরুদ্দীন এর কেয়ারটেকার আমলে। খুব তাড়াতাড়ি রিক্রুটমেন্ট হয়েছিল। কোন লবিং ছাড়া (বিশ্বাস করুন আর নাই করুন।) বাকী ৮-১০টা চাকুরীর মত আমি জাস্ট রিটেন টেস্ট আর ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম

**** একটা ধারণা হয়ে গিয়েছিল, লবিং ছাড়া সরকারী চাকুরী হয় না, তাই সরকারী চাকুরীর জন্য তেমন চেষ্টা করি নাই।

***** একই কারণে বিসিএস দেওয়ার জন্য চেষ্টা করা হয় নাই।


যারা এখন চাকুরী খুজছেন, তাদের প্রতি

* নিজের উপর আস্থা রাখুন, নিজের ক্যাপাবেলিটি সম্পর্কে জেনে নিন।
** ইন্টারভিউ স্কিল বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন অনলাইন টিউটোরিয়াল দেখতে পারেন

অনুপ্রেরণা- রাতুল শাহ

somewhereinblog এর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ব্লগ দিবসে। ব্লগ না থাকলে হয়ত আমার টুকরো ঘটনাগুলো ডায়েরী আকারে লিখা হতো না।

মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪৬

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: :)

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪৭

পাকাচুল বলেছেন: এত খুশি কেন?

২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫৯

লর্ড অফ দ্য ফ্লাইস বলেছেন: আমার প্রথম ইন্টার্ভিউ ছিল তেজগাঁও এক দেশি কোম্পানিতে। আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, বিবিএর ছাত্রদের প্রথম পছন্দ হচ্ছে ব্যাংক আমি কেন এই বোরিং একাউন্টেন্টের চাকরি করতে চাচ্ছি। বলেছিলাম, সুদের কারবার পছন্দ না। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই চাকরি দুমাস করে এক বছর বেকার থাকার পর এখন ব্যাংকেই চাকরি করি =p~

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:১০

পাকাচুল বলেছেন: প্রথম চাকুরীতে ঢুকার আগে অনেক ইগো কাজ করে। ২-১টা চাকুরী করার পর সবার মাজা ভেঙ্গে একদম সাইজ হয়ে যায়।

ব্যাংক ও আমার পছন্দে লিস্টে ছিল, কিন্তু এপ্লাই করা হয় নাই। হয়ত আর কিছুদিন পরে করতাম।

৩| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫৯

প্রামানিক বলেছেন: আপনার মত অনেকের জীবনেই এরকম অভিজ্ঞতা আছে।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:০৮

পাকাচুল বলেছেন: তাতো অবশ্যই, খুব মানুষই প্রথম ইন্টারভিউ দিয়ে চাকুরী পেয়েছে।

৪| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৯

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আপনি হয়তো ব্যতিক্রম। কিন্তু লবিং ছাড়া বিসিএস ছাড়া সরকারী চাকুরি পাওয়া আসলেই কঠিন...

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬

পাকাচুল বলেছেন: আসলে আমি ব্যতিক্রম না, সময়টা ছিল ব্যতিক্রম। কেউ লবিং এর সাহস দেখায় নাই। কেয়ারটেকার এর সময়।

৫| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৮

রাতুল_শাহ বলেছেন: আমি ৮০-৯০টিতে আবেদন করেছিলাম।
ডাক পেয়েছিলাম ৭-৮টিতে।
প্রথম ভাইভা ছিলো চট্টগ্রামে এক কানাডিয়ান কোম্পানিতে। ঐ সময়টাতে টানা হরতাল চলছে। তারপরও সাহস নিয়ে গেলাম। ইন্টারনেটে ইংরেজীতে সকল ধরনের ভাইভা মুখস্থ করলাম। নিজের সম্পর্কে যেসব বলবো সেটা ভালভাবে ইংরেজীতে মুখস্থ করলাম। ১ম দিন ভাইভা হয় নি। ২য় দিন ভাইভা নিয়েছে, তাও আবার বিকেল ৩টায়। ভাইভাতে যেসব মুখস্থ করলাম, একটাও কমন পড়েনি।
আমার বাবা কি করে, মা কি করে, ভাই কি করে এইসব জিজ্ঞাসা করলো। আবার পরের দিন ভাইভার জন্য ডাকলো।পরের দিন জিইসির মোড়ে গাড়ি পুড়ানো দেখে আর ভাইভা দিতে যাই নি।

তারপরের ভাইভা কেএসআরএম এ মেটালারজির উপর প্রশ্ন করে।সকল প্রকার সংগা, কম্পজিশন। একটার সঙ্গা আরেকটার সাথে মিশে যায়। যেমন হার্ডনেসের সঙ্গা টাফনেসের সাথে মিশে যায়। তারপর ব্রাসে, স্টিলে কত % কি থাকে জানতে উল্টাপাল্টা উত্তর দিই। প্রায় ২০ মিনিট ভাইভা দিয়েছিলাম।

তারপর কেপিসিএল ঐ একই প্রশ্ন ব্রাসে কত % কার্বন থাকে? পারি নাই। বন্ডের কথা বলেছিলো, রাজি হয় নি।
তারপর প্রাণে চাকুরী হয়েছিলো, কিন্তু বন্ধুদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা শুনে আর জয়েন করে নি।

তারপর এক বয়লার কোম্পানিতে ভাইভা দিতে গিয়েছিলাম। একটা পোস্টের জন্য কমপক্ষে ৩০০জনের উপরে।
আমাকে প্রশ্ন করে ১ ইঞ্চি= কত সে.মি?
আমার বন্ধুকে ১ সে.মি= কত ইঞ্চি?
এই টাইপের একটা করে প্রশ্ন সবাইকে।

তারপর এক ভারতীয় কোম্পানিতে ভাইভা দিতে গিয়েছিলাম। মার্কেটিং এ। কিন্তু আমি ভাইভার আগেও জানতাম না আমি কোন পোস্টের জন্য ভাইভা দিতে যাচ্ছি। আমার মার্কেটিং সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না। ভাইভা হিন্দি আর ইংরেজীতে ছিলো। ডিপার্টমেন্টাল কোন প্রশ্ন করে নি। সকল প্রশ্ন মার্কেটিং এর উপরে।

তারপর যেখানে জব হয় সেখানে ভাইভা প্রচন্ড রকমের খারাপ। কারণ ১ বছর পর কোন ভাইভার ডাক পেলাম। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। মনে কোন আত্নবিশ্বাস ছিলো না। ডিপার্টমেন্টের উত্তর দিয়েছিলাম ভালো। কিন্তু উপস্থিত বুদ্ধির কিছু প্রশ্ন করেছিলো ঐ গুলো ঠিকভাবে বলতে পারেনি।

যেমন একটা প্রশ্ন- ধর তোমাকে কাজের তাগিদে রাজশাহী থেকে ঢাকা আসতে হবে। কিন্তু সারাদেশে হরতাল চলছে। রাস্তায় গাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তোমাকে যেভাবেই হোক ঢাকা আসতে হবে। তুমি কি করবে?
উত্তর দিতে পারি নি।
এখন আর ইন্টারভিউ নিয়ে তেমন কোন টেনশন কাজ করে না।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪১

পাকাচুল বলেছেন: আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিও বিশাল বড়। তবে আমার কাছে যেটা মনে হয়, চাকুরীদাতারা বিভিন্ন ক্রিটিক্যাল সিচুয়েশন আপনি কিভাবে হ্যান্ডেল করতে পারবেন, সেটার উপর বেশি গুরুত্ব দেয়, যে কারণে মাঝে মাঝে আজব আজব প্রশ্ন করে। যদিও আজব প্রশ্ন নয়।

* রাজশাহী থেকে ঢাকায় আপনি বিমানে আসতে পারতেন।

**প্রাণে কি রকম অভিজ্ঞতা আপনার বন্ধুদের?

*** ভাইভার জন্য আমি কখনো কিছু পড়ে যেতাম না। এইসব পড়ে আসলে খুব একটা লাভ হয় না। কেউ যদি আপনাকে নিতে চায়, তবে গৎবাঁধা প্রশ্ন কখনো করবে না।

**** ইপিজেড এর এক গার্মেন্টেস এর মেইন্টেন্সে এর ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে ছিলাম, এক ইন্ডিয়ান ইন্টারভিউ নিচ্ছিলো। সে শুধু জানতে চাইলো, আইসি ইন্জিন কিভাবে কাজ করে, ৪ টা স্ট্রোকের এক্সপ্লানেশন। ব্যস, ইন্টারভিউ শেষ এবং চাকুরীর অফার। মনে হয়েছিলো, একটা ভাত টিপে হাড়ির ভাত রান্না হয়েছে কিনা চেক করার মত।

৬| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:০১

জগতারন বলেছেন: আমার দেশে কোন চাকরি বা ইনটারভিউ'র অভিজ্ঞতা নাই।
এখন যেখানে আছি সেই দেশে প্রতিদিন কমকরে হলেও ৮/১০ টা চাকুরির অফার আসে খুবই উচ্চ বেতনে কিন্তু এখন আর চাকুরি করি না!
চাকরি শব্দটি কি চাকর+গিরী থেকে এসেছে?

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৬

পাকাচুল বলেছেন: সবাই হয়ত আপনার মত কপাল নিয়ে আসে নাই। হাজার হাজার তরুণ প্রতিদিন চাকুরীর ইন্টারভিউ দিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে ঢাকা শহরে।

৭| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৯

হোমানকুলাস বলেছেন: ভাল লাগল।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৬

পাকাচুল বলেছেন: ধন্যবাদ

৮| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২

ক্লে ডল বলেছেন: ইনটারভিউ এর অভিজ্ঞতা জানতে বেশ আগ্রহ কাজ করে!! আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে ভাল লাগল। আমি অবশ্য চাকরীর ইনটারভিউ নেওয়ার স্বপ্ন দেখি। যদিও এখনো একটা ভাইভাও দেওয়ার সৌভাগ্য হয় নাই!! :P :(

স্বপ্ন দেখতে ত দোষ নাই! কি বলেন? :)

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮

পাকাচুল বলেছেন: ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

৯| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:২৩

মো সাদিকুর রহমান বলেছেন: পড়াশুনা শেষ করেই ব্যবসা তাই ইন্টারভিউএর অভিজ্ঞতা নাই তাই মজা পেলাম আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৪৪

পাকাচুল বলেছেন: ব্যবসা স্বাধীন পেশা। কারো কোন খবরদারী নাই। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

১০| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫২

প্রামানিক বলেছেন: আমিও অনেক ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম কিন্তু চাকরী হয়নি। অবশেষে যখন চাকরী পেলাম তখন ইন্টারভিউয়ের দরকার হলো না।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:৩১

পাকাচুল বলেছেন: জীবনের একটা সময়ে এসে চাকুরী এসে মানুষ খুজে। মানুষকে তখন আর চাকুরী খোজা লাগে না।

১১| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩২

আহমেদ জী এস বলেছেন: পাকাচুল ,



খুব ভালো লাগলো অকপট এই স্বীকারোক্তি ।

তবে আমার মনে হয় অত অত ইন্টারভিয়্যু দিতে দিতেই আপনার চুল পেকে "পাকাচুল" হয়েছে...। :P

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৫৮

পাকাচুল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

ইন্টারভিউ দিতে দিতে চুল পাকে না, এমনিতেই পেকে গেছে।

১২| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৬

ধ্রুবক আলো বলেছেন: লেখা ভালো লাগলো,,
চাকরির ইন্টারভিউয়ের কথা বইলা লাভ নাই! এর মেলা অভিজ্ঞতা আছে আমার যা আমি লেখতে গেলে কয়েক পর্বেও শেষ হবে না! যাই হোক আপনি আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন তাই ধন্যবাদ...
তবে শেষের কথা গুলোর জন্য আন্তরিক অভিনন্দন ও স্যালুট ।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:০৩

পাকাচুল বলেছেন: অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন, তাহলে যারা ইন্টারভিউ দিতে যাবেন, তাদের উপকার হবে। প্রস্তুতি নিয়ে যেতে পারবে।

১৩| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:২০

জাহিদ হাসান বলেছেন: আপনি এখনও ব্লগে আছেন?
আমারে সেই কবে থেকে সেফ থেকে জেনারেলে নিয়া ফেলছে সামু মডুরা।
আমার মায়ানমার অভিমূখে লংমার্চে যোগদানের অভিজ্ঞতা

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৫৪

পাকাচুল বলেছেন: ধন্যবাদ।

১৪| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:২১

রাতুল_শাহ বলেছেন: স্যারের প্রশ্নের উত্তর আমিও বিমান দিয়েছিলাম। কিন্তু সে সময় রাজশাহী টু ঢাকা বিমান ছিলো না।
উত্তর ছিলো- রাজশাহী টু নাটোর গেলাম কোন ভাবে, তারপর নাটোর টু সিরাজগঞ্জ, এভাবে জেলা থেকে জেলা ভেঙে ভেঙে যাওয়ার পর ঢাকায় পৌঁছলাম।

আপনার কথা ঠিক যাকে তারা পচ্ছন্দ করে তাকে কোন জটিল প্রশ্ন করে না। আমারই এক কলিগকে শুধু পরিবারের কথা জিজ্ঞাসা করে, কবে থেকে জয়েন করতে পারবে সেটা জানতে চেয়েছিলো। ব্যস চাকুরী হয়ে গেলো।

আমি কিছুদিন রিক্রুটমেন্টের দ্বায়িত্বে ছিলাম।
২টি পোস্টের জন্য বারোশতের উপরে সিভি।
প্রথম নির্দেশনা ছিলো সিভি বাছাই করো। অভিজ্ঞতা দেখে ৫০টা বাছাই করলাম।
তারপর তাদের সাথে ফোনে কথা বললাম। ফোনে তাদের কমিউনিকেশন কেমন সেটা প্রথমে যাচাই করা হলো। সেখান থেকে ৩০ জনকে বাছাই করলাম। আবার ফোন দিলাম। ফোনে বিস্তারিত জেনে ১৬ জনকে বাছাই করে ভাইভার জন্য ডাকা হলো।
১৬ জনকে ডিপার্টমেন্টাল কোন প্রশ্ন করে হয় নাই।
বিভিন্ন ক্রিটিক্যাল সিচুয়েশন কথা উল্লেখ করে, এদের সমাধান জানতে চাওয়া হয়েছিলো। ৩জন খুব ভালো উত্তর দেওয়ায় তাদের তিনজনকে জয়েন করতে বলা হয়।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:১১

পাকাচুল বলেছেন: ১২০০ সিভি বাছাই করা চাট্টিখানি কথা। আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলি তো বিশাল।

এইবার চিন্তা করে দেখেন, একেকটা সরকারী চাকুরীতে কত পরিমাণ দরখাস্ত জমা পড়ে, তারা কেন এত বেশিদিন সময় নেয়, সেটা বুঝার চেষ্টা করছি।

১৫| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৫৭

সোহানী বলেছেন: ইর্ন্টাভিউ টিপস্ নিয়ে আমার বেশ কিছু লিখা আছে........যাহোক আপনার অভিজ্ঞতা ভালো লেগেছে। আত্ববিস্বাস অনেক বড় বিষয়।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩২

পাকাচুল বলেছেন: ধন্যবাদ, সময় সুযোগ করে পড়ে আসবো।

১৬| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫৪

ডার্ক ম্যান বলেছেন: কখনো চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে পারবো বলে মনে হয় না। তবে মানুষের সব ধরণের অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করি।
আপনার পোস্ট ভালো লাগলো।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩৩

পাকাচুল বলেছেন: কোন অভিজ্ঞতাই বৃথা যায় না। জীবনের কোন না কোন সময় কাজে লাগবে।

ধন্যবাদ।

১৭| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:১০

বিজন রয় বলেছেন: তাহলে বর্তমানে কোন অফিসে আছেন?

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৫

পাকাচুল বলেছেন: এখন চাকুরী করছি না, সামান্য বিরতি নিয়েছি।

১৮| ২৪ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৩১

শুকনা মরিচ বলেছেন: আপনাকে অনেকদিন আমি ফেসবুকে খোঁজ করেছি ।
হারিয়ে গেলেন কেন ?

যোগাযোগ করবেন প্লিজ :)

৩১ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ৮:১৬

পাকাচুল বলেছেন: খুঁজে পেয়েছেন নিশ্চয়।

১৯| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:০৭

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: আপনি এখন কোথায়?

১০ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৭:১২

পাকাচুল বলেছেন: আপাতত দেশের বাইরে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.