নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিশির কনা।

পলাশ মিয়া

আলো আঁধারী স্বপ্ন...

পলাশ মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

পকেট খালি তো কি হইছে, তাই বলে কি ইফতার করমু না...

১৩ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:১২

পকেটে নাই এক টাকা তবুও ভরপেটে ইফতার। ক্যামনে সম্ভব ? হ্যাঁ, সবই সম্ভব এই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। আজ ১২ টা রোজা চলে যাচ্ছে, এই ১২ দিনের মধ্যে ১১ দিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সংগঠনের দাওয়াতে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত থাকতে হয়েছে। ক্যাম্পাসে সকলের সাথে পরিচিতির সুবাদে আমাকে আজ অমুক ক্লাব তো কাল তমুক জেলার ইফতার মাহফিলের দাওয়াতে উপস্থিত থাকতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। আর কেন জানি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চেহারা বিকেলের দিকে চেঞ্জ হয়ে যায়, ইফতারের আমেজটা ঠিক তখনই চলে আসে। অপুরূপ লাগে চারিদিক, প্রকৃতির সোনালী রোদ যেন ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোনায় কোনায় পৌছে যায়। এই রমজানে সবাই তখন ইফতারি কেনার জন্য এবং কোথায় ইফতার করতে হবে তার জন্য ব্যস্ত হয়ে ওঠে। কেউ বা সেন্ট্রাল ফিল্ডে, কেউ ক্যাফেটেরিয়ার বারান্দায়, কেউ টি. এস. সি. র ছাদে, কেউ অমর একুশের পাদদেশে, কেউ শহিদ মিনারের সিঁড়িতে আবার কেউ বা বন্ধুদের সাথে হলে বসে ইফতার সেরে নেয়। এ তো গেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে ইফতার করার গল্প। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন, জেলা সমিতির ইফতার মাহফিলের অনুষ্ঠান ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়ায়, সেমিনার রুমে, সমাজবিজ্ঞানের গ্যালারিতে, পদার্থ বিজ্ঞান কিংবা রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের গ্যালারিতে হয়ে থাকে এমনকি যারা এই সব জায়গাগুলোর শিডিউলও পায় না তারা সবাই সেন্ট্রাল ফিল্ডে বসেই ইফতার সেরে নেয়। এর পাশাপাশি সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষেরাও প্রতিদিন তাদের সাথে ইফতারিতে অংশগ্রহণ করে থাকে।



এবার আসি মূল কথায়। আমি আর আমার ডিরেক্টর বন্ধু কায়সার আহমেদ সাব্বির, আজ কারো পকেটে এক টাকা নাই। বিকেল বেলা বের হলাম সেন্ট্রাল ফিল্ডের দিকে। এক বন্ধু আমাকে ফোন করে বলল, সমাজবিজ্ঞানে চলে আয় আজ আমাদের ক্লাবের ইফতার পার্টি আছে। আমি বললাম পরে জানাচ্ছি দোস্ত। এবার কায়সারের ফোনে ফোন আসল, তার এক বন্ধু আরেকটা ক্লাবের ইফতারের দাওয়াতে তাকে অংশগ্রহণ করতে বলল, সেও বলল পরে জানাচ্ছি। সেন্ট্রাল ফিল্ডে কয়েকজন সিনিয়র ভাই এবং আপু তারা সবাই ইফতারির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, তারাও তাদের ইফতারিতে আমাদের যোগ দিতে বলল। এখন আমি আর কায়সার ভাবছি, কি করি কোথায় যাওয়া যায়। আমরা যদি তাদের দাওয়াতে না যাই তারা সবাই মন খারাপ করবে। তাই দুই বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, আমরা তিন জায়গার ইফতারির দাওয়াতেই উপস্থিত হব। বড় ভাইদের ঐখানে আমরা ২ জন ছিন্নমূল শিশুকে বসে দিলাম, কায়সারের যে জায়গা থেকে দাওয়াত আসছিল আমি গেলাম সেখানে আর আমার যে জায়গা থেকে দাওয়াত আসছিল কায়সার গেল সেখানে। আল্লাহ্‌র কি ইচ্ছে, পরে জানতে পারলাম যে, আমরা যে, তিন জায়গায় ইফতারির দাওয়াত পেয়েছিলাম সেই তিন জায়গার ইফতারির মেনু ছিল তেহারি, শরবত, খেজুর ইত্যাদি ইত্যাদি।



আপনাকে বলছি, যারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে তাদেরকে। এটা আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় যার কারণে আমরা প্রায় সবাই সবাইকে চিনি, সবাই সবার সাথে মিলেমিশে থাকি। পথে ঘাটে বের হলে এমন কাউকে পাব না যে, সে অপরিচিত। এখানে সিনিয়র জুনিয়রদের মাঝে যে সম্পর্ক আমি সিয়র যে, এমন বন্ধন/সম্পর্ক পৃথিবীর আর কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। শুধু আপনাকে সেই জায়গাটা তৈরি করে নিতে হবে। যেমন আমি নিয়েছি এবং এই ক্যাম্পাসের প্রতিটি পোলাপান নিয়েছে। আমাদের ক্যাম্পাসের কেউ কোন পরিচিত জুনিয়রকে দেখলে চা কিংবা ইফতারিতে বসে একসাথে ইফতারি করা মামুলি ব্যাপার।



এই কথাগুলো বললাম এই অর্থে যে, আমাদের মাঝের সম্পর্কটা এতটা মধুর, যার জন্য আজ পকেটে ১ টাকা না থাকা সত্বেও ভরপেটে ইফতার করলাম, আলহামদুলিল্লাহ্‌...

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:১৫

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: আরে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকজন। ভালো।

১৪ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৫৯

পলাশ মিয়া বলেছেন: জ্বি শরৎ ভাই, লেখালেখি দিলে মাঝে মাঝে এইভাবে আওয়াজ দিয়েন....

২| ১৩ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:২৮

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: :)

১৪ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:০২

পলাশ মিয়া বলেছেন: ++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.