নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কলম

প্রকৃতিকে করো তব দাস-চে দ্য আইডল (ব্লগার নং - ৩১৩৩৯)

পাপতাড়ুয়া

আঁধার দুনিয়ার ছবি! ..... ছন্নছাড়ার পেন্সিল......সবার অন্ধকার থাকে না, অথবা অন্ধকার প্রিয় নয়। তাই সবাই কবিতা পড়তে পারে না, কবিতা পড়ার জন্য চোখের ভিতর সমুদ্র এবং বুকের ভিতর আদিগন্ত ধূ ধূ প্রান্তর লাগে। ..... কবি নির্ঝর নৈঃশব্দ্য *************************http://www.rabindra-rachanabali.nltr.org/node/2

পাপতাড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তগল্প: মধ্যরাতে বিভ্রান্ত পাঠক ও কবিতা পারস্পরিক

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০২

মধ্যরাতের নৈঃশব্দ্যের ভেতর তোমার চোখের গল্পপাঠ করবো। মধ্যরাত অদ্ভুত সময়। খোলস ভেঙে সবকিছু নিজস্ব রুপে বিমূর্ত হয়ে উঠে। যে গাছগুলো পাখিগুলো মাছগুলো কিংবা মেঘগুলো সারাদিন বেয়াড়া বালকের হাতের ডানার মত দোলে কিংবা এলোমেলো ডাকে কিংবা ঘাঁই মারে কিংবা সদ্যযৌবনপ্রাপ্ত বালিকার মত সারাটা আকাশে ছোটাছুটি করে আর সেই বালিকার ঠোঁটের মত কাঁপে, তারা সবাই এই মধ্যরাতে স্থির হয় আর লুকিয়ে পড়ে কোটরে অথবা জলের গভীরে অথবা আকাশের শেষ সীমানায়, কেবল আমি জেগে উঠি, কেবল তুমি জেগে উঠো, দূরে হয়তো অন্য কেউ জেগে উঠে।
মধ্যরাতের সড়ক তোমার চোখে প্রবাহিত করে দেব ফসলের সমীকরণে, যদিও জানি এ বড় নিষ্ফলা সময়, কেউ কারো ডাকে সাড়া দেয় না।

আমি দেখবো তোমার বাম চোখ উপবৃত্তাকার, ডান চোখ অর্ধবৃত্তাকার। সজল গভীরে রোদ ও মেঘ খেলা করে। পুরু ভেজা ঠোঁটে পতাকার মত ভেসে থাকা হাসি আর সেই হাসির সমান্তরালে চোখের প্রসারণ তোমায় সুশ্রী করে তোলে। তুমি সাধারণ। তুমি সুন্দর।

আমি দেখবো তোমার সোনারঙ গায়ে অনেক সবুজ। ম্যানগ্রোভ বনের সব সবুজ। ঝকঝকে সবুজ সালোয়ারের পেটের ভেতর সুস্বাস্থ্যসম্পন্ন উরু, মসৃণ সন্ধি; আমি কল্পনায় এঁকে নেবো ঈষদার্দ্র সন্ধিমূল, সুস্ফীত প্রতিভার। দেখবো সবুজ কামিজের গায়ে সোনালি ফুলের কাজ, স্বচ্ছ কাপড়ের আড়ালে পেলব বাহুর বিন্যাস, ফুলে থাকা একজোড়া ফল দেখে নেব সবুজ ওড়না সরিয়ে, যেমন পাখিপ্রেমিকেরা আলতো হাতে উঁকি মারে কোমল পাখির ঘরে পাতা সরিয়ে।
গন্ধ নেব তোমার থোকা থোকা চুলে, কালো জারুল ফুলের মত এক বিদীর্ণ নেশার আহবানে। তোমার শরীরের ঘ্রাণে পার করে দেব কুয়াশার ভোর।
এই মধ্যরাতে আমি খুলে দেখব তোমার ঠোঁটের পৃষ্ঠা, মদের গেলাসে আহত যুবক যেমন ঠোঁট রাখে।

আমি দেখবো, দেখবো তুমি কী আরেক বিভ্রান্তি নাকি নির্ভুল আমন্ত্রণ! দেখবো তুমি কী নিখাদ তৃষ্ণার জল নাকি সময়ের কামনা!

*

মধ্যরাতে আপনি রাত মদ আর শরীরকে একাকার করে ফেলেন। অথচ আমি মধ্যরাতের সূত্র মেনে নারী হয়ে এসেছি পবিত্র মদের মায়া নিয়ে, শরীরের পাত্রে। মধ্যরাতে বিভ্রান্ত হতে নেই। অথচ আপনি বিভ্রান্ত হয়ে যান। মধ্যরাতে ঈশ্বর বিভ্রান্ত হয়েছেন। আদম বিভ্রান্ত হয়েছেন। জীবনানন্দ বিভ্রান্ত হয়েছেন।

" ... অন্ধকারে জীবিত ও মৃতের হৃদয়
বিস্মিতের মতো চেয়ে আছে;
এ কোন সিন্ধুর সুর:
মরণের - জীবনের?
এ কি ভোর?
অনন্ত রাত্রির মতো মনে হয় তবু।"

মধ্যরাত জীবনানন্দের দিকে বিস্মিতের মতো চেয়ে থাকে। মধ্যরাতও বিভ্রান্ত হয় বুঝি!
কিন্তু আপনি আজ বিভ্রান্ত হতে পারবেন না। আমার সবুজের ভেতর আপনাকে সচেতন থাকতে হবে। আপনাকে দেখতে হবে, আমার সবুজ চকচকে সালোয়ার, খুঁজে নিতে হবে এর আড়ালে আগলে রাখা আমার সমস্ত গোপন ইতিহাস। এডমন্ড হিলারির মত আপনিই হবেন প্রথম পদচারী। আমার গোপনীয়তাকে খুলে দেব আপনার সামনে। আপনি মেপে মেপে নেবেন তাপমাত্রা, হিমমাত্রা, আর্দ্রতা। আপনি আমার গভীরে যাবেন, পিচ্ছিল পথ ধরে খুঁজে নেবেন ভবিষ্যতের নকশা, প্রতিভারে ভার বাড়িয়ে আপনি ভারসহনমাত্রা নির্ণয় করবেন।
আপনি সমাধান করে দেবেন কামিজের সোনালি ফুলগুলোর সমস্ত রহস্য, আমার কোমল বাহুতে এঁকে দেবেন তৃপ্ততার উল্কি। উল্কি এঁকে সত্যায়িত করে দেবেন আমার সাধারণ এই নারীসারল্য।
আপনি বিভ্রান্ত হতে পারবেন না। আপনাকে পাতার খোলস খুলে বের করে নিতে হবে গন্ধম ফল। মৌমাছির মত পরখ করে দিতে হবে সুধার গুণাগুণ!
আপনাকে আমার ঠোঁটের গেলাস থেকে পান করে নিতে হবে তৃষ্ণার জল, চোখের সব গল্প লিখে দিতে হবে আরেকবার।
সব শেষে ছিটিয়ে দেবেন চিকচিকে ঘর্মবিন্দু, আমার সারা শরীরে, ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতার প্রতিটি বাক্যে, শব্দে, বর্ণে!

*
অথচ তুমি ছিলে না সেই কবিতা, যা আমি পড়তে চেয়েছিলাম আজন্ম, দীর্ঘ দশকের সংগ্রাম পেরিয়ে যে কবিতার সব পাঠ ভুল হয়েছিলো।
অথচ আজ তোমাকেই পাঠ করে ফেলেছি এই মধ্যরাতে, বিভ্রান্তির ভেতর!

তুমি মায়া, তুমি বিভ্রম, আমাকে বিভ্রান্ত করেছো আরেকবার!

*
অথচ আপনি ছিলেন না আরাধ্য পাঠক, আপনার জন্যে আমার গোপনীয়তার কিছু উৎসর্গ হবার কথা ছিলো না, আমার বাহুতে উল্কি এঁকে আমার নারীসারল্যের সত্যায়ন করার কথা ছিলো না আপনার।
অথচ আপনিই আমাকে প্রথম উন্মোচন করেছেন, রিক্ত ও তৃপ্ত করেছেন, এই মধ্যরাতে, বিভ্রান্তির ভেতর!

আপনি মাতাল, আপনি বিভ্রান্ত, আমাকে পেলবহীন করেছেন এই প্রথমবার!

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:১০

হাসান মাহবুব বলেছেন: ঘোর জাগানিয়া।

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৪০

পাপতাড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান ভাই।

২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৫২

অরুদ্ধ সকাল বলেছেন:
অনেক ভালো লিখেছেন। অনেক শব্দ

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৭

পাপতাড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ সুপ্রিয় সকাল।

৩| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১৪

এসিড ভাই ইমন বলেছেন: onek vlo hoisa

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৮

পাপতাড়ুয়া বলেছেন: ব্লগে মুরাদ টাকলামি নিষিদ্ধ।

৪| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৫

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: অন্ধকারে জীবিত ও মৃতের হৃদয়
বিস্মিতের মতো চেয়ে আছে;
এ কোন সিন্ধুর সুর:
মরণের - জীবনের?
এ কি ভোর?
অনন্ত রাত্রির মতো মনে হয় তবু।"''-------------------প্রথম হতে শেষ সবটাই ভাল লেগেছে

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৯

পাপতাড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ লায়লা।

৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২৬

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: এভাবে ঘোরগ্রস্থ হতে আমার ভালো লাগে!

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২০

পাপতাড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ অভি।

৬| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৫১

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
মুগ্ধশব্দঘোরে নিমগ্ন পাঠে হৃদয়ে ব্যঞ্জনা রইল ৷

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৩

পাপতাড়ুয়া বলেছেন: শুভেচ্ছাসহ ধন্যবাদ।

৭| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫২

ডি মুন বলেছেন:
চমৎকার লেখা
++++

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪

পাপতাড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদান্তে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.