নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঐক্য এবং সংগ্রাম= মুক্তি

পাঠক লাল গোলদার

শোষণ-বৈষম্য হীন একটা মানবিক সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনে কাজ করি আমি। বুর্জোয়া আধিপত্যের বিপরীতে রাজেনৈতিক, সামাজিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও মনজাগতিক ক্ষেত্রে শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের পাল্টা আধিপত্য গড়ে তোলাই প্রথম কাজ।

পাঠক লাল গোলদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাঁখা-সিঁদুর হিন্দু ধর্মের বিষয় নয়

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৪

অনেকের মতো আমিও মনে করতাম হিন্দু বিবাহিত নারীরা ধর্মীয় কারণে শাঁখা-সিঁদুর পরে। শাঁখা বা সিঁদুর পরার কারণ বা ভাল দিক সম্পর্কীত কিছু ব্যাখ্যাও আমি শুনেছি ধর্মালোচকগণের কাছ থেকে।কিন্তু আমি যখন ইন্ডিয়ার উত্তর প্রদেশ সফর করি তখন আমার ধরণা সম্পূর্ণ বদলে যায়। এটা ২০০৫ সালের কথা। একমাস ছিলাম সেখানে। আমার সংগঠন সূত্রে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে কৃষকদের, কৃষকনেতাদের সাথে বৈঠক করেছি, যোগ দিয়েছি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ-সেমিনারে, আতিথ্য গ্রহণ করেছি অনেক বনেদি কৃষক পরিবারের। তখন ব্রাহ্মণ-জাঠ(কৃষক)-দলিত বিভিন্ন বর্ণের পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মেশার সুযোগ হয়েছে। তখন দেখেছি উত্তরপ্রদেশের বিবাহিত হিন্দু মহিলারা শাঁখা-সিঁদুর পরে না। এব্যাপারে প্রশ্ন করেছি অনেকের কাছে। তাদের ধারণা সিঁদুর শুধু বিবাহের সময়েই প্রয়োজন হয়। তবে শাঁখা তারা চেনেই না। শাঁখা-সিঁদুর না পরলেও উচ্চবর্ণের হিন্দু রমণীরা বোরখা ঠিকই পরে। বোরখা পরে বল্লাম-ওই পোশাকটার নাম হয়তো বোরখা না। তবে পোশাকটার কার্যকারিতা বোরকার সমান। পা পর্যন্ত লম্বা ঘাঘরা (কামিজ) পরা এবং দোপাট্টা (ওড়না) দিয়ে এমনভাবে মুখমন্তল ঢেকে বাইরে বেরোন যে আপনি মহিলার শরীরের কোন অংশই দেখতে পাবেন না এমনকি চোখও না। উত্তরপ্রদেশের উগ্র বর্ণবাদী সমাজে এমনকি ব্রহ্মণদের মধ্যেও শাঁখা-সিঁদুরের চল নেই। পরবর্তীতে ভারতের অনেক রাজ্যে ঘুরে এটুকু বুঝতে পেরেছি যে পশ্চিমবঙ্গ-আসাম-ত্রিপুরা বাদে হিন্দু নারীরা শাঁখা-সিঁদুর ব্যবহার করেন না। তবে সনাতন ধর্মমতে বিবাহের সময় সম্ভবত সব রাজ্যেই সিঁদুরের ব্যবহার আছে।

আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার অন্য একটি দেশ নেপাল। যেটা কিনা কিছুদিন আগ পর্যন্ত বিশ্বের একমা্ত্র হিন্দু রাষ্ট্র ছিলো। সেখানে সিঁদুর মূলত নারী-পুরুষ সবাই ব্যবহার করে। তবে শাঁখার নাম তারাও জানে না। এমনকি বিয়ের সময়ও বর-কনে দুজনেই সিঁদুর পরে। এছাড়া কোন শুভ কাজ আরম্ভের পূর্বে বা দুরে কোথাও যাওয়ার সময় কপালে খুব বড় করে সিঁদুরের ফোঁটা ব্যবহার করে। অনেক সময় সিঁদুরের ফোঁটাটি কপালের মাঝখানে না দিয়ে পাশে দেয়।

ইন্ডিয়া নেপালের কোটি কোটি হিন্দু এমনকি ব্রাহ্মণ নারীগণই যখন ধর্মীয় প্রথা হিসাবে শাঁখা-সিঁদুর ব্যবহার করেন না তখন শাঁখা-সিঁদুর হিন্দু ধর্মের বিধান ভাবার কোন কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। ধর্মীয় বিধানই যদি হতো তবে তা সব হিন্দুর জন্যই এক হতো। বরং এটা বাঙ্গালি হিন্দু সংস্কৃতির অঙ্গ বলেই আমার মনে হয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.