নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঐক্য এবং সংগ্রাম= মুক্তি

পাঠক লাল গোলদার

শোষণ-বৈষম্য হীন একটা মানবিক সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনে কাজ করি আমি। বুর্জোয়া আধিপত্যের বিপরীতে রাজেনৈতিক, সামাজিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও মনজাগতিক ক্ষেত্রে শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের পাল্টা আধিপত্য গড়ে তোলাই প্রথম কাজ।

পাঠক লাল গোলদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুম্বাঈদ, গরুঈদ এবং আমাদের বকরীঈদ!

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৭

কোরবানী দেয় কিন্তু মাংস খায় না! এরকম কোন পরিবার আপনি দেখেছেন কি?

আমি দেখেছি। ভারতের উত্তর প্রদেশের এক কৃষকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো। ভদ্রলোকের নাম ছাব্বির আহমেদ। উত্তরপ্রদেশের মুজাফ্ফরনগর জেলায় উনার বাসস্থান। উনি নিরামিশভোজী। শুধু উনি না ওনার পরিবারের সবাই, এমনকি বংশের সবাই বংশানুক্রমে নিরামিশভোজী। কোন মাছ মাংস এমনকি ডিমও কোনদিন খেয়ে দেখেননি। আমি জিজ্ঞাসা করায়, উনি বল্লেন মাছ-মাংসের গন্ধতেই ওনার বমি এসে যায়! ওনার দাদা, বাবা তারাও কখনো মাছ-মাংস খাননি। উত্তরপ্রদেশের বেশিরভাগ মানুষই ছাব্বির আহমেদের মতো বংশানুক্রমে নিরামিশভোজী। মাছ-মাংস খান শুধু নিচু শ্রেণীর মানুষ! মুচি, মেথোর, ডোম, ধোপা ইত্যাদি দলিতশ্রেণীর মানুষ। এমনকি নাপিতরাও নিজেদের অপেক্ষাকৃত উঁচু জাতি মনে করে বিধায় তারাও নিরামিশভোজী। মাছ-মাংস খাই এটা জানলে অনেকে তাদের বাড়ীতে নিয়ে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। উত্তরপ্রদেশের অনেক মানুষের মনে বদ্ধমূল ধারণা আছে, যারা মাছ-মাংস খায় তারা নিচু জাতের মানুষ!

কোরবানী ঈদের কথা উঠতেই সাব্বির আহমেদ বললেন, পারিবারিকভাবে ওনারাও কোরবানী দিয়ে থাকেন। আমি গরুর কথা জিজ্ঞাসা করতেই উনি অনেকটা অবাক হয়ে গেলেন! বললেন, গরু কেন?? এটা তো বকরী ঈদ! বকরীঈদে তো আমরা বকরী কোরবানী দেই। কোরবানীর পর স্থানীয় দলিত শ্রেণীর লোকজন কোরবানীকৃত বকরী তাদের বাড়ীতে নিয়ে যায় এবং তারা সবাই মিলে কাটা-কুটি করে উতসবের আয়োজন করে! শুনতে বেশ মজাই লাগছিলো আমার। বকরী কোরবানী দেন মুসলমানরা আর উতসব হয় নিন্মবর্ণের হিন্দুদের পাড়ায়। হ্যা! নিরামিশভোজী এই মুসলমান পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়েন, রোজাও রাখেন! আমাদের টীমের সাথে পাঁচদিন ছিলেন। দাওয়াতও করেছিলেন তার বাড়ীতে যাওয়ার। কিন্তু সময়ের অভাবে যাওয়া হয়ে ওঠেনি আর।

আজকের কোরবানী ঈদে বেশি করে মনে পড়ছে সেই নিরামিশভোজী মুসলমান সাব্বির আহমেদের কথা। শুনেছি মধ্যপ্রচ্যের মানুষও নাকি দুম্বা কোরবানী দেন। আর আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ দুম্বার অভাব গরু-মহিষ দিয়েই পুরণ করেন।

কিন্তু একটা বিষয় আমি বুঝিনা! মধ্যপ্রাচ্যের দুম্বাঈদ, ভারতীয় উপমহাদেশের গরুঈদ কিভাবে ‘বকরীঈদ’ হয়ে গেলো???

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.