নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঐক্য এবং সংগ্রাম= মুক্তি

পাঠক লাল গোলদার

শোষণ-বৈষম্য হীন একটা মানবিক সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনে কাজ করি আমি। বুর্জোয়া আধিপত্যের বিপরীতে রাজেনৈতিক, সামাজিক, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও মনজাগতিক ক্ষেত্রে শ্রমিক কৃষক মেহনতী মানুষের পাল্টা আধিপত্য গড়ে তোলাই প্রথম কাজ।

পাঠক লাল গোলদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

দলে যোগ দিলেই এমপি প্রার্থী! রাজনীতি এখন অরাজনীতিকদের দখলে!

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৫

বাংলাদেশের রাজনীতি অরাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের অধীনে নিয়ে আসার পাঁয়তারা নতুন কিছু নয়। এমপি প্রার্থী হওয়ার পূর্বে রাজনীতির সাথে কোন রকম সম্পর্ক ছিলো না এরকম এমপির সংখ্যা সংসদে ক্রমান্বয়েই বাড়ছে। তবে আশির দশক থেকেই মূলত এটি আশংখাজনক হারে বাড়তে শুরু করে। যা বর্তমানে মহামারী আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশের রাজনীতি এখন আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ এখন মূলত দালাল ও লুটেরা ব্যবসায়ীদের হাতে। দুর্নীতিবাজ আমলা, লুটেরা ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী ইত্যাদি শ্রেণীর মানুষগুলো হুটহাট করে ঢুকে পড়ছে শাসক শ্রেণীর রাজনৈতিক দলে। আর টাকা দিয়ে, প্রভাব খাটিয়ে নিয়ে নিচ্ছে এমপি টিকিট। কখনওবা এমপি না হয়েও হয়ে হচ্ছে টেকনোক্রাট মন্ত্রী বা উপদেষ্টা। আবার অনেক ক্ষেত্রে এমপি-মন্ত্রী-উপদেষ্টা না হয়েও দেশের রাজনীতিতে খাটাচ্ছে ব্যপক প্রভাব। পর্দার পেছনে থেকে নাড়ছে রাজনীতির কলকাঠি।



এমত অবস্থায় আবারও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে হাসিনা সরকার। সংশোধিত আরপিওতে নেতাদের দলবদল এবং কালোটাকা দিয়ে ব্যবসায়ীদের প্রার্থী হতে কোন বাধা থাকছে না। সংসদ নির্বাচনে কেউ কোনো দল থেকে প্রার্থী হতে চাইলে তাঁকে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলে অন্তত তিন বছর সদস্য হিসাবে থাকার বিধান ছিলো। এখন এই বাধ্যবাধকতা আর থাকছে না। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) থেকে এই বিধান তুলে দিয়ে বিল চূড়ান্ত করা হয়েছে।

বিলটি পাস হলে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে একদিকে যেমন রাজনৈতিক দলের নেতাদের জন্য দলবদলের সুযোগ তৈরি হবে। যে এতদিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবানের জিকির তুলতো সে রাতারাতি ভোল পাল্টিয়ে শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে বা ঘটবে উল্টোটা। অন্যদিকে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, লুটেরা, দখলবাজ যে কেউ যেকোনো দলে যোগ দিয়েই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন।

এখন প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে, কাদের জন্য সরকারের শেষসময়ের তড়িঘড়ি এই আরপিও সংশোধন?? তাহলে হেফাজতের সাথে গোপন চুক্তিটা হয়ে গেলো না কি?? কেউ আবার একধাপ আগ বাড়িয়ে বলছেন, জামায়াত যেহেতু আগামী নির্বাচন করতে পারছে না, জামাতের দ্বিতীয় সারির অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত কোন কোন নেতাও হয়তো নৌকা নিয়ে নির্বাচন করতে পারে। সে কারণেই এই আরপিও সংশোধন! কারণ যাই হোক আরপিওর এই সংশোধনী বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে কোন শুভ লক্ষণ নয়।

আহা কি আনন্দ, আকাশে-বাতাসে!! মিছিল-মিটিং করে গলা ভাঙ্গার কোন দরকার নেই। কোন দায়বদ্ধতা ছিলো না বিধায় পাবলিকের সাথে কোন সম্পর্কও তৈরী হয়নি। সরকারী দল, বিরোধী দল কারো কোন কোপানলে পড়ারও দরকার হয়নি। প্রশাসনের সাথে লেনাদেনা ভালই ছিল। ফলে নবাগত হিসাবে সবার কাছেই ফুলের মতো পবিত্র। শুধু কোন দল ক্ষমতায় যাবে এই হিসাবটা ভালভাবে ঠিক করা চাই! তারপর বঙ্গবন্ধু জিন্দাবাদ বা শহীদ জিয়া জিন্দাবাদ দিয়ে দলে ঢুকলেই এমপি টিকিট। এমনকি পাবলিকের কাছেও গলায় মালা দিয়ে যখন হাজির করা হবে তখন সবাই একবাক্যে ধন্য ধন্য করবে। তার অতীত ইতিহাস তো পাবলিকের জানা নেই।

রাজনৈতিক বই পড়াও এখন বাহুল্য! কারণ রাজনৈতিক জ্ঞান প্রয়োজন শুধুমাত্র বামপন্থি রাজনীতিতেই। আমলীগ-বিএনপি-জাতীয়পার্টি-জামাত এসব দল করতে রাজনৈতিক জ্ঞানের চেয়ে টাকার জোর, ডানহাত-বাহাতের জোর অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। সারা জীবন কি কাজে যুক্ত ছিলো সেটা কোন বিষয়ই না, কড়ি ঢালো, মাখো তেল। একারণে রাজনীতিবিদরা এখন আর সংসদে যেতে পারেন না। হাতে গোনা কয়েকজন রাজনীতিক বিভিন্ন দলে এমপি মন্ত্রী থাকলেও সরকার চালাতে তাদের মতামতের তেমন কোন গুরুত্ব নেই। তাই দেশও এখন এগিয়ে যাচ্ছে কৃষক-শ্রমিক-রাজনীতিকহীন সাংসদ-মন্ত্রীদের হাত ধরে। এমপি-ব্যবসায়ীদের মালিকানাধীন গার্মেন্টসের লক্ষ লক্ষ শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরী বৃদ্ধির সাধ্যও তাই সরকারের নেই। কৃষকের উতপাদিত খাদ্য মজুদ নিয়ে সংসদে বাহাদুরী দেখালেও কৃষকদের পক্ষে তাই নেই কোন রাষ্ট্রীয় সুবিধা। ভর্তূকী, ট্যাক্স মওকুফ, ঋণ সুবিধা, সুদ মওকুফ ইত্যাদির নামে হাজার হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সুবিধায় তাই কৃষক-শ্রমিকের কোন ভাগ নেই। সবই যাচ্ছে দালাল ব্যবসায়ী, লুটেরা ব্যবসায়ী, এমপি ব্যবসায়ী, ঘুষ-সুদ ব্যবসায়ীদের ঘরে।



প্রতিবাদ জানানোর একটা সুযোগ ছিলো ‘না’ ভোট। সেটা উঠিয়ে দেয়া হয়েছে অনেক আগেই! নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে গত নির্বাচনে মোট ‘না’ ভোট পড়েছিলো ৩ লক্ষ ৮১ হাজার ৯শত ২৪টি। এই যে প্রায় ৪ লক্ষ সচেতন নাগরিক (নিশ্চয়ই তাঁরা রাজনৈতিক সচেতন) যারা জোট-মহাজোটের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ‘না’ ভোট দিয়েছিলো. তারা এবার কিভাবে ভোটকেন্দ্রে যাবে? এখন আবার দেশের সব লুটেরা-দুর্নীতিবাজরা-ধর্মকানারা যাতে এমপি প্রার্থী হতে পারে তার পথ প্রসস্ত করা হচ্ছে। তারপরও এরই নাম গণতন্ত্র! এখন দুর্নীতিবাজ লুটেরাদের নীতির নামই ‘রাজনীতি’!





পাঠক লাল গোলদার

২৫ অক্টোবর ২০১৩

[email protected]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.