নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাল যেকোন বিষয় পড়তে ভাল লাগে, লেখার চেয়ে।

সাইফুর রহমান পায়েল

খুবই শান্ত মনের ও ঠান্ডা মেজাজের একটা চমৎকার মানুষ।

সাইফুর রহমান পায়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৌলভিনামা A Journey to Moulvibazar (১ম পত্র)

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:১৭

প্রথমেই ক্ষমা প্রার্থনা করছি আমি খরচের কথা কিছু বলতে পারবনা তাই।

যদিও আমার ভ্রমনের পোস্ট গুলো খরচ সহ উল্লেখ করে থাকি। কিন্তু এবারের ভ্রমণটা ব্যাতিক্রম। মৌলভিবাজারের সহকারী কমিশনার ও ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট আমার ভাই হওয়ার সুবাধে টাকা লাগেনি। বরং গাড়ীর ব্যাবস্থাও তিনি করেছেন। কোথায় কত লাগে তা জানিনা কারন কেউ আমাদের কাছে কোন টিকেটের টাকা চায়নি। রেফারেন্স ছিল বলে আরও খাতির যত্ন করল।

ঘটনা যাই হোক, কোথায় কোথায় ঘুরবেন তারতো একটা ফর্দ দেয়া যায়।

শুরু করা যাক ঢাকা থেকে।

ঢাকার মহাখালি বাস স্ট্যান্ড থেকে এনা পরিবহনে মৌলভিবাজারের টিকেট কাটুন। ৪০০ টাকা করে লাগবে। সন্ধ্যা ৬:১৫ তে গাড়ি আছে। ১২ তার পরে পৌঁছাবে। আপনি আপনার পছন্দমত সময়ে আসবেন। তবে যদি মৌলভিবাজারে পরিচিত কেউ না থাকে তাহলে শ্রীমঙ্গল নেমে যাওয়া ভাল হবে। (কারন মৌলভিবাজার শহরের চেয়ে শ্রীমঙ্গল বেশি উন্নত মনে হল)

হোটেল ঠিক করবেন ওখানে।

যেহেতু আমি আগেই বলে এসেছিলাম, তাই আমাকে আসতে হল শহরে, ভাইয়া আগেই সার্কিট হাউসে রুম রেখে ছিল। আমরা রাতে কাউন্টারে নেমেই দেখি একটা গাড়ি আমাদের অপেক্ষায় ছিল। পরিচয় দিতেই তিনি আমাদের নিয়ে আসলেন সার্কিট হাউসে। ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে গাড়ীর ব্যাবস্থা হলনা। ভাইয়া গাড়ি ছাড়া যেতে নিষেধ করলেন। শুক্রবারেও ডিসি অফিসের গাড়ি ফ্রী নেই!

গাড়ি ফ্রী হল দুপুরের পরে। আমরা খেয়ে বের হলাম।

যেতে সময় লাগবে। কারন আগে শ্রীমঙ্গল যেতে হবে। আপনারা যদি ওখানে থাকেন, তাহলে সময় বাচবে।

যাওয়ার পথে রাস্তার পাশের সুন্দর সুন্দর দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।





প্রথমেই লক্ষ্য নীলকণ্ঠ হোটেল। যেখানে ৭ লেয়ারের চা পাওয়া যায়। এটা হচ্ছে ৭ লেয়ারের চা এর জনকের হোটেল। তাই এখানে আসলাম।



চা খেয়ে এসে গাড়িতে উঠলাম। এবার যাব, বিটিআরআই(বাংলাদেশ টি রিসার্চ ইন্সিটিউট)। বাংলাদেশের একমাত্র টি রিসার্চ ইন্সিটিউট এটি।



শুক্রবার ছিল তাই আমরা ভিতরে যেতে পারিনি। বিটিআরআই বন্ধ। কি আর করা। যাওয়া হল না এবারের ভ্রমনে। 



এবার যাব হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান। নতুন হওয়া এই ৫ স্টার মানের হোটেলটি দেখার মত। পথে রাস্তার দুপাশ জুড়েই দেখবেন চা বাগান আর মনমুগ্ধকরা দৃশ্য।





গ্র্যান্ড সুলতানের গেটে এসে গেলাম।



নিরাপত্তা কর্মীরা ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছিল না। পরে পরিচয় পেয়ে যেতে দিল। গেটে তারা তল্লাসি চালাল কোন বম্ব বা আগ্নেয়াস্র আছে কিনা আমাদের সাথে। ব্যাস, ঢোকার টিকেট পেয়ে গেলাম।



ভেতরটা খুব সুন্দর করে সাজানো। ঢুকলেই আপনার মন ভাল হয়ে যাবে।



হোটেলটার এন্ট্রি গেটের পাশেই ছোট্ট একটা লেক।



লেকের উপর ব্রীজ আছে।



পাশে দোলনা, গলফ এর মাঠ, বাচ্চাদের খেলার জায়গা, সুইমিং পুল সব আছে। দেখার মত করে সাজানো।



ছবিতে যা দেখছেন, বাস্তবে তার চেয়েও বেশী সুন্দর।

ভিতরে মৃদু বাতাস সব সময়ে বয়ে যাচ্ছে।



মাতাল করা জায়গা।



তবে খরচ খুবই কম। একরাত থাকতেই ১১০০০ টাকা। এটাই সর্বনিম্ন। সাথে চা/কফি,সুইমিং পুল ও বাচ্চাদের খেলার যায়গা ফ্রী তে ব্যাবহারের সুযোগ। তুললাম প্যানারোমাও।



সেখানের পালা শেষ করে বের হলাম।

এবার লক্ষ্য লাঊয়াছরা। লাউয়াছরার বিশেষত্ব হল এটি এত ঘন বন যে সূর্যের আলো পরেনা বললেই চলে। সূর্যের আলোর জন্য গাছ গুলো পাল্লা দিয়ে বেড়ে উঠে মাথা তুলে। ১৯২৫ সালে এখানে গাছ লাগানো হয়। পরে ঐ গাছই বর্তমান রুপ লাভ করে। গেটে আসতেই আবার বাধা, গাড়ি ঢুকতে দিবেনা। ভাইয়া তার পরিচয় দিতে আর বাধা দিল না। একজন আবার তাকে চিনল। গাড়ি নিয়ে ঢুকলাম। ভেতরে একটা রেল লাইন আছে। তার পাশেই একটা কাটা গাছের গোঁড়া আছে।



এই গাছটার একটা গল্প আছে। chlorophora SP লেখা আছে গাছটার সাথে। এটা কেটে ফেলা হয়েছে কারন, যখন এই গাছটি জীবিত ছিল, তখন এই গাছ থেকে ক্লোরোফর্ম বের হত। মানুষ এই গাছটার কাছে এলেই অজ্ঞান হয়ে যেত। পরে এই গাছটি কেটে ফেলা হয়।



লাউয়াছরা বনটি অনেক বড়। এখানে কিছু ট্র্যাক করা আছে। কোনটা দিয়ে গেলে ঘুরে আসতে ৩০ মিনিট লাগবে। কোনটা দের ঘণ্টা লাগবে। তবে অচেনা পথে না যাওয়াই ভাল। ছিনতাই হতে পারেন। সম্ভব হলে ৫ জন বা তার বেশি মানুষ এক সাথে থাকবেন। অনেকে বলবে এখানে একটি খাসিয়া পল্লি আছে। ওদিকে না যাওয়াই ভাল। ছিনতাই প্রবন এলাকা।

মূলত গাছ আর গভীর জঙ্গলের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যাবে লাউয়াছরা তে। আমাদের সাথে ওখানকার একজন লোক ছিল। তাই ভয়ের তেমন কিছু ছিলনা। তবুও আমরা বিপদজনক স্থানগুলো বাদ দিলাম। এখানে একটি ছোট্ট রেস্ট হাউস আছে। পুরনো হয়ে গেছে। তবুও ফেরার সময় ঘুরে এলাম।

এসে গাড়িতে উঠে ফিরতি পথ ধরলাম।



আসার পথে সেলফি তুললাম।

এবার যাব মাধবপুর লেক। সেখান থেকে চা বাগানের ডাক বাংলোতে যাব। তাদেরকে জানানো হয়েছে আমরা ৪ জন তাদের বাংলো তে আসব। ম্যানেজার ছিলেন না। তবে তিনি বললেন কোন ঝামেলা নেই। তিনি ফোন করে দিবেন।

আগামী পোস্ট মৌলভিনামা A Journey to Moulvibazar (২য় পত্র) তে মাধবপুর লেক ও চা বাগানের বাংলো ভ্রমনের কাহিনী থাকবে।

থাকবে রাতের চা বাগানের এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি।



এবার মনে হয় হামহাম যাওয়া হবে না। দেখা হবে না দোসাই ও। যাক, এবারের ছুটিতে না হয় এটুকুই ঘুরে যাই। পরেরবার ছুটি পেলে যাব।

প্রথম পাঠ এখানেই শেষ। সময় পেলে দ্বিতীয় পার্ট লিখব। মাধবকুণ্ড, পরীকুণ্ড ও চা বাগানের ভ্রমন নিয়ে লিখতে হবে তৃতীয় পার্টও। অপেক্ষায় থাকুন। হাকালুকি হাওরের সুন্দর ছবি ও থাকবে।

সকলে ভাল থাকবেন।

(সংক্ষিপ্ত, পূর্ণ বর্ণনা দিতে গেলে আপনারা পড়তে পড়তে বিরক্ত হয়ে যাবেন)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৪

ইন্জিনিয়ার জনি বলেছেন: New 5 Star hotel ta valo laglo dekhe. 11000 taka/ night, amar mone hoina Bangladesh er prekkhapote ete sosta. Ami Singapore, Malaysia te 5 star hotel e thekese 10,000 takar moddhe/ night.
Valo thakben.

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:১৬

সাইফুর রহমান পায়েল বলেছেন: সরবনিম্ন হচ্ছে ১১০০০ টাকা। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.