নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কলমই হোক দুর্নীতি দূর করার হাতিয়ার

শামচুল হক

আমি একজন সাধারন লোক

শামচুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুন্ঠি কালাইয়ের ঘুরানি ব্যারাম (গল্প)

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫৭


শামচুল হক

কয়েক বছর আগে চরে বেড়াতে গিয়েছিলাম। যমুনা নদী পার হয়ে ধুধু বালুর চর। বালুচর হাঁটতে হাঁটতে পূর্ব পাশের গ্রামে গেলাম। বাড়ির সংখ্যা অনুযায়ী এটাকে গ্রাম বলাও ঠিক হবে না, বিশাল বালুচরের মাঝামাঝি মাত্র চার পাঁচটি বাড়ি। প্রত্যেক বাড়িতে একটি দু’টি করে ঘর। কোন বাড়িতেই গাছ নেই। এরা যে এখানে নতুন বসত গড়েছে তা বাড়ির পরিবেশ দেখেই বোঝা যায়।

দুপুরের রোদে বালু চর হাঁটতে গিয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ। খুব পিপাসা পেয়েছে। পানি খাওয়ার জন্য মাঝখানের এক বাড়িতে গেলাম। বাড়ির সামনে লাউয়ের জাংলার নিচে এক বৃদ্ধ বসে আছে। কাছে যেতেই মুখ তুলে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনি ক্যারা গো?
বললাম, আমাকে চিনতে পারবেন না, আমি শহর থেকে এসেছি।
-- কার বাড়ি আইছেন?
-- কারো বাড়ি আসিনাই চাচা, চর বেড়াতে এসেছি।
-- খালি চর বেড়ানোর জন্যেই আইছেন?
-- জী চাচা, খালি চর বেড়ানোর জন্যই এসেছি।
-- বেড়াইতে আইছেন যহন বহেন, বলেই তিনি একটি কাঠের পিঁড়ি এগিয়ে দিলেন। আমিও হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়েছি। আমারও ইচ্ছা একটু আরামে বসে জিরিয়ে নেয়া। পিঁড়ি এগিয়ে দেয়ায় খুব খুশিই হলাম। পিঁড়িতে বসে চাচার সাথে কথা বলতে ছিলাম।

কথা বলার এক পর্যায়ে বললাম, চাচা, আপনাদের বাড়ি আগে কোথায় ছিল?
চাচা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, বাবারে, আমার জন্মস্থান বাড়ি এই চরেই আছিল। নদীর ভাঙনে সে বাড়ি ভাইঙা গেলে একেক বছর একেক চরে বসত করছি।
-- আপনার বয়স কত?
-- সত্তুরের কাছাকাছি।
-- সত্তুর বছর আগের সেই বাড়ির কথা কি আপনার মনে আছে?
-- হ মনে আছে--, মনে থাকবো না ক্যা? আমি তো বড়ই হইছি এই চরে।
-- তখন আপনাদের আর্থিক অবস্থা কেমন ছিল?
-- অবস্থার কথা কি কমু আর ভাইস্তা, তখন আমাগো আয় অবস্থা খুবই ভালো ছিল। এই চরের চারানা সম্পত্তি আমার দাদার আছিল। দাদার খুব নাম ডাকও ছিল। সাত গ্রামে মদবরি করছে। আমার দাদার নাম কইলে অনেক দূরের মাইনষেও চিনছে।
-- সেই বাড়ি এই চরের কোন জায়গায় ছিল?
-- এইহান থিকা তিনশ’ গাজ দক্ষিণে আছিল। আমার বয়স যখন ১৬ বছর তখন সেই চর ভাইঙা যায়। এরপর আমার বাবা বাড়ি করে উত্তরের চরে। সেই চরে সাত বছর থাকার পর সেটাও ভাইঙা যায়। এর পরে পশ্চিমের চরে বাড়ি করে, সেই চরে ৬ বছর থাকার পর সেইটাও ভাইঙা যায়, এরপর এই চর উঠে। আবার আমরা এই চরে বাড়ি করি। ৩ বছর থাকার পর আবার চর ভাইঙা গেলে দক্ষিণের চরে যাই। এইভাবে ১৬ ভাঙ্গা দেয়ার পর গত বছর এই চর উঠলে আবার আইসা বাড়ি করছি। জানি না এই চরে আল্লায় আবার কয়বছর রাখপো।
-- আপনার জীবনেই কি ১৬ বার বাড়ি ভাঙছে?
-- তাইলে আর কইলাম কি? ১৬ বার বাড়ি ভাঙার পরেই তো ৯ মাস হইল এই নতুন বাড়ি করলাম।
-- আপনার দাদা যে সাত গ্রামের মাতব্বর ছিল, নদীভাঙার পরও কি তিনি মাতুব্বরী করতেন?
-- বাবা রে-- নদী ভাঙলে কি আর মদবরী থাকে? অর্থ না থাকলে মদবরীও থাকে না।
-- এখন আপনাদের কি অবস্থা?
-- অবস্থার কথা কি আর কমু রে বাবা, মাঝখানে আমাদের খুব দুরাবস্থা গেছে। মাঝে মাঝে দুইবেলা পেটের ভাত জোটে নাই। নদী ভাইঙা কত যে না খায়া থাকছি। তবে এই বছর মোটামুটি ধান পাইছি। যা পাইছি তাতে ভাতের অভাব হইবো না।

চাচার সাথে কথা বলতে বলতেই তার বাড়ির উঠানের দিকে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি উঠানে কালাইয়ের মত কি যেন শুকিয়ে দেয়া আছে। দেখতে কালাই গাছের মত মনে হলেও চেহারা ভিন্ন। এধরনের ফসল আগে কখনও চোখে দেখিনি। আমার দেখা কোনো কালাই গাছের সাথেও এগুলো মিলাতে পারছি না।



চিনতে না পেরে জিজ্ঞেস করলাম, চাচা, উঠানে শুকিয়ে দিয়েছেন এগুলো কি?
--কালাই।
--কি কালাই
-- কুন্ঠি কালাই।
কুণ্ঠি কালাইয়ের নামটি নতুন নতুন লাগল। চাচাকে বললাম, চাচা, জীবনে অনেক কালাইয়ের নাম শুনেছি কিন্তু কুন্ঠি কালাইয়ের নাম তো কোনোদিন শুনি নাই?
চাচা ডান হাতটি উপর নিচে নাড়িয়ে বললেন, শুনবেন কোইত্থিকা, এই কালাই তো সব জায়গায় পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের চরাঞ্চলেই পাওয়া যায়।
আমি কিছুটা আশ্চার্য হওয়ার মতই বললাম, তাই নাকি! এই কালাই শুধু চরেই হয়! বলেই বললাম, আচ্ছা চাচা, এই কালাই কি খায়?
আমার প্রশ্ন শুনে চাচা আমাকে কিছুটা ব্যাক্কেল ভেবেই বলল, আরে ভাইস্তা আপনারে খুব শিক্ষিত মনে করছিলাম, এহন দেহি আপনি আমার চায়াও মুর্খ।
চাচার এমন কথায় হঠাৎ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। হাবাগোবার ভাব ধরে বললাম, কেন চাচা?
চাচা গলার আওয়াজ একটু বাড়িয়েই বলল, আরে ভাইস্তা নাম হইল কালাই, কলাই মানেই ডাইল, এবার আপনেই কন ডাইল খায় না মাথায় দেয়?
আমি তার কথা বুঝেছি এমন ভাব ধরে বললাম, এইবার বুঝেছি চাচা, এইটা একটা কালাই। আচ্ছা চাচা, এই কালাই কিভাবে খায়?
চাচা গলার আওয়াজ নামিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই বলল, ডালও খাওয়া যায়, আবার সেদ্ধ কইরাও খাওয়া যায়।
-- সেদ্ধ করে খেতে কেমন লাগে?
-- মন্দ লাগে না, ভালই লাগে। আপনি খাইবেন? খাইলে কন আইনা দেই।
মনের ভিতর নতুন নামের কালাই খাওয়ার আগ্রহ দেখা দিলেও অপরিচিত হওয়ায় প্রকাশ করতে পারছিলাম না। স্বেচ্ছায় খাওয়াতে চাওয়ায় মনে মনে খুব খুশিই হলাম। কিন্তু কালাই খাওয়ার আগ্রহ থাকা সত্বেও লজ্জায় বললাম, না না চাচা, আমাকে খাওয়াতে হবে না, আমাকে খাওয়াতে গেলে আপনাদের অনেক ঝামেলা হবে।
চাচা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, আমাগো আবার কি ঝামেলা হইবো?
হাসি দিয়ে বললাম, রান্নার ঝামেলা আছে না? আমাকে খাওয়াতে গেলে তো আপনাদের আবার রান্না করতে হবে।
আমার কথা শুনে চাচা তাড়াতাড়ি বলল, না না, পাক করা লাগবো না। কালাই সেদ্ধ করাই আছে। বলেই বাড়ির দিকে মুখ করে কাকে যেন উদ্দেশ্য করে ডাক দিল, এই গেদি এ--ই, প্লেটে কইরা এক প্লেট কালাই সেদ্ধ আনচে। কাঁচের গ্লাসে কইরা এক গ্লাস পানিও আনিস।

আমি তার কালাই খাওয়ানোর মানসিকতা দেখে আশ্চার্যই হলাম। অপরিচিত হয়েও এত তাড়াতাড়ি আমাকে কালাই খাওয়ানোর প্রস্তাব দিয়ে বসবে এটা আমি ভাবতেও পারিনি। গ্রামের সহজ সরল মানুষদের আন্তরিকাতা আগেও দেখেছি, আজকেও এই চাচার আন্তরিকতায় বুকটা ভরে গেল। তারপরও নিজের কাছে কেমন লজ্জা লজ্জা লাগছিল, তাই চাচার কালাই আনার তাগিদ দেখে তাড়াতাড়ি বললাম, না না চাচা, আমাকে খাওয়াতে হবে না। কালাই আনতে নিষেধ করেন?
আমি নিষেধ করায় চোখের দিকে তাকিয়ে বলল-- আপনারা হইলেন ভরদো মানুষ, কত ভালোমন্দ খান, আপনাদের তো আমি ভালোমন্দ খাওয়াইবার পারমু না। এই কালাই কোনদিন খান নাই খাওয়াইবার চাইলাম, তা আবার নিষেধ করেন ক্যা?
-- চাচা নিষেধ করতেছি এই জন্যে, আপনারা আপনাদের খাওয়ার জন্য সেদ্ধ করেছেন, সেখান থেকে আমাকে খাওয়ালে আপনাদের আবার টান পড়তে পারে।
আমার কথা শুনে চাচা কিছুটা ধমক দিয়েই বললেন, হেই ভাইস্তা কও কি? এক প্লেট কালাই খাইলে আমার সংসারে টান পড়বো, এইডা আপনারে কে কইছে? আরে ভাইস্তা, গরীব হইলেও একেবারে ফকির না। আড়াই বিঘা জমি কালাই বুনছি। বিঘা প্রতি পাঁচ মণ কইরা হইলেও বারো তেরো মণ কালাই হইবো। আপনে এক প্লেটে কয়ডা খাইবেন?
আমি তার মানসিকতা দেখে তাজ্জব বনে গেলাম। গ্রামের মানুষদের আতিথেয়তার তুলনা হয় না।

দুইজনের কথাপোকথন চলা অবস্থায় সাত আট বছরের একটি মেয়ে প্লেট ভরে কালাই সেদ্ধ নিয়ে এলো। কাঁচের গ্লাস ভরে পানি আনল। লাউয়ের জাংলার নিচেই মাদুর বিছেয়ে খেতে দিল। তপ্ত রোদের মাঝে গাছবিহীন বিরান বালু চরের লাউয়ের জাংলার ছায়াটা যে কত আরামের, সেটা বলে বুঝানো যাবে না। খোলামেলা পরিবেশে দখিনা হওয়ায় খুব আরাম লাগছিল। এমন পরিবেশে যেকোন খাবারই মনে হয় মুখোরোচক হবে।

কুন্ঠি কালাই দেখতে মশুর কালাইয়ের মত হলেও সাইজে একটু লম্বা এবং বাঁকা। প্লেট হাতে নিয়ে প্রথমেই অল্প একটু মুখে দিলাম, খেয়ে দেখি বেশ মজাই লাগে। হলুদ-লবন, মরিচ-পিয়াজ দিয়ে খুব ভালো করেই রান্না করেছে। বালুচর হেঁটে খুব খিদেও পেয়েছিল। গোগ্রাসে সবগুলো কালাই সেদ্ধ খেয়ে ফেললাম। পানি খাওয়ার পর শরীরটা বেশ চাঙা হলো।

খাওয়া শেষে চাচার কাছ থেকে বিদায় নিতে গেলে চাচা বলল, এত তাড়াতাড়ি যাইবেন ক্যা। থাকেন, পুরা চর ঘুইরা বেড়ান। দুপুরে ভাত খায়া তারপরে যাইবেন।

চাচার আতিথেয়তা তুলনাহীন। চেনা নেই জানা নেই অথচ খাওয়ার জন্য প্রাণ খোলা আপ্যায়ন। চাচার আর্থিক অবস্থা যে খুব ভালো তাও না, তারপরেও মনটা অনেক বড়। চাচাকে ধন্যবাদ দিয়ে শহরের দিকে রওনা হলাম।

যাওয়ার সময় চরের আবহাওয়া টের না পলেও ফিরে আসার সময় হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। গাছ গাছালি বিহীন ধু ধু বালুচরে শীতের দিনেও যে এত রোদ লাগে আগে জানতাম না, জানলে কি আর ছাতা ছাড়া আসি! ছাতা না নিয়ে এসে চরম আহম্মকিই করেছি।

অর্ধেক রাস্তা আসার পর রোদের জন্যই হোক আর অন্য কোন কারণেই হোক শরীরটা যেন কেমন কেমন লাগছে। কেন এমন লাগছে বুঝতে পারছি না। আস্তে আস্তে মাথা ঘোরা শুরু হলো। নদীর কাছাকাছি আসতেই শুধু মাথা ঘোরা নয়, পুরো চর সুদ্ধই ঘুরতে লাগল। বেদিশা হয়ে গেলাম। দ্রুত খেয়া ঘাটের দিকে দৌড়াতে লাগলাম কিন্তু দৌড়ে আগাতে পারছিলাম না। একে তো বালুচর তারোপর মাথা ঘোরা, পা ফেলি এক জায়গায় পড়ে অন্য জায়গায়। এদিকে ভালো করে চোখেও দেখি না। যেদিকে তাকাই সেদিকেই দেখি সব কিছু শুধু ঘোরে। মাথা ঘোরার সাথে পুরো শরীরও ঢুলতে লাগল। মনে মনে ভাবলাম মাথা ঘুরে পড়ে যাবার আগে অন্তত খেয়াঘাটে পৌছা দরকার। খেয়াঘাটে গিয়ে মরলেও লাভ আছে। লোকজন দেহটা অন্তত বাড়ি পৌছে দিবে। কিন্তু বিরান বালুচরে মরলে বিপদ, এ দেহ বাড়ি না পৌছে শিয়াল শকুনের খাদ্য হবে। শরীর ঢোলাঢুলি করলেও শুধু মনের জোরেই আগাতে লাগলাম। খেয়াঘাটের কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব হলো না তার আগেই মাথাঘুরে পরে গেলাম।

আমার পড়ে যাওয়া দেখে খেয়াঘাটে বসে থাকা দুই তিনজন দৌড়ে এসে টেনে উঠালো। আমি তখন কাঁপতে ছিলাম। আমার কাঁপা দেখে একজন জিজ্ঞেস করল, আপনে এভাবে কাঁপতেছেন ক্যা? আপনার কি মৃগী রোগ আছে?
আমি হাত ইশারায় বললাম, আমার এধরনের কোন রোগ নাই।
-- তাইলে কিছু খাইছেন?
মাথা ঝাঁকালাম, খেয়েছি।
আমার মাথা ঝাঁকানো দেখে তারা ভেবেছে আমি মদ গাজা জাতীয় কিছু একটা খেয়েছি। একজন আমাকে গাঁজাখোর মনে করে রাগত স্বরেই বলল, বুঝছি, গাঞ্জা খায়া টাল হইছেন, এহন বালুচরে উইল্টা উইল্টা পড়া শুরু করছেন। আগে জানলে বালুচরে মইরা থাকলেও ধইরা উঠাইতাম না। যত সব আজেবাজে ঝামেলা বালুচরে আইসা পইরা মরে।

আমাকে গাঞ্জাখোর ভেবে অবজ্ঞা করে কথা বলায় মনে খুব কষ্টই পেলাম, জীবনে মদ গাঁজা খাওয়া তো দূরের কথা, এসব জিনিস কখনও হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখলাম না অথচ আজ এদের কাছে বিশাল গাঞ্জাখোর হলাম। শরীরের কাহিল অবস্থার কারণে তাদের অবজ্ঞাসুলভ আচরণেও চুপ করে থাকতে হলো। আমার তখন মাথা ঘোরার কারণে মাথা ঘেমে গেছে। বসে থেকেও ঢলে ঢলে পড়ছি। আমার এ অবস্থায় একজন এসে মাথার গামছা দিয়ে বাতাস করতে লাগল। কিছুক্ষণ বাতাস করায় একটু আরাম পেলাম। মাথা ঘুরানো কিছুটা কমলো। একটু সুস্থ্য হয়ে কাতরাতে কাতরাতে বললাম, আমি গাঁজাটাজা খাই নাই ভাই।
যে লোকটি গাঁজা খাওয়ার কথা বলেছিল সে বলল, তাইলে সকাল বেলা কি খাইছেন?
-- কালাই সেদ্ধ খেয়েছি।
-- কি কালাই?
-- কুন্ঠি কালাই।
কুণ্ঠি কালাইয়ের নাম শুনেই আরেকজন বলে উঠল, বুঝতে পারছি, কালাইয়ে কাম সারছে। বলেই বলল, আপনি কুন্ঠি কালাই আরো কখনও খাইছিলেন?
-- না।
-- আজই কি প্রথম খাইছেন?
-- হ্যা।
-- কতগুলা খাইছেন?
-- পুরো এক প্লেট।
লোকটি আশ্চার্য হয়ে বলল, করছেন কি! এক চামচ খাইলেই মাথা ঘোরে--- সেখানে আপনে এক প্লেট খাইছেন! আপনারে তো কুন্ঠি কালাইয়ের ঘুরানিতে ধরছে।
কুন্ঠি কালাইয়ের নাম শুনে আরেকজন পাশের জনকে বলল, এই খলিল, এক কাজ করতো ভাই, উনারে ধইরা নদীর কিনারে নে, ভাইরে কুন্ঠি কালাইয়ের ঘুরানি ব্যারামে ধরছে, মাথায় পানি ঢালা লাগবো।
তিনজনে ধরাধরি করে আমাকে নদীর কিনারে বসিয়ে মাথায় অনেকক্ষণ পানি ঢালল। পানি ঢালার একপর্যায়ে স্বাভাবিক হলাম। তখন মনে পড়ল চাচার কথা, চাচা বিদায়ের সময় বার বার বলতেছিল, কালাই খাইছেন মাথায় ঘুরানি দিবার পারে, খানিক বইসা জিরায়া যান। কিন্তু আমি তখন তার কথাটি বুঝতে পারি নাই। যখন বুঝতে পেলাম তখন নদীর ঘাটে মাথা ঘুরে পড়েই গিয়েছি। আর পড়ে গিয়েই বুঝতে পেলাম কুন্ঠি কালাইয়ের ঘুরানির ক্ষমতা!

ছবি ঃ ইন্টারনেট
(কিছুটা সত্য)

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:০৭

কুঁড়ের_বাদশা বলেছেন: গল্প পরে পড়বো, এখন একটা কোবতে লিখছি, সামচুল ভাই। :P

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:১১

শামচুল হক বলেছেন: আপনার কোবতে খুব মজার হয়, লেইখা তাড়াতাড়ি পোষ্ট দেন।

২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:১৬

নায়না নাসরিন বলেছেন: ভাইয়া বড়ই বিপদজনক কাহিনি :-&

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪১

শামচুল হক বলেছেন: ঠিকই বলেছেন বোন, কালাই খেয়ে বিপদেই পড়েছিলাম।

৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২৩

মানুষ বলেছেন: ইন্টারেস্টিং। কুণ্ঠি কালাইয়ের নাম প্রথম শুনলাম।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪২

শামচুল হক বলেছেন: এই নামের কালাই আছে এটা আমিও জানতাম না।

৪| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৪২

অলিউর রহমান খান বলেছেন: জনাব এক স্বচ্ছ, সুন্দর কাহিনী কিভাবে লিখেন?
এসব কি সত্যি ঘটনা নাকি শুধু গল্প। যাই হোক না কেন অসাধারণ লিখার বাহার।
কি যে সুন্দর করে লিখলেন লিখাটি!
আমি প্রথম থেকে শেষ করেছি পড়ে। শব্দ চয়ন দেখে মুগ্ধ হচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম
আপনার লিখার অসাধারণ ক্ষমতার কথা।

আমার পক্ষ থেকে ১০ এর মধ্যে ১০। আমার এত ভালো লেগেছে!
জনাব শুভেচ্ছা নিবেন।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৪

শামচুল হক বলেছেন: আপনার লেখাও মন্দ নয়, আপনার লেখা আমি পড়েছি। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৫২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: নতুন কালাইয়ের নাম আমিও ফাস্ট শুনলাম। যাক ঘটনা ফাটাফাটি।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৭

শামচুল হক বলেছেন: মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। এই কালাইয়ের নাম আমিও প্রথম শুনেছি।

৬| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১৪

প্রতিভাবান অলস বলেছেন: কালাই খাওয়ার বর্ননা টা ভাল ছিল। এখন আমারো খেতে ইচ্ছে করতেসে

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৮

শামচুল হক বলেছেন: কালাই খেতে হলে আপনাকে যমুনার চর এলাকায় যেতে হবে। ধন্যবাদ

৭| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:২০

সুমন কর বলেছেন: কুন্ঠি কালাইয়ের নাম আগে শুনিনি। গল্প এবং বর্ণনা ভালো লাগল।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৯

শামচুল হক বলেছেন: আমিও আগে শুনি নাই, চরে বেড়াতে গিয়েই শুনেছি এবং দেখেছি। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।

৮| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৩১

চানাচুর বলেছেন: কি ভয়ংকর জিনিস কুণ্ঠি কালাই!!! তাহলে উনারা সেদ্ধ করে খাচ্ছেন কি করে! :-/

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৭

শামচুল হক বলেছেন: প্রথম প্রথম উনাদেরও মাথা ঘুরাতো। এখন খেতে খেতে সহ্য হয়ে গেছে।

৯| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৫

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: গল্প মনে হচ্ছে একটু ব্যতিক্রম লাগল । :) । গল্প ভালো লিখেছেন।।ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫১

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। আপনি কাহিনীটি পড়ায় খুশি হলাম।

১০| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫৩

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: গল্প আরো বেশি করে লিখুন। শুভ কামনা রইল।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০৬

শামচুল হক বলেছেন: আপনাদের উৎসাহে লেখার আগ্রহ বেড়ে গেল। অবশ্যই আরো গল্প লিখতে চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ

১১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৬:১৩

অলিউর রহমান খান বলেছেন: জনাব লিখার চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু হচ্ছে না।
দোয়া করবেন।
শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ রইলো।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৩৯

শামচুল হক বলেছেন: চেষ্টা করতে থাকেন, একসময় দেখবেন আপনি ঠিকই সাকসেসফুল হয়েছেন। ধন্যবাদ

১২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮

জাহাঙ্গীর কবীর নয়ন বলেছেন: আমার জন্য এককেজি জোগাড় করে দিতে পারবেন? খাওয়ার শখ হচ্ছে।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২২

শামচুল হক বলেছেন: তাহলে তো ভাই আমাকে আবার সেই চরে যেতে হবে। ধন্যবাদ

১৩| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৩২

আখেনাটেন বলেছেন: হা হা হা।


ব্যাপক মজা পেলাম। এরপর নিশ্চয় কুন্ঠি কালাইয়ের গুষ্ঠি উদ্ধার করে বাড়ী ফিরেছেন।



২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫৩

শামচুল হক বলেছেন: ঠিকই বলেছেন ভাই, এমন অবস্থার পরে কি আর কুণ্ঠি কালাইয়ের প্রশংসা করা যায়, তবে কালাই খেতে কিন্তু মজা আছে।

১৪| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:১৬

অর্ক বলেছেন: ওহ আরও বড় বিপদও হতে পারতো! আর কোনওদিন কুণ্ঠি কালাই খাবেন না, অন্য কালাই যতো খুশি খান! খুব ভালো লাগলো।
শুভকামনা।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৫০

শামচুল হক বলেছেন: ঠিকই বলেছেন ভাই, তবে কুন্ঠি কালাই ইচ্ছা করলেও যখন তখন খেতে পারছি না কারণ এই কালাই খুব একটা পাওয়া যায় না।

১৫| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ২:৪৩

মলাসইলমুইনা বলেছেন: মাশ কলাইয়ের ডাল ছাড়া অন্য কোনো কলাই বলতে যে কিছু দেশে আছে তাইতো জানা ছিল না | এটা জেনে এখন তো ভয়ই লাগলো | যাক এখন জানলাম চরে বেড়াতে গিয়ে কুন্ঠি কলাই খাওয়া যাবে না |আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষতো এমনি দেশ জুড়েই | হাজার বছর ধরেই এই মেহমানদারির সুনাম আমাদের | এখন শুধু শহুরে কিছু অমানুষের জন্য দেশের পরিচয়টা বদলে যাচ্ছে ! আপনার এটাতো গল্প না সত্যি কাহিনী ভালো লাগলো পড়ে |

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:২৯

শামচুল হক বলেছেন: তবে যারা সবসময় খায় তাদের জন্য সমস্যা হয় না। হঠাৎ খাওয়াতে আমার সমস্যা হয়েছিল। মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

১৬| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১০

খায়রুল আহসান বলেছেন: কুণ্ঠি কালাইয়ের নাম আমিও জীবনে এই প্রথম শুনলাম।
চর ভ্রমণের গল্পে ভাল লাগা + +

২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩১

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ খায়রুল আহসান ভাই, আপনি মন্তব্য করায় খুব খুশি হলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.