নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কলমই হোক দুর্নীতি দূর করার হাতিয়ার

শামচুল হক

আমি একজন সাধারন লোক

শামচুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প ঃ রং নাম্বার নয় ছয় (৩)

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৫২


শামচুল হক

মা বকবে না বলে কথা দেয়ায় হাসু মোবাইল এগিয়ে দেয়। মা মোবাইল হাতে নিয়ে বলে, হ্যালো।
অপর দিক থেকে জবাব আসে, স্লামালেকুম খালাম্মা। আপনি কেমন আছেন?
-- ভাল আছি, তুমি কেমন আছো?
-- আল্লাহর রহমতে ভাল আছি।
-- হাসু ভাই আপনাকে কিছু বলেছে?
-- কি ব্যাপারে?
-- আমাদের বাসায় বেড়াতে আসার কথা।
হাসুর মা কিছুটা রাগান্বিত হয়েই বলে উঠল, এই মাইয়া, তোমারে চিনিনা জানিনা তুমি কইলা আর তোমার বাসায় লাফ দিয়া বেড়াইতে গেলাম। এইডা হয়?
-- হাসু ভাই তো বলল, আপনি হাসু ভাইকে খুব ভালোবাসেন, হাসু ভাই বললেই নাকি তার সাথে চলে আসবেন।
-- আরে মাইয়-- আমার পাগোল পোলা কইলেই কি সব জায়গায় যাওয়া যায়, আমাগো একটা মানসম্মান আছে না?
-- আপনারা আমাদের বাসায় আসেন আমরা আপনাদের অসম্মান করবো না। আমাদের যতটুকু সাধ্য আছে তার মধ্যে সম্মান করার চেষ্টা করবো।
-- হুট কইরা যাওয়া সম্ভব না। পারলে তুমিই চইলা আসো। তোমারে আগে দেইখা লই।
-- আপনারা না আসলে তো আমার বাবা আমাকে আপনাদের ওখানে যেতে দিবে না। আমি আপনাদের কথা বাবাকে বলেছি। বাবা বলেছে যদি আপনারা আসেন তা হলে বাবা আমাকে সাথে নিয়ে আপনাদের বাসায় বেড়াতে যাবে।
-- এই মাইয়া তুমি কর কি?
-- আমি বিএ পড়ি।
-- পড়াশুনা কর ভালো কথা। আমরা তোমাদের ওখানে গেলে তোমার লাভটা কি?
-- আপনারা নাকি কখনও গ্রাম দেখেন নাই, আমিও ঢাকা শহর দেখি নাই। আপনারা আমাদের বাসায় এসে গ্রাম দেখবেন, আর আমি আপনাদের বাসায় গিয়ে ঢাকা দেখবো।
-- শুধু ঢাকা দেখবা, আর কোন মতলব নাই?
-- না খালা আর কোন মতলব নাই। আমাদের ঢাকায় কেউ নাই তো।
-- তোমাদের ঢাকায় কোন আত্মীয় স্বজন নাই?
-- না খালা কেউ নাই।
-- তাইলে পোলায় কইছে যখন তুমি ঢাকায় আইসা আমার বাসায় থাইকা ঢাকা দেইখা যাও।
-- খালা, আপনারা না আসলে বাবা আমাকে আপনাদের বাসায় যেতে দিবে না।
-- ক্যান?
-- আপনাদের দেখার পর যদি বাবার ভালো লাগে, তাহলে যেতে দিবে। না হলে যেতে দিবে না।
-- ঠিক আছে চিন্তা কইরা লই। বলেই বলল, এই মাইয়া তোমার মোবাইল নাম্বার কত?
-- খালা এখন যেটা দিয়ে কল করেছি এইটাই। শেষে দেখবেন ছয়।
হাসুর মা নাম্বার মিলিয়ে দেখে হুবহু তার মোবাইল নাম্বার। তার নাম্বারের শেষে নয়, আর মেয়েটির মোবাইল নাম্বারের শেষে ছয়। হাসুর মা বলল, এই মাইয়া তোমার নাম্বার তো দেখি আমার নাম্বারের সাথে মিল আছে। আমার নাম্বারের শেষে নয় তোমারটা ছয়।
-- এবার তা হলে বুঝতে পেরেছি। হাসু ভাই আপনাকে কল করতে গিয়ে ভুলে নয় এর জায়গায় ছয় টিপেছে তাতেই আমার মোবাইলে রিং বেজেছে।
এ কথা শুনে হাসুর মা সুর নরম করে বলল, এইবার বুঝবার পারছি, এই নয় ছয়-এর গন্ডগোলের লাইগা এই অবস্থা হইছে। ঠিক আছে মা যামু কি যামু না চিন্তা কইরা লই।
মেয়েটি সালাম দিয়ে মোবাইল রিং কেটে দিল। হাসুর মা মোবাইল ছেড়ে দিয়ে হাসুর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। হাসুর মা এক পলকে হাসুর দিকে তাকিয়ে থাকা দেখে হাসু আগ্রহ নিয়ে বলল, মাইয়ার সাথে কথা কয়া কি বুঝলা মা?
-- মাইয়াডারে খারাপ মনে হইল না। তয় আমরা গেলে ও ঢাকা দেখার জন্য আমাগো বাসায় বেড়াইতে আইবো।
-- হাসু খুশি হয়ে বলল, তাইলে মা কবে যাইবা?
-- চিনিনা যানিনা কেমনে যাই?
হাসু অতি উৎসাহী হয়ে বলল, আরে মা চেনোন লাগবো না, মাইয়ার সাথে কথা কয়া বুঝবার পারছি মাইয়ার স্বভাব চরিত্র খারাপ না।
হাসুর কথা শুনে মায়ের চোখেমুখে চিন্তার ছাপ ফুটে উঠল। মায়ের চিন্তিত ভাব দেখে হাসু বলল, মা, মাইয়াডার সাথে কথা কয়া কি বুঝলা? মাইয়াডা কি খারাপ?
-- না রে বাজান, খারাপ না।
-- আমি কইছি না, মাইয়ডা ভদ্র, গাইল দিবা না। গাইল দিলে কেমন অপমান হইতাম। তয় মা, আমি কিনতু যশোর বেড়াইবার যামু। আমি কোনদিন গ্রামে যাই নাই, গ্রাম দেখবার যামু।
-- মাইয়াডাও তো কোনদিন ঢাকা দেখে নাই, ঢাকা দেখবার আইবো।
-- তাইলে তো ভালই হয়। আমরা যশোর যামু হেরা ঢাকা আইবো।
-- বুঝছি--রে পাগোল পোলা, এবার ঘুমা, আর রাত জাগনের দরকার নাই। বলেই সবাইকে রুম থেকে চলে যেতে বলল।
পরদিন কোন ফোন আসল না এরাও আর ফোন করল না। রাতের বেলা হাসু নিজেই মেয়েটির নাম্বারে মায়ের সামনে টেলিফোন করে বলল, বোইন আমরা কিন্তু যশোর আইতেছি। আপনারা রেডি থাইকেন। মায় রাজি হইছে।
অপর প্রান্ত থেকে কি বলল বোঝা গেল না। হাসু শুধু ঠিক আছে ঠিক আছে বলে ফোন কেটে দিল।
হাসুর মা ছেলের কান্ড দেখে অবাক হয়ে চেয়ে রইল।

(ছবি - অন্তর্জাল)
প্রথম পর্ব পড়ার জন্য নিচে ক্লিক করুন- -
রং নাম্বার নয় ছয়
রং নাম্বার নয় ছয় (২)

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: শামচুল হক ,




চলুক । দেখি ঢাকা আর যশোরের দ্বিপক্ষীয় কি কি সমঝোতা হয় ........................

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩১

শামচুল হক বলেছেন: আহমেদ জী এস ভাই, গুরু হিসাবে আপনাদের পাশে পেলে আমি খুব উৎসাহ পাই, এখানেও আপনার মন্তব্য পেয়ে উৎসাহিত হলাম।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৯

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: বেনামি মেয়াটা কোন নামই পেল না! আই মিন মেয়াটার নাম জানার কিউরিসিটা থেকেই গেল!

শুরু থেকে শেষ পরযন্ত একটা চমকের প্রত্যাশা ছিল!! তবে লেখক সেটি লুকিয়েই রাখলেন! হয়তো পাঠক ধরে রাখার কৌশল হবে এটা!! :)

এখন পরযন্ত ডাবল মাইনাস মেয়াবাই!! :)

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩২

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, আপনার গঠনমূলক সুন্দর মন্তব্য পেয়ে খুবই উৎসাহিত হলাম। অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৯

বিজন রয় বলেছেন: এত রং নাম্বার আসে কোথা হতে!

তার আবার বেয়াইনের হাতে!

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫১

শামচুল হক বলেছেন: হে হে হে এখানেই তো কবি নিরব। ধন্যবাদ ভাই, রসালো মন্তব্য পেয়ে আনন্দিত হলাম।

৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৬

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: এইটা কি ঢাকাইয়া টোন। কখনো গ্রামে যায় নাই যে, তার মুখে কেমন যেন শোনায়। পরের পর্ব পড়বো...

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০৬

শামচুল হক বলেছেন: কিছু পুরান ঢাকাইয়া আছে তারা জন্ম থেকেই ঢাকায় মানুষ, গ্রামে তাদের আত্মীয় স্বজন না থাকায় গ্রামে যাতায়াত নাই এবং চলার পথে গ্রাম দেখলেও গ্রামে দুই এক রাত থাকার সৌভাগ্য হয় নাই। এরকম কিছু পরিবারের সাথে আমার পরিচয় আছে সেই কল্পনা থেকেই লেখা। ধন্যবাদ আপনাকে।

৫| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫৬

শায়মা বলেছেন: সেই গল্পের খবর কি ভাইয়া!!!!!!! :(

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:১৭

শামচুল হক বলেছেন: আমি খুব ব্যাস্ত থাকায় সময় পাচ্ছি না, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ওই গল্পের পরের পর্ব দিব। ধন্যবাদ বোন আমি খুব খুশি হলাম গল্পটির প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করায়।

৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৬

ওমেরা বলেছেন: আমিও কখনো গ্রামে যাইছিলাম না, এবার দেশে গিয়ে আমার আপুর শশুর বাড়ি গিয়েছিলাম , রাজবাড়ি জেলায় ।

গল্পটা ভালই লাগছে, চলুক সাথে আছি।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:০৩

শামচুল হক বলেছেন: অনেকেরই হয়তো শিকড় গ্রামে, কিন্তু বাবা মায়ের শহরে কর্মস্থল হওয়ায় একটা পর্যায়ে শহরে বসবাস করতে গিয়ে আর গ্রামে যাওয়া হয়ে উঠে না, তখন শহুরে ছেলে মেয়েদের কাছে গ্রাম হয়ে উঠে পিকনিক স্থান। এমনই হয়তো আপনার জীবনেও হয়েছে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যর জন্য।

৭| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার গল্প বুঝার জন্য আমাকে ব্লগারদের কমেন্ট পড়তে হচ্ছে।

০২ রা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯

শামচুল হক বলেছেন: আপনি ব্লগের বয়স্ক এবং বুঝমান মানুষ, আপনি যেভাবে গল্প বুঝতে পারেন সেভাবেই পড়েন অসুবিধা নাই। ধন্যবাদ

৮| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২২

হাসনাত সিদ্দিকী মুরাদ বলেছেন: ভালো লাগলো অনেক। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম...

০২ রা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৪৩

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, শুভেচ্ছা রইল।

৯| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৪১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আচ্ছা !!
এতখানি !!
পড়লাম ভাইয়া সব টুকু বাকি পর্বের অপেক্ষায়।

০২ রা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৪৪

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ বোন, আপনি পড়েছেন জেনে খুশি হলাম। শুভেচ্ছা রইল।

১০| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:০৬

মাআইপা বলেছেন: পড়ে গেলাম এবং পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

০২ রা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৪৪

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

১১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৫:১৫

মলাসইলমুইনা বলেছেন: পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করে রইলাম |আবার আসিব ফিরে এই .....

০২ রা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৪৫

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করায় অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

১২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৩

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: গল্প ভাল হয়েছে ++


চলুক......

০২ রা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৪৬

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

১৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৯

নীলপরি বলেছেন: গল্প ভালো লাগলো ।

০২ রা মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৪৬

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ বোন, অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।

১৪| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৫১

শায়মা বলেছেন: তারপর তারপর তারপর!!!!!!!!


লেখোনা কেনো ভাইয়া!!!!!!!!!!!!

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩৫

শামচুল হক বলেছেন: লিখবো বোন, আপনার জন্যই আমাকে অলসতা ত্যাগ করতে হবে। ধন্যবাদ বোন খুব খুশি হলাম।

১৫| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৯:৪৭

তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় আছি :)

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, আপনার আগ্রহের জন্য শুভেচ্ছা রইল।

১৬| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: গল্পে পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখতে পেরেছেন। গল্প ভাল লেগেছে। + +

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০২

শামচুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ খায়রুল আহসান ভাই, আপনার মন্তব্য পড়ে উৎসাহ পেলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.