নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বের বিশালতা, স্রষ্টার উদারতা, মানবতার মহিমা ....., সব কিছুতেই আমি মুগ্ধ।

প্লাবন২০০৩

জীবনের সবচেয়ে বড় সুবিধা জীবনকে কখনো চালাতে হয় না, এ চলতেই থাকে, চলতেই থাক...

প্লাবন২০০৩ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঈগলের পূনঃজন্ম

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:১৮


ঈগল, চিল কিংবা বাজ, যে নামেই ডাকা হোক না কেন, সমস্ত বিশ্বে ঈগলকে শক্তি, ক্ষিপ্রতা, বুদ্ধিমত্তা, স্বাধীনতা ও আগ্রাসী মনোভাবের প্রতীক হিসাবে দেখা হয় ।

এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ প্রজাতির ঈগলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে । এই ৬০ প্রজাতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য এক প্রজাতি হচ্ছে টেকো মাথা ঈগল, যদিও এর মাথা আক্ষরিক অর্থে মোটেই টেকো নয় বরং শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে এর মাথা ও লেজের অংশটি সাদা লোমে পরিপূর্ণ । একে অনেক স্থানে সাদা মাথা ঈগল বলেও ডাকা হয়ে থাকে ।

সকল প্রজাতির ঈগলের মধ্যেই একটি কমন বৈশিষ্ট হচ্ছে নিজের এলাকা কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা । এদের নিজ এলাকা কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক ও শত্রুকে কোনভাবেই প্রবেশ করতে না দেয়ার এ বৈশিষ্টের জন্য বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই এই ঈগল কে তাদের বিমান বাহিনীর প্রতীক হিসাবে ব্যবহার করা হয় । বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর মূল মন্ত্র "বাংলার আকাশ রাখিব মুক্ত" - ঈগল এর এই চরিত্রেরই অনুরূপ প্রতিফলন ।

আমেরিকার জাতীয় পাখি এবং জাতীয় প্রাণী হিসাবে অভিষিক্ত এ জাতের ঈগল । ১৯৯৫ সালের ১২ই জুলাই এদের নাম এর নাম বিপন্ন প্রজাতির প্রানীদের তালিকায় উঠে এসেছে ।

এ জাতের ঈগলের দেখা মিলে মুলত উত্তর আমেরিকা, কানাডা, এবং উত্তর মেক্সিকোর বিস্তীর্ণ অংশে । দুটি কারণে এ জাতের ঈগল বিখ্যাত – প্রথমতঃ এর বাসার সাইজ । এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় যে বাসাটি পাওয়া গিয়েছে তার সাইজ হচ্ছে দৈর্ঘ্যে ১৩ (তের) ফিট, প্রস্থে ৮.২ (আট দশমিক দুই) ফিট এবং বাসাটির ওজন ছিল প্রায় ১ (এক) মেট্রিক টন । ভাবুন তো একবার – এরকম সাইজের একটি বাসায় কয়জন মানুষ থাকতে পারবে? ও হ্যাঁ, পাখিটির সাইজ কিন্তু মোটেই তেমন বিশাল নয়, দুটি পাখা প্রসারিত অবস্থায় এর দৈর্ঘ্য গড়ে ২ (দুই) ফিটের মত এবং প্রাপ্ত বয়স্ক গড় ওজন ৪ (চার) কেজি । এবার দেখুন এই সাইজের ঈগলের কি সাইজের বাসা !! আর তা তো হবেই, রাজকীয় পাখি বলে কথা !!

দ্বিতীয়তঃ আরেকটি কারণে এরা বিখ্যাত, আর তা হোল একে ঘিরে হাজার বছরের পুরনো একটি মিথ (গল্প), যা ঈগলের পুনঃজন্ম (Eagle Rebirth) হিসাবে চলে আসছে, যা হয়ত অনেকেই পড়ে থাকবেন । পাঠকের সদয় অবগতির জন্য মিথটি নীচে হুবহু বাংলায় অনুবাদ করে দেয়া হলঃ


টেকো মাথা ঈগল প্রায় ৭০ বৎসর পর্যন্ত বাঁচে, কিন্তু এই দীর্ঘসময় বাঁচার জন্য প্রতিটি ঈগলকে জীবনের একটা সময় ভীষণ কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয় ।

৪০ (চল্লিশ) বছর বয়সে পৌঁছানোর পর একটি ঈগল এর পায়ের নখগুলো আড়ষ্ঠ হয়ে যায়, সেগুলো আর ইছামত নাড়াচাড়া করা যায় না, শিকার ধরার মত উপযুক্ততা নখগুলো হারাতে থাকে ।

এর লম্বা ধারালো ঠোট ক্রমশঃ বাঁকা হতে থাকে এবং এমন বাঁকা হয়ে যায় যে শিকার এর গোস্ত ছিঁড়ে খাবার মত উপযুক্ততা ঠোঁট হারাতে থাকে ।

বিশালাকৃতির ভারী ও শক্তিশালী ডানাগুলো তাদের পুরু ও পুরাতন পালকের ভারে জর্জরিত হতে থাকে, অবাধ ও দ্রুত গতির ওড়ার উপযুক্ততা ডানা গুলো হারাতে থাকে ।

ঈগলের সামনে থাকে শুধু দুটি রাস্তা - প্রথমতঃ হয় মৃত্যুকে বরণ করে নেয়া, অথবা দ্বিতীয়তঃ একটি দীর্ঘ সময়ের কঠিন অগ্নি পরীক্ষার সম্মুখীন হওয়া যা মৃত্যু থেকেও কষ্টকর, এর থেকেও ভয়ঙ্কর ।

প্রায় সব ঈগলই বেছে নেয় দ্বিতীয় রাস্তাটি, যে স্বভাবটিই তাদের করে তোলে অনবদ্য, অদম্য ও দুঃসাহসিকতার প্রতীক হিসাবে ।

প্রথম কাজটিই তার সব কিছু ত্যাগ করা - তার বাসস্থান, তার এলাকা, তার রাজত্ব সব কিছু ছেড়ে নির্জন কোন পর্বত চূড়ায় চলে যাওয়া ।


সেখানে গিয়ে প্রথমে তার বাঁকা ও অনুপযোগী হয়ে যাওয়া ঠোঁট গুলোকে পাথরে আঘাত করতে থাকা, ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ পর্যন্ত না ঠোটগুলো গোঁড়া থেকে ছিঁড়ে বের হয়ে আসে ।

এরপর অপেক্ষা নতুন ঠোট গজানোর জন্য, সেগুলো বড় এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠার জন্য ।


এরপর নতুন ঠোট গজিয়ে বড় হয়ে ওঠার পর প্রথমবারের মত কাজে লাগানো - তার আড়ষ্ঠ হয়ে যাওয়া নখগুলো তুলে ফেলা । একটি একটি করে দুপায়ের নখগুলো গোঁড়া থেকে তুলতে থাকা যতক্ষণ পর্যন্ত না সবগুলো নখ তোলা হয়ে যায় ।


এরপর আবার অপেক্ষা দুপায়ের সবগুলো নখ পরিপূর্ণ, তীক্ষ্ণ, ধারালো হয়ে উঠার ।

এরপরের কাজ ডানা দুটি থেকে একটা একটা করে পালক তোলা, আর হ্যাঁ, সম্পুর্ণ গোঁড়া থেকে, যাতে পুরাতন জীর্ণ শীর্ণ পালক গুলোর কোন অস্তিত্ব আর না থাকে ।


অতঃপর আবার অপেক্ষা, রাজকীয় দুই ডানা অদ্ভুৎ সুন্দর পালকে ভরে যাবার জন্যে ।

এবার কষ্টের দিন শেষ, আবার আকাশে ডানা মেলা আকাশের রাজা – ঈগলের । আকাশে আবার তার অস্তিত্ব জানান দেয়া – আমি এসে গেছি.........।


যদিও এর পেছনে লেগে গেছে পাঁচ পাঁচটি দীর্ঘ মাস... কিন্তু এনে দিয়েছে আগামী আরও ত্রিশটি বছর – আকাশে আবার রাজত্ব করার ।

আমাদের জীবনেও এমনি পরিবর্তন দরকার হয়ে পড়ে যখন পুরনো দুঃস্মৃতি, পুরনো বদভ্যাস, অশুভ সংস্কার গুলি আমাদের ভাল ভাবে বেঁচে থাকার পথে বাঁধা হতে থাকে প্রতিটা মূহুর্তে । তখন সামনে থাকে দুটি রাস্তা – অসহায়ের মত আত্মসমর্পন করা অথবা সব কিছু ভেঙ্গে পরিবর্তন করে নেয়া । আপনার জীবন, আপনিই সিদ্ধান্ত নিন কি করবেন তখন ...।


রেফারেন্সঃ
http://www.biologyjunction.com/eagle_rebirth.ppt
http://www.en.wikipedia.org/wiki/Eagle
http://www.snopes.com/critters/wild/eaglerebirth.asp
http://www.hoax-slayer.com/rebirth-of-the-eagle-hoax.shtml

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:২৫

আছিফুর রহমান বলেছেন: ভাল লাগছে

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:১৮

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:৫৬

মনিরা সুলতানা বলেছেন: খুব ভালো তো
আসলে এদের জীবন যাপনের যে আভিজাত্য
মিথ টা এদের সাথে মানিয়ে যায়।
লেখা অনেক ভালো লাগছে।

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:২৭

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: আমার দ্বিতীয় লেখা এটি, আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে শুনে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।

৩| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:২০

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। পোস্টে যদি রেফারেন্স বা যে বই বা যে সাইটের ভিত্তিতে এই পোস্টটি তৈরি করেছেন, তা যদি উল্লেখ্য করতেন, তাহলে পোস্টটা অনেকেই রেফারেন্স হিসেবেও ব্যবহার করতে পারতেন।

ধন্যবাদ।

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৫৭

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: প্রশংসার জন্য ধন্যবাদ । এ মিথটি আসলে হাজার বছর ধরে একটি অনুপ্রেরণাদায়ক উদাহরণ হিসাবে প্রচলিত হয়ে আসছে, তাই মূল পোষ্টে এর রেফারেন্স গুলো দেয়া হয়নি । কারণ অনেকেই কোন মিথ কে অনুপ্রেরণা হিসাবে মানতে নারাজ । আপনার অনুরোধে রেফারেন্স গুলো দিলামঃ
http://www.biologyjunction.com/eagle_rebirth.ppt
http://www.en.wikipedia.org/wiki/Eagle
http://www.snopes.com/critters/wild/eaglerebirth.asp
http://www.hoax-slayer.com/rebirth-of-the-eagle-hoax.shtml

৪| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:৩৩

সুমন কর বলেছেন: ছবি ছাড়া এ ধরনের পোস্ট শতভাগ পূর্ণতা পায় না।

ভাল শেয়ার।

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:২৬

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ । ছবি পোষ্ট করে লেখাটি এডিট করে দিলাম ।

৫| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: ঈগলের রাজ দরবার.... হাহা ৷

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: ঈগলের রাজ দরবার.... হাহা ৷

৬| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:১৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: বাহ চমৎকার সব ছবি দিছেন তো ...
দ্বিতীয় পোষ্ট মানে আপনার লেখার হাত খুব ভাল ...

শুভ কামনা :)

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: অসংখ ধন্যবাদ

৭| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৩২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আমাদের জীবনেও এমনি পরিবর্তন দরকার হয়ে পড়ে যখন পুরনো দুঃস্মৃতি, পুরনো বদভ্যাস, অশুভ সংস্কার গুলি আমাদের ভাল ভাবে বেঁচে থাকার পথে বাঁধা হতে থাকে প্রতিটা মূহুর্তে ।

তখন সামনে থাকে দুটি রাস্তা – অসহায়ের মত আত্মসমর্পন করা অথবা সব কিছু ভেঙ্গে পরিবর্তন করে নেয়া ।

রাজকীয় পুন:জনম বটে!

দারুন মিথ। যে শিখতে চায় জ্ঞান নিতে চায় সে সবকিছুতেই তা খুজে পায়!

+++

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ

৮| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:১২

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
চমৎকার উপস্থাপনা।++

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:০৫

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ

৯| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৩২

ধুম্রজ্বাল বলেছেন: চমৎকার লেখনী। ছবি দিয়ে আরও হ্রদয়গ্রাহী করেছেন।
অভিনন্দন কারন ২য় লেখাতেই কাল্পনিক_ভালোবাসা,বিদ্রোহী ভৃগু দের মত জাত লেখকদের দৃষ্টি পড়েছে।
লেখা চলতে থাকুক সতত

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:০৬

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.