নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইচ্ছা মানব, দানবদের ধ্বংস করি

পলাতক মুর্গ

পলাতক মুর্গ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাজউদ্দিন জানালেন, পাকিস্তানিরা, যাদের সঙ্গে ম্যাকনামার বন্ধুত্ব ছিলো তারা ৭ লাখ গরু খেয়ে ফেলেছে। বাংলাদেশ এক ডলারও সহায়তা চায় না, ৭ লাখ গরু চায়।

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:০৮

বাংলাদেশ সদ্য স্বাধীন একটি শিশু রাষ্ট্র হলেও অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে আন্তর্জাতিক প্রভাব বাড়াতে শুরু করে এসময়। বঙ্গবন্ধু হয়ে পড়েন একটি ব্র্যান্ড। যে দেশটিকে বলা হয়েছিলো তলাহীন ঝুড়ি, ভবিষ্যত নিয়ে সে দেশটি ছিলো খুবই পরিস্কার। একটি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। যে রাষ্ট্রের মুলভিত্তি হবে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র। কিন্তু আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ নিজের প্রভাব বাড়াতে যতটা সচেষ্ট ছিলো, সচেষ্ট ছিলো না আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে। অবশ্য দেশ তখন যুদ্ধবিদ্ধস্ত। খাদ্য উৎপাদন অস্বাভাবিক কমে গেছে। খাদ্য উৎপাদন কমে যাবার কারণ ছিলো অদ্ভূত। এদেশে কৃষকের মূলশক্তি গরু। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা ৩০ লাখ মানুষ হত্যার পাশাপাশি ৭ লাখ গরুও হত্যা করে। এর বাইরে প্রচণ্ড দূর্নিতী, খাদ্য আমদানির সোর্সের অভাব, বৈদেশিক মুদ্রার অভাব টেনে আনে দূর্ভিক্ষ। এসময়কার একটি মজার ঘটনা প্রণিধানযোগ্য। ঢাকায় আসবেন বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট রবর্ট ম্যাকনামারা। তিনি ইয়াহইয়া খানের ব্যক্তিগত বন্ধু ছিলেন। কট্টর রিপাবলিকান এই লোক একসময় যক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। ছিলেন ফোর্ড মটরস এর পরিচালক। তিনি সবচেয়ে বেশি সময় বিশ্বব্যাংকের প্রধানের পদ অলঙ্কৃত করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি একাধিকবার ঢাকা এসেছেন। চোখের সামনে গণহত্যা দেখার পরেও পাকিস্তানকে দিয়েছেন বিনা সুদে ঋণ। তখনকার প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন নিজ চোখে এসব দেখেছেন। দূর্ভিক্ষের সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী। একটু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে তার জান বের হয়ে যাচ্ছেন। ম্যাকনামারা আসছেন, তাকে জানানো হলো ম্যাকনামার কাছে ঋণ চাইতে হবে। তাজউদ্দিন সিদ্ধান্ত নিলেন, এই মানুষটা গণহত্যার সমর্থক। এর কাছে সাহায্য চাওয়া যাবে না। কোনওভাবেই না। ম্যাকনামারা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তাজউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলেন, হিজ এক্সেলেন্সির কি ধরণের সহায়তা লাগবে। তাজউদ্দিন জানালেন, পাকিস্তানিরা, যাদের সঙ্গে ম্যাকনামার বন্ধুত্ব ছিলো তারা ৭ লাখ গরু খেয়ে ফেলেছে। বাংলাদেশ এক ডলারও সহায়তা চায় না, ৭ লাখ গরু চায়। ম্যাকনামারা বললেন গরুর দাম দিলে হবে না? তাজউদ্দিন বললেন, না, গরু লাগবে, মাঝারি আকারের গরু। কিছুটা অপমানিত হয়ে ম্যাকনামারা বললেন আর কি লাগবে। তাজউদ্দিন জানালেন, গরু খাবার সঙ্গে পাকিস্তানিরা গরুর দড়িও পুড়িয়ে ফেলেছে, ৭ লাখ পাটের দড়ি লাগবে। পাট চাইলে বাংলাদেশ দিতে পারে বিশ্বব্যাংককে। বিশ্বব্যাংক কিনে নিতে পারে। তবে বাংলাদেশকে দড়ি কেনার অর্থ দিলে হবে না। দড়িই দিতে হবে। পরেরদিন বরখাস্ত হন তাজউদ্দিন আহমেদ।

মুলঃ আরিফুজ্জামান

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.