নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিশ্চিত গন্তব্য

ভণ্ড সাধক

আমি কেউ না

ভণ্ড সাধক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আণুবীক্ষণিক দানবের দাপটে ভাঙছে মানবিক মূল্যবোধ ও অনুশাসন

০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৬:৫২



সর্বগ্রাসী করোনা কেবল মানুষের প্রাণহরণই করছে না, পাল্টে দিচ্ছে মানুষের যুগযুগান্তের বিশ্বাস, রুচি-অভ্যাস. স্বভাব-প্রবৃত্তি এবং সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন। আদিম অন্ধকার থেকে ওঠে আসা আণুবীক্ষণিক দানব কোভিট-১৯ আমাদের পৃথিবী নামের গ্রহটার খোলনলচে পাল্টে দিচ্ছে। মাত্র তিন মাসে আমাদের চেনা পৃথিবীটা কেমন অচেনা অমানবিক হয়ে গেছে।

আমাদের এই শহরে রাস্তার ধারে লাশ পড়ে থাকে। এই নগরীর আবেগপ্রবণ পরোপকারী মানুষেরা আহারে বলে হামলে না পড়ে আতঙ্কে দূরে সরে যাচ্ছে। নিথর দেহে স্পন্দন আছে কিনা দেখতে কেউ এগিয়ে যাচ্ছে না বা মুখটা ঢেকে দিচ্ছে না-- এমন ঘটনা অভাবনীয় অ্যাবসার্ড। জুরাইনের নতুন রাস্তায় ওই লাশটি দুইঘণ্টা পড়ে ছিল। মৃত ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত কিনা পরে আর জানা যায়নি। তবে এটা নিশ্চিত, তিনি মানুষই ছিলেন।


ধর্মীয় অনুশাসনে ইসলামের সূতিকাগার সৌদির চেয়েও একধাপ কঠোর ইরান। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে মদপান নিষিদ্ধ। ইসলাম ধর্মেও এটি হারাম। ইরানের ইসলামী দণ্ডবিধির ২৬৫ ধারা অনুযায়ী দেশটির কোনো নাগরিক মদপান করলে শাস্তি হলো ৮০ টি দোররা। ওই কঠোরতাকে ফসকা গেরো বানিয়ে ছাড়লো করোনাভাইরাস। মদ পান করলে দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয় না, এমন একটি গুজবে কান দিয়ে ধর্মপ্রাণ ইরানিরা পুরুষ-নারী জোয়ান-বুড়ো নির্বিশেষে মদ্য পানে হামলে পড়লো। ভাইরাস পয়জনিংয়ে না, ৬০০ মানুষ মারা গেল মদ্যপানে বিষক্রিয়ায়। কেয়ামত নাজিল হলেও ইরানে মদের এতটা কদর হবে, কে ভেবেছিল!

যুক্তরাজ্যের অনেক মানুষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, ব্রিটিশ সম্রাজ্যই বিশ্বে আধুনিক সভ্যতার পত্তন করেছে। ওই দাবি বাদ দেওয়া যাক, ব্রিটেনের মানুষকে বিশ্ববাসী বাস্তববাদী বলেই জানে। দেশটির মার্জিত মনোভাবের অধিকারী মানুষের যুক্তি নির্ভরতা করোনার কবলে ভেঙে খান খান হয়ে গেছে। এই মহামারিতে ব্রিটিশরা গুজবে প্রভাবিত হচ্ছে। কেবল তাই নয়, গুজবে কান দিয়ে তারা হয়ে ওঠছে মারমুখি। করোনাভাইরাসের বিস্তৃতির সঙ্গে ইন্টারনেটের ফাইভ-জির সম্পর্ক আছে, এই অযৌক্তিক তথ্যে বিশ্বাস করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাজ্যে। দেশটির উত্তেজিত জনতা বেশ কয়েকটি ফাইভ-জি মোবাইল ফোন টাওয়ার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।


বেওয়ারিশ লাশের প্রসঙ্গ দিয়ে শুরু করেছিলাম, করোনায় মৃত লাশের ওয়ারিশদের বেদনার প্রসঙ্গ দিয়ে ইতি টানি। মৃত বাবার মরদেহ জড়িয়ে ধরে সন্তান কাঁদবে না, মৃত্যুর আগে স্বামী ‍প্রিয়তমা স্ত্রীর হাতের পানি পান থেকে বঞ্চিত হবে, হৃদপিন্ডের টুকরোর চেয়ে দামি শিশুটার নিথর দেহটা বুকে জড়িয়ে ধরতে জনক-জননী ভয় পাবে... হে মাবুদ এ কোন অভিশাপ ছুঁড়ে দিলে আমাদের সবুজ পৃথিবীতে!

এই মৃত্যু উপত্যাকা আমার না। নিষ্ঠুরতার দাসত্ব থেকে মুক্তি মিলবে কবে!

লেখক : বিপুল হাসান, বার্তা প্রধান, পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউ

আণুবীক্ষণিক দানবের দাপটে ভাঙছে মানবিক মূল্যবোধ ও অনুশাসন

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:০৫

সাইন বোর্ড বলেছেন: কঠিন সময় পার করছি আমরা...

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:০৬

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: উফ! এগুলো ভাবতেই অনেক কষ্ট লাগে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাযত করুণ।

৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৫০

সুপারডুপার বলেছেন: দেশের মানুষরা আজব প্রকৃতির। বেঁচে থাকতে সর্দি, কাশি, হাঁচি থেকে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সের ধার ধারে না, কিন্তু মরে গেলে অতি বেশি মাত্রায় সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স মেনে চলে অথচ মৃত মানুষ কোনো হাঁচি কাশি দেয় না।

৪| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:২৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: দেশে চাল চোর ধরা পড়ছে ২০৪ জন যা করোনা রোগী হতে বেশী।কোনটা মারাত্মক , করোনা না আমরা।

৫| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: শুনুন, আমাদের দেশটা ছোট। মাউষ বেশি। দুষ্টলোক বেশি। তাও করোনা এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.