নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"মস্তিষ্ক বিকৃত, কিন্তু বিক্রীত নয়\" (never care for what they say......)

পুরোনো পাপী

"তোমার মনের মইধ্যে আলেকের বাস, সে না কাউরে শোনে, না কাউরে বোঝে। তুমি যা বোঝাও সে তাই বোঝে।"

পুরোনো পাপী › বিস্তারিত পোস্টঃ

লালন (২০০৪) ~বনাম~ মনের মানুষ (২০১০)

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:১৫

{ ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে বিশ্লেষণের অপচেষ্টা }



পোষ্টের আগেই সতর্ক বাণীঃ কাহারো বাউল নিয়া কুনু প্রকারের চুলকানি খাউজানি থাকলে এইখানে আইসা লুল না ফ্যালানোই ভালো।








“বাড়ির পাশে আরশী নগর

সেথা পড়শী বসতকরে,

আমি একদিনও না দেখিলাম তারে”




আপনি কে?? এই প্রশ্ন যদি কেউ আপনাকে করে এর কি উত্তর দেবেন?? আসলেই কি আপনি জানেন আপনি কে? আপনার ভিতরের মানুষটিকে কি আপনি চিনতে পেরেছেন এতবছর অতিবাহিত করার পরেও?? চিন্তা করে দেখুন একবার।

এই নিজেকে চিনতে গিয়েই “ফকির লালন সাঁই” এর জন্ম।



“মিলন হবে কত দিনে

আমার মনের মানুষের সনে”


গানটা যখন শুনতে শুনতে মুখস্ত তখন বোঝার বয়স হয়নি আসলে গানের মর্মার্থ কি। তবে ছোট বেলায় আমার বাবার লালন সাঁই এর গানের প্রতি আকর্ষণ থেকেই আমার লালনের গান শোনার শুরু। আর সেই সাথেই অনেকগান শোনা। তারপরে অল্প কিছুটা বড় হলাম যখন ২০০৪ সালে তানভীর মোকাম্মেলের “লালন” সিনেমাটি মুক্তি পায়। মুক্তির কিছুদিন পরে ঈদের সময় মনেহয় কোন এক চ্যানেলে দেখায় সিনামাটি। আমার বাবার সাথে আমি পুরাটা সিনেমাই দেখি। অসাধারণ কিছু গান যা দিয়ে মন ভরে যায় তখন। তখনও মনেহয় ঠিক মতন কিছুই বুঝি না। গত কয়েক সপ্তাহ আগে হঠাৎ মনে হল “লালন” সম্পর্কিত কিছু দেখবো। স্বাভাবিক ভাবেই “মনের মানুষ” নামক বাংলাদেশ আর ইন্ডিয়ানদের সম্মিলিত চেষ্টায় (আসলে গান গুলা ইন্ডিয়ান দের সংগ্রহে থাকলে মনেহয় বাংলাদেশীদের ছাড়াই বানাতো, – ব্যাক্তিগত মত) বানানো সিনামার কথা মনেহয়। আশা নিয়া সিনামা দেখতে বসাও হইলো। তারপরে যা দেখলাম তাতে গান ছাড়া আর প্রসেনজিৎ এর অভিনয় ছাড়া আর কিছুই মনে ধরে নাই বললে বোধকরি আমার বেশিই বলা হবে। কাহিনীর সবকিছুই কেমন যেন কোন কিছুই মিলাতে পারছিলাম না। তারপরে “লালন” সিনেমাটি আবার যোগার করা আর সাথেসাথেই দেখেফেল্লাম। আর তারপরে গৌতম ঘোষকে গালি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই মনে আসে নি।



লালন সাঁই, বাউল আর ফকির দুইটি নামেই বেশ পরিচিত। এই উপমহাদেশে প্রথম “মহাত্মা” উপাধী দেয়া হয় তাকে। তার নিজের জীবন সম্পর্কে কোন সঠিক বিবরণ পাওয়া যায় না। তিনি হিন্দু না মুসলিম ছিলেন তা কারোই জানা ছিল না। তার নিজস্বতা ছিল মানব ধর্মে আর অসাম্প্রদায়িকতায়। মানুষের মাঝেই লুকিয়ে আছে তার নিজের ঈশ্বর, এটিই ছিল লালনের মূলনীতি। এই নীতি তার বিভিন্ন গানের মাধ্যমেই চলে এসেছে যার একটি—

“মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপারে তুই মূল হারবি

মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি।”




শুধু তাই নয়, লালন তার নিজগুনেই আয়ত্ত করেন তান্ত্রিকতা, হিন্দু শাস্ত্র সহ ইসলামের বিভিন্ন দিক। এইসকল ব্যাপার আমরা তার সৃষ্টি দেখেই সহজে ধারণা করতে পারি। কিন্তু এইসকল ব্যাপারের কিছুই আমার আলোচ্য বিষয় নয়। ব্যাপারটা হল আমরা যেকোন মনগড়া গল্প নিয়ে সিনামা বানাতেই পারি। কিন্তু সেই মনগড়া ব্যাপারটা যদি হয় “ফকির লালন সাঁই” তখন মেজাজ অসাধারণ রকমের খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক। যেই সিনেমা দেখে দর্শকরা শুধু ভুল কিছুই জানবে লালন সাঁই সম্পর্কে। ভুল জানবে তার দর্শন সম্পর্কে। কিছু কাল্পনিক চরিত্র যোগ করা হয়েছে শুধুই “মাল-মসল্লা”(শব্দটা ব্যাবহার করতে চাইনি, কিন্তু যা বুঝাতে চাই তার জন্যে এর চেয়ে উপযুক্ত কিছু পাইনি) বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই মাত্র। আর পাওলী দাম কে কি কাস্ট করাই হয়েছিল তাহার আবেদনময়ী চরিত্রের কারণে !! সিরাজ সাই এর চরিত্রের -“নারী কেবল আনন্দ সহচরী” এই বাক্য উচ্চারণের সাহস কিভাবে হল আমার বোধগম্য হয়নি। এছাড়াও “আকাশটা কাপছিল ক্যান” টাইপের একটা গান ব্যাবহ্রিত হয়েছে যা কিনা লালনের গান নয়। আর এই সিনেমা দেখে সাধারণ মানুষের কি ধারণা হবে? লালনের সাথীরা বা লালন ইচ্ছারূপ যৌনাচারে লিপ্ত হতে পারে। যা কিনা সম্পুর্ণ রূপে ভুল ধারণা। আর এক জায়গায় দেখা গেল লালন সাঁই তার সাথীদের নিয়ে একতারা ফেলে লাঠি নিয়ে মারামারি শিখছে !!! সম্পুর্ণ হাস্যকর এই ব্যাপারটা কারো মাথায় কিভাবে আসে লালনকে চিত্রায়িত করতে গিয়ে !!! এই সকল জিনিষ দেখার পরে আর আগানোর ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু শুরুতেই যে বললাম আমাকে আকর্ষণ করে লালনের গান গুলোই। সেই টানেই ঝুলে রইলাম। অন্তত পক্ষে গান গুলো আসলেই বাউলদের দিয়েই গাওয়ানো হয়েছে এতেই আমি খুশি। কোনো হিপ-হপ টাইপের ব্যান্ড দিয়ে করালেও অবাক হওয়ার কিছু ছিল না।



এবার আসি “লালন” সিনেমাটি তে।

তানভীর মোকাম্মেলের “লালন” সিনেমাটি নিয়ে বলার কিছু নেই। ভালো লেগেছিল আগেও। এবার দেখার পরে যেন আরো ভালোই লাগলো। অন্তত পক্ষে বিকৃত মানিসিকতার মানুষ হিসেবে লালন কে উপস্থাপন করেননি মানুষের কাছে। রাইসুল ইসলাম আসাদের অভিনয় অসাধারণ ভালো লাগলো লালন চরিত্রে। এই চলচ্চিত্রে বেশ কিছু সত্যিকার বাউল দিয়ে অভিনয়ও করানো হয়েছে, যা বেশ সাবলীল মনে হয়েছে। আর গানের কথা কি বলবো। বলার মতন কিছুই নাই। শুধু মন দিয়ে শুনতে হবে। তবে এই সিনেমাটি দেশে যতটানা মানুষ পছন্দ করেছে দেশের বাইরে তারচেয়েও বেশী সারা ফেলেছিল সেই সময়ে। শুধু দেশের বাইরে সারা পাওয়ার একটাই কারণ। তখনকার বাংলা সিনেমার যে বিভীষিকাময় সময় যাচ্ছিল তাই। তা আর মনে করতে চাই না। মানুষ হলে গিয়ে সিনেমা দেখা প্রায় ভুলেই গিয়েছিল।



আসলে এই পোষ্ট উদ্দেশ্যহীন। শুরুতে কি উদ্দেশ্য নিয়ে লিখতে বসেছিলাম এখন মনে নেই। পোষ্ট যেই দিকেই যাক “লালন” বেচে থাক শতাব্দীর পর শতাব্দী তার গান ও দর্শনের মাধ্যমে।

মাঝে মাঝে বাউল হইতে সাধ জাগে। কিন্তু সাহসে কুলায় না। হয়তো কোন একদিন সাহস যোগার হবে।



“লালন (২০০৪)”

পরিচালকঃ তানভীর মোকাম্মেল

চিত্রনাট্যঃ তানভীর মোকাম্মেল

ধরণঃ মিউজিক্যাল

নিবেদকঃ অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু

সঙ্গীতঃ সাঈদ সাবাব আলী আরজু

অভিনয়েঃ রাইসুল ইসলাম আসাদ, ইয়াসমীন তামান্না তিথি, শমী কায়সার, আজাদ আবুল কালাম, রামেন্দু মজুমদার, চিত্রলেখা গুহ সহ আরো অনেকেই।



মনের মানুষ (২০১০)

পরিচালকঃ গৌতম ঘোষ

চিত্রনাট্যঃ গৌতম ঘোষ, সুনীল গঙ্গোপ্যাধ্যায়(উপন্যাস)

ধরণঃ মিউজিক্যাল

প্রযোজকঃ গৌতম কুন্ড

সঙ্গীতঃ গৌতম ঘোষ

অভিনয়েঃ রাইসুল ইসলাম আসাদ, প্রসেনজিৎ, রোকেয়া প্রাচী, চঞ্চল চৌধুরী, পাওলী দাম, তাথৈ, হাসান ইমাম সহ আরো অনেকেই।



আরো অনেককিছুই জানতে পারবেন এইখানেঃ http://bn.wikipedia.org/wiki/লালন



✘✘✘ দয়া করে কোন বাংলাদেশী মুভির ডাউনলোড লিংক শেয়ার করবেন না। বাংলা মুভি সিনেমাহলে গিয়ে অথবা অরিজিনাল ডিভিডি কিনে দেখুন। দেশের চলচ্চিত্র রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করুন।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:৩০

মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষন ।

চঞ্চল আর প্রসেনজিতের অভিনয় + গানগুলো ছাড়া মনের মানুষ সিনেমার আর কোন কিছুই ভালো লাগে নি । পাউলি দামের অভিনয়টা যথেস্ট ন্যাকামি মনে হইছে ।

এই তুলনায় "লালন" অনেক অনেক ভালো ছিলো ।

পোস্টে প্লাস ।

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:৩৭

পুরোনো পাপী বলেছেন: শুধু ন্যাকামীই না, লালনের দর্শণের ভুল বিশ্লেষণ ছিল :(

২| ২০ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:৪১

C/O D!pu... বলেছেন: মনের মানুষ ভালো লাগে নি...

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:৫৪

পুরোনো পাপী বলেছেন: ালো লাগার কথাও না। লালন দেখেছেন?? না দেখে থাকলে দেখে ফেলুন। :)

৩| ২০ শে মে, ২০১৩ রাত ১:৩৫

ধূসর পানিপোকা বলেছেন: মুভি দেখার পর এই কথাগুলোই মনে হয়েছিলো ।আপনার সাথে একমত ।

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ১:৪১

পুরোনো পাপী বলেছেন: ধন্যবাদ :) মতপ্রকাশের জন্যে ;)

৪| ২০ শে মে, ২০১৩ রাত ২:১৮

এস আর সজল বলেছেন: নয়াপল্টনের অতীশ দিপঙ্কর ইউনিভার্সিটির পাশের গলি দিয়ে ঢুকে ভিতরের একটা সরু গলির ভিতরের একটা সাদাসিদা বাসায় নিভৃতে থাকেন শ্রদ্ধেয় অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ। আমার সেই বাসাটায় যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে অনেকবার। আমার সবচে ভালো বান্ধবীর মামা লাগেন উনি এবং এক-ই দালানে থাকে। রাইসুল ইসলাম আসাদের বাসার ঠিক বাইরে বেশ কয়েকটা ছবির পোস্টার, যদি আমি ভুল না হই ছবি দুইটা হচ্ছে "লালসালু" আর "লালন"।' লালন, পদ্মা নদীর মাঝি, লালসালু সহ আরও অনেক ছবিতে রাইসুল ইসলাম আসাদের অভিনয় অনবদ্য। আমার বেশ কয়েকবার সুযোগ হয়েছিল তার সাথে কথা বলার। অমায়িক একজন ব্যাক্তিত্ব এবং অসম্ভব শক্তিশালী একজন অভিনেতা উনি।

"লালন" ছবিতে রাইসুল ইসলাম আসাদের অভিনয়ের কাছে "মনের মানুষ" ছবিতে প্রসেনজিতের অভিনয় অনেকটা বাচ্চা বাচ্চা মনে হয়েছে। আর "মনের মানুষ" ছবিতে সিরাজ সাইয়ের উপস্থাপনটা ব্যাক্তিগতভাবে আমার পছন্দ হয়নি।

লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো ++++

২০ শে মে, ২০১৩ ভোর ৪:৩১

পুরোনো পাপী বলেছেন: "লালন" ছবিতে রাইসুল ইসলাম আসাদের অভিনয়ের কাছে "মনের মানুষ" ছবিতে প্রসেনজিতের অভিনয় অনেকটা বাচ্চা বাচ্চা মনে হয়েছে।

আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত :)

৫| ২০ শে মে, ২০১৩ রাত ২:৩০

শিপু ভাই বলেছেন:
গৌতম ঘোষের "পদ্মা নদীর মাঝি" দেখে যতটা মুগ্ধ হয়েছিলাম- "মনের মানুষ" দেখে তারচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছি। ফালতু !!!

২০ শে মে, ২০১৩ ভোর ৪:৩২

পুরোনো পাপী বলেছেন: ঘন্যভাবে লালন কে উপস্থাপন করেছেন :(

৬| ২০ শে মে, ২০১৩ রাত ৩:৪০

আমিই মিসিরআলি বলেছেন: আপনার লেখার সাথে সহমত,
আসলে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে 'মনের মানুষ' নির্মিত,
ঐ উপন্যাসেও লালন সাঁই সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নেই,সম্পূর্ণ খামখেয়ালীপনার উপর লেখা আর সিনেমার কথা তো বলাই বাহুল্য।

তানভীর মোকাম্মেল-উনি তো রীতিমত লালন সাঁইএর উপর গবেষণা করে তারপর ফিল্ম নির্মাণ করেছেন,১৯৯৬ সালে তাঁর নির্মিত 'অচিন পাখী' ডকুমেন্টারিটা দেখলেই বোঝা যায়

২০ শে মে, ২০১৩ ভোর ৪:৩৩

পুরোনো পাপী বলেছেন: খাম খেয়ালী করে কি আর "লালন" বোঝা যায় :(

"তোমার মনের মইধ্যে আলেকের বাস, সে না কারো কথা শোনে, না কাউরে বোঝে। তুমি যা বোঝাও সে তাই বোঝে।"

এইটাই হইলো সমস্যা :(

৭| ২০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:২৭

কাফের বলেছেন: দুইটাই দেখছি
মনের মানুষ ভালো লাগে নাই

২০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১:১৫

পুরোনো পাপী বলেছেন: জি ভাই আমারও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.