নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"মস্তিষ্ক বিকৃত, কিন্তু বিক্রীত নয়\" (never care for what they say......)

পুরোনো পাপী

"তোমার মনের মইধ্যে আলেকের বাস, সে না কাউরে শোনে, না কাউরে বোঝে। তুমি যা বোঝাও সে তাই বোঝে।"

পুরোনো পাপী › বিস্তারিত পোস্টঃ

Roman Holiday (1953) {One Of the best Classic Movie Ever}

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৮

http://www.imdb.com/title/tt0046250/







অনেকসময়ে অনেক গল্প বা উপন্যাসে অত্যাচারী রাজা অথবা রাণীর কথা সবাই পড়েছেন আশা করি। আমাদের গল্পও গুলোর রাজা অথবা রাণীদের অত্যাচারে সাধারণত দেখাযেত সাধারণ জনগণ রাজ্য ছেড়ে পালাতো। কিন্তু রাজা বা রাণী কখনো অন্যদের অত্যাচারে রাজ্য ত্যাগের ঘটনা বা গল্প বিরল। তেমনই এক বিরল ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন “রোমান হলিডে” সিনামার গল্পকার। রাজ্যের কাজের চাপে ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে রাণীর পলায়ন।



অনেকেরই মনে আশা আকাঙ্ক্ষা থাকে যদি রাজপুত্র হইতাম কিংবা যদি রাজকন্যা হইতাম। শতভাগ গ্যারান্টি দিয়া বলাযায়, এই সিনামা দেখার পরে আর কেউ সেই আশা করবেন না। যে যার স্থানেই সর্বেসর্বা। সেই কারণেই। রাজ্যচালনা বাহ্যিক ভাবে যেমনই দেখাক আসলেই তা পীড়াদায়ক। নাহলে অবশ্যই কেউ পালাইতো না। ;) তেমন এক রাজকন্যার গল্প “রোমান হলিডে”। যাকে খুব অল্প বয়সেই রাজ্যের ভার নিয়ে পার্শবর্তী দেশেগুলোর সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নানান দেশের নানা শহর ঘুরে আসতে হয় ইতালীর রোমে। সেখানে তার রূতিন মাফিক চলা, এত এত মানুষের সাথে দেখা করা এই সকল কাজ তার ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙ্গে দেয়। যে কারণে এক রাতে তিনি পালিয়ে যান তার স্থান থেকে। সেখান থেকেই কাহিনীর সুত্রপাত।







পুরো সিনামা সকলের দেখার আর পুরো সময় উপভোগ করার স্বার্থে কাহিনী বাকীটুকু বাদই রাখলাম। যাউকগা, ফাউ প্যাচাল পাইরা আর কি হবে। “রোমান হলিডে” আমার দেখা সিনেমা গুলোর মাঝে অবশ্যই অন্যতম, নাহলে আবার দেখতে যেতাম না। শুধু রোমান্টিক সিনেমা বললে ভুল হবে, যথেষ্ট কমেডি সমৃদ্ধ সিনেমাও “রোমান হলিডে”।



প্রধান চরিত্রদ্বয়ের, আসলে পুরো সিনেমাটিতে ২ টা চরিত্রই বেশি সামনা সামনি ছিল। তাই সবাই আসলে খুব বেশি মানুষ বা চরিত্র খুজে পাবেন না। তাদের অভিনয় অসাধারণ ছিল। সিনামা বানানোর বাজেট যা ছিল তার চেয়ে ২-৩ গুন খরচ হলেও সিনামাটি পরিচালক রঙ্গীন করে তৈরী করেননি একটা ফিল আনার জন্যে। কারণ রঙ্গীন করে তুললে নাকি নায়ক-নায়িকার ক্ষেত্রে দর্শক সঠিক ফিল পাবেন না। তার এই চেষ্টা বোধকরি সফলই হয়েছে।











তিনটি অস্কারসহ, গোল্ডেন গ্লোব ও আমেরিকান রাইটার্স গিল্ডের পুরস্কারও পায় এ ছবি। এছাড়াও আরো অনেক অনেক পুরস্কার অর্জন করে সিনেমাটি। এছাড়াও অনেক পুরস্কারের জন্যে নমিনেশনও পায়। হয়তো এত অর্জন বলেই সিনেমাটি নিয়ে কাটা ছেড়াও কম করেননি সুশীল সমাজ।



এই সিনেমা সম্পর্কিত কিছু বিশেষ তথ্যঃ



১. বেলজিয়ান অভিনেত্রী আড্রে হেপবার্ন এই ছবির মাধ্যমে হলিউড এবং সারাবিশ্বের নজর কাড়েন। এর আগে রেইনি ডে ইন প্যারাডাইস জাংশন ছবিতে তিনি অভিনয় করলেও এটাই তার প্রথম বড় চরিত্র। শুধু কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগই নয়, এ ছবির কল্যাণে তিনি অস্কার, নিউইয়র্ক ফিল্ম ক্রিটিক সার্কেল এবং বাফটায় সেরা অভিনেত্রীর ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জেতেন।



২. প্রথমে এ ছবি করার কথা ছিলো ফ্রাঙ্ক কাপরার। কাপরা তার ছবির জন্য ক্যারি গ্র্যান্ট ও এলিজাবেথ টেলকে ভেবেছিলেন। পরে ওয়েলারের কাছে এ ছবির প্রস্তাব আসে। নায়ক হিসাবে ক্যারি গ্র্যান্টকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু গ্র্যান্ট নিজেকে হেপবার্নের প্রেমিক হিসেবে বেশি বয়স্ক মনে করেন।



৩.কমিউনিস্ট কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে সে সময় হলিউডে ব্ল্যাকলিস্টেড ছিলো ডাল্টন থ্রাম্বো। মূল গল্প তার হওয়া সত্ত্বেও ছবিতে তার নাম দেয়া হয়নি। ২০০৩ সালে ডিভিডি ভার্সন তৈরি করার সময় তার নাম যোগ করা হয়। ১৯৯৩ সালে অস্কার কমিটি ডাল্টনকে পুরস্কৃত করে।



৪. গ্রেগরি প্যাক এবং আড্রে হেপবার্ন দু’জনেই চেয়েছিলেন এ ছবির সিক্যুয়াল তৈরি হোক। ১৯৭০ সালে রাণী এ্যানের কন্যা এবং লেখক জোর পুত্রকে নিয়ে একটা গল্পও তৈরি করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে ছবি আলোর মুখ দেখেনি।



৫. পুরো শুটিং ইটালিতে হওয়া প্রথম আমেরিকান মুভি এই রোমান হলিডে। মুভির বাজেট ১.৫ মিলিয়ন আমেরিকান ডলার হলেও, এটি তৈরি করতে লেগে যায় ৫ মিলিয়ন ডলার।



সামুতে একটা পোষ্ট পড়ছিলাম, যেইখানে “রোমান হলিডে” সিনামার কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরা হয়। অসঙ্গতি গুলোঃ



১) প্যালেস থেকে পালানো সময় হেপবার্ন একটি পিজা ডেলিভারি ট্রাকের পেছনে ওঠে। কিন্তু তিনি যে বাক্সের পেছনে লুকান, নামার সময় দেখা যায় যে সেই বাক্সটির লেবেল চেঞ্জ হয়ে গেছে!



২) হেপবার্নকে নিয়ে ট্যাক্সিতে ওঠার পরে ট্যাক্সির পেছনের বামপাশের দরজার উপরের জানালার কাচের লেভেল ছিলো হেপবার্নের গলার বেশ নিচে। কিন্তু পরের সিনেই সেই লেভেল বেশ উপরে উঠে যায়!



৩) যখন পেক হেপবার্নকে নিয়ে নিজের এ্যাপার্টমেন্টে ওঠায়, তখন টাই খুলে দেবার সময় হেপবার্নের শার্টের বাম দিকের কলার উপরের দিকে বাকা হয়ে উঠে যায়। কিন্তু তার পরের শটেই দেখা যায় শার্টের কলার আবার আগের মতোই ফ্লাট হয়ে শার্টের ওপর পড়ে আছে। তারই একটু পরে দেখা যায় পরপর কয়েকটি শটে হেপবার্নের বাম হাত দিয়ে পাজামা ধরার স্টাইল পাল্টে যায়।



৪) মুভিতে যখন পেক হেপবার্নকে ফলো করছিলেন, তখন রাস্তার লোকজনকে তাদের স্বাভাবিক কাজ করার বদলে মুভির শুটিং দেখাতেই যেন বেশি মনোনিবেশ করেছিলো।



৫) চুল কাটতে সেলুনে ঢোকা থেকে শুরু করে টাওয়ারে সামনে বসা পযর্ন্ত হেপবার্নের হাতের কাফ বেশ কয়েক বার জায়গা বদল করে শেষ পর্যন্ত হাতের অনেক উপরে উঠে স্থির হয়! একই সাথে সুপ্রিয় পাঠক দেখতে পাবেন যে টাওয়ারের সামনে বসার পর এক মুহূর্তেই হেপবার্নের শার্টের টাই ভ্যানিশ হয়ে যায়! আবার একটু পরে পেক সেখানে বসার আগ মুহূর্তে জেলাটো ভরা ছিলো, কিন্তু বসার পরের মুহূর্তেই জেলাটো উপরের অংশ খালি হয়ে যায়!



৬) হেয়ার কাট শেষ করার পর যখন, হেপবার্ন দি পিয়াজ্জা-তে প্রবেশ করে, তখন পেছনের টাওয়ারের ঘড়িতে বাজে দুপুর ১২ টা ৩৫, কিন্তু তার পরের সিনেই যখন পেক তাকে ফলো করে, তখন ঘড়িতে বাজে ১২ টা ৩২! আবার যখন টাওয়ারের সামনে হেপবার্ন বসেন, তখন ঘড়িতে বাজে ২ টা ৪০, যদিও পিয়াজ্জায় ঢোকা, জেলাটো (এক ধরনের কোন-আইসকৃম) কেনা ও সেখানে বসতে বড়জোড় কয়েক মিনিট লাগার কথা। তাদের কথোপকথন শুরু হয় ২ টা ৪০ মিনিটে। কিন্তু পরের ক্লোজআপ শটেই যখন পেক বসেন, তখন ঘড়িতে বাজে ৪ টা ৫৫ থেকে ৪ টা ৫৮ মতো! আবার, যখন পেক দাড়িয়ে গিয়ে হেপবার্নকে বলে- টুডে’স গনা বি এ হোলিডে, তখন ঘড়িতে বাজে ৩ টা ৫০ মিনিট।



৭) আবার, পেক যখন আরভিংয়ের গায়ে ড্রিংক ঢেলে দেয়, তখন স্পষ্টই দেখা যায় যে তার জামা ভিজে গেছে। কিন্তু পরে যাওয়া থেকে উঠে চেয়ারে বসার পরই সেই ভেজা দাগ মুহূর্তেই উধাও!



৮) পেকের এ্যাপার্টমেন্টে যখন মিস্টার হ্যানেসির সাথে তার কথা শেষ হয়, তখন পেক তার হাতের এনভেলপটি দুই হাত দিয়ে ধরে রাখে, কিন্তু পরের শটেই দেখা যায় এনভেলাপটি তার ডান হাতে, আর ডান হাত মাজায় ভর করে রাখা!



৯) মুভির শেষের দিকে ব্রাডলির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে প্যালেসে ফেরার পর প্রথম সিনেই মিডিয়াম ও ক্লোজআপ শটে হেপবার্নের হেয়ার স্টাইল পাল্টে যায়।



১০) আসলে মুভিতে এমন হয়ই, কারণ এভাবে টাইম ও সিকোয়েন্স মেইন্টেন করে তো আর শুটিং করা সম্ভব নয়; তবুও দেখতে তো একটু দৃষ্টিকটু লাগেই। এ বিষয়গুলি আপনাদেরকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই দেখতে হবে।

১১) অডিও-ভিজুয়াল সেকশনেও অসঙ্গতি ছিলো। যেমন, যখন পেক ও হেপবার্ন মটরসাইকেলে থাকে তখন হেপবার্নের বলা ডায়লগ- নো নো নো, লেট গো। আই ক্যান ডু ইট, হেপবার্নের লিপসিংয়ের সাথে ঠিক মেলে না! একইভাবে, যখন পেক বিছানা থেকে হেপবার্নকে কাউচে ট্রান্সফার করে, তখন হেপবার্ন বিড়বিড় করে বলে- সো হ্যাপি, যদিও তার ঠোট নড়তে দেখা যায় না!



১২) অনেকের মনেই প্রশ্ন যে মুভিটি সাদাকালো কেন? বিশাল অংকের খরচ তো একটা ফ্যাক্টর ছিলোই, তাছাড়া ডিরেক্টর ভেবেছিলেন যে মুভিটি রঙিন করলে রোমের রোমান্টিক পরিবেশ, নায়ক-নায়িকার কালারফুল অ্যাপিয়ারেন্সে কিছুটা ম্লান হয়ে যেতে পারে। অবশ্য আমার মতে, ব্লাক এ্যান্ড হোয়াইট ইজ মোর কালারফুল দ্যান কালার! (ইনসাইড স্টোরি অফ রোমান হলিডেঃ সামু)



এই অংশটুকু ডক করে রেখেছিলাম পোষ্টটি পরে। আবার কখনো দেখলে মিলিয়ে নেয়া হবে। আজ সে সুযোগও হয়ে গেল। যাদের আগে দেখা আছে চাইলে আপনারাও মিলিয়ে নিতে পারেন।



Roman Holiday (1953) এর পরে আরো অনেক সিনামা হয়েছে কাছাকাছি কাহিনী নিয়ে, কিন্তু মেকিং, গল্পও সহ জনপ্রিয়তায় এর ধারে কাছেও ঘেষতে পারেনি একটাও। বিশেষ করে ১৯৪০ সালে হার হাইনেস এন্ড দ্য বেলবয় এবং ১৯৪২ সালে প্রিন্সে ও’ রুকে উল্লেখযোগ্য। তবে যত কথাই হোকনা কেন, অসাধারণ সিনামা সবসময়েই অসাধারণই থেকে যাবে। আর যেই সকল ইন্সাইড স্টোরি আপনাদের শোনালাম, তার দিকে দৃষ্টি পাত করে সিনামা দেখার মজা নষ্ট করবেন না যারা আগে দেখেননি।



Movie: Roman Holiday (1953)

Director: William Wyler

Writers: Ian McLellan Hunter (screenplay), John Dighton (screenplay)

Genre: comedy/drama/romance

Producer: William Wyler

Music: Georges Auric, Victor Young

Cast: Gregory Peck, Audrey Hepburn, Eddie Albert



ডাউনলোডের লিঙ্কঃ



টরেন্টঃhttp://kat.ph/roman-holiday-1953-xvid-mp3-eng-audrey-hepburn-t2909252.html

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১৬

আমিনুর রহমান বলেছেন:




আমার দেখা প্রথম দুটো (আমার স্মৃতিতে মনে থাকা) হলিউডের ছবির একটা রোমান হলিডে আর অন্যটা ছিলো সোফিয়া লরেন এর সানফ্লাওয়ার।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯

পুরোনো পাপী বলেছেন: আমারো :)

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:১৩

এহসান সাবির বলেছেন: খুব প্রিয় একটা মুভি।

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪০

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: :) :)

আমার দেখা অন্যতম সেরা একটি মুভি।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪১

পুরোনো পাপী বলেছেন: যতবারই দেখি পুরান আর হয় না :)

৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১৭

জুবায়ের দিদার বলেছেন: ভাই লিঙ্কু টা যদি দিতেন একটু

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯

পুরোনো পাপী বলেছেন: টরেন্টে খোজ করেন পাবেন আশা করি :)

৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪২

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: এই মুভ্যিটার কথা অনেক শুনেছি কিন্তু কেন যেন দেখা হয়ে ওঠেনি :(

আশা করি দেখে ফেলব খুব দ্রুত। পোস্টে ভালো লাগা থাকল।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০

পুরোনো পাপী বলেছেন: হুরররর মিয়া :(

৬| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৪

মামুন রশিদ বলেছেন: Best romantic movie, I have ever seen :)

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০

পুরোনো পাপী বলেছেন: ওয়ান অফ দ্যা বেস্ট :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.