নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"তোমার মনের মইধ্যে আলেকের বাস, সে না কাউরে শোনে, না কাউরে বোঝে। তুমি যা বোঝাও সে তাই বোঝে।"
লালন সাঁই এর গানের কথা ব্যাখ্যা করা আমার পক্ষে সম্ভব না। মাঝে মাঝে মন বিক্ষিপ্ত থাকলে অপচেষ্টা করি। এইটাও সেই রকমের একটা অপচেষ্টা। সিরিয়াস ভাবে নেয়ার কিছুই নাই। আমার বোঝায় কোন ভুল ভ্রান্তি কেউ ধরিয়ে দিতে চাইলে খুশি হব।
মিলন হবে কত দিনে
আমার মনের মানুষের সনে
চাতক প্রায় অহর্নিশি
চেয়ে আছে কালো শশী
হব বলে চরণ-দাসী
ও তা হয় না কপাল-গুণে
মেঘের বিদ্যুৎ মেঘেই যেমন
লুকালে না পাই অন্বেষণ,
কালারে হারায়ে তেমন
ঐ রূপ হেরি এ দর্পণে
যখন ও-রূপ স্মরণ হয়,
থাকে না লোক-লজ্জার ভয়-
লালন ফকির ভেবে বলে সদাই
ঐ প্রেম যে করে সে জানে
লালনগীতি যারা শোনে না কিংবা শোনে তাদের কারো মাঝেই হয়তো এমন কাউকে খুজে পাওয়া যাবে না এই গানটি শোনে নি। বহুল প্রচলিত কিংবা পরিচিত যাই বলি না কেন লালন গীতি বলতেই অল্প কিছু গান আছে যাকেই মানুষ বুঝে “মিলন হবে কত দিনে” তার মাঝে একটা। খুব বেশি মানুষ যে এই গানের কথা গুলো ভুল বোঝে না তা বলছিনা। কারণ আমি এখনো খুব বেশি মানুষ পাই নি যারা এই গানের অর্থকে অন্য দিকে প্রবাহিত করে নি। আমি নিজেও যে ইন্য দিকে প্রবাহিত করতাম না তা না। তবে আসলেই যখন অর্থ বোঝার চেষ্টা করি তখন বেশ লজ্জাই পাই। কারণ কথা গুলো এমন যে একটা ব্যাপারকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে প্রদর্শন করানো খুবই সহজ। দেখি কিছুটা অপচেষ্টাই নাহয় করলাম।
“মিলন হবে কত দিনে
আমার মনের মানুষের সনে”
এই কথা গুলো শুনে যে কারোই মনে হবে খুবই রোম্যান্টিক ধরণের কথা। আমি নিজেও অনেক দিন সেই ধারণাতেই ছিলাম। এখান থেকে কোন ধারণায় পৌছে যাওয়া আসলেই কষ্ট সাধ্য। কারণ লালনের স্বয়ং সম্পূর্ণ সকল গানের মাঝে একটা জায়গাতে আসল কথা যা তিনি বুঝাতে চেয়েছিলেন তা থাকে। এই ধরণের ব্যাপার গুলোকে KEY WORD অথবা KEY SENTENCE বলে। বাকি সকল কথা গুলো সেই মূল কথাকে SUPPORT করে যায় সাধারণত।
পরের অংশে গেলে
“চাতক প্রায় অহর্নিশি
চেয়ে আছে কালো শশী
হব বলে চরণ-দাসী
ও তা হয় না কপাল-গুণে”
চাতক একটা পাখি এবং রূপক হিসেবে এর সার্থক ব্যাবহার সকল স্থানেই দেখা যায়। চাতক মেঘের অপেক্ষায় চেয়ে থাকে বৃষ্টি হবে সেই পানি পান করার আশায়। তারপরেই আসে যে কথা তাতে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে কপাল গুণে কিংবা ভাগ্যের সাহায্যে যা চাওয়া হয় তা পাওয়া যায় না। আসলেই যদি কেউ নিজেকে ভাগ্যের উপরে সমর্পন করে সব ছেড়ে ছুড়ে বসে থাকে তবে তার ভবিষ্যত কতদূর তা সহজেই অনুধাবন করা যায়।
গানের পরের অংশ হচ্ছে Key অংশ। সেদিকে দেখলে
“মেঘের বিদ্যুৎ মেঘেই যেমন
লুকালে না পাই অন্বেষণ
কালারে হারায়ে তেমন
ঐ রূপ হেরি এ দর্পণে”
মেঘের বিদ্যুৎ যেমন মেঘেই থাকে মানে মেঘ থেকেউ তার উৎপত্তি, তেমনি যে রূপ কিংবা মনের মানুষের আশায় এত ছুটোছুটি তাকে খুজতে হলে দর্পন বা আয়নাতে খুজলেই পাওয়া যাবে। আয়প্নাতে তাকালে আমরা নিজের প্রতিচ্ছবিকেই দেখি। অর্থাৎ নিজের মাঝেই মনের মানুষের বাস। ঠিক করে খোজার অপেক্ষা মাত্র।
“যখন ও-রূপ স্মরণ হয়,
থাকে না লোক-লজ্জার ভয়-
লালন ফকির ভেবে বলে সদাই
ঐ প্রেম যে করে সে জানে”
যখন কেউ সেই রূপের দর্শন পেয়ে যায় তার লোকলজ্জা তো দূরে থাক, কোন কিছুরই ভয় থাকে না। আনন্দে আত্মহারা সেই মানুষের অনুভুতি শুধু সেই জানে যে সেই ধরণের প্রেমে মজতে পারে।
অর্থাৎ সম্পূর্ণ গানের একটাই অর্থ দাড়াচ্ছে। মনের মানুষ কিংবা স্রষ্টা কিংবা যাই বলিনা কেন সব কিছুই লুকিয়ে আছে নিজের মধ্যে। শুধু খুজে নিতে হয়।
খোজার ব্যাপারে অসীম আলসেমির কারনে এখনো খোজাখুজি করতে পারলাম না বোধহয়।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৩
পুরোনো পাপী বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪০
আজমান আন্দালিব বলেছেন: খোজার ব্যাপারে অসীম আলসেমি ঝেড়ে ফেলতে হবে।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৬
পুরোনো পাপী বলেছেন: সম্ভব কিনা জানিনা
৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: দারুন একটা সিরিজ ভ্রাতা ++++++++
চলুক ।
ভালো থাকবেন
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫৬
পুরোনো পাপী বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৪
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
চমৎকার পোস্ট ++++
মনের মানুষ কিংবা স্রষ্টা কিংবা যাই বলিনা কেন সব কিছুই লুকিয়ে আছে নিজের মধ্যে। শুধু খুজে নিতে হয়।
ভাবি মিলন হবে কতদিনে........