নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোরসন্ধানে

পুষ্পজিৎ

বাংঙ্গালী

পুষ্পজিৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

** শুভ ভাদ্র মাসের শ্রদ্ধার্ঘ্য **** শুভ ভাদ্র মাসের শ্রদ্ধার্ঘ্য **

২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৫

।। ধারাবাহিকতায় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সংক্ষিপ্ত দিব্য জীবনী।।
(৩য় পর্ব)
****************************************************************
‘‘জয় অনুকূল অপরূপ অতুল পুরুষোত্তমো জয় হে!
মাতা মনোমোহিনী-নন্দন জগজন-বন্দন ভবভয়-তারণ কারণ হে!’’
* * *
ভুবনমোহিনী হাসির ডালির মুখে আধো আধো কথাও ফুটেছে সাত মাসে। হাঁটি-হাঁটি, পা-পা করে হাঁটতেও শিখে গেছে। নবম মাসের এক শুভদিন দেখে দৌহিত্রের অন্নপ্রাশন দিলেন কর্তামা কৃষ্ণসুন্দরী দেবী।
‘‘অকূলে পড়িলে দীন হীন জনে
নুয়াইও শির, কহিও কথা।
কূল দিতে তারে সেধো প্রাণপণে
লক্ষ্য করি তার নাশিও ব্যথা।’’
---উপরোক্ত চার পংক্তির আশীর্বাণীর আদ্যাক্ষর মিলিয়ে অ-নু-কূ-ল নামকরণ করলেন বিশ্বজননী মাতা মনোমোহিনী দেবী।
ছেলের বয়স ১০ মাস। হরিপুর গ্রামের আত্মীয় নিষ্ঠাবান সাত্ত্বিক ব্রাহ্মণ উমেশচন্দ্র লাহিড়ী মহোদয়ের বাড়ীতে বেড়াতে গেছেন। তিনি গৃহদেবতা গোপাল-বিগ্রহের পূজা-ভোগরাগ সম্পন্ন না করে কিছু খেতেন না। সেদিনও পুজোয় বসেছেন। চোখ বন্ধ করে, ‘‘ওঁ নারায়ণঃ পরাবেদা নারায়ণঃ পরাক্ষরঃ।/নারায়ণঃ পরামুক্তি নারায়ণঃ পরাগতিঃ।।’’ মন্ত্র জপ করে ধ্যান করতে বসেছেন। ‘টুং’ শব্দে ধ্যান যায় ভেঙে। চোখ মেলে দ্যাখেন, পিতলের গোপাল নীচে গড়াগড়ি দিচ্ছে, আর আসনে বসে আছে মনো-র ছেলে অনুকূল, মিটি-মিটি হাসছে। কি অলক্ষুণে ব্যাপার! মনো-কে ছেলে আগলাতে বলে, অসন্তুষ্ট মনে বিগ্রহকে শোধন করে আবার পুজোয় বসেন। আবারও সেই ‘টুং’। বিগ্রহ মাটিতে, অনুকূল আসনে বসে। না, এই দুষ্টু ছেলেকে বেশী আমল দেওয়া যাবে না! এই ছেলের জন্য আমার নিত্যপূজা পণ্ড হচ্ছে, কূলদেবতার কোপে পড়তে না হয়! হে ঠাকুর আমায় ক্ষমা করো ঠাকুর।বিগ্রহের কাছে মনে মনে ক্ষমা প্রার্থনা করে পূজারী এবার একটু কড়া ব্যবস্থা নিলেন। মনো-কে বলে ওই দুষ্টু ছেলেকে ঘরে তালাবন্ধ করে রাখার ব্যবস্থা করে, ঠাকুর ঘরের দরজায় পাহারাদার বসিয়ে পুজোয় বসলেন। ঠাকুরঘরে একটা পোকাও যেন না ঢুকতে পারে। কি আশ্চর্য! ভোগ নিবেদন করার সাথে সাথে আবার সেই ‘টুং’! তালাবন্ধ ঘর থেকে বেরিয়ে পাহাড়াদারকে ফাঁকি দিয়ে কিভাবে ঠাকুরঘরে ঢুকলো ওই দস্যি ছেলে! ক্ষোভে, দুঃখে বিলাপ করছেন উমেশচন্দ্র। বাড়ীশুদ্ধ লোক জড়ো হয়েছে ঠাকুরঘরে। মাতা মনোমোহিনী দেবী রেগে গিয়ে গালে একটা চড়্ মেরে বললেন,---‘‘তুই কেন বার বার এসে এভাবে পূজা পণ্ড করিস ?’’
ছেলে কাঁদতে কাঁদতে আধো আধো স্বরে বলে, ‘‘ও আমায় দাকে কেন ?’’ ডাকার মত ডাকলে তিনি কি আর থাকতে পারেন ? তাইতো তালাবদ্ধ ঘর, সব পাহারাকে তুচ্ছ করে নাগালের বাইরের উঁচু আসনে জীবন্ত গোপাল নিবেদিত ভোগ নিতে চলে এসেছেন। এতক্ষণে সম্বিৎ ফিরে পেলেন পূজারী। বললেন, কি! তুমি আমার ডাক শুনতে পেয়েছ! হে ঠাকুর! শুনতেই যখন পেয়েছ, তোমাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে যে অপরাধ আমি করেছি, সেই সব অপরাধ ক্ষমা কর প্রভু‍! আমার সাধনা, আরাধনা এতদিন পর সার্থক হয়েছে। স্বয়ং শ্রীহরি অনুকূল রূপে নব-কলেবরে ধরায় এসেছেন! ওরে, কে কোথায় আছিস্, শঙ্খ বাজা, হুলুধ্বনি কর, কুঞ্চিত কেশদাম, কুন্তল অলক, শান্ত, গৌরবর্ণ দেহ, মায়াময় বুদ্ধিদীপ্ত নয়ানযুগল, উন্নত বক্ষ, দীর্ঘ নাসিকা, আজানুলম্বিত বাহুযুগল, বিস্তৃত কর্ণলতিকা, রক্তাভ অধরে মৃদু মৃদু হাসি ঝরছে! এ কে! এর মধ্যে নারায়ণ, রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ, যীশু, রসুল, না গৌরাঙ্গ না রামকৃষ্ণ! সব দেবতা একাকার রূপে আমাকে দর্শন দিলেন। আমি ধন্য হলাম নবীন কুরুক্ষেত্রের বিশ্বরূপ দর্শনে! আজ আমি ধন্য, ধন্য আমার মানব-জনম।
মুহূর্তে হুলুধ্বনি-শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত হয়। প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। আনন্দে আত্মহারা হয়ে, পূজারী উমেশচন্দ্র লাহিড়ি ‘‘ওঁ অনুকূলঃ পরাবেদা অনুকূলঃ পরাক্ষরঃ।/অনুকূলঃ পরামুক্তি অনুকূলঃ পরাগতিঃ।।’’ মন্ত্র জপ করে জ্যান্ত গোপালের কচিমুখে ভোগ নিবেদন করে সবাইকে ডেকে ডেকে ভোগের প্রসাদ দিচ্ছেন। আর বলছেন, সবাই দেখে নাও মানুষ-রূপী ভগবানকে! দেখে মানব জনম সফল কর। (ক্রমশঃ)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৯

লক্ষণ ভান্ডারী বলেছেন: বন্দে পুরুষোত্তমম




জয়গুরু

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.