নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোরসন্ধানে

পুষ্পজিৎ

বাংঙ্গালী

পুষ্পজিৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গুরুবাদ &স্বাধীনতা প্রসঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুর।।

২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৪৫

প্রশ্ন :- অনেকেই তো গুরুবাদকে একটা অন্ধ-কুসংস্কার বলে মনে করেন, তাদের ধারণা গুরুকরণ বাস্তব জীবনের রকমারি সমস্যার সমাধানে অদৌ কোন সাহায্য করতে পারে কিনা সন্দেহ |
শ্রীশ্রীঠাকুর :- গুরুকরণ বলতে আমি বুঝি গুরুকে জীবন সর্ব্বস্ব ক’রে নেওয়া | আবার, গুরুও হওয়া চাই প্রকৃত গুরু যিনি অলোর রাজ্যে নিয়ত বসবাস করেন |
এমনতর গুরুকে পেয়ে সক্রিয় তাত্‌পর্য্যে গুরুময় হ’য়ে চললে মানুষের যে কি হয়, তার দৃষ্টান্ত তো সচরাচর মানুষ চোখে দেখতে পায় না, তাই ঐ সব কথা বলে |
তুচ্ছ স্বার্থসিদ্ধির আশায় গুরু ভজলে গুরুশক্তির গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায় না, কিন্তু গুরুগতপ্রাণ হ’য়ে গুরুর লোককল্যাণ ইচ্ছাপূরণে যে নিজেকে ঢেলে দেয় তার হাড়ে ভেল্কি খেলে যায় | পদে-পদে সে অসাধ্য সাধন করে | হনুমানের জীবনটা দেখলেই হয় | আসল জিনিস হ’লো সত্তা | এই সত্তাকে ধারণ ক’রে রাখে যা’ তাই-ই ধর্ম্ম | ধর্ম্মকে যিনি জেনেছেন, উপলব্ধি করেছেন, বাস্তবায়িত করেছেন, নিরূপিত করেছেন অর্থাত্‍ নিঃশেষে রূপ দিয়েছেন নিজ জীবনে, তিনিই হচ্ছেন আচার্য্য বা সদ্‌গুরু | তাঁকে গ্রহণ ও অনুসরণ করাই চাই—কারণ, তিনি হ’লেন মানুষের বাঁচাবাড়ার পথ, আর সপরিবেশ বাঁচাবাড়াই মানুষের চিরন্তন কাম্য | ঐ আচার্য্য বা আদর্শকে যারা অনুসরণ করে, তাদের নিয়েই গড়ে ওঠে সমাজ |
মানুষের প্রবৃত্তি-অভিভূতি, স্বার্থ-অভিভূতি, দূর করতে গেলে তাকে গুরুস্বার্থী ক’রে তুলতে হবে | আর, গুরুস্বার্থী হ’লেই সে সমষ্টি-স্বার্থী হবে | তাই সমাজকে বাঁচাতে গেলে গুরুকরণ চাই-ই কি চাই |
~~~~ (আলোচনা প্রসঙ্গে ৯ম খণ্ড, পৃঃ ২৫৯) ।।









স্বাধীনতা প্রসঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুর।।
শ্রীশ্রীঠাকুর--নিজেরা স্বাধীন না হ’লে কি স্বাধীনতা আসে? স্বাধীনতা দিলেও তো আসে না। Common ideal-এ (এক আদর্শে) integrated (সংহত) হ’য়ে প্রত্যেকের জন্য প্রত্যেকে হ’লে স্বাধীনতা আপনি আসে। আমি independence (অনধীনতা) বুঝি না, freedom বা liberty (স্বাধীনতা) বুঝি। জন্ম মানে dependence (অধীনতা), জন্ম নিতেই মা-বাপ লাগে, independence (অনধীনতা) কোথায়? স্বাধীনতার ভিতর আছে love-service (প্রীতি-প্রসূত সেবা), কান ধ’রে করা নয়, প্রাণ ধ’রে করা। Freedom-এর ধাতুগত অর্থ শুনেছি--প্রিয়ের বাড়ী, আর liberty মানে শুনেছি--বৃদ্ধি, বাঁচাবাড়া। | পরস্পর পরস্পরের বাঁচাবাড়ার সহায় যখন হয়--আদর্শ-স্বার্থে স্বার্থান্বিত হ’য়ে,-- তখনই আসে সত্যিকার স্বাধীনতা। যেমন আমরা দেখতে পাই আমাদের শরীরবিধানে। কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই বেঁচে থাকতে পারে না, যদি পরস্পর পরস্পরের বাঁচা-বাড়ার সহায়ক না হয়। বাঙলা যদি বিহারের জন্য না হয়, প্রত্যেক প্রদেশ যদি প্রত্যেক প্রদেশের জন্য না হয়, প্রত্যেক দল যদি প্রত্যেক দলের জন্য না হয়, প্রত্যেক সম্প্রদায় যদি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য না হয়, প্রত্যেক ব্যক্তি যদি প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য না হয়, তবে স্বাধীনতা আসে না।
(সূত্রঃ আলোচনা প্রসঙ্গে, সপ্তম খণ্ড/পৃষ্ঠা-৬৭, ২৯শে মাঘ, মঙ্গলবার, ১৩৫২, ইং ১২।০২।১৯৪৬)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.