নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোরসন্ধানে

পুষ্পজিৎ

বাংঙ্গালী

পুষ্পজিৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

** শুভ ভাদ্র মাসের শ্রদ্ধার্ঘ্য **** শুভ ভাদ্র মাসের শ্রদ্ধার্ঘ্য **

২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:৩৫

** শুভ ভাদ্র মাসের শ্রদ্ধার্ঘ্য **
।। ধারাবাহিকতায় শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের সংক্ষিপ্ত দিব্য জীবনী।।
(৭ম পর্ব)
‘‘জয় অনুকূল অপরূপ অতুল পুরুষোত্তমো জয় হে!
মাতা মনোমোহিনী-নন্দন জগজন-বন্দন ভবভয়-তারণ কারণ হে!’’
* * *
‘‘১ আর ১এ ১ই হয়, ২ কভু নয়......।’’
পাঠশালাতে একদিন অঙ্কের শিক্ষক বোঝাচ্ছিলেন, ‘১ আর ১=২ হয়।’’ শুনে ছাত্র অনুকূল মনে মনে ভাবলেন, ‘‘তা’ কি করে সম্ভব? জগতের সব বস্তুই পরস্পর পৃথক, কোন একটির সঙ্গে আর একটির তো পুরোপুরি মিল কোথাও নেই। ঠিক একই রকমের দুটো জিনিষ যখন এ দুনিয়ায় কোথায়ও দেখতে পাওয়া যায় না---সবই যখন পরস্পর অসমান, তখন একের সঙ্গে কেমন করে একের যোগ হয়ে দুই হবে!’’ (বর্তমানের বিজ্ঞান গবেষণাতেও ওই সিদ্ধান্ত প্রমাণিত। জীবদেহের কোষাণুপুঞ্জের অতি ক্ষুদ্র ক্রোমোজোমগুলোও একটার মতো আর একটা নয়, পৃথক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।)
শিক্ষক মহাশয়কে বললেন, ---‘‘স্যার! কোন দুটো জিনিষ তো একরকম দেখিনা, তবে এক আর এক দুই হলো কি করে?’’
সব শিক্ষকের শিক্ষক যিনি, তাঁর কথার গূঢ় রহস্য বুঝতে না পেরে মারের পর মার দিয়েছিলেন ঠাকুরকে, অঙ্কের ওই শিক্ষক মহাশয়।
এ বিষয়ে ঠাকুর পরবর্তীকালে বলেছিলেন, ‘‘ওই যে মার খেলাম, সেই থেকে অঙ্কের প্রতি আমার যেন কেমন একটা ভয় হয়ে গেল। (আ. প্র. ৩য় খন্ড)’’
১৩০৬ বঙ্গাব্দ। ১১ বছরে পা দিয়েছেন। উপনয়ন সংস্কারে সংস্কৃত হয়েছেন। এমনিতেই তো কনকচাঁপা গায়ের রং, তার ওপর গৈরিক বসনের আচ্ছাদন, মুন্ডিত মস্তক, যজ্ঞসূত্র, মেখলাদি ধারণ করেছেন গৌর-অঙ্গে। ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে। যেন এক স্বর্গীয় দেবদূত ব্রহ্মচারীর বেশে আচার্য্যের জন্য ভিক্ষা করতে বেড়িয়েছেন। আগে দিলেন দিদিমা, তারপর মা, তারপর দিলেন জ্ঞাতি-কুটুম্বেরা, দিলেন সমাগত ব্রাহ্মণেরা, দিলেন গ্রামবাসীরা। ভিক্ষা-গ্রহণ পর্ব শেষ। দিদিমা কৃষ্ণসুন্দরী দেবী বললেন, এবার ক’দিন তোকে একলা থাকতে হবে, মেয়েদের দিকে তাকাতে পারবি না, অব্রাহ্মণের মুখ দেখতে পারবি না, বুঝলি তো‍?
যা বোঝার তা তিনি বুঝে গিয়েছেন। সাথে সাথে তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েদের, মায়েদের সাথে শলা করে সবাইকে শুনিয়ে বলে দিলেন, ওগো, তোমরা আর আমার সামনে থেকো না, যদি মুখ দেখে ফেলি! এখন যাও, ওই দাওয়ায় গিয়ে বসো। তারপর একটু নীচু গলায় বললেন, আর একান্তই যদি আমাকে দেখতে সাধ জাগে, ভোর থাকতে থাকতে, সুয্যি ওঠার আগে, দি-মা যখন পদ্মায় চান করাতে নিয়ে যাবেন, তখন তোমরা আগে থাকতে গিয়ে পথের পাশের বুড়ো নিমতলায় দাঁড়িয়ে থাকবে, লুকিয়ে দেখা করবে। বেশ!
দিদিমার কান এড়াতে পারেনি নাতিছেলে অনুকূলের কথা। অবতার যা বলবে, যা করবে, তাই বিধি, তাই নিয়ম হলেইবা। তাই বলে দিদিমা তো আর সংস্কারের গন্ডি পেরোতে পারে না। নাতির কথা শুনে মেয়েকে ডেকে বললেন, শুনলি মনো, তোর ছেলের ফন্দীর কথা! পৈতে হয়েছে, ও এখন ব্রহ্মচারী, নারীর, শূদ্রের মুখ দেখা বারণ, ও কি-না গ্রামের মেয়ে-বৌ-ঝি-দের লুকিয়ে দেখা করতে শলা দিল?
মেয়ে মনোর কাছ থেকে তেমন কোন সাড়া না পেয়ে, সকলের সামনেই কৃষ্ণসুন্দরী নাতিকে বললেন, ছি! ছি! ছি! এ কেমন বেহায়া হয়েছিস রে তুই? তুই না ব্রহ্মচারী হয়েছিস্! এই ক৲টা দিন তুই ওদের মুখ না দেখে থাকতে পারবি না, যার জন্য লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা করার কথা বলে ব্রহ্মচর্য্যের নিয়মটাকে নষ্ট করে ফেলতে চাইছিস্? বড় হয়েছিস, এখন একটু বিবেচনা করে চলতে শেখ্।
যিনি শাশ্বত-সনাতন ব্রহ্মজ্ঞপুরুষ তাঁর আচরণই ব্রহ্মচর্য্য---ব্রহ্মে বিচরণ করার তুক্। যারা তাঁর নিত্য ভক্ত, নিত্যদর্শনকামী, তাদের দেখা না দিয়ে তিনি কি থাকতে পারবেন? তাই তো এই নিয়মভঙ্গ। যে নিয়মভঙ্গ করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণদেব অবতারে। উপনয়নান্তে নিয়ম ভেঙে শূদ্রাণী দাইমা ধনী কামারনীর হাতে প্রথম ভিক্ষা নিয়েছিলেন। (ক্রমশঃ)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.