নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডায়েরী হারিয়ে ফেলি।

ৎৎৎঘূৎৎ

হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা,অল্পবিদ্যা, কুশিক্ষা এবং ডাবল স্ট্যান্ডার্ড দৃষ্টিকোণ না থাকলে প্রকৃত বাঙ্গালি হওয়া যায় না।

ৎৎৎঘূৎৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাগরদোলা! (ফ্যান্টাসি)

১৪ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:৩০


জিম থেকে বের হয়ে বাসায় ফিরছিলাম। আজগুবি চিন্তা করতে করতে কখন রাস্তার মাঝখানে এসে পড়েছি বুঝতে পারিনি। রাস্তায় ইয়া লম্বা এক জ্যাম। ভাবলাম অটোর ডানদিক থেকে বের হব। ফাঁক টা দেখা যাচ্ছিল। পরে দেখলাম এখান দিয়ে আরেক টি রিক্সা এসে পড়েছে । বামে অটো আর ডানে রিক্সা। অটোটার যাত্রী নেয়া শেষ । সবে চলতে শুরু করেছে । অপর দিকে রিক্সাও চলতে শুরু করেছে। আর আমি বেচারা দাঁড়িয়ে রইলাম মাঝখানে । মনে হলে দুই দিক থেকে পিশে ফেলবে কিন্তু আমার নিজের প্রতি ভরসা আছে । ধাক্কা দিয়ে দুইটার একটাকে সরিয়ে দিব( ইদানিং এমন মনে হচ্ছে) ভাবতে ভাবতে থেমে গেল। যাত্রীদের ইস .. ব্যথা পাইসেন?... দেইখা চালান...শু’রের বাচ্চা ....এমনে চাপায়... শুনতে শুনতে আবার হাটা ধরলাম।
আমি খালি আটকে যাই। মাথা নাড়তে থাকি। আমি আবার আগের মত ভুল করলাম । জেনে শুনে , ব্রেইন কে পাত্তা না দিয়ে চলে এলাম এই রোডে...


আমি টাইপ বি’র একজন ছেলে। প্রাকৃতিক ভাবে বড় হবার পর অর্থাৎ যখন আমার মনে হল আমি বড় হয়েছি তখন দেখলাম কিছু টাইপ এ’র ছেলেরা ইতোমধ্যেই কিছু টাইপ এ’র মেয়েদের সাথে নাগরদোলায় উঠেছে । কিছু নির্দিষ্ট বয়স হলেই শুধু এই নাগরদোলায় উঠা যায় ব্যাপারটা ঠিক তা নয়। এর জন্য একটি কার্ড লাগে । কয়েকদিন হল কার্ড ছাড়াই টাইপ এ এবং টাইপ বি এর ছেলেরা তাদের সঙ্গীর সাথে নাগরদোলায় উঠছে । টাইপ এ’র ছেলেরা আবার টাইপ বি’র মেয়েদের সাথেও নাগরদোলায় যাচ্ছে। টাইপ বি’র মেয়েদের তেমন আপত্তি দেখা যাচ্ছেনা । তেমনি টাইপ বি’র ছেলেদের ও দেখা যাচ্ছে টাইপ এ’র মেয়েদের সাথে । কিন্তু আমাকে কলোনি থেকে বলা হয়েছে কার্ড ছাড়া নাগরদোলা নিষিদ্ধ । আবার কিছু কিছু গাছের পাতায় দেখলাম এসবে ভেদ করতে হয় না। তবে তা টাইপের উপর ভিত্তি করেনা যদি আপনি কিছু লাল লাইটের মালিক হন। কিন্তু আমি লাল লাইটের মালিক নই। আমার লাইট এখনো সবুজ দেখাচ্ছে। ভবিষ্যতেও লাল দেখাবেনা। কিন্তু নাগরদোলা নিষিদ্ধ হলেও আমার যাবার শখ । এজন্য আমি অনেক লজ্জিত। কারন আমার তাদের মত কার্ড অর্থহীন লাগে। কলোনির পূর্বপুরুষেরা যদি জানতেন আমি এই ধারণা নিয়ে আছি তাহলে আমায় অনেক তিরস্কার করতেন। আমার মনে হয় কলোনির মানুষেরা অনেক ঈর্ষান্বিত কারন তাদেরকে কার্ড মেনে একজনের সাথেই নাগরদোলায় উঠতে হয়েছে। যখন তারা দেখতে পেয়েছেন আমাদের কার্ডের ব্যাপারে সবাই একটু উদাসীন তখন তারা ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েছেন । কিন্তু এই যুক্তি আমার কাছে কেমন ভিত্তিহীন লাগে মাঝে মাঝে । আবার নাগরদোলা আকর্ষণ করে এত প্রচণ্ড যে তাদেরকে ঈর্ষান্বিত ভাবাটাই ঠিক লাগে। আমি শুনেছি তাদের কিছু বিচিত্র বাতাস ছিল। এই বাতাস তাদেরকে একজনের সাথেই আজীবনমেয়াদী কার্ডের আওতায় থেকে নাগরদোলায় উঠতে সাহায্য করত। আমার কাছে পুরো ব্যাপারটাই ধাঁধার মত মনে হয়। নাগরদোলায় আমি সব টাইপের ছেলে মেয়েদের যেতে দেখেছি । তারা প্রতিবারে নির্দিষ্ট একজনের সাথেও যায়নি । বোধয় কার্ড ছাড়া যাবার কারনে এরা প্রতিবারে নির্দিষ্ট একজন কে নিতে পারছেনা। তাদের জন্য কষ্টও হয় ।

আমার যদি লাল লাইট থাকত আমি টাইপ নিয়ে হয়ত চিন্তা করতাম না । আমি একবার আমার টাইপের এক মেয়ের সাথে যেতে চেয়েছিলাম। বলে রাখা ভাল , সব টাইপের মেয়েদের কিছু অধিকতর ভাল গুন দিয়ে পাঠানো হয়েছে ছেলেদের তুলনায় । সহ্যক্ষমতা, বাছ-বিচার, সময়ানুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবার প্রবণতা তাদেরকে ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে রেখেছে । মুলত আমার চিন্তা শক্তি খুবই ধীর গতির। যেকারনে আমি আমার টাইপের মেয়েটিকে নিয়ে নাগরদোলার স্বপ্ন দেখতে পারিনি । যদিও আমার লাল লাইট ছিলনা এবং কার্ডের প্রতি বিশ্বাস ছিল। একারনেই উচ্চ প্রযুক্তির মেয়েটির সাথে আমার নাগরদোলায় উঠার স্বপ্ন ধুলায় লুটিয়ে গেল ।

নাগরদোলা! নাগরদোলা! নাগরদোলা! ......... মাঝে মাঝে মনে হয় নাগরদোলার নিজের কিছু অদ্ভুত আকর্ষণী ক্ষমতা আছে । আবার মাঝে মাঝে মনে হয় নাগরদোলার নয় নাগরদোলায় যাকে নিয়ে উঠতে ইচ্ছা করে তার। কিছুদিন পর আমি এক টাইপ এ’র মেয়ের সাথে নাগরদোলায় উঠতে চাই । কিন্তু তার কলোনির পূর্বপুরুষেরা অবশ্যই তা মেনে নেবেন না । আমার কলোনির পূর্বপুরুষেরাও তাই। যদি আমি কার্ড নিয়ে মধ্যস্থতা করতে চাই তাও সম্ভব নয় কারন টাইপ এ এবং টাইপ বি এর মধ্যে কার্ড ছাপানোর মেশিনই নেই । কিন্তু এই প্রথম আমি বুঝতে পারি আমাকে নাগরদোলা তেমন আকর্ষণ করছে না। টাইপ এ’র মেয়েটি বেশি আকর্ষণ করছে । নাগরদোলা যে একদম বিকর্ষণ করছে তা নয়। টাইপ এ’র মেয়েটিকে নাগরদোলা আকর্ষণ করে কিনা জানিনা কে জানে আমি আকর্ষণ করি কিনা তাকে ? সে কিন্তু আকর্ষণ করে আমাকে । এ থেকে একটি নতুন সমস্যার মুখোমুখি হয়ে যাই আমি। আমি বুঝতে পারি আমার কারনে ভবিষ্যতে তার লাল লাইট পাবার সম্ভাবনা কম । যেহেতু সব টাইপের মেয়েদের কিছু উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে বানিয়ে দেয়া হয়েছে সেহেতু সে প্রযুক্তি ব্যাবহার করে এই আকর্ষণ জনিত সংকট থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি তার দিকে তাকাই, যখন আমার ভেতর স্যাতস্যাতে হয়ে যায়, আমি ডানে বামে মাথা নাড়তে থাকি । নাগরদোলার স্বপ্নে ফের আটকে যাবার জন্য আমার লজ্জা আর কষ্টের এক মিশ্রানুভূতি হয়। আমি হাসি আর ডানে বামে মাথে নাড়তে থাকি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:২৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বেশতো হয়েছে আপনার মনের নাগরদোলা ।

ঈদ মুবারক।

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৭

ৎৎৎঘূৎৎ বলেছেন: দেরী হয়ে গেল। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.