নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমোদাচির ব্লগবাড়িতে স্বাগতম!!

তোমোদাচি

শিকড়ের টানে শিকড় গেড়ে বসতে শিকড়ের কাছে ফিরছি .।

তোমোদাচি › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রকৃতির সাথে বেড়ে উঠা (৪)ঃ ছেলেবেলার ঈদ !!

০১ লা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

“এখন আর আগের মত ঈদে মজা নেই” এই কথাটা প্রায়ই শোনা যায়। আসলেই কি ঈদের আনন্দ দিন দিন কমে যাচ্ছে? নাকি আমরা বড় হয়ে যাচ্ছি আর আনন্দ পাবার ক্ষমতা হারাচ্ছি?? এটাই মনে হয় ঠিক- ঈদের আনন্দ ঠিকই আছে, আমাদের গ্রহন করার ক্ষমতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখনকার বাচ্চাদের কাছে নিশ্চয় ঈদের আনন্দ একই আছে!!

ছোট বেলাটা গ্রামে কাটিয়েছি; তাই ছেলেবেলার ঈদ কেটেছে মা-মাটি আর প্রকৃতির সাথে, খেলার সাথিদের সাথে। রোজা শুরু হতেই কাউন্ট ডাউন শুরু হয়ে যেত- ঈদের আর কত দিন বাকী। ঈদের আগের রাতে তো উত্তেজনায় ঠিক মত ঘুমাতে পারতাম না। সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে পাড়ার বড় ভাইদের সাথে ঈদগাহে যেতাম রঙিন কাগজ দিয়ে ঈদগাহ সাঁজাতে। তারপর দল বেঁধে বাসনা (সুগন্ধি) সাবান দিয়ে গোছল করা। এখানে একটা মজার ব্যাপার ছিল, কার সাবান কত সুগন্ধি সেটা নিয়ে একটা কম্পিটিশন হত। ;) লাক্স, লাইফবয়, কসকো সাবান ছিল এ ক্যাটাগরি; কেও এর বাইরে বিদেশী কোন সাবান দেখাতে পারলে তো ভা-ব-ই আলাদা! গরীব মানুষেরা ব্যবহার করত হাবীব সাবান নামে ছোট একটা সাবান।

এরপর নতুন কাপড় পরে, মায়ের হাতে সিন্নি খেয়ে ঈদগায়ে নামাজ পড়তে যাওয়া। প্রায় সব বারই কাপড় পরার আগে অজু করতে ভুলে যেতাম এবং প্রতিবারই ঈদগাহে পৌঁছুতে দেরি হয়ে যেত। বাবা’র সামরথ খুব বেশি ছিল না, তাছাড়া অনেক গুলো ভাই বোন ছিলাম। পুরাটা নতুন কাপড় সাধারণত হতো না; এক ঈদে উপরের অংশ নতুন তো আরেক ঈদের নীচের অংশ। উপর-নিচে পুরাটা নতুন কাপড় পড়েছি হাতে গোনা কয়েক বার। তবে ঈদের আগের দিন আব্বা পুরাণ কাপড় টাকেই সুন্দর করে বাজারের দোকান থেকে ইস্ত্রি করে নিয়ে আসতেন।

নামাজে হুজুরের প্রতিবছর একই বকর বকর মোটেও পছন্দ হতো না; শুধু মন থাকত কখন নামাজ শেষ হবে আর দল বেঁধে বাড়ী বাড়ী গিয়ে সিন্নি খেতে পারব। পাড়ার প্রায় সব বাড়ীতেই যেতাম সিন্নি খেতে, যদিও ২/৩ বাড়ী খাওয়ার পর আর কিছু পেটে ঠুকত না।

ঈদের দিন আরেকটা কারনে খুব ভাল লাগত তা হচ্ছে এই দিন কেও পড়তে বসতে বলত না এবং যা খুশি তাই করে বেড়ান যেত। বছরের এই দুইটা দিন ছিল ওপেন মার্বেল খেলার পারমিশন।

এভাবেই কেটে যেত ঈদের দিন! বিকালের দিকে একটু খারাপ লাগত! ঈশ! ঈদটা শেষ হয়ে গেল!!

ছোট বেলায় কুরবানীর ঈদটা ছিল একটু বিব্রতকর! আব্বা কুরবানী দিতে পারতেন না, আমরা বাজার থেকে মাংস কিনে খেতাম। ঈদের নামাজ পরে বন্ধুদের বাড়ি যেতে লজ্জা লাগত; কেও যখন জিজ্ঞাসা করত তোরা কি কুরবানি দিয়েছিস? তখন খুব লজ্জা লাগত। অবশ্য চালাকী ও শিখে গিয়েছিলাম- বলতাম এবার আব্বার হাতের অবস্থা ভাল না তাই কুরবানী দেওয়া হয়নি; প্রকৃতপক্ষে আমরা চাকুরী পাওয়ার আগ পর্যন্ত আব্বার হাতের অবস্থা ভাল হবার কোন কারন ছিল না।

এখনও কুরবানীর ঈদের দিন কষ্ট লাগে, তবে সেটা অন্য কারনে। এখন আমার টাকায় বাড়ীতে বড় গরু কুরবানী দেওয়া হয় কিন্তু আমাকে আর আমার ছেলে কে খেতে হয় দোকান থেকে কেনা ফ্রোজেন মাংশ। /:)

এনিওয়ে – সুখ দুঃখ মিলিয়ে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ ঈদ ছিল আমার ছেলে বেলার ঈদগুলো। আপনার???



শেষে ছোট্ট একটা অনুরোধঃ আপনার বাচ্চার জন্য যখন ঈদের কাপড় কিনবেন তার সাথে ফুটপাত থেকে কম দামে হলেও অন্তত একটা নতুন ড্রেস কিনবেন; সেই বাচ্চাটার জন্য, যার বাবা-মা এবার তাঁকে ঈদে কোন কাপড় কিনে দিতে পারছে না। আর সেই কাপড়টা পারলে আপনার সন্তানের হাত দিয়ে তাঁকে প্রেজেন্ট করাবেন!

আপনজনের সাথে আপনার ঈদ সুন্দর কাটূক!

ঈনশাল্লাহ নেক্সট কুরবানীর ঈদ দেশে করব!

সবাইকে ঈদ মুবারাক!!!

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:২৬

আদরসারািদন বলেছেন: ভাই! অনেক ভাল লাগল আপনার লেখাটা

০১ লা আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৬

তোমোদাচি বলেছেন: ধন্যবাদ এবং ঈদ মুবারাক!

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৮

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: আপনারেও ঈদ মোবারক!!!

০১ লা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৫

তোমোদাচি বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ১ম ভাল লাগা । অগ্রিম ঈদ মোবারক

০১ লা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৮

তোমোদাচি বলেছেন: ঈদ মোবারাক সেলিম ভাই

৪| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:২২

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো স্মৃতিচারণ। মার্বেল খেলি নাই জীবনে। আফসুস। ঈদের শুভেচ্ছা।

০২ রা আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৬:৩৬

তোমোদাচি বলেছেন: আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা!

৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৮:৪৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: বয়স বাড়ার সাথে সাথে মজার ‘রকম’ বদলায়। এই যা।

অসাধারণ আহ্বান রেখেছেন লেখায়।
আন্তরিক ভালো-লাগা জানাচ্ছি।

দেশে ফিরে আসা পর্যন্ত ভালো থাকুন প্রবাসে :)

০২ রা আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:২৪

তোমোদাচি বলেছেন: আপনার জন্য ও শুভ কামনা!

৬| ০২ রা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১৪

নীল-দর্পণ বলেছেন: দাদাবাড়ি নানা বাড়ি একেবারেই কাছে হওয়াতে ঈদের দিন সক্কাল বেলা অন্ধকার থাকতেই এক হাতে লাইট আরেক হাতে পোটলাপুটলিতে জামা-সাজুগুজুর জিনিস নিয়ে নানা বাড়িতে চলে যেতাম সাথে সমবয়সী কোন বোন/ফুপুকে নিয়ে। কারন আমাদের বাড়ীতে রান্নায় সবাই ব্যস্ত থাকায় সকালে গোসলের জন্যে গরম পানি করে দিতে পারতো না। নানু আবার সবার জন্যে গরম পানি করতেন। একেবারে সকাল সকাল গোসল করে সেজেগুজে বের হতাম ঘুরতে। ঘুরে ঘুরে নতুন জুতায় পায়ে ফোস্কা পড়ে যেতো তাও ঘোরা শেষ হতো না।

আপনার পোষ্ট পড়ে ছোট্ট এই স্মৃতিটা মনে পড়ে গেল, হয়ত কমেন্ট বড় হয়ে গেল। তাও শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম না। :P

ঈদের মজা এখনো আছে আমরাই বড় হয়েছি। আমার তো এখনো ঈদের দিন বিকেলে খুব খারাপ লাগে ঈদ শেষ হয়ে গেল বলে !

ঈদের শুভেচ্ছা :)

০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৪২

তোমোদাচি বলেছেন: আপনার মনটা তাহলে এখনো শীশু সুলভ আছে; পেকে বুড়া হয়ে যায়নি ;)

ভাল লাগল আপনার স্মৃতিচারণ!

৭| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:২৪

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

ঈদের শুভেচ্ছা রইল।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৪৩

তোমোদাচি বলেছেন: আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা

৮| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:২৭

তানজিয়া মোবারক মণীষা বলেছেন: চিরাচরিত জীবনের ছোট্ট ছোট্ট স্মৃতি গুলো আবারো মনে করিয়ে দিলেন এই পোস্টের মাধ্যমে। বিশেষ করে-
"ছোট বেলায় কুরবানীর ঈদটা ছিল একটু বিব্রতকর! আব্বা কুরবানী দিতে পারতেন না, আমরা বাজার থেকে মাংস কিনে খেতাম। ঈদের নামাজ পরে বন্ধুদের বাড়ি যেতে লজ্জা লাগত; কেও যখন জিজ্ঞাসা করত তোরা কি কুরবানি দিয়েছিস? তখন খুব লজ্জা লাগত। অবশ্য চালাকী ও শিখে গিয়েছিলাম- বলতাম এবার আব্বার হাতের অবস্থা ভাল না তাই কুরবানী দেওয়া হয়নি; প্রকৃতপক্ষে আমরা চাকুরী পাওয়ার আগ পর্যন্ত আব্বার হাতের অবস্থা ভাল হবার কোন কারন ছিল না।
এখনও কুরবানীর ঈদের দিন কষ্ট লাগে, তবে সেটা অন্য কারনে। এখন আমার টাকায় বাড়ীতে বড় গরু কুরবানী দেওয়া হয় কিন্তু আমাকে আর আমার ছেলে কে খেতে হয় দোকান থেকে কেনা ফ্রোজেন মাংশ।"
এই অংশটুকু খুব মায়া লাগালো। প্রিয়তে নিয়ে যাচ্ছি, প্লাস রইলো। :) :) :)

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৬

তোমোদাচি বলেছেন: এই অবস্থাটা এক সময় কষ্ট দিত কিন্তু এখন ওটাই আমার কাছে গর্ব!
বাবা-মার টানাটানির সংসার না দেখলে হয়ত শেখা হতো না নিজের পায়ে দাড়াতে হবে। যতটুকু আসতে পেরেছি তার পিছনে ফ্যামিলির মোটিভেশন টা বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছে।

ধন্যবাদ আপনাকে (যদিও আপনাকে বলতে কষ্ট হচ্ছে! ;) ) !!
আপনি কেবল জাবি তে ঢুকলেন; আমি এক্স জাবি হিসাবে বুড়াদের দলে চলে গেছি প্রায়! :|

৯| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৩২

তানজিয়া মোবারক মণীষা বলেছেন: আরিইইইই!!! বড় ভাই! জাবিতে ছিলেন! আপনি কিসের, তুই বললেও সমস্যা নেই! জাবির কাওকে পেলে এত্ত খুশী লাগে! আমি জুনিয়র, আপনি করে একদমই বলবেন না। !:#P !:#P

০৯ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৮:২৮

তোমোদাচি বলেছেন: থ্যাঙ্কস!
আমার প্রফাইলে লেখা আছে; ২৩ তম, গনিত! :-0

সেদিন ই তোমার কমেন্ট পড়েছি, কিন্তু উত্তত দেওয়া হয়নি; ঐদিন আমার পি এইচ ডি ডিফেন্স ছিল, ভাবলাম ডঃ হয়ে এসে উত্তর দিব; :P :P পরে খুশির চাপে ভুলে গেছি :|


বাই দ্যা ওয়ে, ডঃ হয়ে গেছি!! =p~ =p~ =p~

১০| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:২৩

মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন: ভাইজান, কোরবানীর ঈদের দাওয়াত রইলো। আর এই ঈদের শুভেচ্ছা।

আমার ছোটবেলার ঈদ ও প্রায় এমন টাইপই ছিলো। ইচ্ছে করছে ঈদ নিয়ে কিছু লিখে ফেলি। কিন্তু আলসামী ধরেছে। তাই ...

ভালো থাকবেন। সব সময়।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৮:২৪

তোমোদাচি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সাইফুল ভাই!
ঈদ মুবারাক!

১১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:২৭

মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন:

ডঃ হওয়ার খুশিতে এই মিষ্টি।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৩

তোমোদাচি বলেছেন: :#>

১২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৫

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: ঈদ নিয়ে আপনার স্মৃতিচারণ ভালো লাগলো। তবে একথা সত্য “এখন আর আগের মত ঈদে মজা নেই”

তোমোদাচিকে ডঃ তোমোদাচি হওয়ায় অনেক অনেক অভিনন্দন।

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪১

তোমোদাচি বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.