নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্টিগমা

রাফিন জয়

স্টিগমা

রাফিন জয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজয় ঠিকই অর্জন করেছি মুক্তি মেলেনি আজও

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৫


স্বাধীনতার সংগ্রাম। গৌরবের অধ্যায়তো বটেই। বিজয়ের ৪৯ বছর অতিক্রম করেছে। আর পরতে পরতে যুক্ত হয়েছে কালো অধ্যায়ও। চিঁর ধরেছে মুক্তিযুদ্ধের মৌলচেতনার বিশ্বাসেও। মৌলবাদের ভয়াল থাবার মুখোমুখি রাষ্ট্র। গণতন্ত্রের গুদামে আগুন। সমাজতন্ত্র মৃত পচা শুয়োরের নাড়িভুঁড়ি। কাকেদের তাই নিয়ে দড়িটান। জাতীয়তাবাদ আর ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে বলার মতো তেমন কিছুই নেই। রাষ্ট্র না রাক্ষসপুরী, তাই প্রশ্ন এখন।

বাজেট মানেই এখন শুভঙ্করের ফাঁকি। উন্নয়ের জোয়ারে ভাসতে থাকা মর্কট জনগণ উন্নয়ন মানেই বুঝে শুধু দৃশ্যমান অবকাঠামো। জীবন মান, মুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গবেষণা ছাইপাঁশ তারা বুঝে না। বিশাল বাজেট হচ্ছে, সবচেয়ে বড় বাজেট কার্জকর ইত্যাদি ইত্যাদি বলে প্রশান্তির ঢেঁকুর তুলছেন। আচ্ছা, একটা প্রশ্ন রেখে যাই; ৭০'র দশকের কৃষক-ভ্যান চালক-কারখানা শ্রমিকের জীবন মানের সাথে বর্তমানের পার্থক্য কতোটুকু? আপনি দোয়াতের বদলে কলম ধরেছেন, বই খাতার বদলে স্মার্টফোন-কম্পিউটার, সাইকেলের বদলে মটর সাইকেল বা কার। কিন্তু রিক্সাচালক ইঞ্জিন চালিত রিকশা চালালে তা গুড়িয়ে দেন। কৃষকের ট্র্যাক্টর কেনার টাকা নেই, বীজ কেনার টাকা নেই, সার কেনার টাকা নেই। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের প্রাইভেটাইজশন হয়। প্রাইভেট গার্মেন্টস শ্রমিকরা বেতনের দাবীতে অবরোধ করতে বাধ্য হয়।

প্রথম আলোর রিপোর্ট, ৬ কোটি জনগণ এখনো রাষ্ট্রে এক্সিস্ট করে যারা চার দিন কাজ না করলে সঞ্চয় শেষ হয়ে যায়। তাদের বেলায় আপনার বক্তব্য কী? উলটো দেখলাম, তাজরিন গার্মেন্টস শ্রমিকরা বেতনের দাবীতে আন্দোলন করতে করতে মরে যায়। রাষ্ট্রের পেটোয়া পুলিশ বাহিনি তাদের বেশ্যা আখ্যা দিয়ে রাজপথ থেকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পাটকল শ্রমিকের চিৎকার রাষ্ট্রের কর্ণকুহরে যায়নি। কৃষক ধানের ন্যায্য দাম না পেয়ে ফসলে আগুন ধরিয়ে দেয়। "আর করবো না ধান চাষ, দেখবো তোরা কী খাস" গায়ে লিখে কৃষক কান্না করে। ছাত্ররা এই মহামারিতে বেতন মৌকুফের মতো ন্যায্য দাবী তুলে বহিষ্কার হয়, সাথে মামলা খেয়ে আদালোতেও দৌড়াতে হয়।

বিচারহীনতার সংস্কৃতি সম্পর্কেই বা বলবো কী? বিশ্বজিৎ, সাগর-রুনি, অভিজিৎ, অনন্ত বিজয়দের খুনের বিচার এতো বছরেও কার্জকর করা সম্ভব হয়নি। নথিভুক্ত ধর্ষণের শিকার নারীর শতকরা ৩ জনও বিচার পায় না। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ আবার সামাজিক ভয়ে মুখই খুলে না। রিপোর্ট ফাইল করেনা। এইসব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবার আক্রমণের শিকার হতে হয়। একটা গ্রাফিতি তাদের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

বিগত ৭ বছরে ৪.৫ লাখ কোটি টাকার বেশি বিদেশে পাচার হয়েছে। করোনা মহামারির মতো জরুরি অবস্থায় র‍্যাশন বরাদ্দ দেয়া মাত্রই ৩ লাখ কেজি চাল লুট হয়ে যায় রুলিং পার্টির সদস্যদের দিয়েই। জিএফআই'র তথ্যমতে, বিদেশে টাকা পাচারে শীর্ষ ৩০ রাষ্ট্রের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে তা দ্বিতীয় তম। আহারে সোনার বাংলা আমার!

মৌলবাদকে লালন করার কারণে রাষ্ট্র এখন খেসারত দিচ্ছে। সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতাও এখন একটা সাংঘর্ষিক অবস্থানে রয়েছে। ইতি টানাটা খুবই দরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম.এম. আকাশ স্যারের সাথে একবার চায়ের আড্ডার সুযোগ হয়েছিলো। তার জীবনের একটা গল্প সে শুনিয়েছিলো। ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণের দিন সে নিজেও রেসকোর্স মাঠে ছিলো। তখন একজন শ্রমিক আরেকজন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করে, "আচ্ছা ভাই, বিদেশী মশার চাইতে দেশি মশা কি খুব ভালো?" উত্তরে সেই ছাত্র বলেছিলো,"বিদেশী মশা রক্ত খেয়ে বিদেশ চলে যাবে। কিন্তু দেশি মশা রক্ত খেলে তার পেট কেটে রক্তটা বের করা যাবে।"

হুম। এটাই মুক্তিযুদ্ধ ছিলো। শোষক যদি নিজের বাবাও হয়, তার ছাড় নেই।

করোনা মহামারী আমাদের একটা বিরাট শিক্ষা দিয়ে গেছে। পদ্মাসেতুর মতো বিশাল স্থাপণার চাইতে আমাদের শিক্ষা আর স্বাস্থ্যখাতের গুরুত্ব অনেক বেশি। ইট-পাথরের অট্টালিকার চাইতে মেডিক্যাল টুলস বেশি দরকার। নিজেদের টাকায় স্যাটেলাইট কেনাকে জাতীয় অর্জন বলে না। স্যাটেলাইট বানাতে পারাকে জাতীয় অর্জন বলে।

পরিশেষে কথা,

"বিজয় ঠিকই অর্জন করেছি
মুক্তি মেলেনি আজও,
স্বাধীনতা তুমি ক্রীতদাস হয়ে
মুক্ত মানব সাজো।"

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৯

শাহ আজিজ বলেছেন: চমৎকার অনুভুতি । সহমত।



ভাস্কর্য ভাঙ্গা , টেনে হিঁচড়ে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়ার হুঙ্কারের সবাইকে গায়ে হাত বুলিয়ে বাড়িতে বসে আলাপ সালাপ একদম ভাল লাগেনি । ঠিক বলেছেন - সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা মুছে দেবার চূড়ান্ত ক্ষন কি আসন্ন ?

কর্মমুখিন রাষ্ট্র আর সমাজ চাই । ধর্ম আর সেনামুখিন নয় ।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩৩

রাফিন জয় বলেছেন: ভালোবাসা জানবেন।

২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



এম, এ, আকাশ সাহেবের সাথে চা খাওয়ার সময়, চা'এর সাথে কোন টা ছিলো?

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩৪

রাফিন জয় বলেছেন: চায়ের আগে সমুচা খেয়েছিলাম। যদিও আকাশ স্যার শুধু চাটাই খেয়েছে। কিন্তু এই প্রশ্নটা অনর্থক নয়কি?

৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ৫০ বছরের ৩০ বছর চলে গেছে অকারন,ঝগড়া ঝাটি করতে করতেই যা এখনো শেষ হয় নাই।সাথের দুটি দেশর বয়স৭৩ বছর,তারা আমাদের থেকে কতটা এগিয়ে।
সার্বিক উন্নয়নের জন্য দেশের সকল নাগরিকের একটা প্রচেষ্টা লাগে,আমাদের দেশের কি সেই অবস্থা আছে।নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলেই উত্তরটা পেয়ে যাবেন।
পৃথীবিতে এমন দেশ বিরল যে দেশের জনগনের একটা বিরাট অংশ স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির সাথে মিলে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধ যুদ্ধ করে,এবং সেটা আজো করছে।
আমাদের ব্যর্থতা যে স্বাধীনতার সাথে সাথে এই বিষয়গুলোর একটা চুড়ান্ত সমাধান করিনাই।তার ফল এখন ভোগ করছে জাতি।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩৬

রাফিন জয় বলেছেন: একমত পোষণ করছি। আর একটু যুক্ত করছি, রাষ্ট্রের চারটা উপাদানের মধ্যে একটা হচ্ছে জনগণ। আমাদের সবচেয়ে বড়ো সমস্যাটাই সম্ভবত এই অংশে।

৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: নামের মানুষ সবাই কিন্তু কাজের মানুষ নয়। সর্প সুযোগ পেলে কামড় বসায়

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৩

রাফিন জয় বলেছেন: তাই ডিফেন্সিভ কার্বোলিক এসিড ম্যানেজ করতে হবে।

৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: মুক্তি মেলেনি কথাটা ঠিক না।
বলতে পারেন আপনার মন মতো হয় নি।
দেশের ১৮ কোটি মানুষের মত এক রকম না। একেক জন মানুষ একেক রকম চিন্তা করে।
আপনি বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারছেন।
এটা আপনার নিজের দেশ। স্বাধীন দেশ। এর চেয়ে বড় মুক্তি আর কি আছে?
দরিদ্র দেশ বলে দেশে নোংরা রাজনীতি থাকবেই। সেটা মেনে নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৯

রাফিন জয় বলেছেন: কথাটা স্ববিরোধী হয়ে গেলোনা? আপনিই বললেন সবার মত এক না আবার আপনিই ডিফাইন করে দিচ্ছেন আমার ভিউ ঠিক না! আসলে সার্বভৌমত্ব, নির্দিষ্ট ভূখণ্ড আর মুক্তির কন্সেপ্ট এক না। আকাশ স্যারের বক্তব্যটা তাই তুলে ধরেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.