নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধাবমান কালো চোখে আলো নাচে- ১৬ (ধারাবাহিক উপন্যাস)

১৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৪২



অলকার মন খুব খারাপ অনেকদিন বাবার কোনো চিঠি পায় না। তার বন্ধুবান্ধবও বিশেষ নেই। অলকার মন খারাপ দেখেই ডিপার্টমেন্টের এক প্রফেসর চার্লি অলকাকে জোর করে ধরে পার্টিতে নিয়ে যায়। সেখানেও অলকার ভালো লাগছিল না। চুপচাপ এক কোনায় বসে ছিল সে। পার্টি চললো রাত একটা পর্যন্ত, তারপর যে যার বাড়ি ফিরতে শুরু করলো। প্রায় ত্রিশ জন ছেলে মেয়ে সবার সাথেই একবার করে হাই হ্যালো হয়েছে। সবার সাথে হাসিমুখে থাকতে হয়েছে অলকার। মুখে একটা হাসি ধরে রাখতে হয়েছে। সবাই প্রচুর বিয়ার খেয়ে আর নেচে নেচে ক্লান্ত।

অলকার গাড়ি নেই। এখান থেকে সাত মাইল দূরে অলকার এপার্টমেন্ট। এত রাতে ট্যাক্সি পাওয়া যাবে না। প্রফেসর চার্লি'ই তাকে এপার্টমেন্টে নামিয়ে দিবে। অলকা এক চা চামুচ বিয়ার খায়নি তবু তার মাথাটা বড্ড ভারী লাগছে। এই সমস্ত পার্টিতে সবাই এত জোরে কথা বলে কেন অলকা ভেবে পায় না। প্রফেসর চার্লি খুব হুইসকি খেয়েছেন, খুব নেচেছেন তরুনী মেয়েদের সাথে। চার্লি টলতে টলতে নিচে নেমে অলকার দিকে হাসি মুখে তাকিয়ে বললেন, তোমাকে আমি নিয়ে এসেছি, কাজেই আমার দায়িত্ব তোমাকে পৌঁছে দেওয়া। চলো। অলকার সকালে ক্লাশ আছে। তাই বলল হুম তাড়াতাড়ি চলো। অলকার কথা শুনে চার্লি হেসে দিলেন। চার্লির বয়স কম হলেও পঞ্চান্ন।

গাড়ি চলছে সাঁ সাঁ করে। নেশা অবস্থায় চার্লি গাড়ি ভালো চালায়। পনের মিনিটের মধ্যে চার্লি অলকাকে তার এপার্টমেন্টে নামিয়ে দিল। অলকা বলল গুড নাইট চার্লি। চার্লি অবাক হয়ে বলল, মাই ডিয়ার ইয়াং লেডি তুমি কি আমাকে বলবে না প্রফেসর আমার রুমে চলো। এক মগ কফি খেয়ে যাও? অলকা খিলখিল করে হেসে উঠলো।
চার্লি বলল, তোমার দেশ যেন কোথায়? তেহেরান?
চার্লির কথা শুনে অলকা বলল, না।
তাহলে আফ্রিকা?
না।
ও বুঝেছি, জাপান?
না, এবারও হলো।
অলকা গর্বের সুরে বলল, আমি ভারতবর্ষের মেয়ে।

চারিদিকে শুনসান নিরবতা। মধ্যরাত। দুইজন কথা বলছিল সিড়িতে বসে। গল্প করতে করতে রাত তিনটা বেজে গেল। চার্লি বিদায় নেওয়ার আগে গালটা বাড়িয়ে দিল। ওখানে বিদায় চুমু দেওয়ার কথা। এই দেশের এইসব নিয়ম অলকার একেবারেই ভালো লাগে না। তবু ভদ্রতাসূচক একটা চুমু দিল। আর বলল, কাল ইউনিভার্সিটিতে দেখা হবে প্রফেসর।

রুমে ঢুকেই অলকা লম্বা হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। জামা কাপড় বদলাতেও ইচ্ছা করছে না। খুব ক্লান্ত লাগছে। এমনিতেই তার মনটা ভালো নেই। গতমাসে বাবার চিঠি পায়নি। দেশের অবস্থা ভালো না। দেশভাগের পর বাবা অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছেন, সেই শোক সামলাতে না সামলাতে শুরু হলো ভাষা আন্দোলন। বেশ কয়েকজন আন্দোলন করতে যেয়ে গুলি খেয়ে মরেছে। আসলে বাঙ্গালীদের শান্তি নেই। একটার পর একটা বিপদ লেগেই আছে। তার ইচ্ছা করছে লেখা পড়া বাদ দিয়ে দেশে ফিরে যেতে। কিন্তু বাবা বলেছেন, দেশের পরিস্থিতি শান্ত হোক তারপর আসবি।

নানান সাতপাঁচ কথা ভাবতে ভাবতে অলকা ঘুমিয়ে গেল। ঘুমের মধ্যে সে স্বপ্নে দেখলো। সে দেশে ফিরে গেছে। তার বাবা মেয়েকে দেখে আনন্দে কেঁদে ফেললেন। মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। ঘুমের মধ্যেই অলকা ডান থেকে বাম পাশ ফিরল আর ঠিক তখন তার স্বপ্নটাও বদলে গেল। সে আর প্রফেসর চার্লি নৌকা করে কোথায় যেন যাচ্ছে। চারিদিকে ঠান্ডা বাতাস বইছে। নদীর চারপাশে নানান রকম ফুল ফুটে আছে। মিষ্টি একটা সৌরভ তাকে পাগল করে দিচ্ছে।
প্রফেসর বললেন, অলকা আমাকে বিয়ে করবে?
অলকা প্রচন্ড অবাক হলো বুড়ো প্রফেসরের কথা শুনে! সে কি বলবে বুঝতে পারছে না।
বুড়ো প্রফেসর এসে অলকার বুকের উপর তার হাত রাখলো। তারপর অলকাকে জড়িয়ে ধরলো। বুড়ো প্রফেসর একটা একটা করে তার সব জামা খুলে ফেলতে শুরু করেছে। অলকা কিছুতেই বুড়োকে থামাতে পারছে না। অলকার দম যেন বন্ধ হয়ে আসছে। সে চিৎকার দিয়ে উঠলো। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল, ভোর ছয়টা। এরকম একটা স্বপ্ন দেখে এখন তার নিজের কাছেই খুব লজ্জা লাগছে। এরপর সে কি পারবে সহজ স্বাভাবিকভাবে প্রফেসরের সামনে দাঁড়াতে? প্রফেসর চার্লি অতি ভদ্র একজন মানূষ। সহজ সরল জীবন যাপন করেন। তার স্ত্রী ক্রিশ্চিনা একটা বড় ফার্মে কাজ করেন। বেশ কয়েকবার অলকার সাথে তার দেখা হয়েছে। যতবারই ক্রিশ্চিনার সাথে তার দেখা হয়েছে ততবারই ক্রিশ্চিনা কিছু না কিছু উপহার দিয়েছেন। প্রফেসর চার্লি আর ক্রিশ্চিনার কোনো সন্তান নেই।

অলকা এক মগ কফি বানিয়ে তার ছোট্র বেলকনিতে এসে দাড়ালো। সে থাকে এগারো তালায়। কফি খেতে খেতে ভোর হতে দেখা দারুন ভালো লাগে অলকার। তার এই বেলকনি থেকে একটা প্রেট্রোল পাম্প আর একটা লেকের কিছু অংশ দেখা যায়। আজ সে এই বেলকনি থেকে বড় অদ্ভুত একটা দৃশ্য দেখলো।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৫৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: দেখা যাক,অলোকার ভবিষ্যতে কি আছে?
রইল শুভেচ্ছা।

১৫ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:০৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: যদিও একটা পর্বের মত ,তবে ভালোলেগেছে বেশ লেখা।

১৫ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ বোন।

৩| ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: ভাল লাগল।

১৫ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:২২

তাজেরুল ইসলাম স্বাধীন বলেছেন: বিয়ে করলে মন্দ হবে না! দুলা হবে প্রফেসর, তবে এই বয়সে তাদের সন্তান হবে কিনা চিন্তায় আছি। সন্তান হলে একটি ছেলে হলে খুশি হব।

১৫ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা---
ভালই বলেছেন।

৫| ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩

রোদ্দূর মিছিল বলেছেন: ভালো হয়েছ। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।

১৫ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। সাথেই থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.