নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

উন্নয়ন

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪০



দেশের অধিকাংশ মানুষ ‘উন্নয়ন’ বলতে বোঝেন তার এলাকায় রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট-ফ্লাইওভার ইত্যাদি কতখানি হলো, সেটা। মানে ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এটা দৃশ্যমান। তাই সব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এ ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নেই বেশি সময় ও অর্থ ব্যয় করেন। ‘উন্নয়ন’ বলতেই দেশের জনগণকে এটা বোঝাতে সক্ষম হয় তারা। মানুষের জীবন বা জীবনমান গোল্লায় যাক- তাতে কী? কেননা গণতন্ত্রমুখী একটি রাষ্ট্রকে নির্বাচনে যেতে হয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে, সরকারপ্রধানকে নির্বাচনের আগে এই দৃশ্যমান উন্নয়নের মুলা দেখাতে হয়। আর এসব দেখে আমজনতা বাহাবা দেন। তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন। ফেসবুক লাইক-কমেন্টের মতো নগদ প্রাপ্তি। তাছাড়া এগুলো সরকারের উন্নয়নের মানদণ্ড হিসেবেও বিবেচ্য হয়। এই বিবেচনা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের।

অবকাঠামো উন্নয়নের প্রয়োজন নেই, তা বলছি না। অবশ্যই দরকার আছে। মানুষের এই যে অগ্রগতি, তা প্রত্যক্ষ হয় এই অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে। তথ্য-প্রযুক্তি ও যোগাযোগের মাধ্যমে। তবে এটিই সব নয়; আছে অদৃশ্য এক উন্নয়ন, তা হলো মানবিক উন্নয়ন। এর প্রভাব সমাজে প্রকট ও প্রবল। তবে বাস্তবতা হলো, সব দেশের সব রাষ্ট্রপরিচালক এটিকে নগণ্য হিসেবে দেখে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দমিয়ে রাখে। কারণ, ওটার বৃদ্ধি ঘটলে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকা অনেক ক্ষেত্রে দুষ্কর বৈকি! কথা হলো, এই মানবিক উন্নয়নের দরকারটিই-বা কী? একটি দেশে যতই সুউচ্চ ভবন, সুদৃশ্য সেতু, রাস্তায় আলোক রোশনাই থাকুক না কেন, সেই রাষ্ট্রে কিংবা সমাজব্যবস্থায় যদি মানবিক উন্নয়ন না ঘটে, বিকশিত না হয়, কিংবা সেই উন্নয়নে কোনো রকম বাধাপ্রাপ্ত হয়, তবে সেই সমাজ ধসে যেতে বাধ্য। কারণ দেহ মাত্রই শরীর নয়, শরীরে যদি প্রাণ না থাকে তবে সেই মাংসসর্বস্ব শরীর একসময় গলে পচে যায়।

আজ যে প্রজন্ম বেড়ে উঠছে, বড় হচ্ছে তাদের অতীত বলে কিছু নেই। তাদের শৈশব নেই, কৈশোর নেই। অতীত নেই বলে তাদের বর্তমানটি বড় ফাঁকা, বড়ই ঠুনকো। কারণ তাদের পাড়ায় কোনো লাইব্রেরি নেই, যে বই পড়বে। কোনো মাঠ নেই, যেখানে খেলবে। তারা লাইব্রেরি বলতে বুঝে ঘরের কম্পিউটারকে, আয়তন যার ছোট হতে হতে এখন স্মার্টফোনে পরিণত হয়েছে। যে স্মার্টফোন রীতিমতো এ প্রজন্মকে মাথা হেঁট করে দিয়েছে। সর্বত্রই মাথা নিচু করে মোবাইল ফোনের বাটন টেপা। খেলার মাঠ বলতে তারা বোঝে পাড়ার চাপা গলিটি বা ফ্ল্যাটের ছোট্ট বারান্দাটিকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চেনা-অচেনা মানুষের ভাবনাগুলো পড়ি। লক্ষ করেছি, তরুণ প্রজন্মর অধিকাংশ ফেসবুক ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টের পলিটিক্যাল ভিউস অপশনে লেখা- ‘আই হেইট পলিটিকস’, ‘আই ডিজলাইক পলিটিকস’, ‘নো ইন্টারেস্ট’। আমি ভাবি, একটা প্রজন্ম কী করে রাজনীতিবিমুখ হয়ে বড় হচ্ছে। তাদের কাছে রাজনীতি মানেই দলাদলি, মারামারি, হানাহানি, চাঁদাবাজির মতো নেতিবাচক কাজ। অথচ এ কথা সত্য, বর্তমান বাস্তবতায় মানুষ যত না সামাজিক জীব, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক জীব। কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থন করুন বা না-ই করুন, তাতে কিছু আসে যায় না। যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্যের যে নিরীহ মানুষটি জীবনে কোনো সাতেপাঁচে ছিল না, তাকেই উদ্বাস্তু হয়ে আশ্রয় খুঁজতে হচ্ছে পরিবার-পরিজন নিয়ে এদেশ থেকে ওদেশে। কিংবা লাইফ বোটে ভাসতে হচ্ছে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে। তার মানে, রাজনীতি না করেও সে রাজনীতির প্রত্যক্ষ শিকার।

কিউবার দৃষ্টান্ত দিই। দেশটিতে এখনও মান্ধাতার আমলের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, যানবাহন দৃশ্যমান। যদিও এটা নিয়ে তাদের মনে কোনো খেদ নেই। ফিদেল কাস্ট্রোকে একবার এক সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনার দেশে এই যে আগের দিনকার কাঠামো, তা দেখে তো মনেই হয় না দেশটিতে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। ফিদেলের দৃঢ় উত্তর, “হ্যাঁ, আমার দেশ গরিব হতে পারে। হতে পারে আমার দেশের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, যানবাহন সব পুরোনো আদলের। কিন্তু আমার দেশের একটি মানুষকেও তুমি দেখাতে পারবে না, যে না খেয়ে রাতে ঘুমাতে যাচ্ছে কিংবা ঝড়বৃষ্টিতে ফুটপাতে শুয়ে আছে। এমন কোনো তরুণ বা যুবককে নেই, যে কিনা বেকার হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে চাকরির খোঁজে। মার্কিন চক্রান্তে যখন আমাদের দেশে জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, তখন দেশবাসীর কাছে বাস্তবতাটি তুলে ধরি। তাদের বলি, জ্বালানির অভাবে গণপরিবহন চালাতে পারছে না সরকার। তাই গণপরিবহনে না চড়ে একটু কষ্ট করতে। সে সময় চীন থেকে হাজার হাজার সাইকেল কিনে তাদের দিই। তারা সেই সাইকেল চালিয়ে হাসিমুখেই কাজে যায়, কাজ শেষে বাড়ি ফেরে।’
কথা হলো, এই ফিদেল কাস্ট্রো কিউবায় এমন বিপ্লব ঘটালেন কী করে? একদিনে সেটি ঘটেনি। মানুষকে তার বোধের ভেতর জাগাতে হলে মানবিক মূল্যবোধের চর্চা অব্যাহত রাখতে হয়। নৈতিকতা, বিবেকবোধ জাগাতে হলে মানবিক উন্নয়নে কাজ করতে হয়। এর নিয়ামক হিসেবে সাংস্কৃতিক চর্চা জরুরি। কালচারাল প্রোগ্রাম বলতেই আমরা গান-নাচ-অভিনয়-আবৃত্তি প্রভৃতি অনুষ্ঠানকে বুঝি। এগুলো সংস্কৃতির অংশ মাত্র। ভাষা, আচার-আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে চিন্তা-চেতনা সবই সংস্কৃতির অংশ। এগুলো সুস্থ ও সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠলেই কেবল তার অংশগুলো পরিশীলিতভাবে সমাজে প্রকাশ পায়।

বুদ্ধিমুক্তির আন্দোলন এ বাংলাতেই হয়েছিল। সেই আন্দোলন এখনও বহমান। আবারও বলি, ভৌত অবকাঠামো প্রয়োজন। তবে সেটা সঠিকভাবে সংরক্ষণে প্রয়োজন মানবিক উৎকর্ষ। মূল্যবোধের অবক্ষয় হলে সমাজে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয় না। আর সুশাসন না থাকলে কী হয়, তা তো এখন সবাই দেখতেই পাচ্ছি। বড় দুশ্চিন্তার ভেতর দিয়ে প্রত্যক্ষ করছি, মানুষের ভেতর চিন্তার খোরাক দিন দিন কমছে তো কমছেই। মানুষ এখন সবকিছু রেডিমেড পেতে চায়। ভাবনাকে দূরে সরিয়ে রেখে জীবন অতিবাহিত করতে চায়। সুবিধাবাদী মানসিকতা বাঙালির মজ্জাগত। মজ্জা থেকে এ আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা যত দিন না দূর হবে, এ মজ্জাই শেষমেশ গোটা শরীরকে গিলে খাবে কর্কট রোগের মতো।

(লিখেছেন Anjon Acharya। তার ফেসবুক থেকে )

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫০

রাকু হাসান বলেছেন: সুন্দর মতামত দিয়েছেন তিনি +++,ব্লগে শেয়ার করার জন্য পড়তে পারলাম । ফেসবুকে রাজনীতি ব্যাপারে প্রজন্মের রাজনীতির প্রতি অনীহার জন্য দলগুলোই দায়ী । তারা অামাদের নোংরা রাজনীতি প্রদর্শনের জন্যই এমন টা হচ্ছে বলে ব্যক্তিগত মনে করি । অথচ একটু পেছন ফিরে গেলই দেখা যায় আমাদের রাজনীতির ইতিহাস একেবারে নোংরা ছিল না ,বিশেষ করে স্বাধীনতার পূর্বের রাজনীতির কথা মনে করা যায় ।

২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১

গরল বলেছেন: আমার মনের কথাটাই বলেছেন, মানব সম্পদের উন্নয়ণই হচ্ছে সবচেয়ে বড় উন্নয়ণ। আমরা যদি শ্রীলংকার দিকে তাকাই তাহলে আমাদের দেশের মত এত বড় বড় দালান নাই, ফ্লাইওভার নাই এমনকি মেট্ররেলও নাই। কিন্তু তাদের আছে মানব সম্পদ আর এডিক থেকে তারা আমাদের চেয়েও উন্নত।

৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার ভাবনা ভালো লেগেছে; সরকার উন্নয়ন বলতে ইনফ্রাষ্ট্রাকচারকেই বুঝে।

৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর কিছু কথা মালার শেয়ার।

৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৮

ভুয়া মফিজ বলেছেন: শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। খুব ভালো লেখা।

৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৬

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: দেশে যারা ক্ষমতায় আছে তারা উন্নয়নের চেয়ে গলাবাজী বেশি করে। এতে জনগণ বিরক্ত ।।

৭| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪২

করুণাধারা বলেছেন: চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন, অনেক ধন্যবাদ।

মানবসম্পদের উন্নয়ন করতে গেলে প্রথমেই মানুষকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। যেহেতু আমাদের দেশে শিক্ষার মান দিন দিন পড়ে যাচ্ছে, তাই মানব উন্নয়ন আমাদের দেশের জন্য সুদূরপরাহত। আমাদের শুধু ফ্লাইওভার নিয়েই খুশি থাকতে হবে।

৮| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:২৩

আলআমিন১২৩ বলেছেন: পড়া শুরু করার সময় এবং পড়তে পড়তে ভাবছিলাম অন্যান লেখার মত এটাও রাজীব নুরের লিখা। শেষে যেয়ে দেখলাম এটা অন্য লেখকের কপি। অধুনা যাকে শেয়ার বলা হয়। ভাল লাগেনি।রাজীব নুরের নিজস্ব লিখা চাই। কারন তিনিও যথেষ্ট ভাল লিখেন। চাদগাজী সাহেবের মন্তব্যে পুলকিত হলাম-কারন এটা আমার দেখা তার প্রথম ইতিবাচক মন্তব্য।

৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৮ রাত ১১:৩৩

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:


পড়তে পড়তে ভাবছিলাম। বাহ, রাজীবভাই তো খুব চমৎকার লেখেছেন। শেষে লেখকের নামটি দেখে ভাবনায় একটু ছেদ পড়লো। ভাল লাগলো। আপনারা দু'জনকেই শুভেচ্ছা ।

১০| ০৫ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ৭:৫২

সিগন্যাস বলেছেন: প্রিয় রাজীব ভাই,
আগে আমাদের দেশের অবকাঠামোর উন্নয়ন হোক।সড়ক দূর্ঘটনায় প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে।সেগুলোর উন্নয়ন হোক।

১১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১:১০

রক বেনন বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন: আপনার ভাবনা ভালো লেগেছে; সরকার উন্নয়ন বলতে ইনফ্রাষ্ট্রাকচারকেই বুঝে।[/sb

আমিও একমত। সেই সাথে উন্নয়ন বলতে উনারা বুঝেন নিজেদের স্থায়ী ও চলতি সম্পদের বৃদ্ধিমূলক উন্নয়ন। আমাদের মন্ত্রীরা এতই কম বেতন পান আর উনাদের আয় এতই কম যে এখন আমাদের করের টাকা হতে উনাদের ৭৫,০০০ টাকা করে দেয়া হবে মোবাইল কেনার জন্যে!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.