নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্রান্তির গহ্বরে

২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩৩



কার কখন কি বিপদ আসে বলা যায় না।
তিথীর সাথে দেখা করে বাসায় ফেরার পথে কে বা কারা যেন সাবিত'কে ধরে নিয়ে যায়। এবং একটা অন্ধকার ঘরে বন্দী করে রেখেছে। সাবিতের কাছে মনে হচ্ছে- সে বন্ধী ঘরের মধ্যে না, কবরের মধ্যে। এত তীব্র অন্ধকার শুধু কবরে থাকা সম্ভব। কিন্তু সাবিতের ভয় করছে না। ঘরটা কেমন ঠান্ডা ঠান্ডা। সে মনে মনে নিজেকে বলল- মাটির ঘর তো ঠান্ডা হবেই। সাবিত অনেকক্ষন ভেবেও বের করতে পারল না- সে এই অন্ধকার ঘর থেকে কিভাবে বের হবে। সাবিত বইতে পড়েছে- কবর হলো মৃতদেহ মাটিতে পুতেঁ রাখার গর্ত। মৃত মানুষকে কবরে শায়িত করাকে বলা হয় দাফন করা। মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইহুদীদের মৃতদেহ মাটিতে দাফন করা হয়। অন্যদিকে হিন্দুদের মৃতদেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। পৃথিবীর প্রথম মানুষ আদম (আ.) এর ছেলে কাবিল তার ভাইকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে কবর দিয়েছিল। এটিই পৃথিবীর প্রথম কবর।

সাবিত ধরে নিল, সে মারা গেছে।
এবং তাকে কবর দেওয়া হয়েছে। সাবিত অনুভব করলো- মৃত্যুর পরের জগতটা অন্ধকার। হঠাত সাবিত স্পষ্ট শুনলো কে যেন তাকে সালাম দিয়েছে- আসসালামু আলাইকুম। সাবিতের খুব রাগ লাগল। সে এত তাড়াতাড়ি মরতে চায়নি। তার অনেক কাজ বাকি ছিল। সাবিত সালামের জবাব দিল না। যে সালাম দিয়েছিল, সে আবার বলল- সালামের জবাব দিচ্ছ না কেন? সাবিত বলল- আপনাকে দেখতে পারছি না। শুধু আপনার গলা শুনছি। আমি আপনাকে দেখতে চাই। অদৃশ্য লোকটি বলল- আমাকে দেখার আগে- আমার সহজ তিনটা প্রশ্নের উত্তর দাও। সাবিত বলল- আচ্ছা, ঠিক আছে। প্রথম প্রশ্ন- কোন দেশের ২৪ কোটি লোক প্রতিদিন অভুক্ত থাকে? দ্বিতীয় প্রশ্ন- ৪০ লক্ষ এইডস রোগীরদেশ কোনটি? তৃ্তীয় প্রশ্ন- সাপের কামড়ে কোন দেশের লোক সবচেয়ে বেশী মারা যায়? সাবিত বলল- আপনার তিনটা প্রশ্নের উত্তর একই হবে। ইন্ডিয়া। এত সহজ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন- এখন নিজের কাছেই লজ্জা লাগছে।

অন্ধকার ঘরে সময় ভালো যাচ্ছে।
অন্ধকারের ভয় ভুলে থাকার জন্য প্রশ্ন প্রশ্ন খেলাটা সাবিতের ভালো লাগছে। সাবিত অদৃশ্য লোকটিকে বলল- এবার আপনি আমার তিনটি প্রশ্নের উত্তর দেন। লোকটি বলল- ঠিক আছে প্রশ্ন করো কিন্তু একটা অনুরোধ দয়া করে সহজ প্রশ্ন করবেন। সাবিত প্রথম প্রশ্ন করলো- কত সালে বাংলাদেশকে গুটি বসন্ত মুক্ত দেশ হিসেবে সরকারী ভাবে ঘোষনা করা হয়? সাবিতের দ্বিতীয় প্রশ্ন- তোর বাপের নাম কি? অদৃশ্য লোকটি অবাক হয়ে বলল- এটা কি রকম প্রশ্ন? সাবিত বলল- এটা কোনো প্রশ্ন নয়, এমনি জানতে চাইলাম। বলতে ইচ্ছা না করলে বলবেন না।
অদৃশ্য লোকটি বলল, দ্বিতীয় প্রশ্ন করুন- সাবিত প্রশ্ন করল, মনে করেন আপনি এক মুদী দোকানের দোকানদার। এক খদ্দের আসলো একটি কলম কিনতে। কলমটির দাম ৫০ টাকা। সে কলমটি নিয়ে আপনাকে ১০০ টাকার একটি নোট দিল। আপনার কাছে ভাংতি না থাকায় আপনি পাশের দোকান থেকে ১০০ টাকার নোটটি দিয়ে ৫০ টাকার ২টি নোট নিলেন এবং সেখান থেকে একটি নোট খদ্দেরকে দিলেন কলমটির সাথে। কিছুক্ষন পরে পাশের দোকানদার আপনাকে ডেকে বলল, তোমাকে যেই ১০০ টাকার নোট সে দিয়েছিল সেটি ছিল জাল নোট। তারপর সে আপনাকে ১০০ টাকার জাল নোট দিয়ে আসল ১০০ টাকা ফেরত নিল। এখন বলতে হবে আপনার মোট লস কত হল? দ্বিতীয় প্রশ্ন করে সাবিত বলল তৃতীয় প্রশ্ন করতে ইচ্ছা করছে না।

অদৃশ্য লোকটি কোথায় যেন চলে গেল-
তারপর অন্য একটি লোক আসলো। তার হাতে লোহার রড। ঘর অন্ধকার তবু সাবিত সব দেখতে পারছিল কিভাবে যেন! রড হাতে লোকটি বলল- তুমি কেন বুঝতে পারছো না- তুমি মরে গেছো, তারপর তোমাকে কবর দেওয়া হয়েছে। সাবিত বলল- আমি কিভাবে মরলাম? তিথীর সাথে আমি বসুন্ধরাতে সিনেমা দেখলাম। সিনেমা দেখে বার্গার খেলাম। কোক খেলাম। তারপর তিথীকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে- আমি আমার বাসায় ফিরছিলাম। কিন্তু বাসায় না গিয়ে কিভাবে যেন একটা অন্ধকার ঘরে চলে এলাম। সাবিত জোর দিয়ে বলল- না, আমি মরিনি। এত তাড়াতাড়ি আমি কেন মরবো ? আমার অনেক কাজ বাকি। সব কাজ শেষ না করে আমি মরতে পারি না। অবশ্যই আমার শত্রুরা আমাকে বন্দী করে রেখেছে। যেভাবেই হোক- এখান থেকে আমাকে বের হতে হবে। হবেই। লোকটি সাবিতকে রড দেখিয়ে বলল- এটা যখন পিঠে পড়বে- তখন বুঝবে। তিনটা প্রশ্নের জবাব দাও- জবাব না দিতে পারলে আজ তোমার খবর আছে। বল, তোমার রব কে?

সাবিত ঘুম থেকে উঠে ঘড়ি দেখল- সকাল দশটা।
বুঝতে পারল রাতে ভয়াবহ এক দুঃস্বপ্ন দেখেছে। ফালতু স্বপ্ন। অনেকদিন পর সে এরকম ফালতু স্বপ্ন দেখল। এরকম স্বপ্ন সে কেন দেখল- তার ব্যাখ্যা কে দিবে? সাবিত সব কথা তিথীকে বলে। বিকেলে তিথির সাথে বসুন্ধরা মার্কেটে দেখা হবে। তখন আরাম করে বসে তিথীকে স্বপ্নের কথা বলবে। হঠাত সাবিত শুনলো- কোথায় যেন রেলগাড়ি যাচ্ছে। সাবিত অবাক রেলগাড়ির শব্দ কোথায় হচ্ছে? তার বাসার আশেপাশে তো কোনো রেললাইন নাই। রেললাইনের কু ঝিক ঝিক। কু ঝিক ঝিক শব্দ আসছে সাবিতের মোবাইল থেকে। এই রিং টোন টা সাবিত গতকাল রাতে সেট করেছে। রিংটোন শুনে শুনে এখনও অভ্যস্ত হয়নি। সাবিত ফোন রিসিভ করলো। ফোন করেছে তিথী। তিথী বলল- ঠিক তিন টার মধ্যে বসুন্ধরা চলে আসবে। খবরদার দেরী করবা না। আমরা The Shawshank Redemption (দি শশাঙ্ক রিডেম্পশন) মুভিটা দেখব। সাবিত বলল- আচ্ছা। আচ্ছা। আচ্ছা।

সাবিত সময় মত বসুন্ধরা গেলো।
তিথীর হাতের উপর হাত রেখে মুভিটা দেখল। বিরতির সময় দুইজন মিলে পপ কর্ণ আর কোক খেলো। সিনেমা শেষ করে তারা কিছুক্ষন হাত ধরে মার্কেটে ঘোরাঘুরি করল। দুইজন নানান এলোমেলো কথা বলল। তারপর পরশু দিন আবার দেখা করবে- তিথী প্রতিশ্রুতি দিল। তিথী চলে যাবার সময়- সাবিতের অনেক কষ্ট হয়। তিথী চলে যাওয়ার পর- সাবিতের মনে পড়ল, গতকাল রাতের স্বপ্নের কথাটা তিথীকে বলা হয়নি। সাবিত মনে মনে ভাবল- রাতে ঘুমানোর আগে তিথীকে ফোন করে স্বপ্নের কথাটা বলবে। সাবির রাস্তার পাশের দোকান থেকে এক কাপ চা খেল। তারপর আরাম করে একটা সিগারেট শেষ করলো। বাসায় ফেরার জন্য রিকশা নিল। রিকশা কিছু দূর যাওয়ার পর- একটা প্রাইভেট কার সাবিতের রিকশাকে ধাক্কা দিল। সাবিত রিকশা থেকে ছিটকে পড়ল। আচমকা পেছন দিক থেকে একটা পিকআপ ভ্যান এসে সাবিতের উপর দিয়ে চলে গেল। চারিদিক রক্তে ভেসে গেলো। সাবিত সাথে সাথে মারা গেল।
ঠিক এমন সময় তিথীর কেন জানি খুব কষ্ট কষ্ট লাগছিল। বারবার সাবিতের কথা মনে পড়ছিল। সে সাবিতকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু সাবিতের মোবাইল বন্ধ।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



নীবর ট্রেজিক, কিছুটা দুর্বল হেঁয়ালী ধরণের প্লট।

২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ২:০২

রাজীব নুর বলেছেন: না মানি না।
লেখায় তেজ আছে, ধার আছে।

২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪১

কঙ্কাবতী রাজকন্যা বলেছেন: গল্পটা মজার ছিলো। বলতে গেলে দারুন। পপকর্নের কথা পড়ে এক্সট্রা বাটার পপকর্ণের স্বাদ জীভে পেলাম। কিন্তু মরে যাবার সময় তিথীর টেলিপ্যাথী আরও স্ট্রং বানিয়ে পাঠকের হৃদয়ে ঢুকিয়ে দিতে পারলে চাঁদগাজীভাইয়াকে কাঁদানো যেত।

২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: চাঁদগাজী কঠিন হৃদয়ের মানুষ।

৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:০৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: মাঝখান থেকে২০০ টাকা লস।

২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১২

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী।

৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২৫

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: হিসাব করে দেখলাম ,১৫০ টাকা লস।

২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: আরেকবার হিসাব করবেন প্লীজ?

৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:০৬

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: কলম যে কিনতে এসেছিল সেখানে লস হল,কলমের দাম ৫০ টাকা আর নগদ৫০ ।মোট ১০০ টাকা।
নকল নোট দিয়ে পাশের দোকান থেকে আনলো ১০০ টাকা।৫০ দিল কলম যে কিনেছিল তাকে,বাকী ৫০ টাকা তার কাছে ছিল।এই৫০ টাকার সাথে তার নিকট থেকে ৫০ টাকা মিলিয়ে নকল ১০০ টাকা ফেরত নিল। এখানে তার লস হল ৫০ টাকা।মোট ১৫০

এর পরও যদি না হয় তা হলে পাবনা যাওয়া বাকী আছে।

২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: না হয়নি।

৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১২

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: পাবনা গিয়ে হিসাব করে পেলাম লস ১০০ টাকা।একবার ঝটিল করে ফেললে,বেরিয়ে আসা মুসকিল।

২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: এখন ঠিক আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.